সম্পর্কিত শব্দের অধ্যয়ন
H5391 נָשַׁךְ nâshak       ১৬ বার পুরাতন নিয়মে

অর্থ: মার দেওয়া, কামড় দেওয়া, সাপের কামড়। রূপক অর্থে: অত্যাচার করা, সুদ নেওয়া, চাপ দিয়ে বা লাভ করে ঋণ দেওয়া, কামড় দেওয়া।

  • শব্দটি সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে (আদি ৪৯:১৭, গণনা ২১:৬,৮,৯, উপদেশক ১০:৮, আমোষ ৫:১৯, ৯:৩) এবং রূপক অর্থ মদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত (হিতো ২৩:২০)।
  • শব্দটি আরো ব্যবহৃত কষ্টের জন্য (যির ৮:১৭), ভ্রান্ত ভাববাদীদের জন্য (মীখা ৩:৫) এবং ঋণদাতাদের কাছে টাকা ফেরত দেওয়ার চাপের জন্য (হবক্কূক ২:৭)।
  • শব্দটি ৪বার অন্যায্যভাবে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে ব্যবহৃত (নিচে দেখুন)।
 
H7810 שַׁחַד shachad         ২৩বার পুরাতন নিয়মের

অর্থ: দান, ঘুষ, বকশিশ, উপহার, পুরস্কার, উদ্ধার করার জন্য দাম।

  •  “অর্থনীতি ১৫ – ঘুষ ও দুর্নীতি” দেখুন।
 
H5392 נֶשֶׁךְ neshek            ১২ বার পুরাতন নিয়মে

অর্থ: ঋণে সুদ নেওয়া, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যায়ভাবে লাভ করা, কুসীদবৃদ্ধি।

 
H8636 תַּרְבִּית tarbı̂yth          ৬ বার পুরাতন নিয়মে

অর্থ: মূল পরিমাণের পাশাপাশি বোনাস, মূল পরিমাণের উপর কিছু শতাংশ নেওয়া, বাড়িয়ে দেওয়া, অন্যায় লাভ।

 
H4768 מַרְבִּית marbı̂yth         ৫ বার পুরাতন নিয়মে

অর্থ: সন্তানসন্ততি, বেড়ে যাওয়া, বৃদ্ধি পাওয়া, বিরাত লোকসংখ্যা, মহাজাতি, সবচেয়ে বড় অংশ, মূলধনের উপরে সুদ।

  • শুধুমাত্র লেবীয় ২৫:৩৭ পদে তা টাকা-পয়সারে ক্ষেত্রে ব্যবহৃত। 
দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:১৯-২০

“তোমরা কোন ইস্রায়েলীয় ভাইয়ের কাছ থেকে সুদ নেবে না (H5391) – সেই সুদ টাকা-পয়সার (H5392) উপরেই হোক কিম্বা খাবার জিনিসের উপরেই হোক কিম্বা অন্য যে কোন জিনিসের উপরেই হোক (H5391)। ২০ অন্য জাতির লোকদের কাছ থেকে তোমরা সুদ নিতে পার (H5391) কিন্তু কোন ইস্রায়েলীয় ভাইয়ের কাছ থেকে নয় (H5391)। এইভাবে চললে তোমরা যে দেশ দখল করতে যাচ্ছ সেখানে তোমরা যাতে হাত দেবে তাতেই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করবেন।”

  • “ইস্রায়েলীয় ভাই” এবং “অন্য জাতির লোক”এর মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে: ভাইয়ের কাছ থেকে সুদ নেওয়া নিষেধ কিন্তু অন্য জাতির লোকের কাছ থেকে সুদ নেওয়া চলবে।
  • নিয়মটি টাকা-পয়সার ক্ষেত্রে, খাবারের ক্ষেত্রে এবং যে কোন জিনিসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
  • ইস্রায়েলীয় ভাইয়ের ক্ষেত্রে সুদ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা সব সময় প্রযোজ্য? না কি এটা শুধুমাত্র গরীব ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?
যাত্রা ২২:২৫

“আমার কোন অভাবী লোককে যদি তুমি টাকা ধার দাও তবে মহাজনের (H5383) মত করে তার কাছ থেকে কোন সুদ নিয়ো না (H5392)।”

  • অভাবীদের থেকে কোন সুদ নেওয়া চলবে না, তা জরুরী ঋণ, আয় করার ঋণ (start up loan) বা আয় বাড়ানোর ঋণ (productive loan) হোক।
  • এর অর্থ কি এই যে, অভাবী ছাড়া অন্য কাউকে ঋণ দিলে তবে তার কাছ থেকে সুদ নেওয়া চলে, যেমন ব্যবসা শুরু করার ঋণ, জমি কেনার ঋণ, নিজের ইচ্ছা পূর্ণ করার ঋণ (consumer loan)?
  • “মহাজনের মত করা” মানে কি? ধনীরা বা ঋণদাতারা গরীব বা অভাবীদের পরিস্থিতি নিজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করে লাভ করে, তা সেই সময় প্রচলিত ছিল এবং আজ পর্যন্ত প্রচলিত। তাই মহাজনের মত করবে না!
লেবীয় ২৫:৩৬-৩৭

“তোমরা তার কাছ থেকে কোন রকম সুদ নিতে পারবে না (H5392)(H8636), বরং লোকটি যাতে তোমাদের মধ্যে বাস করতে পারে সেইজন্য তোমাদের ঈশ্বরকে তোমরা ভয় করে চলবে। 37তবে টাকা ধার দিলে কোন সুদ নেওয়া (H5392) চলবে না এবং তার কাছে কোন খাবার জিনিস বিক্রি করলে কোন লাভ নেওয়া চলবে না (H4768)।”

  • এখানে একজন গরীব, অভাবে পড়ে যাওয়া আত্মীয় বা নিজের সমাজের একজনের কথা বলা হয়েছে: তার ক্ষেত্রে সুদ নেওয়া চলবে না, ক্রয়-বিক্রয়ে ক্ষেত্রেও তার কাছ থেকে কোন লাভ করা যাবে না। বরং এখানে সুদ ছাড়া ঋণ অথবা এমন কি সরাসরি টাকা দান দিতে বলা হয়েছে।
  • এই নির্দিষ্ট আদেশের আর একটি সম্ভাব্য দিক হল এই যে, ঋণগ্রহীতা যদি গরীব বা অভাবী না হয় (ধরুন সে একটি ব্যবসা শুরু করতে বা জমি কিনতে চায়) তবে তার কাছ থেকে সুদ নেওয়া অনুমোদিত।
  • বাইবেলে বিভিন্ন পদে দেখা যায় যে, ঈশ্বর যদি মানুষকে কিছু দেন (যেমন সম্পত্তি, জমি, তালন্ত, দক্ষতা ইত্যাদি) তবে তিনি এর ভাল ব্যবহার, এর বৃদ্ধি এবং এর উন্নয়ন দেখতে চান। বুঝা যায় যে, বৃদ্ধি করানো, পরিমাণ বাড়ানো বা লাভ করা পাপ নয় বরং তা ভাল বিষয়, এমন কি তা ঈশ্বরের একটি দাবি। এর অর্থ এই যে, উপযুক্তভাবে লাভ করা, অর্থাৎ অন্যদের ক্ষতি না করে বৃদ্ধি বা লাভ করা সম্ভব।
  • মূল ধন থেকে যদি লাভ বা প্রোফিট তৈরি হয়, ঋণ নিয়ে যদি আয় করার ক্ষমতা বাড়িয়ে লাভজনক ব্যবসা শুরু করা হয়, তবে লাভ পাওয়ার অধিকার কার? তা কি সম্পূর্ণভাবে সেই লোকের পাওনা যে পরিশ্রম করেছে ও উদ্যোগ নিয়েছে? না কি যিনি টাকা ধার করেছেন এবং এভাবে ঝুঁকি নিয়েছেন, তারও কিছু পাওয়া উচিত? কিভাবে লাভটা ঋণগ্রহীতা ও ঋণদাতার মধ্যে ভাগ করা উচিত? হতে পারে প্রশ্নের কয়েকটি উত্তর দেওয়া যায়। একটি সম্ভাব্য উত্তর হল: ঋণদাতার একটি নির্দিষ্ট (সীমিত) পরিমাণে সুদ দেওয়ার পরে বাকি সমস্ত লাভ (অর্থাৎ business success) উদ্যোগকারীর পাওনা।
গীত ১৫:১-২,৫

“হে সদাপ্রভু, তোমার আবাস-তাম্বুতে কে দাঁড়াবার যোগ্য? তোমার পবিত্র পাহাড়ে কে বাস করার যোগ্য? … সে-ই যোগ্য, যে … সুদ (5392) ছাড়াই টাকা ধার দেয় আর ঘুষ (H7810) খেয়ে নির্দোষীর ক্ষতি করে না। যে এইভাবে চলে সে সব সময় স্থির থাকবে।”

  • অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কি কি আচরণ গ্রহণযোগ্য ও আদর্শ, তা এখানে দেখানো হয়েছে (সুদ ছাড়া টাকা ধার দেওয়া)। আরো দেখানো হয়েছে কি কি আচরণ খারাপ (ঘুষ খেয়ে নির্দোষীকে ক্ষতি করা ইত্যাদি)।
  • “সুদ ছাড়াই টাকা ধার”, এই কথাটি কি গরীব ও অভাবীদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে? না কি সবার ক্ষেত্রে তা করা উচিত (অর্থাৎ সুদ সব সময় নিষিদ্ধ)?
হিতো ২৮:৮

“যে কোন রকম সুদ নিয়ে (H5392) যে লোক তার ধন বাড়ায়, সে তা এমন একজনের জন্য জমায় যে গরীবদের প্রতি দয়ালু।
“He who increases his substance by usury (H5392) and unjust gain shall gather it for him that will pity the poor.”
“One who augments wealth by exorbitant interest gathers it for another who is kind to the poor.”

  • ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা দেন যে, অন্যায় লাভ স্থায়ী হবে না, অর্থাৎ অন্যায়কারীদের হাত থেকে তা কেড়ে নেওয়া হবে এবং এমন লোকদেরকে দেওয়া হবে, যারা গরীবদের প্রতি দয়ালূ।
  • যে কোন ক্ষেত্রে সুদ নেওয়া কি অন্যায় লাভ হিসাবে দাঁড়ায়? ইংরেজি অনুবাদে বলা হয়েছে “exorbitant interest” বা “usury”, যার মানে ‘অতিরিক্ত সুদ’। একারণে চিন্তা করা যায় যে, উপযুক্ত বা ন্যায্য পরিমাণে সুদ নেওয়া বলতে কিছু আছে।
যিহিষ্কেল ১৮:৮

“সে সুদে টাকা ধার দেয় না (H5392) কিম্বা বাড়তি সুদ নেয় না (H8636)। সে অন্যায় করা থেকে হাত সরিয়ে রাখে ও লোকদের মধ্যে ন্যায়ভাবে বিচার করে। “If a man does not take advance or accrued interest…”

যিহিষ্কেল ১৮:১৩

“সে সুদে টাকা ধার দেয় (H5392) এবং বাড়তি সুদ নেয় (H8636)। সেই ছেলে কি বাঁচবে? সে বাঁচবে না। এই সব জঘন্য কাজ করেছে বলে সে মরবেই মরবে। সে তার মৃত্যুর জন্য নিজেই দায়ী হবে। “If he takes advance or accrued interest; shall he then live?”

যিহিষ্কেল ১৮:১৭

“সে গরীবদের অত্যাচার করে না এবং কোন রকম সুদ নেয় না (H5392)(H8636)। সে আমার আইন-কানুন রক্ষা করে এবং আমার নিয়ম-কানুন পালন করে। সে তার বাবার পাপের জন্য মরবে না; সে নিশ্চয়ই বাঁচবে। “If he … takes no advance or accrued interest …”

যিহিষ্কেল ২২:১২

“তোমার মধ্যে রক্তপাত করবার জন্য লোকে ঘুষ খায়; এছাড়া তারা বাড়তি সুদ নিয়ে থাকে (H5392)(H8636) এবং জুলুম করে (H6233) প্রতিবেশীর কাছ থেকে অন্যায় লাভ করে। তুমি আমাকে ভুলে গেছ। আমি প্র্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলছি। “Jerusalem … in you they take both advance interest and accrued interest.”

  • এই চারটি পদ একই বিষয় বুঝায়। বাংলা অনুবাদে তা রাখা হয়েছে “কোন রকম সুদ” নেওয়া নিষেধ কিন্তু ইংরেজিতে এখানে সুদ নেওয়ার বিভিন্ন নির্দিষ্ট ধরণ দেখানো হয়েছে: “advance interest” বা “accrued interest”
  • “advance interest” মানে কি? অগ্রিম সুদ দেওয়া ঋণগ্রহীতার জন্য খুব কষ্টের বিষয় হবে, সে তো ঋণ নিচ্ছে কারণ তারই হাতে টাকা নেই। হয়তো “advance interest” একটি পদ্ধতি ছিল, যাতে ঋণদাতার জন্য ঝুঁকি কমানো হয়, যদিও এর অর্থ এই যে, দুর্বলকে আরো চাপ দেওয়া হয় এবং যার টাকা আছে, তার জন্য ঝুঁকি কমানো হয়। অথবা এখানে ঈশ্বর দোষ ধরেন এই বিষয়ে যে, “অগ্রিম” এবং “স্বাভাবিক” সুদ উভয়ই নেওয়া হচ্ছে? দ্বীগুণ সুদ দিতে হলে তা অবশ্যই ঋণগ্রহীতার উপর অসম্ভব ভার তৈরি করে।
  • “accrued interest” মানে কি? হয়তো এর অর্থ এই যে, যোগ দিতে দিতে যতক্ষণ ঋণ চলতে থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত ঋণ বাড়ে। অথবা তা ছিল ঋণগ্রহীতাকে প্রলোভনে ফেলার পদ্ধতি: ‘পরে দিলেও হবে’? অথবা তা এমন ঋণ ছিল যা ৭ বছরের চেয়েও দীর্ঘমেয়াদী ছিল (মওকুফ করতে অস্বীকার করা)? অথবা তা সাধারণ সুদ পদ্ধতিকে বুঝায়, যেখানে আজকের খরচ আগামীকালের উপর চাপানো হয়? “accrued interest” কি সবার ক্ষেত্রে নিষেধ ছিল? না কি মাত্র গ্রীরব ও অভাবীদের ক্ষেত্রে?
সারাংশ

এই অধ্যয়নে কোন নির্দিষ্ট উপসংহারে আসতে পারি নি।

  • কেউ কেউ উপসংহারে আসে যে, সব ধরণের সুদ (সবার ক্ষেত্রে এবং যে কোন পরিস্থিতিতে) নিশেধ। মধ্যযুগে খ্রিষ্টানরা বেশিরভাগ এই ব্যাখ্যা অনুসারে চলত।
  • আবারও কেউ কেউ বলে যে, গরীব ও অভাবীদের ক্ষেত্রে সুদ নেওয়া নিষেধ (ব্যক্তিক্রম: বিদেশীর ক্ষেত্রে)। কিন্তু ব্যবসার জন্য ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সুদ নিতে অনুমোদিত, যদিও অতিরিক্ত সুদ নেওয়া চলবে না।
  • যোহন ক্যাল্ভিন এবং উইলিয়াম কেরী এই দ্বিতীয় ব্যাখ্যা অনুসারে চলতেন। তারা সুদের হার নির্দিষ্ট করে শতকরা ৪ ভাগে রাখতেন, অর্থাৎ বাৎসরিক সুদ সর্বোচ্চ শতকরা ৪ ভাগ হতে পারে (১০০ টাকায় ৪ টাকা) , মাসিক সুদ সর্বোচ্চ শতকরা ০.৩৩ ভাগ হতে পারে (১০০ টাকায় ০.৩৩ পয়সা)।