অর্থনীতি ১৫ – ঘুষ ও দুর্নীতি
রাজনৈতিক নেতৃত্বে, বিশেষভাবে বিচারকদের সততা ও ভাল চরিত্র দরকার
যাত্রা ১৮:২১-২২ ‘তুমি সমস্ত লোকদের মধ্য থেকে এমন সব যোগ্য লোকদের বেছে নেবে যারা ঈশ্বরভক্ত, সত্যবাদী এবং অন্যায় লাভ ঘৃণা করে। তাদের তুমি লোকদের নেতা হিসাবে নিযুক্ত করবে …২২ এরাই সব সময় লোকদের বিচার করবে।’
দ্বিতীয় বিবরণ ১:১৩ ‘তোমরা তোমাদের প্রত্যেকটা গোষ্ঠী থেকে কয়েকজন করে জ্ঞান-বান, বুদ্ধিমান ও অভিজ্ঞ লোক বেছে নাও; আমি তাদের উপর তোমাদের দেখাশোনার ভার দেব।’
হিতো ২৯:৪ ‘ন্যায়বিচারের দ্বারা রাজা দেশকে স্থির রাখেন, কিন্তু যে ঘুষ খেতে ভালবাসে সে দেশকে ধ্বংস করে ফেলে।’
- রাজনৈতিক নেতাদের সততা খুবই প্রয়োজন।
- নেতা দুর্নীতিগ্রস্ত ও লোভী হলে, পক্ষপাতিত্ব ও অনায্যতা সৃষ্টি হয়, যাতে দেশের ক্ষতি হয়।
- আমরা দুর্নীতিতে এমন অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে তার মারাত্মক ক্ষতি আর বুঝি না।
দ্বিতীয় বিবরণ ১:১৬-১৭ ‘এই সব বিচারকদের তখন আমি বলেছিলাম, ‘তোমরা ঝগড়া-বিবাদের সময়ে দু’পক্ষের কথা শুনে ন্যায়ভাবে বিচার করবে- সেই ঝগড়া ইস্রায়েলীয় ভাইদের মধ্যেই হোক কিম্বা ইস্রায়েলীয় এবং ভিন্ন জাতির লোকদের মধ্যেই হোক। ১৭ বিচারের ব্যাপারে তোমরা কারও পক্ষ নেবে না এবং বড়-ছোট সবার কথাই শুনবে। বিচারের কাজটা আসলে ঈশ্বরের; তাই কোন মানুষকে তোমরা ভয় করবে না।।’
দ্বিতীয় বিবরণ ১৬:১৮-১৯ ‘তোমরা বিচারক ও কর্মচারী নিযুক্ত করবে। তারা ন্যায়ভাবে লোকদের বিচার করবে। ১৯ তোমরা অন্যায় বিচার করবে না কিম্বা কারও পক্ষ নেবে না। তোমরা ঘুষ নেবে না, কারণ ঘুষ জ্ঞানীদের চোখ অন্ধ করে দেয় এবং নির্দোষ লোকদের কথায় প্যাঁচ লাগিয়ে দেয়।’
যাত্রা ২৩:৬-৮ ‘কোন গরীব লোকের মকদ্দমায় অন্যায় বিচার কোরো না। ৭ সাজানো মামলা থেকে দূরে থাকবে এবং কোন নির্দোষ কিম্বা সৎ লোককে মৃত্যুর শাস্তি দিয়ো না। এই অন্যায় যে করবে তাকে আমি রেহাই দেব না। ৮ ঘুষ খেয়ো না, কারণ যার চোখ আছে তাকেও ঘুষ অন্ধ করে দেয়। ঘুষ সৎ লোকের কথায়ও প্যাঁচ লাগিয়ে দেয়।’
- বিচারকদের ক্ষেত্রেও সততা, ভয়হীনতা, চাপ মুক্ত থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- ঘুষ গ্রহণ করা মানে বিচারকে উল্টানো, নতুন অন্যায় সৃষ্টি করা, নির্দোষীদেরকে অত্যাচার করা, এমন কি তাদেরকে খুন করা। তাই ঘুষ নেওয়া মানে মন্দ, ধ্বংসাত্মক ও ঈশ্বর বিরোধীয় কাজ। ঘুষ নেওয়াই পাপ।
- বিচার ব্যবস্থায় বা আদালতে ঘুষের ধ্বংসাত্মক প্রভাব দারুণভাবে অনুভব করা যায়।
২ বংশা ১৯:৪-৭ ‘তিনি বের্-শেবা থেকে শুরু করে ইফ্রয়িমের পাহাড়ী এলাকা পর্যন্ত লোকদের কাছে গিয়ে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে আবার তাদের মন ফিরিয়ে আনলেন। ৫ তিনি দেশের মধ্যে, অর্থাৎ যিহূদার প্রত্যেকটি দেয়াল-ঘেরা গ্রাম ও শহরে বিচারকদের নিযুক্ত করলেন। ৬ তিনি বিচারকদের বললেন, “আপনারা সাবধান হয়ে সব কাজ করবেন, কারণ আপনারা কোন মানুষের জন্য নয় বরং সদাপ্রভুর জন্যই বিচার করবেন। বিচারের রায় দেবার সময় তিনি আপনাদের সংগে থাকবেন। ৭ সদাপ্রভুর প্রতি ভয় আপনাদের মধ্যে থাকুক। সাবধানে বিচার করবেন, কারণ অবিচার, একচোখামী কিম্বা ঘুষ খাওয়ার সংগে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কোন সম্বন্ধ নেই।’
- যিহোশাফট কিভাবে যিহূদার পুনঃসংস্কার ঘটান? তিনি ঈশ্বরের ইচ্ছা ও আইন-কানুন নিয়ে শিক্ষা দেন এবং বিচার ব্যবস্থাকে সংশোধন করেন। এই গল্পে পুনসংস্কারের গুরুত্ব এবং একজন ভাল নেতা কত প্রভাব ফেলতে পারে, তা প্রকাশ করে।
সততার মূল ভিত্তি হল ঈশ্বরের চরিত্র
দ্বিতীয় বিবরণ ১০:১৭-১৮ ‘তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সব দেব-দেবতার উপরে এবং তিনি প্রভুদের প্রভু। তিনি মহান, শক্তিশালী এবং ভক্তিপূর্ণ ভয় জাগানো ঈশ্বর। তিনি কারও পক্ষ নেন না এবং ঘুষও খান না। ১৮ অনাথ ও বিধবাদের অধিকার তিনি রক্ষা করেন এবং তোমাদের মধ্যে বাস করা বিদেশীদের খেতে পরতে দিয়ে তাঁর ভালবাসা দেখান। তিনি তাদের খেতে পরতে দেন।’
- সততা এবং দুর্নীতি ও ঘুষের নিষেধের আসল ভিত্তি, উৎস ও কারণ হল ঈশ্বরেরই চরিত্র। কেন ন্যায্যতা আবশ্যক? কেন দুর্নীতি ঘৃণার বিষয়? কারণ ঈশ্বর ন্যায্য এবং কখনও অন্যায় করেন না।
- ঈশ্বর অনায্য কাজ করবেন না, তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত হবেন না, তিনি কখনও নিজের আইন ভাঙ্গবেন না, তিনি একেবারে সততায়পূর্ণ ও তার বাক্যের প্রতি বিশ্বস্ত।
ঘুষ নেওয়া বা ঘুষ দাবি করা

দ্বি বি ২৭:২৫ ‘সেই লোক অভিশপ্ত, যে নির্দোষ লোককে খুন করবার জন্য ঘুষ নেয়।’ তখন সকলে বলবে, ‘আমেন।’
গীত ১৫:১-৫ ‘হে সদাপ্রভু, তোমার আবাস-তাম্বুতে কে দাঁড়াবার যোগ্য? তোমার পবিত্র পাহাড়ে কে বাস করার যোগ্য? ২ সে-ই যোগ্য, যে নিখুঁত জীবন কাটায়, ন্যায় কাজ করে, সত্যে ভরা অন্তর থেকে কথা বলে, ৩ পরের নিন্দা করে না, সংগীর ক্ষতি করে না, প্রতিবেশীর সম্মান নষ্ট করে না, …৫ সুদ ছাড়াই টাকা ধার দেয়, আর ঘুষ খেয়ে নির্দোষীর ক্ষতি করে না। যে এইভাবে চলে সে সব সময় স্থির থাকবে।’
গীত ২৬:৯-১০ ‘পাপীদের দলে তুমি আমাকে ফেলো না; যারা রক্তপাত করতে ভালবাসে তাদের সংগে আমাকে মেরে ফেলো না। ১০ তাদের হাতে রয়েছে মন্দের পরিকল্পনা, তাদের ডান হাত ঘুষে ভরা।’
হিতো ১৭:২৩ ‘বিচারের রায় ঘুরিয়ে দেবার জন্য দুষ্ট লোক লুকিয়ে রাখা ঘুষ নেয়।’
উপদেশক ৭:৭ ‘জ্ঞানী লোক যদি জুলুম করে তবে সে বোকা হয়ে যায়, আর ঘুষ অন্তর নষ্ট করে।’
- ঘুষ নেওয়া হল অভিশাপ, ঈশ্বর তার দোষ ধরেন ও তা ঈশ্বরের উপস্থিতি বা তার কাছে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে বাধা দেয়।
- ঘুষগ্রহীতার হৃদয় কলুষিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত করে। ঘুষ নেওয়া পাপ, অপরাধ, অপকর্ম, বিবেকের বিরুদ্ধে কাজ এবং ঘুষ ভুল কাজ করতে উৎসাহ দেয়।
- যে ঘুষ দেয় তার হৃদয়ও কলুষিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে: নিজেকে স্মার্ট মনে করা, পদ্ধতিকে প্রতারণা করলাম মনে করা, অজুহাত দেখানো (এখানে আর কোন উপায় ছিল না), ঘুষ দেওয়াকে প্রতিরক্ষা করা, নিজেকে ক্ষমতাহীন ভাবা, অপমানিত হওয়া, নিজেকে নিরাপত্তাহীন মনে করা, হতাশায় পড়া।
ঈশ্বর যিহূদার দোষ ধরেন
যিশাইয় ১:২৩ ‘তোমার শাসনকর্তারা বিদ্রোহী ও চোরদের সংগী; তারা সবাই ঘুষ খেতে ভালবাসে আর উপহার পেতে চায়। তারা অনাথদের পক্ষে থাকে না আর বিধবাদের মামলা তাদের কাছে স্থান পায় না।’
যিশাইয় ৫:২২-২৩ ‘ধিক্ সেই লোকদের, যারা আংগুর-রস খাওয়ার বেলায় ওস্তাদ আর মদ মিশাবার কাজে পাকা, ২৩ যারা ঘুষ খেয়ে দোষীকে ছেড়ে দেয় আর নির্দোষদের জন্য ন্যায়বিচার করতে অস্বীকার করে।’
মীখা ৩:১১ ‘সেখানকার নেতারা ঘুষ খেয়ে বিচার করে, পুরোহিতেরা বেতন নিয়ে শিক্ষা দেয় এবং নবীরা টাকা নিয়ে ভাগ্য গণনা করে। আর তবুও তারা সদাপ্রভুর সাহায্যের আশা করে বলে, “সদাপ্রভু কি আমাদের মধ্যে নেই? আমাদের উপর কোন বিপদ আসবে না।’
মীখা ৭:৩ ‘অন্যায় কাজ করতে তাদের দু’হাতই পাকা। নেতারা উপহার দাবি করে, বিচারকেরা ঘুষ খায়, বড় লোকেরা যা চায় তা জানিয়ে দেয়; তারা সবাই একসংগে ষড়যন্ত্র করে।’
- ঈশ্বর যিহূদার রাজনৈতিক ও আত্মিক নেতাদের দোষারোপ করেন: আইন ভাঙ্গা, বিকৃত হওয়া, লোভী হওয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার করা, অন্যায্যতা করা, ঈশ্বরকে ভুলভাবে প্রদর্শন করার জন্য।
- ঈশ্বর শুধুমাত্র ধর্মের বিষয়ে তাদের দোষ ধরেন (দেবতাপূজা) তা নয় কিন্তু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সামাজিক অন্যায়ের দোষও ধরেন। ঈশ্বর তা খুবই গুরুত্বের সাথে দেখেন।
হিতো ১৫:২৭ লোভ > পারিবারিক সমস্যায়, ঘুষ ঘৃণা করা > জীবন
লোভী লোক তার পরিবারে কষ্ট নিয়ে আসে, কিন্তু যে লোক ঘুষ ঘৃণা করে সে পরিপূর্ণ জীবন পাবে।
- অন্যায় লাভ মানে পরিবারের উপর সমস্যা নিয়ে আসা। আমরা বলি: অন্যায় লাভ মানে পরিবার সুখী হবে, বিলাসীতার, ভাল জীবন-যাপনের ও বিদেশে পড়াশুনা করার সুযোগ থাকবে, পরিবার কৃতজ্ঞ হবে।
- কিন্তু: যে মা বিলাসিতা দাবি করে, যে বাবা দুর্নীতি করে ধনী হয়, তাদের ছেলেমেয়েরা হৃদয় থেকে তাদেরকে সম্মান করতে পারবে না।
- যারা ঘুষ ঘৃণা করে তারা পরিপূর্ণ জীবন পাবে। পদটি বলে না ‘যারা কখনও ঘুষ দেয় না’ বরং ‘যারা ঘুষ ঘৃণা করে’। আমাকে যখন ঘুষ দেওয়াতে বাধ্য করা হয়, যেন নিজে তা হৃদয় থেকে ঘৃণা করি, নিজেকে স্মার্ট না ভাবি, ‘আমি জানি কিভাবে এটা খেলতে হয়’।
- উদাহরণ: একজন বিশ্বাসী ব্যবসাহী, যিনি আড়াই বছর ঘুষ না দেওয়ার প্রচেষ্টার পর কান্না করে ঘুষ দেয়।
- লোভের পিছনে কি মনোভাব আছে? আমি ঈশ্বরের দোষ ধরি যে তিনি যথেষ্ট যোগান দেন নি, লোভ হল অসন্তুষ্ট, অবিশ্বাস, অগ্রাহ্য। এর ফলে আমি পরিকল্পনা করি অন্যভাবে নিজের জন্য যোগাড় করতে।
- ঘুষ নিষেধ, কিন্তু কিভাবে বুঝব এই দাবী কি একটি ফী? একটি সার্ভিস চার্জ? একটি দান?
- ঘুষ নিষেধ, কিন্তু ‘সুবিধা পাওয়ার জন্য সুবিধা দিলাম, তা কেমন? প্রধান লোকের জন্য কিছু করলাম, তা কি কিছু ফিরে পাওয়ার আশায় করলাম? অনেক বার নিজের হৃদয়ের উদ্দেশ্যই জানা সহজ না, আর একজনের হৃদয় বিচার করা তো আরো কঠিন।
ঘুষ বা উপহার দেওয়া
প্রেরিত ২৪:২৬-২৭ ‘তিনি আশা করেছিলেন পৌল তাঁকে ঘুষ দেবেন। সেইজন্য বারবার পৌলকে ডাকিয়ে এনে তিনি তাঁর সংগে কথা বলতেন। ২৭ দু’বছর পার হয়ে গেলে পর ফীলিক্সের জায়গায় পর্কীয় ফীষ্ট আসলেন। ফীলিক্স যিহূদীদের খুশী করবার জন্য পৌলকে জেলখানাতেই রেখে গেলেন।’
- পৌল ঘুষ দিতে অস্বীকার করেন। হতে পারে চাইলে পৌল টাকা সংগ্রহ করতে পারতেন, হয়তো অন্য বিশ্বাসীরা স্বেচ্ছায় তার কাছে প্রস্তাব করেছিল, তার জন্য টাকা দিতে। পৌল ঘুষ দেবেন না, ঘুষ নেওয়া তো দূরের কথা।
- আমরা বলি পৌল একজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কার্যকারী ও সফল প্রচারক ও প্রেরিত ছিলেন, তাকে কারণ ছাড়া দুই বছর জেলে আটকানো কোনো রকম ঠিক না। কিন্তু পৌল বিষয়টি এভাবে দেখেন নি।
হিতো ১৭:৮ ‘যে লোক ঘুষ দেয় তার কাছে ওটা সৌভাগ্যের পাথরের মত; সে যে দিকে ফেরে সেই দিকেই সফল হয়।’
- যারা ঘুষ দেয় তারা ঘুষ কার্যকারী মনে করে: ‘কাজ হইল তো’, ‘না দিলে চলে না’। কিন্তু এখানেও একটি ‘মুদ্রাস্ফীতি’ কাজ করে: যত বেশী ঘুষ দেই, আরো বেশী চাওয়া হবে। একবার ঘুষ দিলে সব সময় ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ দিলাম মানে আমি আর জানি না কি হত যদি ঘুষ না দিতাম। আমি মনে করব যে ঘুষ না দিলে হত না। তা কিন্তু প্রমাণিত না, কিন্তু তা আমি নিজের কাছে প্রমাণ করতে থাকি।
- ঘুষ দেওয়ার সাথে স্মার্ট বা চালাক ভাবা, ‘খেলাটা জানি’, ‘কাজ সাধন করতে জানি’, ‘লক্ষ্য কিভাবে অর্জন করতে হয় জানি’। শুরুতে ঘুষ দেওয়া কষ্ট মনে করি, কিন্তু ঘুষ যদি দিতে থাকি তবে নিজেকে সংবর্ধনা দেওয়ার একটি মনোভাব উঠে।
হিতো ১৮:১৬ ‘উপহার মানুষের জন্য পথ করে দেয় আর বড়লোকদের সামনে তাকে উপস্থিত করে’
- ১৭:৮ পদের মত: মনে হচ্ছে যে ঘুষই কার্যকারী। কিন্তু ঘুষ দিলে মানে নিজেকে দুর্বল করে ফেলা: নিজেকে দুর্বল পরিচয় দেওয়া, নিজের অধীনতা স্বীকার করা, ‘চাপ দিলে কাজ হয়’ অথবা ‘যে কোনো কিছু করতে রাজী’, যদি আমি নিজের পরিচয় এমনভাবে করি, তার মানে পরবর্তী অপব্যবহারের জন্য নিজেকে খুলে দেওয়া।
হিতো ১৯:৬ ‘উঁচু পদের লোকের দয়া পাবার জন্য অনেকেই তার খোসামোদ করে, আর যে দান করে সবাই তার বন্ধু হয়।’
- উদারতা ভাল ও খুশির বিষয় কিন্তু এর কারণে মানুষ হয়তো বন্ধুত্বের সাথে অন্য উদ্দেশ্যে যোগ দেয়।
হিতো ২২:১৬ ‘ধন লাভের জন্য যে লোক গরীবের উপর অত্যাচার করে কিম্বা যে লোক ধনীদের দান করে তাদের দু’জনেরই অভাব হয়।’
- অন্যায্যতার মাধ্যমে টাকা অর্জন করার শেষ ফল হবে ক্ষতি বা অভাব। ধনীকে দান দেওয়ার শেষ ফল হবে ক্ষতি। কেন তা করব? আমি আশা করি যে পরবর্তীতে একবার কোন সুবিধা, অনুগ্রহ, প্রবেশ, দরজা খোলা, নিরাপত্তা, সমর্থন, সাহায্য বা গুরুত্ব পাব। কিন্তু আসলেই আমি নিজেকে খুবই দুর্বল জায়গায় রাখি, ধনীরা আমার দান নিয়ে মুগ্ধ নয়, (দানটি তাদের দরকার নেই, তারা মূল্যও দেবে না) কিন্তু আমার জন্য এটা ক্ষতি (এই টাকা নিয়ে আসলে কি করা উচিত ছিল?)
প্রেরিত ৮:১৮-১৯ ‘যখন শিমোন দেখল যে, প্রেরিত্দের হাত রাখবার মধ্য দিয়ে পবিত্র আত্মাকে দেওয়া হল তখন সে তাঁদের কাছে টাকা এনে বলল, ১৯ “আমাকেও এই শক্তি দিন যেন আমি কারও উপরে হাত রাখলে সে পবিত্র আত্মা পায়।”
- মথি ১০:৮ পদে যীশু শিষ্যদের কাছে বলেন: ‘তোমারা বিনামূল্যে পেয়েছ, বিনামূল্যেই দিয়ো!’ প্রেরিত এই পদগুলিতে দেখা যায় যে পিতর তা বুঝেছেন ও মান্য করেন।
- পিতর এখানে শক্তিশালীভাবে লোভের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। তিনি শিমোনের মন্দ ইচ্ছা, মন্দতা, তিক্ততা, ও ক্ষমতার লোভ বুঝে তাকে চ্যালেঞ্জ করেন।
উপসংহার
- ঘুষ দিয়ে স্বর্গে যাওয়ার পথ পাবেন না। ঈশ্বরকে প্রভাবিত করা যায় না। ঈশ্বর মেধা গ্রহণ করবেন না (অথবা: সঠিক মেধা নেই বলে তিনি গ্রহণ করেন না)। ঈশ্বরকে কেনা যায় না। ঈশ্বরকে ‘তেল’ দেওয়া যায় না।
- কেন বিচারের ক্ষেত্রে ঘুষ ধ্বংসাত্মক? কারণ ঘুষের ফলে অন্ধতা, পক্ষপাতিত্ব, অবিচার ও নতুন অন্যায় সৃষ্টি হয়।
- কেন ঘুষ নিষেধ? ঈশ্বর বলেছেন যে সকল মানুষ সমান কিন্তু ঘুষের কারণে গরীবদের চেয়ে ধনীদের প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং সাধারণ লোকদের চেয়ে শক্তিশালী লোকদের প্রাধান্য দেওয়া। তাই তা মানে অবিচার ও নতুন অন্যায় সৃষ্টি করা।
- ঘুষ খুবই শক্তিশালী জিনিস, এমন কি জ্ঞানীর চোখ অন্ধ করে দেয়।
- ঘুষ নেওয়া পরিষ্কারভাবে নিষেধ করা হয়েছে, ঘুষ দেওয়ার বিষয়ে শক্তিশালীভাবে নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে শক্তভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, এবং অবশ্যই ঘৃণা করতে হবে।
- কোন পরিস্থিতিতে যখন আপনার বেশী ক্ষমতা আছে, তখন আপনি ঘুষ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশী দায়ী। একটি পরিস্থিতিতে যদি আপনার কোনো প্রভাব, সুযোগ বা উপায় নেই, তবে ঘুষ দেওয়ার দোষ কম।
- যদি আপনি একটি বেআইনী কাজ ঘটানোর জন্য ঘুষ দেন, তা অবশ্যই পাপ। কিন্তু যদি আপনাকে ঘুষ দেওয়ায় বাধ্য করা হয় এমন কিছুর জন্য যা আপনার পাওয়া উপযুক্ত ও আইনগত অধিকার (যেমন উপযুক্ত ভাবে আবেদন করা সরকারি অনুমোদন, যা অন্যভাবে অর্জন করা যায় না), তবে দোষ নেই বা কম।
- ঈশ্বরের নির্দিষ্ট পরিচালনা ও পবিত্র আত্মার সাহায্যের যাচ্ঞা করুন, ঘুষ যখন দাবী করা হয়, কিভাবে সাড়া দিতে পারেন, কিভাবে মোকাবেলা করতে পারেন, কি বলা দরকার, (রশীদ চাওয়া, ঘোষণা দেওয়া যে আপনি দেশের দুর্বলদের উপর কোন প্রভাব ফেলবেন না ইত্যাদি।
- কিভাবে বুঝব দাবীটি আইনগত কিনা? দাবীটি কি ঘুষের দাবী? বা একটি উপযুক্ত ফী? বা একটি সার্ভিস চার্জ? বিষয়টা সহজ নয়।