ধর্ম ১৪ – বাইবেলে শয়তান ও মন্দ আত্না সম্বন্ধীয় শিক্ষা
এই অধ্যণে প্রথম বাইবেলে যতটা শব্দ শয়তান ও মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয় ব্যবহৃত ততটা এখানে উঠানো হয়েছে। পরে এর একটি সারাংশ দেখানো হয়েছে (ছক দেখুন) এবং কিছু ভিক্তিক চিন্তা দেওযা হয়েছে। শয়তান সম্বন্ধে পুরাতন নিয়মের এবং নতুন নিয়মে সেই অল্প পদগুলো থেকে কি শেখা যায়, তা শেষের দিকে দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন শব্দের অধ্যয়ন – পুরাতন নিয়ম
ছাই রং যেখানে শব্দটি শয়তান বা মন্দ আত্মা বুঝায় না (হতে পারে)।
কালো রং যেখানে শব্দটি শয়তার বা মন্দ আত্মা বুঝায় (হতে পারে)।
H7854 ‘satan’ অর্থ: শত্রু (মানুষের শত্রু, স্বর্গদূতের শত্রু), ভাল যা তার শত্রু, শয়তান
গণনা ২২:২২,৩২ একটি স্বর্গদূত যা বিলিয়মকে বাধা দেয় ‘বিলিয়মের শত্রু’ বলা হয়
১ শমূ ২৯:৪ পলেষ্টীয়েরা ভয় পায় যে দায়ূদ যুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে যাবেন, তাদের শত্রু হয়ে যাবেন
২ শমূ ১৯:২২ দায়ূদ সরূয়ার ছেলেদের ‘আমার শত্রুরা’ বলেন
১ রাজা ৫:৪ দায়ূদের রাজত্বের সময়ে ইস্রায়েল শান্তিতে, শত্রু নেই
১ রাজা ১১:১৪ ঈশ্বর শলোমনের বিরুদ্ধে একজন শত্রু উঠিয়ে নিয়ে আসেন: ইদোমীয় হদদ
১ রাজা ১১:২৩,২৫ ঈশ্বর শলোমনের বিরুদ্ধে আর একজন শত্রু উঠিয়ে নিয়ে আসেন: রেষোণ
১ বংশা ২১:১ শয়তান দায়ূদকে পরিচালনা করে যেন ইস্রায়েলকে গুনার আদেশ দেন
ইয়োব ১:৬,৭,৮,৯,১২, ২:১,২,৩,৪,৬,৭ শয়তান ইয়োবের দোষ ধরে ও তাকে আক্রমণ করে
গীত ১০৯:৬ দায়ূদ অভিযোগ করেন যে তার শত্রুরা একজন দোষারোপকারী ঠিক করতে চায়
সখরিয় ৩:১,২ একটি দর্শনে শয়তান মহাপুরোহিত যিহোশূয়কে বাধা দেয় ও দোষারোপ করে
১৩ পদ শয়তান সম্বন্ধীয়
০ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
H5175 ‘nachash’ সাপ, হিস্হিস করা
আদি ৩:১,২,৪,১৩,১৪ শয়তান সাপের চেহারায় এদন বাগানে হবার সাথে কথা বলে
গণনা ২১:৬,৭,৯, ২ রাজা ১৮:৪ ইস্রায়েলের শাস্তি হিসাবে ঈশ্বর সাপ পাঠায়, ব্রোঞ্জের সাপ
গীত ৫৮:৪ সাপের বীষ
গীত ১৪০:৩ সাপের মত জিহ্বা
হিতো ২৩:৩২ মদ খেলে শেষে মদ বিষাক্ত সাপের মত কামড় দেয়
যিশা ১৪:২৯ সাপ এখানে রাজনৈতিক ক্ষমতা বুঝায়
যিশা ৬৫:২৫ ঈশ্বরের রাজ্যে শাস্তি, সাপ ধূলা খাবে
যির ৪৬:২২ সাপের মত কণ্ঠস্বর
মীখা ৭:১৭ সাপের মত ধূলা খায়
যিশাইয় ২৭:১ লিবিয়াথনকে
ইয়োব ২৬:১৩ সব কিছুর উপরে সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতা
৫ পদ শয়তান সম্বন্ধীয়
০ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
H8577 ‘tannyn’ দানব, সাগরের বা ভূমির দৈত্য, সমুদ্র সর্প, শৃগাল, তিমি
আদি ১:২১, ইয়োব ৭:১২, ৩০:২৯, গীত ৯১:১৩, ৭৪:১৩, ১৪৮:৭, যিশা ২৭:১, ৫১:৯, যির ১০:২২
ঈশ্বরের ক্ষমতা তার সবচেয়ে শক্তিশালী সৃষ্ট জীব-জন্তুদের উপরে
যাত্রা ৭:৯,১০,১২ মোশির লাঠি সাপ হয়ে যায়
২য় বিবরণ ৩২:২২ রূপকভাবে ব্যবহৃত মদ বুঝানোর জন্য
গীত ৪৪:১৯, যিশা ১৩:২২, যির ৯:১১, ১৪:৬, ৪৯:৩৩, ৫১:৩৭ রূপকভাবে ব্যবহৃত জনশূন্য মরুভূমির জন্য
যির ৫১:৩৪ (নেব), যিহি ২৯:৩, ৩২:২ (ফরৌণ) রূপকভাবে ব্যবহৃত দখলকারী বা অত্যাচারীর জন্য
নহিমায় ২:১৩ যিরূশালেমের একটি কূয়ার নাম
০ পদ শয়তান সম্বন্ধীয়
০ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
H7307 ‘ruach’ আত্মা, শ্বাস-নিশ্বাস, বাতাস, জীবন, ঈশ্বরের আত্মা, মানুষের আত্মা, …
লেবীয় ২০:২৭ যারা ভূতের মাধ্যম হয় বা মন্দ আত্মার সঙ্গে সম্বন্ধ রাখে > মৃত্যুদণ্ড
গণনা ৫:১৪,৩০ যদি অন্তর্জ্বালাজনক আত্মার আবেশ (মন সন্দেহে বিষিয়ে ওঠা) তবে এই নিয়ম পালন
বিচারক ৯:২৩ অবীমেলক ও শিখিমের লোকদের মধ্যে শত্রুতা তৈরি করার জন্য ঈশ্বর মন্দ আত্মা পাঠান
১ শমূ ১৬:১৪-১৬,২৩, ১৮:১০, ১৯:৯ ঈশ্বরের কাছ থেকে মন্দ আত্মা শৌলের উপর আসে
১ শমূ ২৮:৭ ভূতড়িয়া স্ত্রীলোক, মৃত লোকের আত্মার সংগে বলার একজন
১ রাজা ২২:২১ ঈশ্বরের সামনে একটি আত্মা রাজা আহবকে প্রতারিত করবে
১ রাজা ২২:২২-২৩ আহাব ও যিহোশাফটের নবীদের মুখে মিথ্যা বলার আত্মা
১ বংশা ১০:১৩ শৌল মন্দ আত্মার সংগে সম্বন্ধ রাখার লোকের কাছে যান
২ বংশা ১৮:২০ ঈশ্বরের সামনে একটি আত্মা রাজা আহাবকে প্রতারিত করবে
২ বংশা ১৮:২১-২২ আহাব ও যিহোশাফটের নবীদের মুখে মিথ্যা বলার আত্মা
২ বংশা ৩৩:৬ রাজা মনঃশি যারা কুলক্ষণ দেখে ভবিষ্যতের কথা বলে, মায়াবিদ্যা ও যাদুবিদ্যা ব্যবহার করে এবং ভূতের মাধ্যম হয় আর মন্দ আত্মাদের সংগে সম্বন্ধ রাখে তিনি তাদের সংগে
ইয়োব ৪:১৫ একটা আত্মা আমার সামনে দিয়ে চলে গেল, আর আমার গায়ের লোম খাড়া হয়ে উঠল।
ইয়োব ২৬:৪ ইয়োব চ্যালেঞ্জ করেন: তোমা হইতে কাহার নিশ্বাস নির্গত হইল?
যিশা ১৯:১৪ ঈশ্বর তাদের অন্তরে কুটিলতার আত্মা মিশাইয়া দিয়াছেন
যিশা ২৯:৪ ভূতুড়িয়ার ন্যায় তোমার রব মৃত্তিকা হইতে নির্গত হইবে
হোশেয় ৪:১২, ৫:৪ ব্যভিচারের আত্মা
মীখা ২:১১ বায়ুর ও মিথ্যা কথার অনুগামী কোন লোক যদি মিথ্যা বলে তবে তারা খুশি
সখরিয় ১৩:২ ঈশ্বর অশুচিতার আত্মাকে দেশ থেকে সরিয়ে দেবেন
০ পদ শয়তান সম্বন্ধীয়
২৬ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
H5387 ‘nasiy’, H8323 ‘sar’ রাজপুত্র, রাজা, (সেনা)প্রধান, শাসনকর্তা, অধ্যক্ষ, নেতা, মাথা, প্রভু
অনেক অনেক পদ প্রায় সব সময় মানুষ বুঝায়, দানিয়েল পুস্তকেও
দানিয়েল ১০:১৩, ২০, ২০ ৩ বার একটি মন্দ আত্মা বুঝায় (পারস্য-রাজ্যের অধ্যক্ষ, গ্রীস-রাজ্যের অধ্যক্ষ)
দানিয়েল ১০:২১, ১২:১ ২ বার স্বর্গদূত মিখায়েল বুঝায় (ইস্রায়েলের অধ্যক্ষ)
দানিয়েল ৮:২৫, ৯:২৫-২৬ ২ বা ৩ বার মশীহকে বুঝায়
০ পদ শয়তান সম্বন্ধীয়
সর্বোচ্চ ৪ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
বিভিন্ন শব্দের অধ্যয়ন – নতুন নিয়ম
G1228 ‘diabolos’ শয়তান, দোষারোপকারী, নিন্দাকারী, দিয়াবল, অপবাদক, বিপক্ষ
মথি ৪:১,৫,৮,১১ মরুভূমিতে যীশুর প্রলোভনের সময়ে শয়তান
মথি ১৩:৩৯ শ্যামাঘাসের দৃষ্টান্ত: শয়তান সে শত্রু যে শ্যামাঘাসের বীজ বুনে
মথি ২৫:৪১ অবাধ্য মানুষ > চিরকালের আগুনে যা শয়তান ও তার দূতদের জন্য প্রস্তুত
লূক ৪:২,৩,৫,৬,১৩ মরুভূমিতে যীশুর প্রলোভনের সময়ে শয়তান
লূক ৮:১২ বীজ বুনার দৃষ্টান্ত, শয়তান লোকদের হৃদয় থেকে ঈশ্বরের বাক্য তুলে নেয়
যোহন ৬:৭০ ১২ শিষ্যদের মধ্যে একজন হল শয়তান
যোহন ৮:৪৪ যিহূদীদের বলেন যে তাদের পিতা শয়তান
যোহন ১৩:২ শয়তান যিহূদার মনে যীশুকে ধরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা জাগিয়ে দিয়েছিল
প্রেরিত ১০:৩৮ পিতর কর্ণীলিয়ের কাছে প্রচার: যারা শয়তানের হাতে কষ্ট পেত তাদের যীশু মুক্ত করেছেন
প্রেরিত ১৩:১০ পৌল সাইপ্রাসে বর-যীশু নামে একজন যাদুকরকে শয়তানের সন্তান বলেন
ইফিষীয় ৪:২৭ পৌল ইফিষীয়দের কাছে বলেন: শয়তানকে কোন সুযোগ বা স্থান দিয়ো না
ইফিষীয় ৬:১১ পৌল ইফিষীয়দের কাছে বলেন: শয়তানের সব চালাকির বিরুদ্ধে শক্ত হয়ে দাঁড়াও
১ তীম ৩:৬ অধ্যক্ষের ক্ষেত্রে: নতুন বিশ্বাসীকে নিযুক্ত করো না, শয়তানকে দেওয়া শাস্তির যোগ্য হবেন
২ তীম ৩:৭ অধ্যক্ষের ক্ষেত্রে: সুনাম থাকা দরকার, যেন…শয়তানের ফাঁদে না পড়েন
১ তীম ৩:১১ পরিচালকের স্ত্রী বা মহিলা পরিচালিকা যেন নিন্দাকারী (শয়তান) না হয়
২ তীম ২:২৬ শয়তানের ফাঁদ থেকে পালিয়ে আসবে, কারণ শয়তান…তাদের ধরেছিল
২ তীম ৩:৩ তারা পরের নিন্দা করবে (শয়তান), নিজেকে দমন করতে পারবে না
তীত ২:৩ বয়স্ক স্ত্রীলোকদের বলবে…নিন্দা করা (শয়তান) বা মাতাল হওয়া উচিত নয়
ইব্রীয় ২:১৪ যীশু শয়তানকে ধ্বংস করেছেন যার মৃত্যুর উপরে ক্ষমতা ছিল
যাকোব ৪:৭ শয়তানকে রুখে দাঁড়াও, তাহলে সে তোমাদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে
১ পিতর ৫:৮ সতর্ক থাক কারণ তোমাদের শত্রু শয়তান গর্জনকারী সিংহের মত
১ যোহন ৩:৮ (২ বার) যে পাপ করতেই থাকে সে শয়তানের, কারণ শয়তার প্রথম থেকেই পাপ করেছে
১ যোহন ৩:১০ যারা ন্যায় কাজে ব্যস্ত > ঈশ্বরের সন্তান, প্রকাশ পায় কারাই বা শয়তানের সন্তান
যিহূদা ১:৯ মীখায়েল যখন মোশির দেহ নিয়ে শয়তানের সংগে তর্ক করছিলেন
প্রকাশিত ২:১০ তোমাদের ক্ষ্টভোগ করতে হবে, শয়তান কাউকে কাউকে জেলে দেবে
প্রকাশিত ১২:৯ তখন সেই বিরাট দানবকে…পৃথিবীতে ফেলে দেওয়া হল…সেই পুরানো সাপ যাকে দিয়াবল বা শয়তান বলা হয়…সে সমস্ত লোককে ভুল পথে নিয়ে যায়
প্রকাশিত ১২:১২ কিন্তু পৃথিবী ও সমুদ্র, ধিক্ তোমাদের! কারণ শয়তান তোমাদের উপর নেমে এসেছে
প্রকাশিত ২০:২ তিনি সেই দানবকে, পুরানো সাপ, দিয়াবল ও শয়তান > ১০০০ বছরের জন্য বাঁধলেন
প্রকাশিত ২০:১০ যে তাদের ভুল পথে নিয়ে গিয়েছিল সেই শয়তানকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ফেলে দেওয়া হল
৩৪ পদ শয়তান সম্বন্ধীয়
০ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
G1139, 40,42 daimonizomai, daimon মন্দ আত্ম, অশুচি আত্মা, শয়তান
মন্দ আত্মা পাওয়া লোক, যীশু মন্দ আত্মা তাড়ান, ফরীশীরা বলেন যে যীশু মন্দ আত্মায় পাওয়া:
মথি ৪:২৪, ৭:২২, ৮:১৬, ৮:২৮, ৮:২৯, ৮:৩১, ৮:৩৩, ৯:৩২, ৯:৩৪, ১০:৮, ১১:১৮, ১২:২২, ১২:২৪, ১২:২৭, ১২:২৮, ১৫:২২, ১৭:১৮। মার্ক ১:৩২, ১:৩৪, ১:৩৯, ৩:১৫, ৩:২২, ৫:১২, ৫:১৫, ৫:১৬, ৫:১৮, ৬:১৩, ৭:২৬, ৭:২৯, ৭:৩০, ৮:৩৬, ৯:৩৮, ১৬:৯, ১৬:১৭। লূক ৪:৩৩, ৪:৩৫, ৪:৪১, ৭:৩৩, ৮:২, ৮:২৭, ৮:৩৩, ৮:৩৫, ৮:৩৮, ৯:১, ৯:৪২, ৯:৪৯, ১০:১৭, ১১:১৪, ১১:১৫, ১১:১৮, ১১:১৯, ১১:২০, ১৩:৩২। যোহন ৭:২০, ৮:৪৮, ৮:৪৯, ৮:৫২, ২১০:২০, ১০:২১
১ তীম ৪:১ ভবিষ্যতে কিছু লোক…ছলনাকারী আত্মা ও মন্দ আত্মাদের শিক্ষার দিকে ঝুঁকে পড়বে
যাকোব ২:১৯ এক ঈশ্বরে বিশ্বাস কর?…মন্দ আত্মারাও তো তা বিশ্বাস করে এবং ভয়ে কাঁপে
প্রকাশিত ৯:২০ অনুতপ্ত লোক: মন্দ আত্মাদের এবং…প্রতিমার পূজা করতেই থাকল।
প্রকাশিত ১৬:১৪ মন্দ আত্মাগুলো আশ্চর্য আশ্চর্য কাজ করছিল…জগতের রাজাদের একসংগে জড়ো করল
প্রকাশিত ১৮:২ বাবিল: মন্দ আত্মাদের থাকবার জায়গা, প্রত্যেকটি মন্দ আত্মার আড্ডাখানা…হয়েছে
প্রেরিত ১৭:১৮ এথেন্সের লোকেরা বলে: পৌল ‘বোধ হয় সে বিদেশী দেব-দেবীর কথা প্রচার করছে’
১ করি ১০:২০,২১ অযিহূদীরা যা উৎসর্গ করে তা ঈশ্বরের কাছে করে না, মন্দ আত্মাদের কাছেই করে
০ পদ শয়তান সম্বন্ধীয়
৬৫ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
G4151 ‘pneuma’ আত্মা, পবিত্র আত্মা, মানুষের আত্মা, দূত, জীবন ইত্যাদি
মন্দ আত্মা, অশুচি আত্মা, মন্দ আত্মা পাওয়া মানুষদের আত্মা, যে আত্মা যীশু তাড়ান
মথি ৮:১৬, ১০:১, ১২:৪৩, ১২:৪৫। মার্ক ১:২৩, ১:২৬, ১:২৭, ৩:১১, ৩:২০, ৫:২, ৫;৮, ৫:১৩, ৬:৭, ৭:২৫, ৯:১৭, ৯:২০, ৯:২৫। লূক ৪:৩৩, ৪:৩৬, ৬:১৮, ৭:২১, ৮:২, ৮:২৯, ৯:৩৯, ৯:৪২, ১০:২০, ১১:২৪, ১১:২৬, ১৩:১১। প্রেরিত ৫:১৬, ৮:৭, ১৬:১৬, ১৬:১৮, ১৯:১২, ১৯:১৩, ১৯:১৫, ১৯:১৬। ২ করি ১১:৪। ১ যোহন ৪:১, ৪:৩। প্রকাশিত ১৬:১৩, ১৬:১৪, প্রকাশিত ১৮:২
মথি ৮:১৬ এই পদে ‘daimon’ এবং ‘pneuma’ একইভাবে ব্যবহৃত
লূক ২৪:৩৭,৩৯ শিষ্যরা ভিত মনে করে ভূত (‘pneuma’) দেখে, যীশু প্রমাণ করেন যে তিনি ভূত নন
ইফিষীয় ২:২ সেই দুষ্ট আত্মা ঈশ্বরের অবাধ্য লোকদের মধ্যে কাজ করছে
০ পদ শয়তান সম্বন্ধীয়
৪৭ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
G32 ‘aggelos’ দূত, স্বর্গদূত, পাঠানো একজন, সংবাদদাতা, মন্দ আত্মা
মন্দ আত্মাদের বুঝায়:
মথি ২৫:৪১ শয়তান এবং তার দূতদের জন্য যে চিরকালের আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে তার মধ্যে যাও।
রোমীয় ৮:৩৮ স্বর্গদূত বা শয়তানের দূত,…ঈশ্বরের ভালবাসা থেকে দূরে সরিয়ে দিতে পারবে না।
২ করি ১১:১৪* শয়তানও নিজেকে আলোতে পূর্ণ স্বর্গদূত বলে দেখাবার উদ্দেশ্যে নিজেকে বদলে ফেলে।
২ করি ১২:৭ আমাকে কষ্ট দেবার জন্য আমার দেহে একটা কাঁটা, অর্থাৎ শয়তানের দূত দেওয়া হয়েছিল।
গালাতীয় ১:৮ তা আমরা নিজেরাই করি বা কোন স্বর্গদূতই করেন, তবে তার উপর অভিশাপ পড়ুক।
২ পিতর ২:৪ স্বর্গদূতেরা যখন পাপ করেছিল…ঈশ্বর নরকের অন্ধকার গর্তে ফেলে…বিচারের জন্য রেখে
যিহূদা ১:৬* স্বর্গদূতেরা নিজেদের অধিকার রক্ষা না করে > চিরকালের জন্য অন্ধকারে বেঁধে রেখেছেন।
প্রকাশিত ৯:১১* অতল গর্তের…দূতের নাম ছিল আবদ্দোন আর…আপল্লুয়োন, অর্থাৎ ধ্বংসকারী।
প্রকাশিত ১২:৭ মীখায়েল ও তাঁর অধীন দূতেরা সেই দানব ও তাঁর দূতদের সংগে যুদ্ধ করলেন।
প্রকাশিত ১২:৯ তখন সেই বিরাট দানবকে ও তাঁর সংগে তার দূতদের পৃথিবীতে ফেলে দেওয়া হল এমন পদ
যেখানে পরিষ্কারভাবে বুঝা যায় না তা মন্দ বা ভাল দূত:
প্রেরিত ২৩:৮ সদ্দূকীরা বলে পুনরুত্থান, স্বর্গদূত ও কোন আত্মা নেই; ফরীশীরা এ সবই বিশ্বাস করে
১ তীম ৩:১৬ সেই সত্য এই- তিনি মানুষ হিসাবে প্রকাশিত হলেন;…স্বর্গদূতেরা তাঁকে দেখেছিলেন;
১ পিতর ৩:২২ যীশু স্বর্গে গেছেন… মহাকাশের দূতেরা, ক্ষমতার অধিকারীরা, শাসনকর্তারা তাঁর অধীনে
১ করি ৪:৯ আমরা সারা জগতের কাছে, অর্থাৎ স্বর্গদূত আর লোকদের কাছে যেন ঠাট্টার পাত্র হয়েছি
১ করি ৬:৩ তোমরা কি জান না আমরা স্বর্গদূতদেরও বিচার করব?
১ করি ১১:১০ সেইজন্য এবং স্বর্গদূতদের জন্য অধীনতার চিহ্ন হিসাবে মাথা ঢাকা স্ত্রীলোকের উচিত
কলসীয় ২:১৮ স্বর্গদূতদের উপাসনা করা যারা দরকারী বলে…তারা যেন তোমাদের…বাধা না জন্মায়
২ পিতর ২:১১ অথচ স্বর্গদূতেরা…মহান হলেও প্রভুর কাছে…কোন নালিশ করেন না যাতে নিন্দার কথা
সর্বোচ্চ ৩ পদ শয়তান সম্বন্ধীয় হতে পারে (*)
আরো ৭ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
আরো ৮ পদ সমস্ত আত্মিক ক্ষমতাগুলি বুঝায (ভাল হোক বা মন্দ হোক)
G746 ‘arche’ প্রধান, মাথা, শাসনকর্তা (মানবীয়), ক্ষমতা (মানবীয় বা আত্মিক), সদর, প্রথম, শুরু (সৃষ্টি, লেখা, পরিচর্যা…),যীশু, পৃষ্ঠার কোনা
রোমীয় ৮:৩৮ কোন রকম শক্তি, আকাশের উপরের বা পৃথিবীর নীচের কোন কিছু > ঈশ্বরের ভালবাসা থেকে সরিয়ে দিতে পারবে না।
১ করি ১৫:২৪ খ্রীষ্ট…সমস্ত শাসন-ব্যবস্থা, অধিকার,ক্ষমতা ধ্বংস করে ঈশ্বরের হাতে রাজ্য দিয়ে দেবেন
ইফিষীয় ১:২১ মহাকাশে সমস্ত শাসন, ক্ষমতা, শক্তি, কর্তৃত্ব…তাদের তিনি খ্রীষ্টের অধীন করেছেন।
ইফিষীয় ৩:১০ মণ্ডলীর মধ্য দিয়ে স্বর্গের সমস্ত শাসনকর্তা ও ক্ষমতার অধিকারীদের কাছে প্রকাশিত
ইফিষীয় ৬:১২ যুদ্ধ…অন্ধকার রাজ্যের শাসনকর্তা, ক্ষমতার অধিকারীদের, শক্তিশালী আত্মাদের বিরুদ্ধে
কলসীয় ১:১৬ মহাকাশে যাদের রাজত্ব, কর্তৃত্ব, শাসন ও ক্ষমতা রয়েছে…সবাইকে তাঁকে দিয়ে / জন্য সৃষ্টি
কলসীয় ২:১০ যীশু: তিনি মহাকাশের সমস্ত শাসনকর্তা ও ক্ষমতার অধিকারীদের উপরে।
কলসীয় ২:১৫ তিনি মহাকাশের সমস্ত মন্দ শাসনকর্তা ও ক্ষমতার অধিকারীদের ক্ষমতা নষ্ট করেছেন
৮ পদ শয়তান সম্বন্ধীয় বা শয়তানকে অন্তর্ভুক্ত করা আছে
একই ৮ পদ মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয়
G1411 ‘dunamis’ শক্তি, ক্ষমতা, পরাক্রম, আশ্চর্য কাজ করার ক্ষমতা, শক্তিশালী কার্যক্রম, ঈশ্বর, স্বর্গস্থ পিতা / যীশু / পবিত্র আত্মার ক্ষমতা, মহাকাশের ক্ষমতা, দক্ষতা, অর্জন করার বা সমাপ্ত করার ক্ষমতা, অধিকার, হিংস্রতা, অর্থ, পূণ্য
রোমীয় ৮:৩৮ কোন রকম শক্তি…ঈশ্বরের ভালবাসা থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে দিতে পারবে না
ইফিষীয় ১:২১ মহাকাশে সমস্ত শাসন, ক্ষমতা, শক্তি, কর্তৃত্ব রয়েছে তাদের তিনি খ্রীষ্টের অধীন করেছেন।
১ পিতর ৩:২২ যীশু: মহাকাশের দূতেরা, ক্ষমতার অধিকারীরা ও শাসনকর্তারা তাঁর অধীনে আছেন।
৩ পদ শয়তান সম্বন্ধীয় বা শয়তানকে অন্তর্ভুক্ত করা আছে
এই ৩ পদ মন্দ আত্ম সম্বন্ধীয়
বিভিন্ন শব্দের অধ্যয়ন থেকে উপসংহার
পুরাতন নিয়ম | পুরাতন নিয়ম যদি বাবিল ও সোর রাজা অন্তরভুক্ত করা হয় | নতুন নিয়ম | সর্বমোট | |
শয়তান সম্বন্ধীয় | ১৮ | ৫৫ | ৪৮ | ১০৩ |
মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয় | ৩০ | ৩০ | ১৩৮ | ১৬৮ |
একসাথে | ৪৮ | ৮৫ | ১৮৬ | ২৭১ |
- যদি আমরা এমন পদগুলি যাতে পরিষ্কার না তা ভাল বা মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয় সেগুলিও গুনি, যদি আমরা বাবিল ও সোর রাজার বর্ণনার পদগুলিও শয়তান সম্বন্ধীয় হিসাবে গুনি; যদি আমরা যীশুর ও প্রেরিতদের প্রত্যেক মন্দ-আত্মা তাড়ানোর গল্পের পদগুলিও গুনি: সব মিলিয়ে গুনে সর্বোচ্চ সংখ্যা আমরা পাই তা হল ২৭১ পদ।
- সংখ্যাটি অনেক কম! আমাদের চিন্তার চেয়েও অনেক কম।
- যদি আমরা ধরি যে বাইবেলে এক পৃষ্ঠায় ৩০ পদ আছে (সাধারণত গদ্য হলে পৃষ্ঠায় ৪০ পদ, পদ্য হলে পৃষ্ঠায় ২০ পদ), তবে সারা বাইবেলে শয়তান বা মন্দ আত্মা সম্বন্ধীয় ন্যূনতম ১০টি পৃষ্ঠাও খুঁজে পাওয়া যায় না!
- তাই বাইবেলে শয়তান ও মন্দ আত্মা উল্লিখিত, উপস্থিত ও বাস্তব, কিন্তু তা কোনো প্রাধান্য পায় না। বাইবেলের লেখা দেখলে পরিষ্কার হয়ে যায় যে ঈশ্বর কখনও বলেন নি, যে শয়তান আমাদের এক নম্বর সমস্যা। কেন আমরা
- তাহলে তা এত প্রধান মনে করি? কেন আমরা শয়তান নিয়ে এত ব্যস্ত?
- আর এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে: বাইবেলের বাকী ১০০০ পৃষ্ঠা তাহলে কি নিয়ে?
- বাকি ১০০০ পৃষ্ঠা এমন একটি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত যা আমদের চোখে আর পড়ে নি কিন্তু যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: মানুষের সিদ্ধান্ত।
- বাইবেলে ১৫৯৫ বার একটি ছোট শব্দ আসে: ‘যদি’। বাইবেলে ‘যদি…তবে’ বা ‘যদি…তাহলে’ ধরণের পদ দিয়ে ভরা। এইগুলি সব আমাদের কি বুঝায়? মানুষের সিদ্ধান্তের গুরুত্ব। পদগুলি আমাদের বুঝায় আমাদের সিদ্ধান্তের ফলাফল কি, উভয় ভাল দিকে এবং খারাপ দিকে। উদাহরণ হিসাবে নীচে দেওয়া পদ দেখুন (দ্বিতীয় বিবরণ ৩০:১৫-১৯):
“দেখ, আজ আমি তোমাদের সামনে যা তুলে ধরছি তা হল জীবন ও মংগল কিম্বা মৃত্যু ও অমংগল। ১৬ আজ তোমাদের কাছে আমার আদেশ এই যে, তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাসবে, তাঁর পথে চলবে এবং তাঁর আদেশ, নিয়ম ও নির্দেশ মেনে চলবে। তাহলে তোমরা বাঁচবে এবং সংখ্যায় বেড়ে উঠবে, আর যে দেশ তোমরা দখল করবার জন্য যাচ্ছ সেখানে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করবেন। ১৭ কিন্তু যদি তোমাদের অন্তর তাঁর কাছ থেকে সরে যায় এবং তোমরা তাঁর অবাধ্য হও আর যদি তোমরা দেব-দেবতার পূজার টানে তাদের কাছে মাথা নীচু কর, ১৮ তবে আজ আমি তোমাদের বলে দিচ্ছি যে, তোমরা নিশ্চয়ই ধ্বংস হয়ে যাবে। যর্দন নদী পার হয়ে যে দেশ তোমরা দখল করতে যাচ্ছ সেখানে তোমরা বেশী দিন বেঁচে থাকবে না। ১৯ “তোমাদের বিরুদ্ধে মহাকাশ ও পৃথিবীকে সাক্ষী রেখে আমি বলছি যে, আজ আমি তোমাদের সামনে জীবন কিম্বা মৃত্যু এবং আশীর্বাদ কিম্বা অভিশাপ তুলে ধরলাম। তোমরা জীবনকে বেছে নাও, যেন তোমরা ও তোমাদের ছেলেমেয়েরা বেঁচে থাক ও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাস, তাঁর কথা শোন এবং তাঁকে আঁক্ড়ে ধরে রাখ, কারণ এগুলোর মধ্যেই রয়েছে তোমাদের জীবন। যে দেশ দেবার শপথ তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের কাছে করেছিলেন সেখানে এগুলোর মধ্যেই রয়েছে তোমাদের আয়ু।”
- এর চেয়ে পরিষ্কারভাবে কি বলা যায়। মানুষের সিদ্ধান্ত সর্বোচ্চ পার্থক্য করবে।
পুরাতন নিয়মে শয়তান সম্বন্ধে শিক্ষা
তাই পুরাতেন নিয়মে সে ১৮ পদ যা আমরা নিশ্চিত জানি তা শয়তান সম্বন্ধীয়, তা থেকে কি শিখতে পারি?
আদি ৩:১ ‘সদাপ্রভু ঈশ্বরের তৈরী ভূমির জীবজন্তুদের মধ্যে সাপ ছিল সবচেয়ে চালাক।’
- আমরা আদি ৩:১ পদে শয়তানের প্রথম উল্লেখ পাই। তাকে ‘জীবজন্তু’ বলা হয়, যদিও সে কথা বলে। আসলে সে জীবজন্তুর চেহারা ব্যবহার করে। উল্লেখ আছে যে শয়তান ঈশ্বর দিয়ে সৃষ্টি, কিন্তু তার মুখের কথা শুনে বুঝা যায় যে সে মন্দ।
- কি করে সম্ভব? আসলে ঈশ্বর কি তাকে সৃষ্টি করেছেন? কলসীয় ১:১৫-১৭ পদ পরিষ্কারভাবে বলে যে সব কিছু যীশু দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে। এমন কিছু নেই যা তিনি সৃষ্টি করেন নি, তাই উপসংহারে আসতে হয় যে শয়তান সৃষ্ট জিনিস, ঈশ্বর দ্বারা সৃষ্ট জিনিস।
- তাহলে ঈশ্বর কি মন্দ কিছু তৈরি করেছেন? না, কারণ যিনি মন্দ সৃষ্টি করেন তিনিই মন্দ। ঈশ্বর মন্দ নন। কিন্তু তাহলে কি করে সম্ভব যে শয়তান সৃষ্ট এবং মন্দ?

- আসলে শয়তান ভাল অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু সে মন্দ হয়েছে। তার পতন কখন? নির্দিষ্ট কিছু বলা যায় না কারণ বাইবেল এই ঘটনা সরাসরি উল্লেখ করে না (তার রূপক বর্ণনা প্রকাশিত বাক্যে ১২ অধ্যায়ে পাওয়া যায়)। যা আমরা জানি সেটা হল যে তা সৃষ্টির পরে এবং আদি ৩ অধ্যায়ের ঘটনার আগে ঘটল।
- এই বিষয় থেকে আমরা আরো বুঝতে পারি যে মানুষের পাশাপাশি আর এক সৃষ্টিকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে: দূতদের, যাদের একজন হল শয়তান।
- তাই শয়তান (এবং তার সাথে কিছু দূত) ঈশ্বরের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও বিদ্রোহ করেছে। তা আদি ৩ অধ্যায়ের আগের ঘটনা। ঈশ্বর তা সম্বন্ধে আমাদের এর চেয়ে বেশি জানানো প্রয়োজন মনে করেন নি। তাই এতে আদের অতিরিক্ত কৌতুহল হওয়ার চেয়ে তা মেনে নেওয়া ভাল।
আদি ৩:১-২ ‘এই সাপ একদিন সেই স্ত্রীলোকটিকে বলল, “ঈশ্বর কি সত্যি তোমাদের বলেছেন যে, বাগানের সব গাছের ফল তোমরা খেতে পারবে না?’
- শয়তান ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে ‘ঈশ্বর কি সত্যি বলেছেন?’
- শয়তান ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে এলোমেলো বানায় ‘বাগানের সব গাছের ফল কি নিষেধ?’
- শয়তান ঈশ্বরের চরিত্র বা মঙ্গলময়তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করার চেষ্টা করে ‘ঈশ্বর একটু কঠোর… এত ভাল জিনিস তোমাদের দিতে চান না!’
- শয়তান মানুষকে অসন্তুষ্টতার বা কৃতজ্ঞ না হওয়ার প্রলোভনে ফেলতে চায় ‘দেখ তোমার কি নেই!’
- শয়তান মানুষকে আত্ম-মর্যাদার প্রলোভনে ফেলতে চায় ‘বেচারা, কেও তোমাকে ভাল কিছু দিতে চায় না!’
- শয়তান মানুষকে ঈশ্বরের উপর নির্ভরতা থেকে সরাতে চায় ‘ভাল কিছু চাইলে নিজের জন্য ব্যবস্থা কর!’
- শয়তান চায় যেন মানুষ তার উপরে নির্ভর করে এবং বলে ‘আমি তোমাকে দেব যা তোমার দরকার!’
- শয়তান মানুষকে ঈশ্বরের বাক্য সন্দেহ ও অমান্য করতে ও তাঁর মঙ্গলময়তা সন্দেহ করতে প্রলোভনে ফেলে।
- শয়তানের কৌশল সব সময় একই থাকে: অর্ধেক মিথ্যা, মিথ্যা, এলোমেলো, আত্ম-কেন্দ্রিক চিন্তা, সন্দেহ, নিজের হাতে নেওয়া, অবাধ্য হওয়া…মোট কথা যা সে নিজেই করেছে।
- কিন্তু খেয়াল করুন শয়তানের ক্ষমতা কত সীমিত: সে আমাদের ফলটি গিলাতে অক্ষম। তার শুধুমাত্র সুযোগ হল প্রতারণা। আমরা, যদি প্রতারণা গ্রহণ করি, যদি তার কথা বিশ্বাস করি তবে আমরা তাকে ক্ষমতা দেই ।
আদি ৩:৪-৫ “তখন সাপ স্ত্রীলোকটিকে বলল, “কখনও না, কিছুতেই তোমরা মরবে না। ৫ ঈশ্বর জানেন, যেদিন তোমরা সেই গাছের ফল খাবে সেই দিনই তোমাদের চোখ খুলে যাবে। তাতে ভাল-মন্দের জ্ঞান পেয়ে তোমরা ঈশ্বরের মতই হয়ে উঠবে।”
- এইবার শয়তান সরাসরি ঈশ্বরের বাক্যের বিপরীত দাবী করে। এর অর্থ হল যে শয়তান ঈশ্বরকে মিথ্যাবাদী হিসাবে ঘোষণা করে।
- শয়তান ঈশ্বরকে দোষ দেয়: ঈশ্বর স্বার্থপর, নিজের সুবিধা নিয়ে ব্যস্ত, ভীত ও জ্ঞান দেওয়ায় অনিচ্ছুক। ঈশ্বর নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে চান, ভাল কিছু দিতে রাজী না, মোট কথা: মঙ্গলময় নন।
- শয়তান একটি আংশিক সত্য ব্যবহার করে ‘তোমার চোখ খুলে যাবে’ এবং একটি মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দেয় ‘তুমি মরবে না’। এভাবে শয়তান আরো এলোমেলো ও সন্দেহ সৃষ্টি করে।
- শয়তান মানুষকে একটি নকল প্রতিজ্ঞা দিয়ে প্রলোভিত করে ‘তুমি ঈশ্বরের মতই হয়ে উঠবে’। আসলে মানুষ (এবং শুধুমাত্র মানুষ) ইতিমধ্যে ‘ঈশ্বরের মত’ বা ‘ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে’ (আদি ১:২৬-২৭)। শয়তান যে প্রলোভনে নিজেই পড়েছে (‘ঈশ্বরের মত হতে চাওয়া’) যে প্রলোভনে মানুষকে ফেলতে চেষ্টা করে।
- শয়তান চেষ্টা করে ঈশ্বরকে সরিয়ে নিজেকে বসাতে: মানুষের বিশ্বাস, মানুষের আশা, মানুষের নির্ভরতা, মানুষের কেন্দ্র, মানুষের বাধ্যতা নিজের উপরে টেনে নেয়।
আদি ৩:১৩-১৫‘তখন সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই স্ত্রীলোককে বললেন, “তুমি এ কি করেছ?” স্ত্রীলোকটি বললেন, “ঐ সাপ আমাকে ছলনা করে ভুলিয়েছে আর সেইজন্য আমি তা খেয়েছি।” ১৪ তখন সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই সাপকে বললেন, “তোমার এই কাজের জন্য ভূমির সমস্ত গৃহপালিত আর বন্য প্রাণীদের মধ্যে তুমি সবচেয়ে বেশী অভিশপ্ত। তুমি সারা জীবন পেটের উপর ভর করে চলবে এবং ধুলা খাবে। ১৫ আমি তোমার ও স্ত্রীলোকের মধ্যে এবং তোমার বংশ ও স্ত্রীলোকের মধ্য দিয়ে আসা বংশের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি করব। সেই বংশের একজন তোমার মাথা পিষে দেবে আর তুমি তার পায়ের গোড়ালীতে ছোবল মারবে।’
- তার মন্দতা ও প্রতারণার জন্য ঈশ্বর শয়তানকে অভিশাপ দেন। আসলে শয়তান ইতিমধ্যে অভিশাপ গ্রস্ত তার ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে।
- শয়তান যে মানুষকে নিয়ে ব্যস্ত কারণ সে মানুষকে গুরুত্ব দেয়, তা নয়। বরং শয়তান জানে যে মানুষকে কষ্ট দেওয়া হল ঈশ্বরকে কষ্ট দেওয়ার সবচেয়ে কার্যকারী পথ।
- আদি ৩:১৫ ঈশ্বর তাঁর দয়ায় একটি উদ্ধারের প্রতিজ্ঞা দেন: মহিলার বংশ থেকে এমন একজন আসবেন যিনি সাপের মাথা চূড়মার করবেন (‘শেষ হয়েছে’, যোহন ১৯:৩০) কিন্তু তিনি আঘাতও পাবেন (যীশুর কষ্টভোগ)। রূপকভাবে দেখানো হচ্ছে যে শয়তান পরাজিত ও যীশুর জয়লাভ: গোড়ালিতে (কম গুরুত্বপূর্ণ) আঘাত বনাম মাথা চুড়মার (মারাত্মক)।
- ঈশ্বর মানুষের জন্য একটি অনুতপ্ত হওয়ার পথ, একটি পুনরুদ্ধারের পথ করে দেবেন কিন্তু শয়তানকে এই সুযোগ দেওয়া হয় না। সে ঈশ্বরের মঙ্গলময়তা ও সৌন্দর্য দেখে-জেনেই বিদ্রোহ করেছে। তার সিদ্ধান্ত অপরিবর্তনশীল।
১ বংশাবলি ২১:১ ‘শয়তান এবার ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগল। ইস্রায়েল জাতির লোক গণনা করবার জন্য সে দায়ূদের মনে ইচ্ছা জাগাল।’
- শয়তান দায়ূদের মনে ইস্রয়েলকে গণনা করার ইচ্ছা জাগায়। লোকসংখ্যা গণনা কেন সমস্যা?
- যেহেতু তারা ২০ বছর বয়সের পুরুষ থেকে গুনে, গণনাটি হতেও সামরিক ক্ষমতা মূল্যায়ন করার বিষয় (ইস্রায়েলে ২০ বছর থেকে পুরুষকে সেনা হিসাবে তোলা যায়)। প্রলোভন বা পাপ এখানে ঠিক কি ছিল? নিজের ক্ষমতা বা নিষ্পাদন উপস্থাপনা করা? মিথ্যা বিষয়ের উপর নির্ভর করা? গর্ব করা? অন্য দেশদের সাথে তুলনা করা? ইতিমধ্যে (মানে গণনা ছাড়া) দায়ূদ প্রত্যেক যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন এবং চারিদিকে দেশদের উপরে তার অধিকার স্থাপন করেছেন, তাই গণনা প্রয়োজন, তা বলা যায় না।
- দায়ূদের শাস্তি হিসাবে ঈশ্বর তিনটি সুযোগ দেন: ৩ বছর দূর্ভিক্ষ, ৩ মাস পরাজয় ও পালানো, ৩ দিন ঈশ্বরের তলোয়ার বা মড়ক। দায়ূদ তৃতীয় সুযোগ বেছে নেন এই কারণ দেখিয়ে: ‘আমি যেন মানুষের হাতে না পড়ি, তার চেয়ে বরং সদাপ্রভুর হাতেই পড়ি, কারণ তাঁর করুণা অসীম।’ দায়ূদ শাস্তির উপযুক্ততা মেনে নেন, তিনি ঈশ্বরের মঙ্গলময়তা বা চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করেন না। ৭০’০০০ লোক মড়কে (রোগে) মারা যায়, তাই তা হল শয়তানের জয়, কিন্তু দায়ূদ অনুতপ্ত হন (তা ভবিষ্যতে অনেক অপ্রয়েজনীয় মৃত্যু প্রতিরোধ করবে) এবং যারা মারা গেছে (হতে পারে) বিশ্বাসে মারা গেছে। এই বিশ্রী ও কঠিন গল্প দেশে ঈশ্বরের ভক্তিপূর্ণ ভয় বাড়িয়ে তোলে। তা ছাড়া এই গল্প থেকে ভবিষ্যৎ মন্দিরের স্থান ঠিক হয়, যা ইস্রায়েলের আত্মিক কেন্দ্র, প্রায়শ্চিত্তের স্থান ও ঈশ্বরের উপস্থিতির চিহ্ন হয়ে যাবে। এইগুলি সব হবে যীশুর সম্বন্ধীয় অগ্রিম ছবি। তাই শয়তানের জয় বা পরাজয় হল?
ইয়োব ১:৬-১১, ১:১২ ‘একদিন স্বর্গদূতেরা সদাপ্রভুর সামনে গিয়ে উপস্থিত হলেন আর শয়তানও তাঁদের সংগে উপস্থিত হল।… ৮ সদাপ্রভু তখন শয়তানকে বললেন, “আমার দাস ইয়োবের দিকে কি তুমি লক্ষ্য করেছ? পৃথিবীতে তার মত আর কেউ নেই। সে নির্দোষ ও সৎ। সে আমাকে ভক্তিপূর্ণ ভয় করে এবং মন্দতা থেকে দূরে থাকে।” ৯ তখন শয়তান বলল, “ইয়োব কি এমনি এমনি আপনাকে ভক্তিপূর্ণ ভয় করে?…১১ কিন্তু আপনি হাত বাড়িয়ে তার সব কিছুকে আঘাত করুন, সে নিশ্চয়ই আপনার সামনেই আপনার বিরুদ্ধে অপমানের কথা বলবে।’
- কি করে সম্ভব শয়তান এখানে ঈশ্বরের সামনে থাকতে পারেন, স্বর্গদূতের মধ্যে বেড়াতে পারেন? শয়তান কি স্বর্গে আছেন?
- শয়তান স্বর্গে থাকতে পারে না যদি আমরা এভাবে বুঝি ‘স্বর্গ = যেখানে ঈশ্বর রাজত্ব করেন’। শয়তান ঈশ্বরের রাজত্ব অগ্রাহ্য করেছে ও স্বর্গ থেকে বের হয়েছে।
- কিন্তু যদি আমরা এভাবে বুঝি: ‘স্বর্গ = আত্মিক জগত’ তবে শয়তান (আত্মা) ঈশ্বরের সঙ্গে (যিনিও আত্মা) আত্মিক জগতের অংশ (বিজ্ঞান ০৯ দেখুন!)
- অনেক বার আমরা মনে করি যে শয়তান গল্পটি চালায়, কিন্তু আসলে ঈশ্বর ইয়োবের বিষয় শয়তানের কাছে তুলে ধরেন। ঈশ্বরের সুপারিশ কি ঝামেলার বিষয় :-)?
- শয়তান ইয়োবের দোষ হিসাবে ধরেন যে ইয়োব স্বার্থপরভাবে ঈশ্বরের বাধ্য (সমান্তরালভাবে সে আদি ৩:৪-৫ পদে ঈশ্বরকে স্বার্থপর বলেছিল): ‘সে শুধুমাত্র ঈশ্বরের প্রতি বাধ্য কারণ ঈশ্বর তাকে আশীর্বাদ দেন।’ স্বার্থপর লোক অন্যদেরকে স্বার্থপর মনে করবে, তাই তো। শয়তান ঈশ্বরের সুপারিশ মিথ্যা বলে এবং ঈশ্বরকে প্রতারিত বলে (সর্বজান্তা ঈশ্বরকে প্রতারিত মনে করা, কি সাহস!)।
- মনে হচ্ছে ঈশ্বর তর্কে নামেন ও বিষয়টি পরীক্ষায় আনতে রাজী। ইয়োবের উপর ঈশ্বরের বিশ্বাস অনেক মূল্যবান যদিও এখানে মনে হচ্ছে যে ঈশ্বর একটি তর্কে জেতার জন্য ইয়োবের সাথে ‘খেলে’ বা তাকে ‘উৎসর্গ করে’। কিন্তু পরে দেখা যায় যে তা নয়। যদিও ইয়োব অনেক কষ্ট পান, গল্পের শেষ ফল অনেক ভিন্ন ও অনেক চমৎকার।
ইয়োব ২:১-৭
- ঈশ্বর আবারও আলোচনা শুরু করেন বলে যে ইয়োব সব কিছু বাধ্যতায় ও ভাল মনোভাবে মেনে নিয়েছেন।
- ঈশ্বর পরিষ্কারভাবে স্বীকার করেন যে কষ্ট ইয়োবের উপর আছে, তার কোনো ‘কারণ’ নেই: ‘যদিও তুমি বিনা কারণে তার সর্বনাশ করবার জন্য আমাকে খুঁচিয়ে তুলেছ তবুও সে এখনও কোন দোষ করে নি।’
- ইয়োব সম্বন্ধীয় শয়তানের প্রথম কথা যদিও মিথ্যা হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে, শয়তান নম্র হয় না, প্রমাণ মেনে নেই না বরং আরো দোষ ধরে: ইয়োবের স্বাস্থ্য বা জীবনে হাত দিলে সে ঈশ্বরকে অস্বীকার করবে।
- আবারও মনে হচ্ছে ঈশ্বর তর্কে নামেন ও বিষয়টি পরীক্ষায় আনতে রাজী।
- আবারও তিনি শয়তানকে অনুমতি দেন, কিন্তু সীমানাও দেন: মারা যেন না যায়। ঈশ্বরের অনুমতি ছাড়া শয়তানের কোন অধিকার নেই।
- এর পরে শয়তান ইয়োব পুস্তকে আর উল্লিখিত নয়। শুরুতে তাকে ‘চালক’ ও ‘চালাক’ মনে করা যায়, কিন্তু পুস্তক পড়লে বুঝা যায় যে শয়তান এই গল্প চালায় না, জয়লাভও করে না, ঈশ্বর কি করেন, তাও বুঝে না।
- সব মিলিয়ে দেখা যায় যে শয়তান হয়তো তার ‘তিন মিনিট মহিমা’ পেয়েছে, কিন্তু সে সম্পূর্ণ পরাজিত। কারণ সবাই এই গল্প থেকে বের হয় ঈশ্বর সম্বন্ধীয় একটি আশ্চর্য প্রকাশ ও সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টি নিয়ে। এবং এর ফলে একটি পুস্তকে লেখা হবে, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী বিশ্বাসীদের কষ্ট ও সন্দেহের সময়ে সান্ত্বনা ও স্থিরতা দেবে।
সখরিয় ৩:১-২ শয়তান মহাপুরোহিত যিহোশূয়কে দোষ দিতে চেষ্টা করেন
‘তারপর সেই স্বর্গদূত আমাকে দেখালেন মহাপুরোহিত যিহোশূয় সদাপ্রভুর দূতের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এবং তাঁকে দোষ দেবার জন্য শয়তান তাঁর ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছে। ২ সদাপ্রভু শয়তানকে বললেন, “শয়তান, সদাপ্রভু তোমাকে বাধা দিন। যিরূশালেমকে যিনি বেছে নিয়েছেন তিনি তোমাকে বাধা দিন। এই লোকটি কি আগুন থেকে বের করে নেওয়া কাঠ নয়?’
- আবারও শয়তান একজনের দোষ ধরেন, এইবার ইস্রায়েলের বর্তমান মহাপুরোহিত যিহোশূয়। ঈশ্বর শয়তানকে ধমক দেন এবং আবারও শয়তান কিছু নিষ্পাদন করতে সক্ষম হয় নি।


যিশাইয় ১৪:৩-২৫ বাবিল রাজা সম্বন্ধীয় ভাববাণী
যিশাইয় ১৪:১২-২৩ পদগুলি অনেকে শয়তান সম্বন্ধীয় মনে করে (পরিষ্কার যে বাকি পদগুলি তা নয়)
‘হে শুকতারা, ভোরের সন্তান, তুমি তো স্বর্গ থেকে পড়ে গেছ। তুমি একদিন জাতিদের পরাজিত করেছ আর তোমাকেই এখন পৃথিবীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ১৩ তুমি মনে মনে বলেছ, ‘আমি স্বর্গে উঠব, ঈশ্বরের তারাগুলোর উপরে আমার সিংহাসন উঠাব; যেখানে দেবতারা জড়ো হয় উত্তর দিকের সেই পাহাড়ের উপরে আমি সিংহাসনে বসব। ১৪ আমি মেঘের মাথার উপরে উঠব; আমি মহান ঈশ্বরের সমান হব।’ ১৫ কিন্তু তোমাকে মৃতস্থানে নামানো হয়েছে, হ্যাঁ, সেই গর্তের সব চেয়ে নীচু জায়গায় নামানো হয়েছে। ১৬ যারা তোমাকে দেখে তারা তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে। তারা তোমার অবস্থা দেখে বলে, ‘যে পৃথিবীকে নাড়াত আর রাজ্যগুলোকে কাঁপাত এ কি সেই লোক? ১৭ এ কি সে, যে জগতকে মরুভূমির মত করত, শহরগুলোকে উলটে ফেলত, আর বন্দীদের বাড়ী ফিরে যেতে দিত না?’ ১৮ “জাতিদের সব রাজা সম্মানের সংগে নিজের নিজের কবরে শুয়ে আছেন। ১৯ কিন্তু তোমাকে গাছের বাদ দেওয়া ডালের মত কবরের বাইরে ফেলে রাখা হয়েছে। তলোয়ার দিয়ে যাদের মেরে ফেলে মৃতস্থানের সবচেয়ে নীচু জায়গায় পাঠানো হয়েছে তাদের দেহ দিয়ে তুমি ঢাকা পড়েছ। তুমি পায়ে মাড়ানো মৃতদেহের মত হয়েছ। ২০ তুমি অন্যান্য রাজাদের মত কবর পাবে না, কারণ তোমার দেশকে তুমি ধ্বংস করেছ আর তোমার লোকদের মেরে ফেলেছ। দুষ্টদের বংশধরদের কথা আর কখনও উল্লেখ করা হবে না। ২১ তাদের পূর্বপুরুষদের পাপের দরুন তাদের ছেলেদের মেরে ফেলবার জন্য একটা জায়গা ঠিক কর। দেশ অধিকার করবার জন্য তারা আর উঠবে না; তারা পৃথিবীকে আর তাদের শহর দিয়ে পরিপূর্ণ করবে না।” ২২ সর্বক্ষমতার অধিকারী সদাপ্রভু বলছেন, “আমি তাদের বিরুদ্ধে উঠব; বাবিলের নাম ও তার বেঁচে থাকা লোকদের আর তার বংশধরদের আমি একেবারে শেষ করে দেব। ২৩ আমি তাকে শজারুদের জায়গা ও জলা জায়গা করব। ধ্বংসের ঝাঁটা দিয়ে আমি তাকে ঝাড়ু দেব। আমি সর্বক্ষমতার অধিকারী সদাপ্রভু এই কথা বলছি।’
- এই পদগুলি কি আসলে শয়তান সম্বন্ধীয়? চারিদিকের অধ্যায়গুলিতে বিভিন্ন জাতিদের বিরুদ্ধে ভাববাণী আছে, বাবিলেরটা হল বেশ কয়েকটার মধ্যে একটি মাত্র। সে সময় বাবিল ছিল একটি রাজ্য যা আস্তে-আস্তে ক্ষমতাশালী হয়ে যায়, এবং যিশাইয় রাজা হিষ্কিয়কে কয়েকবার বলেন, এই ধরণের ক্ষমতার সাথে চুক্তি করার চেয়ে ঈশ্বরের উপরে নির্ভর করা ভাল।
- কেন তা শয়তান সম্বন্ধে মনে করা হয়? ভাববাদীরা খুব শক্তিশালী কবিতা ভাষা ও রূপক ভাষা ব্যবহার করেন যেন শ্রোতাদের মনোযোগ ধরতে পারেন। তারা অনেক বার অতিরিক্ত বলা রূপকও ব্যবহার করে। যেমন এখানে বাবিল রাজার বর্ণনা করা হয়, একই ধরণের ভাষা অন্য রাজাদের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত, বিশেষভাবে যদি একজন রাজা নিজেকে দেবতা হিসাবে ঘোষণা করে পূজা দাবী করেন, অথবা দখল করা জাতিদের উপরে তারই দেবতা চাপিয়ে দেন।
- এইভাবেও চিন্তা করা যায়: আসলে অহংকার, স্বার্থপরতা ও লোভ সব সময় দেখতে একই রকম। তাই শয়তানের একটি বর্ণনা এবং একজন স্বেচ্ছাচারী, দমনকারী, অত্যাচারী রাজার বর্ণনার অবশ্যই অনেক মিল থাকবে, বিশেষভাবে যদি রাজা নিজেকে দেবতা বানায়। C.S. Lewis, একজন ব্রিটিশ লেখক বলেছেন: একঘেমি লাগার বিষয় যে একনায়কতন্ত্রের প্রধানরা সবাই দেখতে একই রকমের কিন্তু ঈশ্বরের উদ্ধার করা লোক কত ভিন্ন ও কত আকর্ষণীয়!
- যিশাইয় কি আসলে বিভিন্ন জাতীয় ভাববাণীর তালিকার মাঝখানে থেমে বলেন: ‘ওহে, মনে হয় এখন একটু শয়তানের সম্বন্ধে শিক্ষা দেব!’ চারিদিকের বিষয় ও পুস্তকের বড় ছবি দেখলে তা এভাবে আসে না।
- কিন্তু একবার ধরুন যে, পদগুলি আসলে যদি শয়তান সম্বন্ধীয় তবে কি শিখতে পারি?
যদি যিশাইয় ১৪:১২-২৩ শয়তান সম্বন্ধীয় হয়, তা থেকে কি শিখব?
- তবে যিশাইয় ১৪:১৩-১৪ হবে শয়তানের বিদ্রোহের একটি বর্ণনা, যিশাইয় ১৪:১৫ হবে শয়তানের একটি ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী (যেমন প্রকাশিত বাক্যে ও পাওয়া যায়)। যিশাই ১৪:১৬-২৩ পদের অর্থ তাহলে কম বুঝা যায় কারণ এখানে একটি ‘সম্মান ছাড়া মৃত্যু’ নিয়ে কথা হয়, যেখানে লাশ দাফন দেওয়া হয় না ও নিজের পুত্ররা পিতার সিংহাসনের উঠে না (এইটি মানুষের দুশ্চিন্তা, শয়তানের নয়)।
- শয়তানের পাপ অহংকার, নিজেকে উঁচুতে স্থাপন করা, ঈশ্বরের মত হতে চাওয়া, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ।
- শয়তানকে ‘মৃতস্থানে’ নামানো হবে। অন্য কথায়: তাকে ধ্বংস করা হবে।
যিহিষ্কেল ২৮:১-১৯ সোর রাজা সম্বন্ধীয় ভাববাণী
যিহিষ্কেল ২৮:১০-১৯ পদগুলি অনেকে শয়তান সম্বন্ধীয় মনে করে (পরিষ্কার যে বাকী পদগুলি তা নয়)
“আমি প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলছি।’” ১১ সদাপ্রভু আমাকে আরও বললেন, ১২ “হে মানুষের সন্তান, সোরের রাজার বিষয়ে তুমি বিলাপ করে করে তাকে বল যে, প্রভু সদাপ্রভু বলছেন, ‘তুমি ছিলে সম্পূর্ণ নিখুঁত, জ্ঞানে পূর্ণ এবং সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। ১৩ তুমি ঈশ্বরের বাগান এদনে ছিলে। সব রকম দামী দামী পাথর, সার্দীয়মণি, পীতমণি, হীরা, পোখরাজ, বৈদুর্যমণি, সূর্যকান্তমণি, নীলকান্তমণি, চুনী, পান্না ও সোনা দিয়ে তুমি সাজানো ছিলে; তোমার সৃষ্টির দিনে এগুলোকে প্রস্তুত করা হয়েছিল। ১৪ রক্ষাকারী করূব হিসাবে তোমাকে অভিষেক করা হয়েছিল, কারণ সেইভাবেই আমি তোমাকে নিযুক্ত করেছিলাম। তুমি ঈশ্বরের পবিত্র পাহাড়ে ছিলে; তুমি আগুনের মত ঝক্মক করা পাথরের মধ্য দিয়ে হাঁটা-চলা করতে। ১৫ তোমার সৃষ্টির দিন থেকে তোমার চালচলনে তুমি নির্দোষ ছিলে, কিন্তু শেষে তোমার মধ্যে দুষ্টতা পাওয়া গেল। ১৬ তোমার অনেক ব্যবসার দরুন তুমি অত্যাচারী হয়ে পাপ করলে। কাজেই ঈশ্বরের পাহাড় থেকে আমি তোমাকে অপবিত্র অবস্থায় তাড়িয়ে দিলাম। হে রক্ষাকারী করূব, আমি তোমাকে আগুনের মত ঝক্মক করা পাথরের মধ্য থেকে সরিয়ে দিলাম। ১৭ তোমার সৌন্দর্যের জন্য তোমার অন্তর অহংকারে ভরে উঠেছে আর তোমার জাঁকজমকের জন্য তুমি তোমার জ্ঞানকে নষ্ট করেছ। তাই আমি তোমাকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম; রাজাদের সামনে আমি তোমাকে রাখলাম যাতে তোমাকে দেখে তারা খুশী হয়। ১৮ তোমার অনেক পাপ ও অসৎ ব্যবসা দিয়ে তুমি নিজের উপাসনার জায়গাগুলো অপবিত্র করেছ। এইজন্য আমি তোমার মধ্যে আগুন লাগিয়ে দিলাম আর তা তোমাকে পুড়িয়ে ফেলল; যারা দেখছিল তাদের সকলের চোখের সামনে আমি তোমাকে মাটির উপরে ছাই করে দিলাম। ১৯ যে সমস্ত জাতি তোমাকে জানত তারা তোমাকে দেখে হতভম্ব হয়ে গেল। তুমি ভয়ংকরভাবে শেষ হয়ে গেছ; তুমি আর থাকবে না।’”
- যিহি ২৮:১৩ পদে এদন বাগান উল্লেখ। যদি পদগুলি শয়তান সম্বন্ধীয় হয় তবে তার সেখানকার উপস্থিতি বুঝায় যখন এখনও পতিত হয় নি। তবশ্যই আত্ম হিসাবে সে বাগানে সীমাবদ্ধ ছিল না। যদি তা সোর রাজা সম্বন্ধীয় তবে তা রূপকভাবে এমন একটি সময় বুঝায় যখন তিনি রাজা হিসাব ইতিমধ্যে ধনী ছিলেন, কিন্তু এখনও ভাল, এক পরিমানে ন্যায্য ও জনগণের মঙ্গলের জন্য ব্যস্ত। অথবা তা সোর শহর বুঝায়, যখন প্রথম স্থাপন হয়েছিল।
- যিহি ২৮:১৩-১৬ সবচেয়ে বেশি শয়তানের সাথে মিল আছে।
- যিহি ২৮:১৬ সোর শহরের বা রাজার পাপ কি? সোর গুরুত্বপূর্ণ নৌবন্দর ছিল এবং ভূমধ্য সাগরের উপরে বড় একটি নৌ-ক্ষমতা হিসাবে তার বেচা-কেনা ও অর্থনৈতিক শক্তি বেশি ছিল। কিন্তু যখন অহংকারী হয়ে উঠল তখন অন্যায়, হিংস্রতা, দুর্নীতি শুরু হয়েছে ও জাঁকজমকের জন্য প্রজ্ঞা ত্যাগ করল।
- যিহি ২৮:১৭ পদ থেকে সবার চোখে সোরের পতন ও লজ্জার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সোর ধ্বংস হয়ে যাবে, আর উঠে আসবে না। এই ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হয়েছিল যখন আলেকজান্দার সোরকে ঘেড়াও, দখল ও ধ্বংস করেছিলেন। যে উপদ্বীপে সোর শহর ছিল, তা আজকাল সাগরে একটি অগভীর স্থান মাত্র
- পাশের ছবি: সোরে (উপদ্বীপে নয়, সৈকতের পাড়ে) আলকজান্ডারের রাজবাড়ীর ধ্বংসাবশেষ। পাশের মানচিত্র: সোর শহর (ঐসময়ের এবং আজকালীন তটরেখা)। আধুনিক তটরেখার ছবি।



যদি যিহিষ্কেল ২৮:১০ক-১৯ শয়তান সম্বন্ধীয় হয়, তা থেকে কি শিখব?
- শয়তানের পাপ ছিল: নিজেকে ঈশ্বরের সাথে তুলনা করা, চিন্তা করা যে তার ঈশ্বরের মত মন আছে, প্রজ্ঞা ছিল কিন্তু তা বেচা-কেনায় এবং ধন অর্জনে ব্যবহার করতে করতে তা অহংকারের কারণ হয়েছে। তার সৌন্দর্য আছে, কিন্তু অহংকারী। জাঁকজমকের জন্য প্রজ্ঞা ত্যাগ করা।
- শুরু থেকে সে নিখুঁত ছিল (সে ঈশ্বরের চমৎকার সৃষ্টি), কিন্তু পরে তার মধ্যে পাপ পাওয়া গেল। তাকে ঈশ্বরের পাহাড় থেকে সরানো হয়, মাটিতে ছুঁড়ে ফেলা হয়, তাকে রাজাদের সামনে লজ্জা পেতে হয়, তার মধ্যে আগুন লাগানো হবে। এইটা শয়তানের ধ্বংস সম্বন্ধীয় ছবি হিসাবে ব্যাখ্যা করা যায়।
নতুন নিয়মে শয়তান সম্বন্ধীয় শিক্ষা
- শয়তান সম্বন্ধীয় নতুন নিয়মের সে (শুধুমাত্র!) ৪৮ পদ থেকে আমরা কি শিখতে পারি?
শয়তান কোথা থেকে আসল? (Ontology)
- কলসীয় ১:১৫-১৭ শয়তান, অন্যান্য মন্দ আত্মার মত এক সময় ঈশ্বরের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু ভাল ও চমৎকার অবস্থায়। এমন কোনো ক্ষমতা, প্রভুত্ব বা কর্তৃত্ব নেই যা ঈশ্বরের বাক্যের মাধ্যমে, অর্থাৎ যীশুর মাধ্যমে, তৈরি না হয়েছে। সমস্ত ক্ষমতা, প্রভুত্ব বা কর্তৃত্বের চেয়ে যীশু অনেক উঁচু।
শয়তান কোথায় যাবে? (Teleology)
- যীশু প্রত্যেক মন্দ ক্ষমতা, অধিকার বা কর্তৃত্বের উপরে জয়লাভ করবেন, মন্দতা লজ্জায় ফেলবেন এবং ধ্বংস করবেন।
- ইব্রীয় ২:১৪ “মৃত্যুর ক্ষমতা যার হাতে আছে সেই শয়তানকে তিনি নিজের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শক্তিহীন করেন।”
- ১ যোহন ৩:৮ “শয়তানের কাজকে ধ্বংস করবার জন্যই ঈশ্বরের পুত্র প্রকাশিত হয়েছিলেন।”
- প্রকাশিত ২০:১০ শয়তানকে, জন্তুকে ও ভণ্ড নবীকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ফেলে দেওয়া হবে।
- যীশু সমস্ত ক্ষমতা, প্রভুত্ব বা কর্তৃত্তের মাথা হবেন এবং সব কিছুর উপরে রাজত্ব করবেন।
শয়তান কি মন্দ? (Axiology)
- যোহন ১০:১০ “চোর কেবল চুরি, খুন ও নষ্ট করবার উদ্দেশ্য নিয়েই আসে।”
- যোহন ৮:৪৪ “শয়তান প্রথম থেকেই খুনী। সে কখনও সত্যে বাস করে নি, কারণ তার মধ্যে সত্য নেই। সে যখন মিথ্যা কথা বলে তখন সে তা নিজে থেকেই বলে, কারণ সে মিথ্যাবাদী আর সমস্ত মিথ্যার জন্ম তার মধ্য থেকেই হয়েছে।”
- শয়তানের কোনো ভাল উদ্দেশ্য নেই। তার শত্রুতা ঈশ্বরের সঙ্গে। সে মানুষদের ভুলাতে ও প্রলোভিত করাতে ব্যস্ত যেন সে (এক সময় পর্যন্ত) নিজের ক্ষমতা বিস্তার করতে পারে এবং ঈশ্বরকে আঘাত দিতে পারে।
শয়তান যা করতে অক্ষম
- শয়তান ও মন্দ আত্মারা আমাদের ঈশ্বরের ভালবাসা থেকে সরিয়ে দিতে পারে না (রোমীয় ৮:৩৮-৩৯)। শয়তান মানুষকে পাপ করাতে পারে না, মানুষের সিদ্ধান্ত বাতিলও করতে পারে না।
শয়তান যা করে
- শয়তান মিথ্যা বলে তার মধ্যে কোনো সত্য নেই। সব মিথ্যা তার মধ্য থেকে জন্ম।
- শয়তান প্রলোভিত করতে পারে যেমন যীশুকে।
- শয়তান ফাঁদে ফেলতে চেষ্টা করবে যেন মানুষ তার প্রতি বাধ্য হয়।
- শয়তান এলোমেলো বানায় যেমন শ্যামাঘাসের দৃষ্টান্তে।
- শয়তান প্রতারণা করে শয়তান নিজেকে স্বর্গদূত হিসাবে উপস্থাপনা করে।
- শয়তান চুরি করে ঈশ্বরের বাক্য চুরি করে যেমন বীজ বুনার দৃষ্টান্ততে।
- শয়তান অত্যাচার করে যীশু এমন লোকদের মুক্ত করেন যারা শয়তান দিয়ে অত্যাচারিত।
- শয়তান কষ্ট দেয় যেমন পৌলের ‘দেহে একটা কাঁটা’।
- শয়তান অত্যাচার চালায় যেমন প্রকাশিত বাক্য ২:১০ পদে
- শয়তান একজনের উপর এক পরিমাণে ক্ষমতা লাভ করে যখন সে লোক পাপ করে। যদি আমারা পাপ করি আমরা ‘শয়তানের সন্তান’।
- মূলত বলা যায় যে শয়তান কথা বলতে পারে, কিন্তু একজনের উপর তার ক্ষমতা নেই যতক্ষণ পর্যন্ত সে শয়তানকে বিশ্বাস করে। তার উদ্দেশ্য হল যেন মানুষ তার মিথ্যা বিশ্বাস করে, তার সাথে একমত হয় ও তার মত ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যায়। এই ধরণের মানুষকে শয়তান এক পরিমাণ পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারে।

আমাদের কি করতে বলা হয়েছে?
- ১ পিতর ৫:৮ “নিজেদের দমনে রাখ ও সতর্ক থাক, কারণ…শয়তান গর্জনকারী সিংহের মত করে কাকে খেয়ে ফেলবে তার খোঁজ করে বেড়াচ্ছে।”
- ইফিষীয় ৪:২৭ “আর শয়তানকে কোন সুযোগ দিয়ো না।”
- যাকোব ৪:৭ “এইজন্য ঈশ্বরের অধীনে থাক। শয়তানকে রুখে দাঁড়াও, তাহলে সে তোমাদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে।”
- ইফিষীয় ৬:১১-১৭ “তাই তোমরা যুদ্ধের জন্য ঈশ্বরের দেওয়া সমস্ত সাজ-পোশাক পরে নাও, যেন শয়তান যেদিন আক্রমণ করবে সেই দিন তোমরা তাকে রুখে দাঁড়াতে পার এবং সব কিছু শেষ করে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পার। ১৪ এইজন্য সত্য দিয়ে কোমর বেঁধে, বুক রক্ষার জন্য সৎ জীবন দিয়ে বুক ঢেকে, ১৫ আর শান্তির সুখবর প্রচারের জন্য পা প্রস্তুত রেখে দাঁড়িয়ে থাক। ১৬ এছাড়া বিশ্বাসের ঢালও তুলে নাও; সেই ঢাল দিয়ে তোমরা শয়তানের সব জ্বলন্ত তীর নিভিয়ে ফেলতে পারবে। ১৭ মাথা রক্ষার জন্য ঈশ্বরের দেওয়া উদ্ধার মাথায় দিয়ে পবিত্র আত্মার ছোরা, অর্থাৎ ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ কর।”
- এই প্রায় সবগুলি হল নিজের মন ও মনোভাব ঠিক রাখার বিষয়গুলি। শয়তান আমাদের এলোমেলোতে ফেলতে চায় ও মিথ্যা খাওয়াতে চায় এবং – যদি আমরা তা বিশ্বাস করি ও ঈশ্বরের চেয়ে তার সাথে রাজী হই – আমরা তাকে নিজের উপরে ক্ষমতা দেই।
- এক ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি যে ‘আত্মিক যুদ্ধ’ মানে যখন ভাল ও মন্দ আত্মার মধ্যে যুদ্ধ চলচ্ছে।
- আর এক ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি যে ‘আত্মিক যুদ্ধ’ মানে আমাদের মনে যুদ্ধ: আমি কি বিশ্বাস করব (নিজেকে নিয়ে, নিজের জীবনকে নিয়ে, নিজের ভবিষ্যতকে নিয়ে, নিজের দায়িত্ব নিয়ে, নিজের ক্ষমতা নিয়ে)? আমি কার সাথে রাজী হব? ঈশ্বরের বা শয়তানের সাথে?
- এর জন্য আদেশগুলি হল ‘স্থির থেকো’, ‘শক্তিশালীভাবে দাঁড়াও’, ‘সতর্ক হও’, ‘সুযোগ দিও না’, ‘সত্য ধরে রাখ’, ‘মিথ্যা অগ্রাহ্য কর’। যদি আমি জানি খ্রিষ্টেতে আমি কে হই, যদি আমি আমার পরিত্রাণের কথা জানি, যদি আমি ঈশ্বরের বাক্য জানি, যদি আমি তার প্রতিজ্ঞা জানি, যদি আমি ঈশ্বরের সাথে একমত হই, তবে শয়তান ক্ষমতাহীন।
- ‘আত্মিক যুদ্ধ’ মানে শয়তানের সাথে একমত না হওয়া, সত্যকে গ্রহণ করা, শয়তানের চেয়ে ঈশ্বরকে বিশ্বাস করা। যদি আমি তাই করি শয়তানের ক্ষমতা ভেঙ্গে যায়।
- ২ করি ১০:৪-৬ “সাধারণ মানুষ যে সব অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করে আমরা তা দিয়ে যুদ্ধ করছি না, কিন্তু ঈশ্বরের শক্তিতে আমাদের অস্ত্রশস্ত্র দুর্গ পর্যন্ত ভেংগে ফেলতে পারে। ৫ আমরা মানুষের মিথ্যা যুক্তি নষ্ট করি এবং ঈশ্বরকে জানবার পথে বাধা হিসাবে যে সব চিন্তা অহংকারে মাথা তুলে দাঁড়ায় তা ধ্বংস করি; আর মনের প্রত্যেকটি চিন্তাকে বন্দী করে খ্রীষ্টের বাধ্য করি। ৬ যখন তোমরা পূর্ণ বাধ্যতায় আসবে তখনও যারা অবাধ্য থাকবে তাদের আমরা শাস্তি দিতে প্রস্তুত হব।” মানুষের মনের জন্য যুদ্ধ চলছে!
শয়তান সর্বজান্তা নয় ও অনেক বার সে নিজেকে পরাজিত করে
- ইয়োব পুস্তক নিয়ে আর একবার চিন্তা করুন: শয়তান নিজেকে খুব চালাক মনে করে, এমন কি চিন্তা করে যে সে ঈশ্বরকে উসকিয়ে দিতে পারে। কিন্তু আসলে ঈশ্বর তাঁরই পরিকল্পনা পূর্ণ করেন: এই খারাপ ঘটনাগুলি উদ্ধার করে তিনি নিজেকে শক্তিশালীভাবে প্রকাশ করেন এবং ইয়োব শেষে এই অভিজ্ঞতা কোনো কিছুর জন্য হারাতে রাজী না।
- যীশুর ক্ষেত্রে তা আর অনেক বেশি বুঝা যায়: শয়তান যিহূদার মনে যীশুকে ধরিয়ে দেওয়া চিন্তা দেয়, মনে করে যা যীশুকে পরাজিত করতে পারবে। কিন্তু: তা কত মূর্খ কাজ!
- পরিষ্কারভাবে বুঝা যায় যে শয়তানের কোনো ধারণা নেই যীশু তাঁর মৃত্যু দিয়ে কি তৈরি করবেন (পরিত্রাণ, ক্ষমা, অনন্ত জীবন)। যদি শয়তান আসলে বুঝত ক্রুশে যীশু কি করবে, সে জরুরীভাবে যীশুর মৃত্যু প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করত!
- আমদেরও নিজের জীবন এভাবে দেখা প্রয়োজন: যা ঘটে গেছে না কেন, যা এখন ঘটছে না কেন, যা ঘটবে না কেন, ঈশ্বর তা উদ্ধার করবেন, এমনভাবে উদ্ধার করবেন যে শয়তান পরে চাইবে যে সে তা ঘটাত না! সে কষ্ট, সে আঘাত, এমন কি সে অন্যায় ও পাপ যা আমাদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে, তা থেকে ঈশ্বর ‘সোনা’ বানাবেন। তিনি তা পরিণত করবেন আমাদের করুণায়, চরিত্রে, অধিকারে ও সাক্ষ্যে – এমনভাবে যে শয়তান তার কাজ নিয়ে আফসোস করবে।
- কিভাবে আমরা এই দৃষ্টি অর্জন করতে পারি? পরিবেশ, মানুষ বা ঈশ্বরকে দোষারোপ আর না করে বরং ঈশ্বরের সাথে রাজী হওয়া, তাঁর উদ্ধার দেখা পর্যন্ত।