ধর্ম ১৯ – পুনরুত্থানের প্রত্যক্ষ সাক্ষী
- অনেকে বলে যে চারটি সুসমাচারে পুনরুত্থানের ঘটনাগুলি বর্ণনা একটি অন্যটির থেকে ভিন্ন। এই অধ্যয়নটি করা হয়েছে খুঁজে বের করার জন্য যে ৪টি সুসমাচারের উল্লিখিত বর্ণনা মিলানো যায় কি না এবং ঘটনাটি ঘটার একটি সময় তালিকা তৈরি করা যায় কি না?
- চারটি সুসমাচার থেকে নেওয়া উদ্ধৃতি বা তথ্য রং দিয়ে দেখানো হচ্ছে: মথি বাদামী রং, মার্ক লাল রং, লূক সবুজ রং, যোহন নীল রং। মন্তব্য কালো রঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাগুলির সময় তালিকা
- বৃহস্পতিবার, সন্ধায় প্রভুর ভোজ
- মাঝরাত থেকে গেৎশিমানী বাগান
- শুক্রবার ৩ বা ৪ টায় বিশ্বাস ঘাতকতা, গ্রেফতার
- শুক্রবার, ভরে যিহূদী পরিষদের সামনে যীশু, পিতরের অস্বীকার
- শুক্রবার, সকালে পীলাতের সামনে যীশু
- শক্রবার, সকালে হেরোদের সামনে যীশু
- শুক্রবার, সকালে আবার পীলাতের সামনে যীশু, চাবুক, মৃত্যুদণ্ড
- শুক্রবার, সকালে যীশুকে যন্ত্রণা, ক্রুশ বহন করে গলগথার পথে
শুক্রবার, সকালের শেষদিকে যীশুকে ক্রুশে দেওয়া হয়
মথি ২৭:৫৬ মহিলারা দেখছে: ‘মগ্দলীনী মরিয়ম, যাকোব ও যোষেফের মা মরিয়ম এবং সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও যোহনের মা।’
মার্ক ১৫:৪০ কয়েকজন স্ত্রীলোক দূরে দাঁড়িয়ে এই সব দেখছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মগ্দলীনী মরিয়ম, দুই যাকোবের মধ্যে ছোট যাকোব ও যোষেফের মা মরিয়ম আর শালোমী।
লূক ২৩:৪৯ ‘যাঁরা যীশুকে চিনতেন এবং যে স্ত্রীলোকেরা গালীল থেকে তাঁর সংগে সংগে এসেছিলেন তাঁরা সবাই দূরে দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখছিলেন।’
শুক্রবার, দুপুরে অন্ধকার
শুক্রবার, বিকালে ৩ টায় যীশুর মৃত্যু
শুক্রবার, বিকালে ৩-৬ টায় আরিমাথিয়ার যোষেফ যীশুর দেহকে দাফন দেওয়া অনুমতি পান
মথি ২৭:৫৭-৫৮ অরিমাথিয়া গ্রামের যোষেফ পীলাত থেকে যীশুর দেহ নেওয়ার অনুমতি পান।
মার্ক ১৫:৪২-৪৫ অরিমাথিয়া গ্রামের যোষেফ পীলাত থেকে যীশুর দেহ নেওয়ার অনুমতি পান।
লূক ২৩:৫০-৫৩ অরিমাথিয়া গ্রামের যোষেফ পীলাত থেকে যীশুর দেহ নেওয়া অনুমতি পান।
লূক ২৩:৫৪ ‘সেই দিনটা ছিল বিশ্রামবারের আয়োজনের দিন। বিশ্রামবার প্রায় শুরু হয়ে গিয়েছিল।’
যোহন ১৯:৩৮ অরিমাথিয়া গ্রামের যোষেফ ‘পীলাত অনুমতি দিলে পর তিনি এসে যীশুর দেহ নিয়ে গেলেন।’
শুক্রবার, বিকালে ৩-৬ টায় আরিমাথিয়ার যোষেফ যীশুর দেহকে দাফন দেওয়া অনুমতি পান
মথি ২৭:৫৭-৫৮ অরিমাথিয়া গ্রামের যোষেফ পীলাত থেকে যীশুর দেহ নেওয়ার অনুমতি পান।
মার্ক ১৫:৪২-৪৫ অরিমাথিয়া গ্রামের যোষেফ পীলাত থেকে যীশুর দেহ নেওয়ার অনুমতি পান।
লূক ২৩:৫০-৫৩ অরিমাথিয়া গ্রামের যোষেফ পীলাত থেকে যীশুর দেহ নেওয়া অনুমতি পান।
লূক ২৩:৫৪ ‘সেই দিনটা ছিল বিশ্রামবারের আয়োজনের দিন। বিশ্রামবার প্রায় শুরু হয়ে গিয়েছিল।’
যোহন ১৯:৩৮ অরিমাথিয়া গ্রামের যোষেফ ‘পীলাত অনুমতি দিলে পর তিনি এসে যীশুর দেহ নিয়ে গেলেন।’
শুক্রবার, ৩-৬ টায় অরিমাথিয়ার যোষেফ যীশুর দেহ কবরে দেন
মথি ২৭:৫৯-৬০ যীশুর দেহটা পরিষ্কার কাপড়ে জড়ানো, পাহাড়ের মধ্যে কেটে নতুন কবরে রাখা, কবরের মুখে বড় একটা পাথর গড়িয়ে দেওয়া।
যোহন ১৯:৩৮-৪১ অরিমাথিয়ার যোষেফ ও নীকদীম…প্রায় তেত্রিশ কেজি গন্ধরস ও অগুরু মিশিয়ে নিয়ে আসলেন। …তারা ‘যীশুর দেহটি নিয়ে যিহূদীদের কবর দেবার নিয়ম মত সেই সমস্ত সুগন্ধি জিনিসের সংগে দেহটি কাপড় দিয়ে জড়ালেন।’
যোহন ১৯:৪২ ‘সেই দিনটা ছিল যিহূদীদের পর্বের আয়োজনের দিন, আর কবরটাও কাছে ছিল বলে তাঁরা যীশুকে সেই কবরেই রাখলেন।’
মথি ২৭:৬১ মগ্দলীনী মরিয়ম ও সেই অন্য মরিয়ম দেখেন যীশুর দেহ কিভাবে কবরে দেওয়া হয়।
মার্ক ১৫:৪৭ মগ্দলীনী মরিয়ম ও যোষেফের মা মরিয়ম দেখেন যীশুর দেহ কিভাবে কবরে দেওয়া হয়।
লূক ২৩:৫৫ ‘যে স্ত্রীলোকেরা যীশুর সংগে গালীল থেকে এসেছিলেন তাঁরা যোষেফের পিছনে পিছনে গিয়ে কবরটি দেখলেন এবং যীশুর দেহ কিভাবে রাখা হল তাও দেখলেন।’
লূক ২৩:৫৬ ‘তারপর তাঁরা ফিরে গিয়ে তাঁর দেহের জন্য সুগন্ধি মশলা এবং মলম তৈরী করলেন।’
শুক্রবার, সন্ধ্যা ৬ টায় বিশ্রামবার শুরু
লূক ২৩:৫৬ ‘এর পরে তাঁরা মোশির আদেশ মত বিশ্রামবারে বিশ্রাম করলেন।’
মথি ২৭:৬২-৬৬ আয়োজন-দিনের পরের দিন পুরোহিতেরা ও ফরীশীরা পীলাত থেকে অনুমতি নেন, যেন তিন দিন পর্যন্ত কবরটা পাহারা দেওয়া হয়।
শনিবার, সন্ধ্যা ৬ টায় বিশ্রামবার শেষ
মার্ক ১৬:১ মগ্দলীনী মরিয়ম, যাকোবের মা মরিয়ম এবং শালোমী সুগন্ধি মলম কিনে আনেন।
রবিবার, ভোরে মহিলারা কবরে যায়
মথি ২৮:১ ‘বিশ্রামবারের পরের সপ্তার প্রথম দিনের ভোর বেলায় মগ্দলীনী মরিয়ম ও সেই অন্য মরিয়ম কবরটা দেখতে গেলেন।’
মার্ক ১৬:২-৩ ‘তারা কবরের কাছে গেলেন’…’তারা’ মানে মগ্দলীনী মরিয়ম, যাকোবের মা মরিয়ম এবং শালোমী। সেই সময় তাঁরা একে অন্যকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, ‘কবরের মুখ থেকে কে ঐ পাথরটা সরিয়ে দেবে?’
লূক ২৪:১ ‘সপ্তার প্রথম দিনের খুব সকালবেলা সেই স্ত্রীলোকেরা সেই সুগন্ধি মশলা নিয়ে কবরের কাছে গেলেন।
লূক ২৪:১০ ‘সেই স্ত্রীলোকদের মধ্যে ছিলেন মগ্দলীনী মরিয়ম, যোহান ও যাকোবের মা মরিয়ম। তাঁদের সংগে আর অন্য যে স্ত্রীলোকেরা ছিলেন তাঁরাও এই সমস্ত কথা প্রেরিতদের কাছে বললেন।’
যোহন ২০:১ ‘সপ্তার প্রথম দিনের ভোর বেলায়, অন্ধকার থাকতেই মগ্দলীনী মরিয়ম সেই কবরের কাছে গেলেন।’
এখানে পরিষ্কার ভাবে বুঝা যায় যে মহিলাদের নাম যতদূর উল্লেখ আছে, তার মানে এই নয় যে আর কেউ ছিল না। যত মহিলাদের নাম লেখক নিশ্চিত জানেন বা উল্লেখ করার গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, ততজন তিনি উল্লেখ করেছেন। লূক ‘অন্যান্য মহিলাদের’ উপস্থিতিও উল্লেখ করেন।
রবিবার, খুব সকালে মহিলারা কবরে পৌঁছিয়ে দেখেন যে পাথর সরানো
মার্ক ১৬:৪ ‘তাঁরা চেয়ে দেখলেন যে, পাথরখানা সরানো হয়েছে। সেই পাথরটা খুব বড় ছিল।’
যোহন ২০:১ ‘তিনি দেখলেন, কবরের মুখ থেকে পাথরখানা সরানো হয়েছে।’
লূক ২৪:২ ‘তাঁরা দেখলেন কবরের মুখ থেকে পাথরখানা সরিয়ে রাখা হয়েছে’
ইস্রায়েলে এখনও ৬০টার চেয়েও বেশি কবর দেখা যায়, যা একটি ঝুলন্ত পাথর দিয়ে বন্ধ করার পদ্ধতি আছে।
রবিবার, খুব সকালে মহিলারা স্বর্গদূত দেখতে পান
মথি ২৮:২-৫ ‘তখন হঠাৎ ভীষণ ভূমিকম্প হল, কারণ প্রভুর একজন দূত স্বর্গ থেকে নেমে আসলেন এবং কবরের মুখ থেকে পাথরখানা সরিয়ে দিয়ে তার উপর বসলেন। ৩ তাঁর চেহারা বিদ্যুতের মত ছিল আর তাঁর কাপড়-চোপড় ছিল ধব্ধবে সাদা। ৪ তাঁর ভয়ে পাহারাদারেরা কাঁপতে লাগল এবং মরার মত হয়ে পড়ল। ৫ স্বর্গদূত স্ত্রীলোকদের বললেন …’
মার্ক ১৬:৫-৬ ‘কবরের গুহায় ঢুকে তাঁরা দেখলেন, সাদা কাপড়-পরা একজন যুবক ডান দিকে বসে আছেন। এতে তাঁরা খুব অবাক হলেন। ৬ সেই যুবকটি বললেন…’
লূক ২৪:৩-৫ ‘কিন্তু কবরের ভিতরে গিয়ে তাঁরা প্রভু যীশুর দেহ দেখতে পেলেন না। ৪ যখন তাঁরা অবাক হয়ে সেই বিষয়ে ভাবছিলেন তখন বিদ্যুতের মত ঝক্ঝকে কাপড় পরা দু’জন লোক তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। ৫ এতে স্ত্রীলোকেরা ভয় পেয়ে মাথা নীচু করলেন। লোক দুটি তাঁদের বললেন…’
- লেখক মথি গুরুত্ব দেন যে কবর খোলা ছিল। তিনি কবরের বাইরে পাথরের উপরে বসা একজন স্বর্গদূতের কথা উল্লেখ করেন। লেখক মার্ক গুরুত্ব দেন যে কবর খালি ছিল। তিনি ভিতরে ডান পাশে বসা একজন স্বর্গদূতের কথা উল্লেখ করেন। লেখক লূক দুইজন স্বর্গদূতের কথা উল্লেখ করেন (হতে পারে একজন বাইরে এবং একজন ভিতরে, যদিও তিনি তা নির্দিষ্টভাবে বলেন না)।
- লেখক যোহন অন্য সুসমাচারগুলির মত প্রাথমিকভাবে খালি কবরের কথা উল্লেখ করেন। যোহন এখানে ভোরে দূতদের দেখার কথা উল্লেখ করেন না, কিন্তু একটু পরে যখন মরিয়মের গল্প বলতে থাকেন তখন দুইজন স্বর্গদূতদের দেখার কথা বলেন: ‘কাঁদতে কাঁদতে নীচু হয়ে কবরের ভিতরে চেয়ে দেখেন যীশুর দেহ যেখানে শোওয়ানো ছিল সেখানে সাদা কাপড় পরা দুজন স্বর্গদূত বসে আছেন-একজন মাথার দিকে আর অন্যজন পায়ের দিকে’ (যোহন ২০:১১-১২)। তাই যোহনের সুসমাচরেও দুইজন দূতদের দেখার কথা আছে, যদিও তা পরে উল্লেখ করা হয়েছে।
- এই চারটি ঘটনার বর্ণনাগুলি যদিও সম্পূর্ণ এক নয়, সম্পূর্ণ আলাদাও নয় বা পরস্পরবিরোধীয়ও নয়।
রবিবার, খুব সকালে স্বর্গদূতরা কি সংবাদ দিতে বলেন
মথি ২৮:৫-৭ ‘তোমরা ভয় কোরো না, কারণ আমি জানি, যাঁকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তোমরা সেই যীশুকে খুঁজছ। ৬ তিনি এখানে নেই। তিনি যেমন বলেছিলেন তেমন ভাবেই জীবিত হয়ে উঠেছেন। এস, তিনি যেখানে শুয়ে ছিলেন সেই জায়গাটা দেখ। ৭ তোমরা তাড়াতাড়ি গিয়ে তাঁর শিষ্যদের বল তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন এবং তাদের আগে গালীলে যাচ্ছেন। তারা তাঁকে সেখানেই দেখতে পাবে। দেখ, কথাটা আমি তোমাদের জানিয়ে দিলাম।’
মার্ক ১৬:৬-৭ ‘অবাক হয়ো না। নাসরত গ্রামের যীশু, যাঁকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল, তাঁকেই তোমরা খুঁজছো তো? তিনি এখানে নেই, তিনি জীবিত হয়ে উঠেছেন। যেখানে তারা তাঁকে রেখেছিল সেই জায়গা দেখ। ৭ তারপর তোমরা গিয়ে তাঁর শিষ্যদের ও পিতরকে এই কথা বল যে, তিনি তাদের আগে গালীলে যাচ্ছেন। তিনি যেমন বলেছিলেন তেমনই তারা তাঁকে সেখানে দেখতে পাবে।’
লূক ২৪:৫-৭ ‘যিনি জীবিত তাঁকে মৃতদের মধ্যে খোঁজ করছ কেন?’ ৬ তিনি এখানে নেই; তিনি জীবিত হয়ে উঠেছেন। তিনি যখন গালীলে ছিলেন তখন তিনি তোমাদের কাছে যা বলেছিলেন তা মনে করে দেখ। ৭ তিনি বলেছিলেন, মনুষ্যপুত্রকে পাপী লোকদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হবে। তার পরে তাঁকে ক্রুশে দেওয়া হবে এবং তৃতীয় দিনে তাঁকে আবার জীবিত হয়ে উঠতে হবে।’
এই ৩টি গল্পের যথেষ্ট মিল আছে এবং পরস্পরকে সমর্থন ও পূর্ণ করে। যোহন কোনো স্বর্গদূতদের কথা উল্লেখ করেন নি, তাই দূতদের কোনো সংবাদও এখানে উল্লেখ করেন নি।
রবিবার, সকালে মহিলারা যিরূশালেমে ফিরে গিয়ে শিষ্যদের বলেন: কবর খালি ও দূতদের সংবাদ
যোহন ২০:২ ‘সেইজন্য তিনি শিমোন-পিতর আর যে শিষ্যকে যীশু ভালবাসতেন সেই শিষ্যের কাছে দৌড়ে গিয়ে বললেন, “লোকেরা প্রভুকে কবর থেকে নিয়ে গেছে। তাঁকে কোথায় রেখেছে আমরা তা জানি না।’
মার্ক ১৬:৮ ‘সেই স্ত্রীলোকেরা কিছু বুঝতে না পেরে কাঁপতে কাঁপতে কবরের গুহা থেকে বের হয়ে আসলেন এবং সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেলেন। তাঁরা এত ভয় পেয়েছিলেন যে, কাউকে কিছু বললেন না।’ এই কথার অর্থ এই নয় যে মহিলারা চিরকাল পর্যন্ত চুপ ছিলেন।
মার্ক ১৬:৯ পদে উল্লেখ আছে যে মরিয়ম এই বিষয়ে ঠিকই কথা বলছেন ও শিষ্যদের খবর দেন। কিন্তু মার্ক বুঝান যে মহিলারা শিষ্যদের কাছে না পৌছানো পর্যন্ত ভয়ে কারও সাথে কোনো কথা বলেন নি।
লূক ২৪:৯,১১ ‘তাঁরা কবর থেকে ফিরে গিয়ে সেই এগারোজন শিষ্য এবং অন্য সকলকে এই সব কথা জানালেন।…১১ কিন্তু সেই সব কথা তাঁদের কাছে বাজে কথার মতই মনে হল। সেইজন্য সেই স্ত্রীলোকদের কথা তাঁরা বিশ্বাস করলেন না।’
মথি ২৮:৮ ‘সেই স্ত্রীলোকেরা অবশ্য ভয় পেয়েছিলেন, কিন্তু তবুও খুব আনন্দের সংগে তাড়াতাড়ি কবরের কাছ থেকে চলে গেলেন এবং যীশুর শিষ্যদের এই খবর দেবার জন্য দৌড়াতে লাগলেন।’
- যোহন বলেন যে মগ্দলীনী মরিয়ম শিষ্যদের খবর দেওয়ার জন্য দৌড়ে ফিরে যান। মথি, মার্ক ও লূক বলেন যে কয়েকজন মহিলা খবর দেওয়ার জন্য দৌড়ে ফিরে যান। এখানেও এই ঘটনার বর্ণনাগুলি পরস্পরকে বিপরীত দাবি করে না: মরিয়ম হয়তো প্রথম দৌড় দিয়েছেন বা অন্য মহিলাদের চেয়ে তাড়াতাড়ি দৌড় দিয়েছেন।
- যোহন বলেন যে মরিয়ম খালি কবরের সংবাদ দেন। মথি ও লূক নির্দিষ্টভাবে বলেন না মহিলারা কি সংবাদ দিয়েছিলেন কিন্তু হতে পারে খালি কবরের ও স্বর্গদূতদের কথা।
- যোহন বলেন যে মরিয়ম এখনও আশার কথা বলেন না। মথি ইতিমধ্যে উল্লেখ করেছেন যে মহিলারা একইসাথে ভীত ও আনন্দিত।
মথি ২৮:১১-১৫ ‘সেই পাহারাদারদের কয়েকজন শহরে গেল এবং যা যা ঘটেছিল তা প্রধান পুরোহিতদের জানাল। ১২ তখন পুরোহিতেরা ও বৃদ্ধ নেতারা একত্র হয়ে পরামর্শ করলেন এবং সেই সৈন্যদের অনেক টাকা দিয়ে বললেন, ১৩ ‘তোমরা বোলো, ‘আমরা রাতে যখন ঘুমাচ্ছিলাম তখন তাঁর শিষ্যেরা এসে তাঁকে চুরি করে নিয়ে গেছে।’ … আজও পর্যন্ত সেই কথা যিহূদীদের মধ্যে ছড়িয়ে আছে।
- মথিতে মহিলাদের পুনরায় কবরে আসা ও যীশুর সাথে দেখা হওয়ার পরেই পাহারাদারদের কথা উল্লেখ করেন।
- কিন্তু হতে পারে ঘটনার ধারাবাহিকতা আসলে এমন: প্রথম মহিলাদের আসার পরেই তারা সংবাদ দিতে যায়: ‘ভীষণ ভূমিকম্প’, দূতের সে ‘পাথরখানা সরিয়ে’ দেওয়ার পরে পাহারাদাররা ‘তাঁর ভয়ে …কাঁপতে লাগল এবং মরার মত হয়ে পড়ল’ ।
- পরে যখন তারা আবার স্বাভাবিক হয় (মথি ২৮:২-৩) তখন তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে তাড়াতাড়ি নেতাদের সংবাদ দিতে হবে।
- যেহেতু পাহারা দেওয়ার মত আর কিছু নেই (দেহ নেই, কবর খোলা) তারা সাথে সাথেই রওনা দেয় এবং পুরোহিতদের কাছে এই ‘আশ্চর্য ঘটনা’ বলে দেয়।
রবিবার, সকালে পিতর ও যোহন খালি কবর দেখতে যান
যোহন ২০:৩-১০ পিতর ও যোহন কবরে দৌড়াচ্ছেন…তারা ‘নীচু হয়ে দেখেন যীশুর দেহে যে কাপড়গুলো জড়ানো হয়েছিল সেগুলো পড়ে আছে।… ৯ মৃত্যু থেকে যীশুর জীবিত হয়ে উঠবার যে দরকার আছে, পবিত্র শাস্ত্রের সেই কথা তাঁরা আগে বুঝতে পারেন নি। ১০ এর পরে শিষ্যেরা ঘরে ফিরে গেলেন।’
লূক ২৪:১২ ‘পিতর কিন্তু উঠে দৌড়ে কবরের কাছে গেলেন এবং নীচু হয়ে কেবল কাপড়গুলোই দেখতে পেলেন। যা ঘটেছে তাতে আশ্চর্য হয়ে তিনি ফিরে আসলেন।’
- মহিলাদের কথা শুনে পিতর ও যোহন দৌড়ে দেখতে যান, কবর আসলে খালি কিনা। যদিও তারা মহিলাদের কথা ও স্বর্গদূত সম্বন্ধীয় গল্প বিশ্বাস করেন না, তবুও তারা নিশ্চিত হতে চান, যীশুর দেহ নিয়ে কি ঘটল। তাদের মধ্যে পুনরুত্থানের চিন্তা বা আশা নেই, কিন্তু তারা জানতে চান যীশুর দেহ কোথায় এবং হতে পারে তারা নিশ্চিত করতে চান দেহ যেখানেই থাক, তা যেন সম্মানের সঙ্গে রাখা হয়।
রবিবার, সকালে মরিয়মের (এবং অন্যান্য মহিলারদের) পুনরুত্থিত যীশুর সাথে দেখা
মার্ক ১৬:৯ ‘সপ্তার প্রথম দিনের ভোর বেলায় যীশু মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠলেন। পরে তিনি মগ্দলীনী মরিয়মকে প্রথমে দেখা দিলেন। এই মরিয়মের ভিতর থেকে তিনি সাতটা মন্দ আত্মা ছাড়িয়েছিলেন।’
যোহন ২০:১১-১৭ মরিয়ম কবরের বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদে…’১৫ যীশু তাঁকে বললেন, ‘কাঁদছ কেন? কাকে খুঁজছ?’ যীশুকে বাগানের মালী ভেবে মরিয়ম বললেন, ‘দেখুন, আপনি যদি তাঁকে নিয়ে গিয়ে থাকেন তবে বলুন কোথায় রেখেছেন। আমিই তাঁকে নিয়ে যাব।’ ১৬ যীশু তাঁকে বললেন, ‘মরিয়ম।’ তাতে মরিয়ম ফিরে দাঁড়িয়ে অরামীয় ভাষায় যীশুকে বললেন, ‘রব্বুনি।’ রব্বুনি মানে গুরু। ১৭ যীশু মরিয়মকে বললেন,…’ভাইদের কাছে গিয়ে বল, যিনি আমার ও তোমাদের পিতা, যিনি আমার ও তোমাদের ঈশ্বর, আমি উপরে তাঁর কাছে যাচ্ছি।’
মথি ২৮:৯-১০ ‘এমন সময় যীশু হঠাৎ সেই স্ত্রীলোকদের সামনে এসে বললেন, ‘তোমাদের মংগল হোক।’ তখন সেই স্ত্রীলোকেরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর পা ধরে প্রণাম করে তাঁকে ঈশ্বরের সম্মান দিলেন। ১০ যীশু তাঁদের বললেন, ‘ভয় কোরো না; তোমরা গিয়ে ভাইদের গালীলে যেতে বল। তারা সেখানেই আমাকে দেখতে পাবে।’
- ঘটনাটির নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ নেই কিন্তু হতে পারে তা অল্পক্ষণ পরে ঘটে। মহিলারা ফিরে এসেছেন, শিষ্যদের সংবাদ দিয়েছেন, এখন তারা আবারও কবরের দিকে যান।
- এইটা খুব স্বাভাবিক যে তারা আবার যেতে চান: তারা (যেমন ভোরে যখন গেলেন) যীশুর দেহকে সম্মানের সঙ্গে দাফন দিতে চান, কিন্তু তাদের সাথে দূতদের যেখানে দেখা হয়েছে, সেখানে ফিরে যেতে চান এবং আর একবার নিশ্চিত হতে চান, আসলে কি দেখেছে ও কি ঘটেছে।
- যদিও দূতরা পুনরুত্থানের কথা বলেছিলেন, তা মহিলাদের কাছে এখনও সম্পূর্ণভাবে পৌছায় নি, মরিয়ম এখনও কান্না করেন এবং যীশুর দেহ দেখতে চান।
- শুধুমাত্র যখন পুনরুত্থিত যীশুর সাথে দেখা হয়, যখন মরিয়ম তাকে যীশু হিসাবে চিনতে পারে এবং যখন তাঁর কণ্ঠস্বর শুনে তিনি পুনরুত্থান বিশ্বাস করতে শুরু করেন।
রবিবার, সকালে মরিয়ম আবার ফিরে গিয়ে শিষ্যদের বলেন যে যীশুর সাথে দেখা হয়েছে
মার্ক ১৬:১০-১১ ‘যীশুকে দেখবার পর মরিয়ম গিয়ে যাঁরা যীশুর সংগে থাকতেন তাঁদের কাছে খবর দিলেন। সেই সময় তাঁরা মনের দুঃখে কাঁদছিলেন। ১১ যীশু জীবিত হয়েছেন ও মরিয়ম তাঁকে দেখেছেন, এই কথা শুনে তাঁরা বিশ্বাস করলেন না।’
যোহন ২০:১৮ ‘তখন মগ্দলীনী মরিয়ম শিষ্যদের কাছে গিয়ে সংবাদ দিলেন, তিনি প্রভুকে দেখেছেন আর প্রভুই তাঁকে এই সব কথা বলেছেন।’
- মরিয়ম এখন পুনরুত্থানের সত্য বুঝেন ও বিশ্বাস করেন কিন্তু তার কথা দিয়ে অন্যদের একই বিশ্বাসে আনতে সক্ষম হন না।
রবিবার, পরে যীশুর সাথে আরো লোকদের দেখা হয়: ইম্মায়ূ যাওয়া শিষ্যরা, পিতর
মার্ক ১৬:১২-১৩ ‘এর পরে তাঁর দু’জন শিষ্য যখন হেঁটে গ্রামের দিক যাচ্ছিলেন তখন যীশু অন্য রকম চেহারায় তাঁদের দেখা দিলেন। ১৩ তাঁরা ফিরে গিয়ে বাকী সবাইকে সেই খবর দিলেন, কিন্তু তাঁদের কথাও অন্য শিষ্যেরা বিশ্বাস করলেন না।’
যখন দুইজন শিষ্য যিরুশালেমে তাড়াতাড়ি ফিরে যীশুর পুনরুত্থানের সাক্ষ্য দেন, অন্যরা তারপরেও তা বিশ্বাস করতে পারে না।
লূক ২৪:১৩-৩৩ ‘সেই দিনেই দুজন শিষ্য ইম্মায়ূ নামে একটা গ্রামে যাচ্ছিলেন।…২২ আবার আমাদের দলের কয়েকজন স্ত্রীলোক আমাদের অবাক করেছেন। তাঁরা খুব সকালে যীশুর কবরে গিয়েছিলেন, ২৩ কিন্তু সেখানে তাঁর দেহ দেখতে পান নি। তাঁরা ফিরে এসে বললেন, তাঁরা স্বর্গদূতদের দেখা পেয়েছেন আর সেই স্বর্গদূতেরা তাঁদের বলেছেন যে, যীশু বেঁচে আছেন।…৩১ তখন তাঁদের চোখ খুলে গেল; তাঁরা যীশুকে চিনতে পারলেন’
- হতে পারে সে শিষ্যরা শুধুমাত্র মরিয়মের প্রথম সংবাদ শুনেছেন (খালি কবর, দূতদের কথা) কিন্তু তার দ্বিতীয় কথার আগে (যীশুর সাথে দেখা) চলে গিয়ে ইম্মায়ূর যাত্রা করেন।
লূক ২৪:৩৪ ‘প্রভু যে সত্যিই জীবিত হয়ে উঠেছেন এবং শিমোনকে দেখা দিয়েছেন তা নিয়ে তখন তাঁরা আলোচনা করছিলেন।’
- পিতর এখানে যীশুর সাথে কিভাবে দেখা হয়, তার সুসমাচারগুলিতে বিস্তারিত বর্ণনা নেই। পিতরের সাক্ষ্যের পরেও অন্যান্য শিষ্যরা বিশ্বাস করেন না, যদিও পুনরুত্থানের সাক্ষ্যগুলি খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
রবিবার, সন্ধায় যীশু এগারোজনের (এবং হতে পারে অন্যান্য শিষ্যদের) সাথে দেখা করেন
লূক ২৪:৩৬-৪৯ যীশু নিজে তাঁদের মধ্যে এসে দাঁড়িয়ে তাঁদের সবাইকে বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক।’… খাবার খান…’শাস্ত্র বুঝবার জন্য শিষ্যদের বুদ্ধি খুলে দিলেন ‘
যোহন ২০:১৯ ‘সেই একই দিনে, সপ্তার প্রথম দিনের সন্ধ্যাবেলায় শিষ্যেরা যিহূদী নেতাদের ভয়ে ঘরের সমস্ত দরজা বন্ধ করে এক জায়গায় মিলিত হয়েছিলেন। তখন যীশু এসে তাঁদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক।’ ২০ এই কথা বলে তিনি তাঁর দুই হাত ও পাঁজরের দিকটা তাঁর শিষ্যদের দেখালেন। প্রভুকে দেখতে পেয়ে শিষ্যেরা খুব আনন্দিত হলেন। ২১ পরে যীশু আবার তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক। পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন আমিও তেমনি তোমাদের পাঠাচ্ছি।’ ২২ এই কথা বলে তিনি শিষ্যদের উপর ফুঁ দিয়ে বললেন, ‘পবিত্র আত্মাকে গ্রহণ কর। ২৩ তোমরা যদি কারও পাপ ক্ষমা কর তবে তার পাপ ক্ষমা করা হবে, আর যদি কারও পাপ ক্ষমা না কর তবে তার পাপ ক্ষমা করা হবে না।’
মার্ক ১৬:১৪ ‘এর পরে যীশু তাঁর এগারোজন শিষ্যকে দেখা দিলেন। তখন তাঁরা খাচ্ছিলেন। বিশ্বাসের অভাব ও অন্তরের কঠিনতার জন্য তিনি তাঁদের বকলেন, কারণ তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠবার পরে যাঁরা তাঁকে দেখেছিলেন তাঁদের কথা তাঁরা বিশ্বাস করেন নি।’
৮ দিন পরে যীশু শিষ্যদের এবং বিশেষভাবে থোমার সাথে দেখা করেন
যোহন ২০:২৪-২৯ যীশু যখন এসেছিলেন তখন থোমা ছিলেন না। অন্য শিষ্যরা সাক্ষ্য দেওয়ার পরেও তার তা বিশ্বাস করতে কষ্ট…৮ দিন পরে যীশু তার সঙ্গে দেখা করেন, নিজেকে দেখান, তার ক্রুশীয় মৃত্যুর চিহ্নও দেখান। থোমা বিশ্বাস করেন।
৮-৪০ দিন পরে গালীলে যীশুর সাথে আরো কয়েকবার দেখা
যোহন ২১:১-২৪ তিবিরিয়া সাগরের পারে: শিমোন-পিতর, থোমা…কান্না গ্রামের নথনেল, সিবদিয়ের ছেলেরা এবং যীশুর অন্য দুজন শিষ্য একসংগে ছিলেন।…সেই রাতে কিছুই ধরতে পারলেন না।… যীশু তাঁদের বললেন, ‘নৌকার ডানদিকে জাল ফেল, পাবে।’…যীশু তাঁদের বললেন, ‘এস, খাও।’…যীশু পিতরকে তার শিশু-মেষগুলো চরাতে বলেন … যোহনকে নিয়ে চিন্তা না করতে বলেন।
মথি ২৮:১৬-১৭ ‘যীশু গালীলের যে পাহাড়ে শিষ্যদের যেতে বলেছিলেন সেই এগারোজন শিষ্য তখন সেই পাহাড়ে গেলেন। ১৭ সেখানে যীশুকে দেখে তাঁরা তাঁকে প্রণাম করে ঈশ্বরের সম্মান দিলেন, কিন্তু কয়েকজন সন্দেহ করলেন।’
৪০ দিন পরে বৈথনিয়ায় মহা আজ্ঞা ও যীশুর স্বর্গারোহণ
মথি ১৮:১৮-২০ ‘তখন যীশু কাছে এসে তাঁদের এই কথা বললেন, “স্বর্গের ও পৃথিবীর সমস্ত ক্ষমতা আমাকে দেওয়া হয়েছে। ১৯ এইজন্য তোমরা গিয়ে সমস্ত জাতির লোকদের আমার শিষ্য কর। পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে তাদের বাপ্তিস্ম দাও। ২০ আমি তোমাদের যে সব আদেশ দিয়েছি তা পালন করতে তাদের শিক্ষা দাও। দেখ, যুগের শেষ পর্যন্ত সব সময় আমি তোমাদের সংগে সংগে আছি।’
মার্ক ১৬:১৫-১৮ ‘যীশু সেই শিষ্যদের বললেন, “তোমরা পৃথিবীর সব জায়গায় যাও এবং সব লোকদের কাছে ঈশ্বরের দেওয়া সুখবর প্রচার কর। ১৬ যে কেউ বিশ্বাস করে এবং বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে সে-ই পাপ থেকে উদ্ধার পাবে…১৭ যারা বিশ্বাস করে তাদের মধ্যে এই চিহ্নগুলো দেখা যাবে-আমার নামে তারা মন্দ আত্মা ছাড়াবে, তারা নতুন নতুন ভাষায় কথা বলবে, ১৮ তারা হাতে করে সাপ তুলে ধরবে, যদি ভীষণ বিষাক্ত কিছু খায় তবে তাদের কোন ক্ষতি হবে না…’
মার্ক ১৬:১৯ ‘প্রভু যীশুকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল। সেখানে তিনি ঈশ্বরের ডান দিকে বসলেন।’
লূক ২৪:৫০-৫২ ‘পরে যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে বৈথনিয়া পর্যন্ত গেলেন। সেখানে তিনি হাত তুলে তাঁদের আশীর্বাদ করলেন। ৫১ আশীর্বাদ করতে করতেই তিনি তাঁদের ছেড়ে গেলেন এবং তাঁকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল। ৫২ তখন তাঁরা উবুড় হয়ে প্রণাম করে তাঁকে ঈশ্বরের সম্মান দিলেন এবং খুব আনন্দের সংগে যিরূশালেমে ফিরে গেলেন।’
মার্ক ১৬:২০ ‘পরে শিষ্যেরা গিয়ে সব জায়গায় প্রচার করতে লাগলেন…’
সারাংশ: প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের আসল, অপরিবর্তিত, অমিলানো সাক্ষ্যগুলি
- যদিও পুনরুত্থানের বর্ণনাগুলি প্রত্যেক সুসমাচারে একটু ভিন্নভাবে দেওয়া আছে, কিন্তু চারটি সুসমাচারে একই ঘটনাকে বর্ণনা করে: একটি খালি কবর, একটি অনুপস্থিত লাশ, স্বর্গদূতদের সাথে দেখা, পুনরুত্থানের ঘোষণা, শিষ্যদের অবিশ্বাস – এবং শেষে: পুনরুত্থিত যীশুর সাথে দেখা! যীশু ভূত নন, দর্শনও নন: তাঁর শরীর আছে, তাঁকে চেনা যায়, তাঁকে স্পর্শ করা যায়, তাঁর গায়ে ক্রুশের ঘায়ের দাগ দেখা যায়, তিনি সবার সামনে মাছ খান …।
- চারটি সুসমাচারে সে পুনরুত্থানের গল্পগুলি হল একটি অদ্ভূত ঘটনার সৎ-সরল বর্ণনা। এখানে কিছু যোগ করা হয় নি, কিছু ব্যাখ্যা করা হয় নি, কিছু সাজানো হয় নি, কিছু মিলানোও হয় নি। বরং বর্ণনাগুলি যেমন তেমনই আছে; প্রত্যক্ষ সাক্ষীরা যেমন দেখেছিলেন ও বলেছিলেন, ঠিক তেমনই। বর্ণনাগুলি পড়লে বুঝা যায় যে সাক্ষীরা পুনরুত্থানের ঘটনা দেখে আশ্চর্য, এমন কি হতভম্ব হন। কারও চিন্তা বা আশা ছিল না যে এই ধরণের কিছু ঘটবে। তারা ঘটনাটি নিজেরাই প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেন নি এবং শুরুতে কেউ তার গুরুত্ব বা অর্থ বুঝতেও পারেন নি।

- পরে যখন পিতর এবং শিষ্যরা এই পুনরুত্থানের ঘটনার অর্থ ও গুরুত্ব নিয়ে চিন্তা করেন, এবং পুনরুত্থিত যীশুর শিক্ষা পান, তারা এর ব্যাখ্যা দিতে শুরু করেন: ‘যাঁকে আপনারা ক্রুশে দিয়েছিলেন ঈশ্বর সেই যীশুকেই প্রভু এবং মশীহ-এই দুই পদেই নিযুক্ত করেছেন’ (প্রেরিত ২:৩৬)।
- পরবর্তীতে পৌল সহ আর অনেক পণ্ডিতরা পুনরুত্থান নিয়ে আরো বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন, কিন্তু প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের সাক্ষ্যের বিঁন্দুমাত্রও পরিবর্তন করেন না।
- কিন্তু পুনরুত্থানের অর্থ ও গুরুত্ব সম্বন্ধীয় পরবর্তী ব্যাখ্যাগুলি সুসমাচারে পুনরুত্থানের বর্ণনাগুলিতে এখনও নেই। সুসমাচারগুলি আমাদের টাটকা, খাঁটি, যেমন তেমনই, অপরিবর্তিত, ভেজালহীন, অসাজানো বাস্তব বর্ণনা দেয়, প্রত্যক্ষ সাক্ষীরা যা নিজের চোখে দেখেছিলেন।
- আজকাল অনেকে ঘটনাগুলি নিয়ে সন্দেহ করে কারণ ঘটনার বর্ণনাগুলি একই নয়। কিন্তু আসলে বিপরীত উপসংহারে আসা উচিত: বর্ণনাগুলি যে সাজানো হয় নি, মিলানো হয় নি, ব্যাখ্যা করা হয় নি, তা প্রমাণ করে যে সেগুলি হল আসল প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের কথা, যেমন আদালতে যখন তদন্ত করে সাক্ষীদের থেকে সাক্ষ্য নেওয়া হয়, তার রেকর্ড। প্রথম মণ্ডলী ভিন্ন সাক্ষীদের বর্ণনাগুলি এইভাবে চিনত (হয়তো সেগুলি মুখস্ত করা হত) এবং কোনো পরের লেখক সেগুলি সাজান নি বা মিলানোর চেষ্টা করেন নি। তাতে বুঝা যায় যে এই সাক্ষ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, অপরিবর্তিত এবং শুরু থেকে যেমন ছিল, তেমনিভাবে আমাদের জন্য লেখা হয়েছে।