সরকার ১১ – সরকারের বিষয়ে হিতোপদেশ

মন্দতা, অন্যায়, আইনভঙ্গতা বা হিংস্রতার ফলাফল

হিতো ১:৩১-৩২                    প্রজ্ঞা ও আইনকে প্রত্যাখ্যান > নিজের ধ্বংস

‘কাজেই তাদের নিজেদের কাজের ফল তাদেরই ভোগ করতে হবে, বিদ্রূপ নিজেদের পরামর্শের ফল দিয়েই পেট ভরাতে হবে। ৩২ বোকা লোকদের বিপথে যাওয়াই তাদের মৃত্যুর কারণ হবে, বিবেচনাহীনদের নিশ্চিন্ত মনোভাব তাদের ধ্বংস করবে।’

  • শুরুতে যারা প্রজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করে, পরে তাদেরকে এর জন্য খেসারৎ দিতে হবে।
  • মন্দতা পছন্দ করলে মানে নিজের উপর মন্দতা টেনে নিয়ে আসা ‘নিজেদের কাজের ফল তাদেরই ভোগ করতে হবে’, ‘বিদ্রূপ নিজেদের পরামর্শের ফল দিয়েই পেট ভরাতে হবে’ এটা ঈশ্বরের ‘শাস্তি’ নয় বরং সিদ্ধান্তের স্বাভাবিক ফলাফল।
  • আমি অন্যদের উপরে যা আনব, তা আমার উপরেও আসবে।

হিতো ১৩:২৩                      অন্যায্যতা > দারিদ্রতা
‘গরীবের জমিতে প্রচুর শস্য জন্মায়, কিন্তু অবিচারের ফলে তা কেড়ে নেওয়া হয়।’

  •  
  • অন্যায্যতা হতাশা উৎপন্ন করে ও উদ্যোগ, উদ্যম, প্রচেষ্টা, পরিশ্রম নিরুৎসাহিত করে, যার ফলে আশাহীনতা বাড়ে, যার ফলে ‘পঙ্গু ভাব’ বাড়ে (কিছু করার নেই), যার ফলে দারিদ্রতা বাড়ে।

হিতো ১৬:২৭                      মন্দতা > ধ্বংস
নীচমনা লোক মন্দ কাজ করবার জন্য ষড়যন্ত্র করে; তার কথাবার্তা ঝল্‌সে দেওয়া আগুনের মত।

  • মন্দতা, অন্যায্যতা, আইনভঙ্গ শুধু তাৎক্ষণিক ক্ষতিই করে না বরং অনেক দূর পর্যন্ত নিরুৎসাহ, ভয়, ‘পঙ্গু ভাব’ ও আশাহীনতা তৈরি করে।

হিতো ১৬: ২৯                     মন্দতা > অন্যদের প্রলোভন করা বা মন্দের পথে চালিত করা
‘অত্যাচারী লোকের জীবন দেখে অন্যেরা লোভে পড়ে আর কুপথে যায়।’

  • একজন খারাপ কাজ করলে অন্যরা সঠিক কাজ করতে নিরুৎসাহিত হয়:
  • খারাপ আদর্শও পেলাম, একই ভাবে করার প্রলোভনে পড়লাম, হয়তো তার আচরণে কষ্ট পেলাম বা ক্ষতিগ্রস্ত হলাম, ক্ষমা করতে হয়, অপমানবোধ অতিক্রম করতে হয়, ধৈর্য্য ধরতে হয়, বিপরীত আত্মায় সাড়া দিতে হয়, ক্ষতিকে স্বীকার করে নিতে হয়।

হিতো ১৭:১১                     মন্দতা > বিদ্রোহ, পাল্টা সহিংস্রতা
‘বিদ্রোহী কেবলই মন্দের দিকে ঝোঁকে; তার বিরুদ্ধে একজন নিষ্ঠুর দূতকে পাঠানো হবে।’

  • মন্দতা ও অন্যায্যতা সব সময় আইন-শৃঙ্খলা ও সরকারের স্থায়িত্ব কমিয়ে দেয় এবং বিদ্রোহকে প্রতিপালন করতে উৎসাহ দেয়। বিদ্রোহ পাল্টা বিদ্রোহ সৃষ্টি করে ও অভ্যুত্থানের বা হিংস্রতার চক্র তৈরি করে। যত তা চলবে, তত কঠিন হবে পুনরায় আইনের অধীনতায় ফিরে আসতে।

হিতো ১৯:২৬                     মন্দতা > পরিবারের উপর লজ্জা নিয়ে আসে
‘যে ছেলে বাবার উপর অত্যাচার করে আর মাকে তাড়িয়ে দেয়, সে তাদের উপর লজ্জা ও অপমান ডেকে নিয়ে আসে।’

  • পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধাহীনতা ও হিংস্রতা মানে সব বিশ্বস্ততা ধ্বংসের পথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
  • ছেলেমেয়েদের মন্দ সিদ্ধান্তে তাদের পরিবারের উপর লজ্জা নেমে আসে।

হিতো ২৮:১-৪                    মন্দতা > ভয়, বিদ্রোহ, আইনভঙ্গ
‘কেউ তাড়া না করলেও দুষ্ট লোক পালায়, কিন্তু ঈশ্বরভক্ত লোক সিংহের মত নির্ভয়ে বাস করে। ২ দেশের লোকদের অন্যায়ের ফলে অনেক শাসনকর্তা হয়, কিন্তু জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান শাসনকর্তা শৃঙ্খলা বজায় রাখেন। ৩ যে গরীব নেতা অসহায়দের উপর অত্যাচার করে সে এমন বৃষ্টির ঢলের মত যার পরে আর কোন ফসল থাকে না। ৪ যারা সদাপ্রভুর আইন-কানুন ত্যাগ করে তারা দুষ্টদের প্রশংসা করে, কিন্তু যারা তা মানে তারা দুষ্টদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।’

  • যারা ঈশ্বরের বাধ্য হয় ও তাঁর উপর নির্ভর করে, তাদের জন্য ঈশ্বর শক্তি, সাহস ও নির্ভীকতার যোগান দেন।
  • যদি দেশ বিদ্রোহ করে বা সীমালঙ্ঘন করে ‘অনেক শাসনকর্তা হয় > জ্ঞানহীন শাসক, সরকারের স্থিতিশীলতা থাকে না > অভ্যুত্থানের চক্র ও পাল্টা অভ্যুত্থান > হিংস্রতা, অবৈধতা, অস্থিতিশীলতা, আইনভঙ্গতা বাড়ে।
  •   সমান্তরালভাবে অনেক শাসক ? অথবা ধারাবাহিকভাবে অনেক শাসক? বার বার সরকারের পরির্তন?
  • স্থিতিশীলতার জন্য সত্য, আইন ও নেতৃত্ব মানতে হবে। জ্ঞানী ও বুঝার ক্ষমতাসম্পন্ন নেতা স্থিতিশীলতা বাড়াবে।
  • হাওয়াই এর সংসদে খোদাইকৃত লেখা: ‘ন্যায্যতার মধ্য দিয়ে দেশের জীবন চিরস্থায়ী হয়।’
  • দুর্নীতি, ন্যায্য বিচারের অভাব, আইনভঙ্গ, অবিচার, নিপীড়ন, অত্যাচার প্রাথমিকভাবে গরীব বা দুর্বলদের ক্ষতি করে। গরীবদের খাওয়ানো সরকারের দায়িত্ব নয়, কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তা হলে গরীবেরা নিজেরাই নিজেদের খাওয়াতে পারবে।
  • আইনভঙ্গতা সর্বদাই আইন ভঙ্গ করতে উৎসাহিত করে। আইন পালন আরও আইন পালন করতে উৎসাহিত করে। এমনকি যখন সবাই আইন ভঙ্গ করে তখন যদি আমি ভঙ্গ না করি, তার একটি গুরুত্ব আছে। কারণ আমি মন্দতা বা অন্যায্যতার বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছি। আমিও যদি ভঙ্গ করি, আমি বিপরীত মন্দতা ও অন্যায্যতা শক্তিশালী করে তুলি। এই বিষয়ে ‘নিরপেক্ষ’ হওয়া যায় না।

হিতো ২৯:২                     মন্দতা, আইনভঙ্গতা > সকলের জন্য না বোধক ফলাফল
‘ঈশ্বরভক্ত লোকদের সংখ্যা বাড়লে লোকে আনন্দ করে, কিন্তু দুষ্ট লোক শাসনকর্তা হলে লোকে কাত্‌রায়।’

  • ঈশ্বরের নীতিতে বাধ্য একটি সরকার থেকে সকলের লাভ হয়। সাধারণ লোকেরা সুবিধা পায়, কিছু লোকদের সংশোধন করা হয়। অল্প লোকের বিশৃঙ্খলার কারণে অনেক শান্তিপ্রিয় লোকদের উৎসর্গ করা ঠিক না।
  • ধার্মিক লোকদের অবশ্যই রাজনৈতিক বিষয়ে অংশ গ্রহণ করতে হয়, ভাল লোকদের নির্বাচিত করতে হয়।
  • সরকারি নেতৃত্বের জন্য চরিত্র হল আবশ্যক।

হিতো ২৯:২২                   রাগ > শত্রুতা
‘রাগী লোক ঝগড়া খুঁচিয়ে তোলে, আর বদমেজাজী লোক অনেক পাপ করে।’

  • স্ব-নিয়ন্ত্রণের অভাব বা রাগকে স্থান দেওয়ার মধ্য দিয়ে দ্বন্দ্ব ও সীমালঙ্ঘন তৈরি হয়। ফলে সঠিক কাজ করা সকলের জন্য আরো কঠিন হয়ে উঠে।

হিতো ৩০:৩২-৩৩              মন্দতা, প্ররোচনা, > শত্রুতা
‘যদি তুমি নিজেকে বড় করে তুলে বোকামি কর কিম্বা অন্যদের বিরুদ্ধে কুমতলব কর, তবে হাত মুখের উপরে চাপা দাও। ৩৩ দুধ ফেটালে যেমন মাখন বের হয়, নাক মোচড়ালে যেমন রক্ত বের হয়, তেমনি রাগকে খুঁচিয়ে তুললে ঝগড়া-বিবাদ বের হয়।’

  • মন্দতা তৈরি করা একেবারে নিষিদ্ধ, নিজেকে বড় করে তোলা হল বোকামি। কারণ ও ফলাফল দ্বারা শিক্ষা।

হিতো ২৯:১৮                   ভাববাণী > আইনপূর্ণতা
যেখানে নবীদের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর তাঁর সত্য প্রকাশ করেন না সেখানকার লোকেরা উচ্ছঙ্খল হয়; কিন্তু সেই লোক ধন্য যে সদাপ্রভুর আইন-কানুন মেনে চলে।

  • যারা আইন পালন করে তারা এর দ্বারা আশীর্বাদ পায়, এছাড়াও সমাজের সকল সদস্যরাও আশীর্বাদ পায়।
  • বিভিন্ন অনুবাদ: নবীদের দিয়ে প্রকাশিত সত্য, দর্শন বা ঈশ্বরের জ্ঞান দ্বারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা তৈরি হয়।
মন্দতার পথ বেছে নিও না

হিতো ২১:৩                     উৎসর্গের উপর ধার্মিকতা ও ন্যায্যতা
সদাপ্রভুর কাছে পশু-উৎসর্গের চেয়ে ঠিক ও ন্যায় কাজ করা আরও গ্রহণযোগ্য।

  • ঈশ্বরের হৃদয় প্রকাশিত: ধর্মভীরুতা নয় কিন্তু ঈশ্বরীয় জীবন অন্যদের প্রতি ন্যায্যতা নিয়ে আসে।

হিতো ১:১১-১৯                 মন্দতা ও হিংস্রতার ডাক অগ্রাহ্য করা
‘ধর, কেউ বলল, “আমাদের সংগে এস, খুন করবার জন্য চল আমরা ওৎ পেতে থাকি, কোন নির্দোষ লোককে ধরবার জন্য লুকিয়ে থাকি। ১২ তারা যেমন সম্পূর্ণ শরীর নিয়ে জীবিত অবস্থায় মৃতস্থানে, অর্থাৎ সেই গর্তে নেমে যায়, তেমনি করেই এস, আমরা ওদের জীবিত অবস্থায় গোটাই গিলে ফেলি; ১৩ তাহলে আমরা নানা রকমের দামী জিনিস পাব, আর লুটের জিনিস দিয়ে আমাদের বাড়ী-ঘর ভরব। ১৪ আমাদের সংগেই তোমার ভাগ্য তুমি জুড়ে নাও, আমাদের টাকার থলি একটাই হবে।” ১৫ ছেলে আমার, তুমি ওদের সংগে যেয়ো না, ওদের পথে তোমার পা ফেলো না; ১৬ কারণ ওদের পা পাপের দিকে দৌড়ায়, খুন করবার জন্য ওরা ছুটে চলে। ১৭ লোকে বলে, “পাখীর চোখের সামনে জাল পাতলে কোন লাভ হয় না।” ১৮ এই লোকেরা নিজেরাই খুন হবার জন্য ওৎ পেতে থাকে, নিজেরাই শেষ হওয়ার জন্য লুকিয়ে থাকে। ১৯ মন্দ উপায়ে কোন কিছু লাভ করবার জন্য যারা ছোটে তাদের সকলের দশাই এই রকম হয়; তারা যা লাভ করে তা তাদের জীবন শেষ করে দেয়।’

  • অবাধে ও কারণ ছাড়া অন্যায্যতা ও আইনভঙ্গ বেছে নেওয়া হল মন্দতা। এটা প্রতিজ্ঞা রাখবে না বরং পরিকল্পনাকারীকে বিপদে ফেলবে। এটা ধ্বংসাত্মক ও স্ব-বিধ্বংসী। যীশু মথি ২৬:৫২ পদে বলেন যে, যারা তলোয়ার ধারণ করে তারা তলোয়ারেই মারা যাবে।
  • বড় ধরণের হিংস্রতা ও অন্যায্যতা সহ্য করার পরে যদি কেউ অন্যায় করে, ঈশ্বর তা ভিন্নভাবে দেখেন, কিন্তু কারণ ছাড়া সহিংস্রতা বেছে নেওয়া হল একেবারে দোষযুক্ত বিষয়।

হিতো ৩:২৯-৩৩                 প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মন্দতা ও সহিংস্রতা বেছে নিও না
‘তোমার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে কোন কুমতলব কোরো না, সে তো তোমার পাশে নিশ্চিন্তে বাস করে। ৩০ যে লোক তোমার কোন ক্ষতি করে নি, বিনা কারণে তাকে দোষী কোরো না। ৩১ কোন অত্যাচারী লোককে দেখে হিংসায় জ্বলতে থেকো না, কিম্বা তার কোন পথও তুমি বেছে নিয়ো না; ৩২ কারণ বাঁকা পথে যাওয়া মানুষকে সদাপ্রভু ঘৃণা করেন, কিন্তু খাঁটি অন্তরের লোকের সংগে তিনি যোগাযোগ রাখেন। ৩৩ দুষ্ট লোকের ঘরের উপর সদাপ্রভুর অভিশাপ থাকে, কিন্তু ঈশ্বরভক্তদের বাড়ীকে তিনি আশীর্বাদ করেন’

  • আগের মত: কোন কারণ ছাড়া নির্দোষীদের বিরুদ্ধে বা প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে, যে নিশ্চিন্তে বাস করে সহিংস্রতা শুরু করা একেবারে দোষযুক্ত।
  • একটি মন্দ কাজ করার আমার ক্ষমতা থাকতে পারে, কিন্তু তা করার আমার কোনো অধিকার বা অজুহাত নেই।
  • হিংস্রদের ঈর্ষা কর না! তাদের দেখতে কিছু সময়ের জন্য মনে হতে পারে তাদের কেউ আক্রমন করতে পারবে না। তারা হয়তো জয়ী কিন্তু এটা সীমিত সময়ের জন্য মাত্র। তারা স্থায়ী হবে না, চিরস্থায়ী তো একেবারে হবে না;

হিতো ৪:১৪-১৯                   মন্দতা ও সহিংস্রতা বেছে নিও না
‘দুষ্টদের পথে তুমি পা দিয়ো না, মন্দ লোকদের পথে হেঁটো না। ১৫ সেই পথ তুমি এড়িয়ে যাও, তার উপর দিয়ে তুমি হেঁটো না; সেই পথে না গিয়ে বরং এগিয়ে যাও; ১৬ কারণ মন্দ কাজ না করলে দুষ্টদের ঘুম হয় না; কাউকে উছোট খাওয়াতে না পারলে তাদের ঘুম আসে না। ১৭ দুষ্টতা হল তাদের খাবার আর অত্যাচার হল তাদের মদ। ১৮ ঈশ্বরভক্তদের পথ ভোরের প্রথম আলোর মত, যা দুপুর না হওয়া পর্যন্ত উজ্জ্বল থেকে আরও উজ্জ্বল হতে থাকে। ১৯ কিন্তু দুষ্টদের পথ গভীর অন্ধকারের মত; তারা জানে না কিসে তারা উছোট খায়।’

  • আদেশটি বার বার পুনরুক্তি: মন্দতার পথে পা দিও না, এড়িয়ে যাও, না গিয়ে আগাও, ঘুড়ে দাঁড়াও, পার হও।
  • শক্তিশালী ছবির ব্যবহার: ঈশ্বরের পথ ভোরের আলোর মত, আরও উজ্জ্বল ও উজ্জ্বলতর আলো দেয় সারাদিন। এর বিপরীত ছবি: গভীর অন্ধকার, তারা জানে না কার সাথে উছোট খায়।

হিতো ৫:২২-২৩                   মন্দতা, আইনভঙ্গতা অপরাধীদেরই আঘাত করে
‘দুষ্ট লোক তার মন্দ কাজের ফাঁদে পড়ে, সে নিজের পাপের দড়িতে কষে বাঁধা পড়ে। ২৩ শাসনের অভাবে সে মারা পড়ে; নিজের ভীষণ বোকামির দরুন সে তার পথে স্থির থাকে না।’

  • মন্দতা নিজেকেই প্রতারণায় ও ফাঁদে ফেলে। দেখতে স্মার্ট মনে হয় কিন্তু আসলেই ফাঁদ ও বিপদ।

হিতো ১১:৯-১১                     সকল আনন্দ ন্যায্যতায়, মন্দতা দ্বারা ধ্বংস
‘ঈশ্বরের প্রতি যার ভক্তি নেই সে মুখ দিয়ে প্রতিবেশীর সর্বনাশ করে, কিন্তু ঈশ্বরভক্ত লোক জ্ঞান দ্বারা রক্ষা পায়। ১০ ঈশ্বরভক্তদের মংগল হলে শহরে আনন্দ হয়, আর দুষ্টেরা ধ্বংস হলে লোকে আনন্দে চিৎকার করে। ১১ সৎ লোকেরা ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেলে শহরের উন্নতি হয়, কিন্তু দুষ্টদের মুখের দ্বারা শহরের সর্বনাশ হয়।’

  • কোন জ্ঞান ঈশ্বরভক্ত লোকদের রক্ষা করে? কিভাবে তাদের রক্ষা করে? হয়তো ঈশ্বরীয় জ্ঞান, যা পালনে আমরা স্থিরতা ও ধৈর্য্য পাই। অথবা বিচারিক প্রক্রিয়া সম্বন্ধীয় জ্ঞান, যা দ্বারা আমরা আইন জানি, কিভাবে প্রক্রিয়া করতে হয়, কিভাবে কথা বলতে হয়, তা বুঝি। হতেও পারে উভয়ই উত্তর ঠিক।
  • ১০, ১১ আইন-শৃঙ্খল থাকা দ্বারা পালনকারী মানুষদের জন্য (এবং সকলের জন্য) নিরাপত্তা, স্থিরিতা, আনন্দ ও আশীর্বাদ নিয়ে আসে।

হিতো ২৬:২৭                       মন্দতা শুরু কর না!
‘যে লোক গর্ত খোঁড়ে সে তার মধ্যে পড়ে; যে লোক পাথর গড়িয়ে দেয় তার উপরেই সেটা ফিরে আসে।’
হিতো ২১:১০                        প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মন্দ কর না!
‘দুষ্ট লোক ক্ষতি করতে চায়; তার প্রতিবেশী তার কাছ থেকে কোন দয়া পায় না।’
হিতো ২৬:১৮                       প্রতিবেশীর সাথে প্রতারণা কর না!
‘যে পাগল জ্বলন্ত কাঠ বা তীর ছোঁড়ে যার ফলে মৃত্যু হতে পারে সেই পাগল যেমন, ১৯ তেমনি সেই লোক যে প্রতিবেশীর সংগে ছলনা করে আর বলে, ‘আমি কেবল তামাশা করছিলাম।’
হিতো ৩০:১০                        মনিবের কাছে দাসের দুর্নাম করো না!
‘মনিবের কাছে দাসের দুর্নাম কোরো না, তা করলে সেই দাস তোমাকে অভিশাপ দেবে আর তুমি দোষী হবে।’
হিতো ৩০:১৪                        সহিংস্রতার সতর্কতা
‘তাদের দাঁত যেন তলোয়ার আর চোয়াল যেন ছুরি, যাতে তারা পৃথিবী থেকে দুঃখী লোকদের আর মানুষের মধ্য থেকে অভাবীদের গ্রাস করতে পারে।’
হিতো ২৪:২৯                        প্রতিহিংসাপরায়ণতা ঈশ্বরীয় নয়
‘এই কথা বোলো না, “সে আমার প্রতি যেমন করেছে আমিও তার প্রতি তেমন করব; সে যা করেছে তার ফল তাকে দেব।’

  • যদিও প্রতিশোধ নেওয়ার মনোভাব বুঝতে পারি (‘চোখের বদলে চোখ’), সর্বোচ্চ পছন্দ হল ক্ষমা, ছেড়ে দেওয়া ও উদ্ধারের পথ করে দেওয়া।

হিতো ২৮:৪                          আইন পালন করা =মন্দতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা
‘যারা সদাপ্রভুর আইন-কানুন ত্যাগ করে তারা দুষ্টদের প্রশংসা করে, কিন্তু যারা তা মানে তারা দুষ্টদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।’

  • সবাই আইন ভঙ্গ করলেও, আমি যদি আইন ভঙ্গ করি না, তার একটি গুরুত্ব ও প্রভাব আছে। কারণ আমি মন্দতা বা অন্যায্যতার বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছি। আমিও যদি আইন ভঙ্গ করি, আমি বিপরীত দিকে মন্দতা ও অন্যায্যতা শক্তিশালী করে তুলি। এই বিষয়ে ‘নিরপেক্ষ’ হওয়া যায় না।
মন্দতা জয়ী হবে না বরং বিচারিত হবে। বন্যায্যতাই বিজয়ী হবে।

হিতো ২:১৮-২২                      ব্যভিচার জয় লাভ করবে না, ন্যায়পরায়নতাই বিজয়ী হবে
‘তুমি তার ঘরে ঢুকলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবে, তার সংগে যোগ দিলে মৃতদের কাছে পৌঁছাবে। ১৯ যারা তার কাছে যায় তাদের কেউ আর ফিরে আসে না, তারা বাঁচবার পথ পায় না। ২০ জ্ঞানই তোমাকে ঐ সব থেকে রক্ষা করবে যাতে তুমি ভাল লোকদের পথে, ঈশ্বরভক্তদের পথে চলতে পার। ২১ সৎ লোকেরাই দেশে বাস করতে পারবে, নির্দোষ লোকেরাই তার মধ্যে টিকে থাকবে; ২২ কিন্তু দেশ থেকে দুষ্টদের ছেঁটে ফেলা হবে আর অবিশ্বস্তদের উপ্‌ড়ে ফেলা হবে।’

  • ভাল বা ন্যায্যতার পথ বেছে নাও। তার ফল হবে সুরক্ষা, জীবনের পথ ও স্থিরতা।
  • দীর্ঘ দিন দেখলে: ন্যায়পরায়ন ও নির্দোষীরা দেশের মধ্যে বাস করবে, দুষ্ট ও বিশ্বাসঘাতকেরা নয়।

হিতো ১০:২৪-২৫, ২৯-৩২           মন্দরা বিজয়ী হবে না
‘দুষ্ট লোকেরা যা ভয় করে তা-ই তাদের উপর ঘটবে, কিন্তু ঈশ্বরভক্তদের ইচ্ছা পূরণ করা হবে। ২৫ ঘুর্ণিঝড় বয়ে গেলে দুষ্ট আর থাকে না, কিন্তু যে ঈশ্বরভক্ত সে চিরকাল অটল থাকে। …২৯ সদাপ্রভুর পথ সৎ লোকদের জন্য দুর্গের মত, কিন্তু যারা মন্দ কাজ করে তাদের জন্য তা সর্বনাশ। ৩০ ঈশ্বরভক্ত লোকেরা সব সময় অটল থাকবে, কিন্তু দুষ্ট লোকেরা দেশে বাস করতে পারবে না। ৩১ ঈশ্বরভক্তদের মুখ থেকে জ্ঞানের কথা বের হয়, কিন্তু যে জিভ্‌ বাঁকা কথা বলে তা কেটে ফেলা হবে। ৩২ ঈশ্বরভক্তদের মুখ উপযুক্ত কথা বলতে জানে, কিন্তু দুষ্টদের মুখ কেবল বাঁকা কথাই বলে।’
হিতো ১১:২১                         মন্দরা বিচারিত হবে
‘তোমরা নিশ্চয় জেনো দুষ্টেরা শাস্তি পাবেই পাবে, কিন্তু ঈশ্বরভক্তেরা কোন শাস্তি পাবে না।’
হিতো ১২:৩                          মন্দরা বিজয়ী হবে না, থাকবে না
‘মন্দতা দিয়ে কোন লোকের জীবনে স্থিরতা আসে না, কিন্তু ঈশ্বরভক্ত লোকের জীবনের ভিত্তি অটল থাকে।’
হিতো ১২:৭                          মন্দরা বিচারিত হবে
‘দুষ্ট লোকেরা ধ্বংস হয়ে যায়, তাদের বংশ থাকে না, কিন্তু ঈশ্বরভক্ত লোকদের বংশ অটল থাকে।’
হিতো ১২:১৩                         মন্দরা ফাঁদে পড়বে, বিচারিত হবে
‘মন্দ লোক তার পাপে পূর্ণ কথাবার্তার দ্বারা ফাঁদে পড়ে, কিন্তু ঈশ্বরভক্ত লোক কষ্ট থেকে রেহাই পায়।’
হিতো ১৪:১৪                         মন্দরা বিচারিত হবে, ভাল লোকেরা পুরুষ্কৃত হবে
‘অবিশ্বস্ত লোকেরা নিজেদের আচার-ব্যবহারে তৃপ্ত হয়, কিন্তু ভাল লোকেরা নিজেদের আচার-ব্যবহারে আরও বেশী তৃপ্ত হয়।’
হিতো ১৪:১৯                         মন্দদের নত করা হবে
‘মন্দ লোকেরা ভাল লোকদের সামনে নত হয়, আর দুষ্টেরা ঈশ্বরভক্ত লোকদের দরজার কাছে নত হয়।’
হিতো ১৪:৩২                         দুষ্টরা তাদের পতন ঘটায়, সততা রক্ষা পায়
‘দুষ্টদের অন্যায় কাজ তাদের পতন ঘটায়, কিন্তু ঈশ্বরভক্ত লোকদের মৃত্যুর সময়েও আশা থাকে।’
হিতো ১৪:৩৪                         ন্যায্যতা > সম্মান
‘ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি জাতিকে সম্মানিত করে কিন্তু পাপ জাতিকে অসম্মানে ফেলে।’

  • একটি দেশের সম্মান, সুনাম বা খ্যাতি হয় না নিজেকে স্মার্টভাবে উপস্থাপনা করার মধ্য দিয়ে বরং ন্যায্যতা, আইন-শৃঙ্খলা ও ধার্মিকতার মধ্য দিয়ে।

হিতো ১৭:১৩                        উপকারের বদলে অপকার করার বিচার হবে
‘যে লোক উপকারের বদলে অপকার করে, অপকার কখনও তার বাড়ী ছাড়বে না।’
হিতো ২১:৭                          অত্যাচারীরা বিচারিত হবে
‘দুষ্টদের ভীষণ অত্যাচার তাদেরই ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে যায়, কারণ তারা ন্যায়ভাবে চলতে অস্বীকার করে।’
হিতো ২১:১২                        ঈশ্বর দুষ্টদের বিচার করবেন
‘ন্যায়বান ঈশ্বর দুষ্টদের পরিবারের লোকদের চোখে চোখে রাখেন আর সেই দুষ্টদের ধ্বংস করেন।’
হিতো ২১:১৮                        দুষ্টরা ধার্মিকদের জন্য মুক্তির মূল্য হবে
‘শেষে নির্দোষ লোকদের বদলে দুষ্টেরা আর সৎ লোকদের বদলে অবিশ্বস্তেরা কষ্ট পাবে।’
হিতো ২৪:১৫-১৬                    দুষ্টরা বিচারিত হবে
‘ওহে দুষ্ট লোক, ঈশ্বরভক্ত লোকের বাড়ীর বিরুদ্ধে তুমি ওৎ পেতে থেকো না, তার বাসস্থানে হানা দিয়ো না; ১৬ কারণ ঈশ্বরভক্ত লোক সাত বার পড়ে গেলেও আবার ওঠে, কিন্তু দুষ্টদের দুর্দশা আসলে তারা একেবারে ভেংগে পড়ে।
হিতো ২৪:১৯-২০                    দুষ্টরা বিচারিত হবে, দুষ্টদের ঈর্ষা করো না
তুমি দুষ্ট লোকদের বিষয় নিয়ে উতলা হোয়ো না, কিম্বা মন্দ লোকদের দেখে হিংসা কোরো না; ২০ কারণ দুষ্ট লোকের ভবিষ্যতের কোন আশা নেই, আর মন্দ লোকদের জীবন-বাতি নিভে যাবে।
হিতো ২৪:১                         দুষ্টদের ঈর্ষা করো না
‘তুমি দুষ্ট লোকদের উপর হিংসা কোরো না, তাদের সংগে থাকতে ইচ্ছাও কোরো না।’

  • দীর্ঘ দিন দেখলে (এবং এটা দেখতে সহনশীলতা দরকার) ভাল লোকেরা থাকবে, মন্দ বা দুষ্টরা পড়ে যাবে। হিতোপদেশে এই কথাটি এতবার পুনরুক্তি করে বলা আছে বলে আমরা বুঝতে পারি, ধৈর্য্য ধরা ও এই নিশ্চয়তা ধরে রাখা কত কঠিন। প্রায় সময়ই আমরা এটা না দেখে বরং এর বিপরীত দেখি: মন্দরাই জয়ী, প্রভাবশালী, তাদের অভাব নেই, বিচার হয় না, বিজয়ী দল। বাধ্য হওয়া লোকদের ‘বোকার’ মত লাগে, এই অনুভূতি একটা খুব সাধারণ অনুভূতি।
  • ঈশ্বর শক্তিশালীভাবে বলেন যে এটাই শেষ ছবি নয়, বরং আমরা নিজের চোখে দেখব মন্দদের বিচার ও শেষ।

হিতো ২১:১৫                        বিচার হয়ে গেছে > মন্দরা ভিত
‘ন্যায়বিচার ঈশ্বরভক্ত লোকদের কাছে আনন্দ, কিন্তু অন্যায়কারীদের কাছে তা সর্বনাশ।’
হিতো ২৯:১৬                        মন্দরা বিচারিত হবে
‘দুষ্ট লোকদের সংখ্যা বাড়লে পাপের বৃদ্ধি হয়, কিন্তু ঈশ্বরভক্ত লোক তাদের ধ্বংস দেখতে পায়।’

  • ন্যায় বিচার ও আইন-শৃঙ্খলা আবশ্যক যেন মন্দ লোকেরা ভয় পায়, যেন মন্দতা বেড়ে না যায়।
  • কেউ কেউ বলে: দোষীদের শাস্তি দেওয়ায় কোনো লাভ নেই কারণ যা হয়েছে তা আর সম্পূর্ণ ঠিক করা যায় না। হ্যাঁ, বাস্তব কাজের বাস্তব ফলাফ‍ল আছে। কিন্তু শান্তি আনার জন্য, ন্যায্যতা আনার জন্য, ভবিষ্যত অপরাধীদের নিবৃত্ত করার জন্য, ঈশ্বরীয় মূল্যবোধ রক্ষা করার জন্য শাস্তি আবশ্যক।
  • আমি যা নই, আমি তা উৎপাদন করতে পারি না। মন্দ শাসক আরও মন্দতা উৎসাহিত করবে ও উৎপন্ন করবে। মন্দতা নিয়ন্ত্রণ না করা মানে অনুমোদন দেওয়া যে মন্দতা নিজে নিজেই জোরদার হবে। ভোটের মাধ্যমে ন্যায্যদের কর্তৃত্ত্ব নির্বাচিত করুন ।
রাজাকে সম্বন্ধীয় পদগুলি

হিতো ৩১:১-৯                     রাণী মা তার ছেলেকে শিক্ষা দিচ্ছেন
‘রাজা লমূয়েলের বলা কথা, অর্থাৎ ঈশ্বরের দেওয়া যে কথা তাঁর মা তাঁকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। ২ ছেলে আমার, হে আমার গর্ভের সন্তান, হে আমার মানতের সন্তান, তোমাকে কি বলব? ৩ স্ত্রীলোকের উপরে তোমার শক্তি ক্ষয় কোরো না; রাজাদের যা ধ্বংস করে তার কাছে নিজেকে দিয়ে দিয়ো না। ৪ হে লমূয়েল, রাজাদের পক্ষে, হ্যাঁ, রাজাদের পক্ষে আংগুর-রস খাওয়া উপযুক্ত নয়; মদ খেতে চাওয়া শাসনকর্তাদের পক্ষে উপযুক্ত নয়। ৫ মদ খেয়ে তারা আইন-কানুন ভুলে যেতে পারে, আর অত্যাচারিতদের প্রতি অন্যায় বিচার করতে পারে। ৬ যারা মরে যাচ্ছে তাদের মদ দাও। যাদের মনে খুব কষ্ট আছে তাদের আংগুর-রস দাও; ৭ তারা তা খেয়ে তাদের অভাবের কথা ভুলে যাক, তাদের দুঃখ-কষ্ট আর তাদের মনে না থাকুক। ৮ হে লমূয়েল, যারা নিজেদের পক্ষে কথা বলতে পারে না তুমি তাদের হয়ে কথা বোলো; অসহায়দের অধিকার রক্ষার জন্য তুমি কথা বোলো। ৯ চুপ করে থেকো না, ন্যায়বিচার কোরো; দুঃখী আর অভাবীদের অধিকার রক্ষা কোরো।’

  • বাইবেলীয় নীতিমালার অনুমোদন: সরকারের প্রধান দায়িত্ব হল ন্যায় বিচার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা। আইন-কানুন ভুলে যেও না!
  • যেমন বাইবেলে অন্যান্য অনুচ্ছেদেও এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় যারা অভাবী, দুর্বল, বেশি ভঙ্গুর, নিপীড়িত, নিরুপায়, যারা নিজের জন্য দাঁড়াতে পারে না, তাদের অধিকার রক্ষা করতে।
  • সরকারি কর্মকর্তা বা নেতার ক্ষেত্রে নেশাগ্রস্ত হতে বা ভোগপরায়ণতা চলবে না, কারণ তাতে মনোভাব, চরিত্র, বিশ্বস্ততা, নির্ভরযোগ্যতা, কাজের দক্ষতা ও কার্যকারীতা ধ্বংস হবে। নতুন নিয়মেও মণ্ডলীর নেতাদের ক্ষেত্রে সংযত ও নেশামুক্ত হওয়া আবশ্যক (১ তীম ১:৬-৭)।
  • সরকারি কর্মকর্তা বা নেতার ক্ষেত্রে যৌনতা পূর্ণ কাজেও ভোগপরায়ণতা চলবে না (দ্বিতীয় বিবরণ ১৭:১৭), (উপরে দেখানোর কারণে)। এছাড়াও যৌন অবিলাসিতা চলবে না কারণ তার ফলাফল হল মহিলা সম্পর্কে ভুল ধারণা, অসম্ভব পারিবারিক অবস্থা, নতুন প্রজন্মকে খারাপ ভাবে মানুষ করা ও পরবর্তী রাজার শিষ্যত্বের অভাব। এইগুলি সব দেশের জন্য খুবই ক্ষতিকারক।

হিতো ১৬:১০                       রাজার ন্যায্য বিচার
‘রাজার মুখে বিচারের ন্যায্য রায় থাকে; তাঁর কথা ন্যায়বিচারের বিরুদ্ধে যায় না।’

  • খুবই আত্মবিশ্বাসযুক্ত বিবৃতি মনে হয়, অন্য পদের সাথে প্রেক্ষাপট পড়া দরকার।

হিতো ২০:৮                        রাজা ন্যায্য বিচার করেন, মন্দ লোকেরা দূর হয়
‘রাজা যখন বিচার করতে সিংহাসনে বসেন তখন চোখের চাহনি দিয়ে তিনি সমস্ত দুষ্টতাকে দূর করে দেন।’
হিতো ১৬:১২-১৫                   রাজা ধার্মিকতা ভালবাসে > তার দ্বারা সিংহাসন স্থির হয়
‘রাজার পক্ষে অন্যায় কাজ করা একটা জঘন্য ব্যাপার, কারণ ন্যায় কাজের মধ্য দিয়ে সিংহাসন স্থির থাকে। ১৩ সত্যবাদী মুখ রাজাদের আনন্দ দেয়; যে লোক সত্যি কথা বলে রাজারা তাকে ভালবাসেন।’
হিতো ২৫:৩-৫                     রাজা যদি ভাল লোকদের পছন্দ করে > প্রতিষ্ঠিত
‘আকাশ যেমন উঁচু আর পৃথিবী গভীর, তেমনি রাজাদের অন্তরের খোঁজ করা যায় না। ৪ রূপা থেকে খাদ বের করে ফেল, তাহলে স্বর্ণকার তা দিয়ে সুন্দর জিনিস তৈরী করতে পারবে। ৫ দুষ্ট কর্মচারীকে রাজার সামনে থেকে সরিয়ে দাও, তাহলে ন্যায় কাজের মধ্য দিয়ে তাঁর সিংহাসন স্থির থাকবে।’
হিতো ২৯:১২                       রাজা যদি মন্দ লোকদের পছন্দ করে > দুর্নীতি
‘যে শাসনকর্তা মিথ্যা কথায় কান দেয় তার সব কর্মচারী দুষ্ট।’
হিতো ২০:২৮                      রাজার সিংহাসন ধার্মিকতার দ্বারা স্থির
‘বিশ্বস্ততা আর সততা রাজাকে নিরাপদে রাখে; বিশ্বস্ততার মধ্য দিয়ে তাঁর সিংহাসন স্থির থাকে।’

  • আগের মত: সরকারের প্রধান দায়িত্ব কি কি? > ন্যায্য বিচার দেওয়া, মন্দতা পৃথক করা, মন্দতাকে ঘৃণা করা, ন্যায় কাজ করা, যারা সঠিক কাজ করে তাদের পছন্দ করা।
  • রাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল, তিনি কি ধরণের লোকদের সহকর্মী হিসাবে পছন্দ করেন ও সুযোগ দেন: চাটুকার, সুবিধাকারী, বিবেকহীন লোক যারা – লাভ হলে – যে কোন কিছু করতে রাজী? বা সৎ লোক, যারা রাজাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে, যারা সত্যবাদী, আইন-শৃঙ্খলা মান্যকারী ও ঈশ্বরীয় মানুষ?
  • যদি রাজা ভুল লোকদের গ্রহণ করেন (তেল দেওয়া লোক, যারা নেতা যা শুনতে চান তাই শুধু বলে, সুবিধাবাদী) তবে রাজা ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যাবাদী বেছে নেন। ফলে সরকারি কর্মচারী হবে মন্দ লোক।
  • এখানে বুঝানো হয় সরকারের জন্য সত্য তথ্যের গুরুত্ব, গুজবের নয়, পক্ষপাতমূলক কথা নয়। যেহেতু সরকার সাধারণ লোকদের প্রতিনিধিত্ব করে, তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন না হওয়া আবশ্যক, তাদের সমস্যাগুলি জানা আবশ্যক, বাস্তব অবস্থা ও চ্যালেঞ্জগুলি জানা আবশ্যক। এর জন্য চাটুকার সহকর্মী জমানো বড় ভুল। সকল তৈরি লোকদের কাছাকাছি থাকা ও সকলে যাতে কথা বলার সুযোগ পায়, সরকারের দায়িত্ব। সরকারের এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে নির্ভয়ে উপযুক্ত সমালোচনা করা সম্ভব।

হিতো ২৯:৪                         রাজার ন্যায্যতা বনাম রাজার লোভ
‘ন্যায়বিচারের দ্বারা রাজা দেশকে স্থির রাখেন, কিন্তু যে ঘুষ খেতে ভালবাসে সে দেশকে ধ্বংস করে ফেলে।’

  • ন্যায্যতা, সকলে আইনের অধীনে সমান হওয়া, তা দেশের জন্য স্থিতিশীলতা নিয়ে আসবে, সহিংস্রতা ও অসন্তোষ কমাবে এবং দেশ শান্ত থাকবে।
  • উপহার বা ঘুষ নেওয়া ও চাটুকারদের প্রশ্রয় দেওয়া মানে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা, অন্যায্যতা, অসন্তোষ, সহিংস্রতার প্রতি দরজা খুলে দেওয়া, যাতে দেশের পতন হবে।
  • রাজা সব সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তারকারী, ভাল দিকে বা মন্দের দিকে; যদিও সকল কর্মকর্তারা তাদের ব্যবহারের জন্য দায়বদ্ধ।

হিতো ২৯:১৪                        গরীবের প্রতি ন্যায‌্য বিচার > রাজা প্রতিষ্ঠিত
‘যে রাজা সততার সংগে গরীবদের বিচার করেন তাঁর সিংহাসন সব সময় স্থির থাকে।’

  • রাজাকে সকলের প্রতি সমান ভাবে বিচার করতে হবে। কোন পক্ষপাতিত্ব দেখানো যাবে না।
  • আগের মত: যারা সমাজে দুর্বল বা ভঙ্গুর, তাদের উপর বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে (এখানে: গরীবরা)।
  • যদি রাজা এমন করেন ঈশ্বর তাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন, আশীর্বাদ করবেন, টিকিয়ে রাখবেন, তার রাজত্ব রক্ষা করবেন, স্বল্প ও দীর্ঘ সময়ের জন্য।

হিতো ২৪:২১-২২                   রাজার শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা> রাজাকে ভয়
‘ছেলে আমার, সদাপ্রভু ও রাজাকে ভক্তি কর, আর বিদ্রোহীদের সংগে যোগ দিয়ো না; ২২ কারণ তাদের উপর হঠাৎ ধ্বংস আসবে, আর সদাপ্রভু ও রাজার কাছ থেকে কেমন বিপদ আসবে তা কে জানে?’
হিতো ১৯:১২                        রাজার রাগ
‘রাজার রাগ সিংহের গর্জনের মত, কিন্তু তার দয়া যেন ঘাসের উপরে পড়া শিশির।’
হিতো ২০:২                         রাজার রাগ
‘রাজার রাগ সিংহের গর্জনের মত; তাঁকে যে রাগায় সে নিজের প্রাণকে বিপদে ফেলে।’
হিতো ১৬:১৪-১৫                    রাজার অনুগ্রহ > জীবন, বসন্তের বৃষ্টি
‘রাজার রাগ মৃত্যুর দূতের মত, কিন্তু জ্ঞানী লোক সেই রাগ শান্ত করে। ১৫ রাজা সন্তুষ্ট হলে জীবন বাঁচে; তাঁর দয়া বসন্তকালের বৃষ্টির মেঘের মত।’
হিতো ২২:১১                        খাঁটি ও দয়াপূর্ণ লোকদের উপর রাজার অনুগ্রহ
‘যে লোক খাঁটি অন্তর ভালবাসে আর দয়াপূর্ণ কথাবার্তা বলে সে রাজার বন্ধুত্ব লাভ করে।’

  • আমাদের কানে কথাটি একটু বেশি ইতিবাচক রাজা সম্বন্ধে, এবং একটু বেশি মেনে নেওয়ার মত। কিন্তু তা আবারও বাস্তব কথা: যত উঁচু একজনের পদ, তত বেশি তার প্রভাব, ভাল দিকে এবং মন্দ দিকে।

হিতো ২৯:২৬                       রাজার উপর অতি-গুরুত্ব না দেওয়া
‘বিচারে অনেকে শাসনকর্তাকে নিজের পক্ষে আনতে চায়, কিন্তু সদাপ্রভুর কাছ থেকে মানুষ ন্যায়বিচার পায়।’

  • পাল্টা ভারসাম্য রাখা: চূড়ান্তভাবে ন্যায্যতার জন্য আমার ঈশ্বরের উপর নির্ভর করতে হবে সরকারের উপর নয়।

হিতো ২৩:১-৩                      রাজার উপস্থিতিতে লোভ বা অতি-আত্মবিশ্বাস কর না
‘তুমি যখন শাসনকর্তার সংগে খেতে বসবে, তখন তোমার সামনে কি আছে তা ভাল করে খেয়াল করবে। ২ যদি তুমি পেটুক হও তবে সাবধান! তুমি নিজেকে দমনে রেখে খেয়ো। ৩ তাঁর দামী দামী খাবারে লোভ কোরো না, কারণ সেই খাবার দেবার পিছনে থাকে শাসনকর্তার কোন উদ্দেশ্য।
হিতো ২৫:৬-৭                      রাজার উপস্থিতিতে নিজের গুরুত্ব দেখাবে না
‘রাজার সামনে নিজেকে জাহির কোরো না; মহৎ লোকদের মধ্যে নিজের জন্য স্থান দাবি কোরো না; ৭ কারণ তুমি যেমন আগে হতে দেখেছ সেইভাবে উঁচু পদের লোকের সামনে নীচু হওয়ার চেয়ে বরং তোমাকে বলা ভাল, “এখানে উঠে আসুন।”’
হিতো ২৫:১৫                       রাজা, ধৈর্য্য
‘রাগ দমনে রাখলে নেতাকে নিজের পক্ষে আনা যায়; নম্র কথাবার্তা হাড় ভেংগে ফেলতে পারে।’

  • ক্ষমতাশীলদের সাথে কি রকম ব্যবহার করতে হবে, তা দেখানো হচ্ছে: স্ব-নিয়ন্ত্রণ, সাবধানতা, নম্রতা। ক্ষমতাশালীদের সাথে মিশতে ‘প্রচন্ড অনুভূতি’এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল নিজের অপমান।
  • ধৈর্য্য, সমর্পিত থাকা, নিয়মিত যোগাযোগ, কারণ দেখানো ও লেগে থাকা বেশি কাজ সম্পন্ন করবে।
বিচার বিভাগ, আদালত, মিথ্যা সাক্ষ্য ও বিচার

হিতো ৬:১৬-১৯                       মিথ্যা সাক্ষী, নির্দোষ রক্তপাত হল জঘন্য
‘সদাপ্রভু কমপক্ষে সাতটা জিনিস ঘৃণা করেন যেগুলো তাঁর কাছে জঘন্য: ১৭ গর্বে ভরা চোখের চাহনি, মিথ্যাবাদী জিভ্‌, নির্দোষ লোকের রক্তপাত করে যে হাত, ১৮ কুমতলব আঁটা অন্তর, অন্যায় কাজ করবার জন্য দৌড়ে যাওয়া পা, ১৯ মিথ্যা কথা বলা মিথ্যা সাক্ষী, আর ভাইদের মধ্যে গোলমাল বাধানো লোক।’
হিতো ১২:১৭,১৯                      মিথ্যা সাক্ষ্য বনাম সত্য, সৎ প্রমাণ
‘সত্যবাদীর সাক্ষ্যের ফলে উচিত বিচার হয়, কিন্তু মিথ্যাবাদীর সাক্ষ্যের ফলে ভুল বিচার হয়… সত্যবাদীর কথা চিরকাল স্থায়ী, কিন্তু মিথ্যাবাদীর কথা অল্পকাল স্থায়ী।’

হিতো ২১:২৮                          মিথ্যা সাক্ষ্য বনাম সত্য
‘মিথ্যা সাক্ষী ধ্বংস হয়ে যাবে, কিন্তু যে লোক মনোযোগ দিয়ে শোনে তার কথা চিরকাল স্থায়ী।’
হিতো ১৪:২৫                          মিথ্যা সাক্ষ্য বনাম সত্য
‘যে সাক্ষী সত্যি কথা বলে সে অন্যের জীবন রক্ষা করে, কিন্তু মিথ্যা সাক্ষী ছলনা করে।’
হিতো ২৪:২৮                          মিথ্যা সাক্ষ্য
‘কিছু না জেনে তোমার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ো না, কিম্বা মুখ দিয়ে ছলনা কোরো না।’
হিতো ২৫:১৮                          মিথ্যা সাক্ষ্য
‘যে লোক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় সে গদা, তলোয়ার ও ধারালো তীরের মত।’
হিতো ১৯:৫,৯                         মিথ্যা সাক্ষ্যের বিচার
‘মিথ্যা সাক্ষী শাস্তি পাবেই পাবে; যে সাক্ষী মিথ্যা কথা বলে সে রেহাই পাবে না। … মিথ্যা সাক্ষী শাস্তি পাবেই পাবে; যে সাক্ষী মিথ্যা কথা বলে সে ধ্বংস হবে।’

  • ঈশ্বর ন্যায্যতা ও ন্যায় বিচার ভালবাসেন ও দাবী করেন।
  • ন্যায় বিচার প্রতিরোধ করার একটি প্রধান উপায় হল মিথ্যা সাক্ষ্য, মিথ্যা দিয়ে একজনকে দোষী বানানো হোক বা একজন দোষীর পক্ষে নির্দোষের মিথ্যা প্রমাণ আনা। ঈশ্বর তা সহ্য করেন না।
  • সৎ প্রমাণের গুরুত্ব দেখানো হয়: আদালতে আসল ঘটনা, বাস্তবতা, সঠিক সাক্ষ্যগুলি সতর্ক ভাবে তদন্ত করে বিচার চালানো দরকার। সত্য জানা যেতে পারে। ন্যায্যতা আনা সম্ভব।

হিতো ১৯:২৮                          মিথ্যা সাক্ষ্য বিচার ঠাট্টারূপে গ্রহণ করে
‘দুষ্ট সাক্ষী ন্যায়বিচার নিয়ে ঠাট্টা করে; দুষ্টেরা অন্যায়ের মধ্যে ডুবে থাকে।’

  • ঠাট্টা করা মানে কোনো রকম গুরুত্ব না দেওয়া, বিষয়টি নিয়ে হাসাহাসি করা ও নিচু করা। ছোট, সস্তা মন্দতা দিয়ে ভাল পদ্ধতিকে ভেঙ্গে দেওয়া (উদাহরণ: কৃষকদের উৎপাদন চুরি করা, বোমার হুমকি দেওয়া, ময়লা বাইরে ফেলে দেওয়া, একজন চুরি করে অন্যদের উপর সন্দেহ ফেলা ইত্যাদি)।
  • একজনের পাপ সম্পূর্ণ সমাজকে প্রভাবিত করে।
  • এভাবে এগিয়ে গেলে হৃদয় শক্ত হয়ে যায়, উদাসীনতা তৈরি, প্রথমে শুনতে চায় না, পরে আর শুনতে পায় না। এই ধরণের লোক অন্য একজন থেকে ছোট একটু কষ্ট পেয়ে সাথে সাথে ন্যায় বিচার দাবী করবে।
  • আমার মুখের কথা কেমন? কি অভিযোগ, তিক্ততা, মন্দতা, ঠাট্টা? মন্দতার জন্য জিহ্বার ক্ষমতার বর্ণনা।
  • যেই লোকেরা ন্যায্যতার প্রতি গুরুত্ব দেয় না ও শুধু তাদের ইচ্ছা পূর্ণ করতে ব্যস্ত, তারা নিজেদের বাইরে কারও জন্য চিন্তা করতে অক্ষম।

হিতো ১৭:১৫                          মন্দ লোকদের আচরণ নির্দোষ বানিও না, ন্যায্য লোকদের দোষী বানিও না
‘যারা দোষীকে নির্দোষ বলে ধরে আর যারা নির্দোষীকে দোষী করে, তাদের উভয়কেই সদাপ্রভু ঘৃণা করেন।’
হিতো ১৭:২৬                          নির্দোষীদের দোষ দিও না
‘নির্দোষ লোককে জরিমানা করা কিম্বা উঁচু পদের লোকের সততার জন্য তাকে মারধর করা ঠিক নয়।’
হিতো ২৪:২৩-২৫                     বিচারে কোন পক্ষপাতিত্ব, স্বেচ্ছাচারিতা থাকবে না
‘এগুলোও জ্ঞানীদের বলা কথা। বিচারে কারও পক্ষ নেওয়া ভাল নয়। ২৪ যে লোক দোষীকে বলে, “তুমি নির্দোষ,” বিভিন্ন দেশের লোকেরা তার নিন্দা করে, আর বিভিন্ন জাতি তাকে অভিশাপ দেয়। ২৫ কিন্তু দোষীকে যারা দোষী বলে রায় দেয় তাদের উপর প্রচুর আশীর্বাদ পড়ে, আর তারা সুখী হয়।’

আদালতে পক্ষপাতিত্ব, নির্দোষীদের দোষ দেওয়া এবং দোষীকে মুক্ত করা ঈশ্বর ঘৃণা করেন ও অভিশাপ দেন।
হিতো ১৮:১৭                         জেরা, উভয় পক্ষের কথা শোনা
‘মকদ্দমার সময়ে যে প্রথমে নিজের পক্ষে কথা বলে তার কথা সত্যি মনে হয়, যতক্ষণ না আর একজন এসে তাকে জেরা করে।’

  • খুবই সত্য। উভয় পক্ষের কথা সতর্ক ভাবে শোনা দরকার (দ্বিতীয় বিবরণ ১:১৬-১৭)। ক্ষুদ্র বা মহানের মধ্যে পার্থক্য করা যাবে না।

হিতো ২৫:৭-১০                      আদালতে দ্রুত মামলা
‘কারণ তুমি যেমন আগে হতে দেখেছ সেইভাবে উঁচু পদের লোকের সামনে নীচু হওয়ার চেয়ে বরং তোমাকে বলা ভাল, “এখানে উঠে আসুন।” ৮ তাড়াতাড়ি আদালতে যেয়ো না, কারণ শেষে তোমার প্রতিবেশী যদি তোমাকে লজ্জায় ফেলে তখন তুমি কি করবে? ৯ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে যদি মামলা কর তবে অন্যের গোপন কথা প্রকাশ করে দিয়ো না; ১০ যদি তা কর তাহলে যে শুনবে সে তোমার নিন্দা করবে, আর তোমার বদনাম কখনও ঘুচবে না।’

  • খারাপ বিষয় দ্রুত বিশ্বাস করবে না। চার চোখের মধ্যেই বিষয় সমাধান করতে চেষ্টা কর। অপ্রয়োজনীয় মামলা দিয়ে আদালতের উপর বোঝা তৈরি কর না। আদালতে যাওয়া মারাত্মক বিষয়, এটাকে হালকাভাবে নিও না।
সরকারের শাসন করার জন্য প্রজ্ঞা

হিতো ১:৩                           প্রজ্ঞা > কোনটি ন্যায্য ও সঠিক, তা জানা
‘যেন লোকে অন্যের সংগে বিবেচনা করে চলে, যেন সকলের সংগে তারা উপযুক্ত, ন্যায় ও সৎ ব্যবহার করে।’

শুধুমাত্র ঈশ্বরীয় ভয় ও ঈশ্বরীয় প্রজ্ঞার সাধনা দ্বারাই কোনটি সঠিক ও ন্যায্য, তা জানতে পারি। প্রজ্ঞা, বুঝার ক্ষমতা ও ঈশ্বরীয় চরিত্র তৈরি হয় ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক থেকে এবং যা সঠিক তা করার সমর্পণ থেকে আসে।

হিতো ২:৩-১৫                      ন্যায্য পথে থাকার জন্য প্রজ্ঞার গুরুত্ব
‘যদি বিবেচনা-শক্তিকে ডাক আর চিৎকার করে ডাক বিচারবুদ্ধিকে… ৭ খাঁটি অন্তরের লোকদের জন্য তিনি উপস্থিত বুদ্ধি জমা করে রাখেন; যারা সততায় চলাফেরা করে তিনি তাদের ঢাল হন, ৮ যেন তিনি ন্যায়বিচার বজায় রাখতে পারেন, আর তাঁর ভক্তদের পথ রক্ষা করতে পারেন। ৯ যদি তুমি আমার কথা শোন, তাহলে বুঝতে পারবে কোনটা উপযুক্ত, ন্যায্য ও সৎ আর বুঝতে পারবে মংগলের সমস্ত পথ; ১০ কারণ সুবুদ্ধি তোমার অন্তরে ঢুকবে, আর জ্ঞান তোমার প্রাণে আনন্দ দেবে। ১১ তোমার ভাল-মন্দ বুঝবার শক্তি তোমাকে রক্ষা করবে, আর বিচারবুদ্ধি তোমাকে পাহারা দেবে। ১২ এতে দুষ্ট লোকদের পথ থেকে জ্ঞানই তোমাকে রক্ষা করবে; রক্ষা করবে তাদের থেকে- যারা মিথ্যা কথা বলে, ১৩ যারা অন্ধকার পথে চলবার জন্য সোজা পথ ত্যাগ করে, ১৪ যারা মন্দ কাজে আনন্দ পায়, মন্দতার কুটিল পথেই যাদের আনন্দ, ১৫ আর যারা বাঁকা পথে ও বিপথে চলে।’

  • প্রজ্ঞা ও বুঝার ক্ষমতার জন্য যদি আমি লেগে থাকি, যা সঠিক তা করার জন্য যদি আমি সমর্পিত হই, তবে:
  • আমি ঈশ্বরের সুরক্ষার অভিজ্ঞতা পাব, তিনি ‘তাঁর ভক্তদের পথ রক্ষা করতে পারেন’
  • আমি বুঝতে পারব ‘কোনটা উপযুক্ত, ন্যায্য ও সৎ আর বুঝতে পারবে মংগলের সমস্ত পথ’ … কত মহান প্রতিজ্ঞা!

প্রজ্ঞা, জ্ঞান, বুঝার ক্ষমতা আমাকে পাহারা দিবে ‘তোমার ভাল-মন্দ বুঝবার শক্তি তোমাকে রক্ষা করবে, আর বিচারবুদ্ধি তোমাকে পাহারা দেবে।’ আমাকে পর্যবেক্ষণ করবে; মন্দতার পথ, বাঁকা পথ, অন্ধকার, মন্দ বিষয়ে আনন্দ ও কুটিলতা থেকে রক্ষা করবে।
হিতো ৮:১৩-১৬                    সদাপ্রভূর প্রতি ভয়, প্রজ্ঞা, এর দ্বারা শাসকের শাসন ন্যায্য
‘সদাপ্রভুকে ভক্তিপূর্ণ ভয় করা মানেই দুষ্টতাকে ঘৃণা করা; অহংকার, বড়াই করা, মন্দ ব্যবহার আর বাঁকা কথাকে আমি ঘৃণা করি। ১৪ পরামর্শ ও উপস্থিত বুদ্ধি আমার কাছ থেকে আসে; আমি বিচারবুদ্ধি, আমি ক্ষমতা দিই। ১৫ রাজারা রাজত্ব করে আমার দ্বারা, আর শাসনকর্তারা তৈরী করে ন্যায়পূর্ণ আইন-কানুন; ১৬ আমার দ্বারা রাজপুরুষেরা আর উঁচু পদের লোকেরা শাসন-কাজ চালায়; তারা সবাই বিচারকের কাজ করে।’

  • নির্বাহী ও বিচার বিভাগের জন্য প্রযোজ্য।
অধিকার বজায় রাখায় সরকারের ভূমিকা

হিতো ১৫:২৫                       বিধবার সীমানা সুরক্ষিত
‘সদাপ্রভু অহংকারীদের বাড়ী ভেংগে ফেলেন, কিন্তু তিনি বিধবার সীমানা ঠিক রাখেন।’
হিতো ২২:২৮, ২৩:১০-১১           সীমানা সুরক্ষিত
‘তোমার পূর্বপুরুষেরা সীমানার যে চিহ্ন-পাথর স্থাপন করে গেছেন, সেই চিহ্ন তুমি সরিয়ে দিয়ো না।… ১০ সীমানার পুরানো চিহ্ন-পাথর তুমি সরিয়ে দিয়ো না কিম্বা অনাথদের জমি দখল কোরো না, ১১ কারণ তাদের মুক্তিদাতা শক্তিশালী; তিনি তোমার বিরুদ্ধে মামলায় আত্মীয় হিসাবে তাদের পক্ষ নেবেন।’

  • ভঙ্গুর বা দুর্বলদের অধিকার রক্ষা করার গুরুত্ব দেখানো হচ্ছে (এখানে: বিধবা)।
  • যে কোন লোকের সম্পত্তির অধিকার রক্ষার গুরুত্ব এবং জীবনের ভিত্তি হিসাবে জমির গুরুত্ব দেখানো হচ্ছে।

হিতো ২২:২২-২৩                    গরীবের বিরুদ্ধে কোন সহিংস্রতা নয়
‘একজন লোক অসহায় বলে জোর করে তার জিনিস নিয়ো না, আর বিচার-স্থানে অভাবীর সর্বনাশ কোরো না; ২৩ কারণ সদাপ্রভু মামলায় তাদের পক্ষ নেবেন, আর যারা তাদের জিনিস কেড়ে নেয় তিনি তাদের প্রাণ কেড়ে নেবেন।’

  • ক্ষমতার অপব্যবহার করা যাবে না, বিশেষভাবে ভঙ্গুর বা দুর্বলদের প্রতি (এখানে: গরীব, দূর্দশাগ্রস্ত)।

ঈশ্বর নিজে নিশ্চয়তা দেন যে এই ধরণের ব্যবহার বিচারে আনা হবে।
হিতো ২৫:২৬                         মন্দ লোকের বিরুদ্ধে দাঁড়াও
‘ঘোলা করে ফেলা আর দূষিত করা ফোয়ারার জল যেমন, দুষ্ট লোকের দরুন পাপে পড়া ঈশ্বরভক্ত লোক তেমনি।’

ঈশ্বর আদেশ দেন যেন মন্দ লোকদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো হয়, তাদের বাধা দেওয়া হয়, আপত্তি উঠানো হয়, মন্দের বিরুদ্ধে যেন সক্রিয় ভাবে কাজ করা হয়। নিষ্ক্রীয় না হওয়া, অজুহাত হিসাবে না বলা ‘তাদের প্রভাবিত করতে পারব না’। যা পারা যায়, করতে আবশ্যক: নিজেই আইন পালন ও সৎ আচরণ করা থেকে শুরু করে স্বক্রিয়ভাবে প্রতিরোধ করা পর্যন্ত পারা যায়।
হিতো ২৪:১০-১২                     মৃত্যুর হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে
‘বিপদের দিনে যদি তুমি হতাশ হয়ে পড়, তবে তো তোমার শক্তি বেশী নয়। ১১ যাদের মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের উদ্ধার কর; যারা টল্‌তে টল্‌তে জবাই হতে যাচ্ছে তাদের রক্ষা করতে অস্বীকার কোরো না। ১২ তুমি যদি বল, “কিন্তু আমরা কিছুই জানতাম না,” তবে যিনি অন্তরের উদ্দেশ্য ওজন করেন তিনি কি তোমার কথা বিচার করে দেখবেন না? যিনি তোমার জীবন রক্ষা করেন তিনি কি তা জানবেন না? তিনি কি প্রত্যেক মানুষকে তার কাজ অনুসারে ফল দেবেন না?’

  • ‘কিছু করা’ পাপ হতে পারে, ‘কিছু না করা’ও পাপ হতে পারে।
  • ‘যাদের মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাওয়া হয়’ তাদের পক্ষে দাঁড়ানো বাধ্যতামূলক। ‘জানি না’ বলা যাবে না। ক্ষমতা নেই দাবী করা যাবে না, ঈশ্বর আমাদের এর জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ রাখবেন।
অন্যান্য পদগুলো

হিতো ২৯:২৭                    দুষ্ট ও ধার্মিক একে অপরের কাছে ঘৃণার পাত্র হয়
‘ঈশ্বরভক্ত লোকেরা অন্যায়কারীকে ঘৃণার চোখে দেখে, আর যে লোক সোজা পথে চলে দুষ্টেরা তাকে ঘৃণা করে।’
হিতো ৩০:২১-২২                দাসের নেতৃত্বে পদোন্নতি
‘পৃথিবী তিনটার ভারে কাঁপে, আসলে চারটার ভার সে সহ্য করতে পারে না- ২২ দাসের ভার যখন সে রাজা হয়, নীচমনা লোকের ভার যখন সে পেট ভরে খায়।’
হিতো ১০:৬,১১                  দুষ্টের মুখ থেকে সহিংস্রতা উৎপন্ন হয়
‘ঈশ্বরভক্তদের মাথায় অনেক আশীর্বাদ নেমে আসে, কিন্তু দুষ্টদের অত্যাচারী মনোভাব তাদের মুখের কথায় ঢাকা পড়ে।… ১১ ঈশ্বরভক্তের মুখ জীবনের ফোয়ারার মত, কিন্তু দুষ্টদের অত্যাচারী মনোভাব তাদের মুখের কথায় ঢাকা পড়ে।’
হিতো ১৬:৭                      শত্রুদের সঙ্গে শান্তি
‘মানুষের জীবন দেখে যখন সদাপ্রভু সন্তুষ্ট হন তখন তিনি তার শত্রুদেরও তার সংগে শান্তিতে বাস করান।’
হিতো ১৮:১৯                     বিক্ষুব্ধ মিত্ররা
‘ভাইয়ের দ্বারা অপমানিত হওয়া ভাই শক্তিশালী শহরের চেয়েও শক্ত; আর ঝগড়া-বিবাদ রাজবাড়ীর ফটকের শক্ত হুড়কার মত।’
হিতো ২৪:৫-৬                   সেনাবাহিনী, যুদ্ধ
‘জ্ঞানী লোকের মহা ক্ষমতা আছে, আর বুদ্ধিমান লোক নিজের শক্তি বাড়ায়। ৬ যুদ্ধ করতে গেলে তুমি উপযুক্ত পরামর্শ নেবেই, আর অনেক পরামর্শদাতা থাকলে জয়লাভ করা যায়।’