ক্ষেত্র ও আইন ০৪ – পুরাতন নিয়মের আইন-কানুনের গুরত্ব কি?

পুরাতন নিয়মের আইন-কানুনের বিষয়ে কিছু ভিত্তিক প্রশ্ন
  • পুরাতন নিয়মের আইন-কানুন এখনও কি গুরুত্বপূর্ণ?
  • পুরাতন নিয়মের আইন-কানুন আমাদের কি পালন করতে হবে?
  • পুরাতন নিয়মের আইন-কানুনের অধীনে না থাকলে কেন তা নিয়ে ব্যস্ত থাকব?
পুরাতন নিয়মের আইন-কানুন নিয়ে নতুন নিয়মের কথা

রোমীয় ৭:৬     “তখন আমাদের যা বেঁধে রাখত তার দাবি-দাওয়ার কাছে আমরা মরেছি। সেইজন্য আইন-কানুন থেকে এখন আমরা মুক্ত। তার ফলে আমরা এখন লেখা আইন-কানুনের সেই পুরানো জীবন-পথের দাস নই, কিন্তু পবিত্র আত্মার দেওয়া নতুন জীবন-পথের দাস হয়েছি।”

  • আমরা আইন-কানুন থেকে মুক্ত।
  • আমরা আইন-কানুনের দাস আর নই।

গালাতীয় ২:১৬ “তবুও আমরা এই কথা জানি যে, আইন-কানুন পালনের জন্য ঈশ্বর মানুষকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করেন না, বরং যীশু খ্রীষ্টের উপর বিশ্বাসের জন্যই তা করেন। …কারণ আইন-কানুন পালন করবার ফলে কাউকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করা হবে না।”

  • আইন পালন করা দ্বারা নির্দোষ বলে গ্রহনযোগ্য বা ধার্মিক হওয়া যায় না
  • তা কখনও সম্ভব নি, হচ্ছেও না, হবেও না
  • পরিত্রাণ যীশুতে বিশ্বাস দ্বারা, আইন পালন করা বা নিজের প্রচেষ্টা দ্বারা নয়

রোমীয় ৩:৩১     “এই বিশ্বাসের জন্য কি আমরা তাহলে আইন-কানুন বাতিল করে দিচ্ছি? কখনও না, বরং আইন-কানুনের কথা যে সত্যি তা-ই আমরা প্রমাণ করছি।”

  • বিশ্বাস আইন-কানুন বাতিল করে দেয় নি
  • আইন-কানুন সত্য

রোমীয় ৭:১২     “তবে এই কথা ঠিক যে, আইন-কানুন পবিত্র এবং তার আদেশও পবিত্র, ন্যায্য ও উপকারী।”

মথি ৭:১২           “তোমরা অন্য লোকদের কাছ থেকে যে রকম ব্যবহার পেতে চাও তোমরাও তাদের সঙ্গে সেই রকম ব্যবহার কোরো। এটাই হল মোশির আইন-কানুন ও নবীদের শিক্ষার মূল কথা।”

  • যীশু আইন বাতিল করেন না বরং তার ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখান।
  • আইনের মূল কথা = শান্তিতে, সম্মানে ও ন্যায্যতায় একসাথে বাস করা।

মথি ৫:১৭-১৮      “এই কথা মনে কোরো না, আমি মোশির আইন-কানুন আর নবীদের লেখা বাতিল করতে এসেছি। আমি সেগুলো বাতিল করতে আসি নি বরং পূর্ণ করতে এসেছি।’ ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আকাশ ও পৃথিবী শেষ না হওয়া পর্যন্ত, যতদিন না আইন-কানুনের সমস্ত কথা সফল হয় তত দিন সেই আইন-কানুনের এক বিন্দু কি এক মাত্রা মুছে যাবে না।”

  • যীশু আইন বাতিল করেন নি
  • যীশু আইন পূর্ণ করছেন
  • আইন অনন্ত… আইন অপরিবর্তনশীল

মথি ৫:১৯    “তাই আদেশগুলোর মধ্যে ছোট একটা আদেশও যে কেউ অমান্য করে এবং লোকদের তা অমান্য করতে শিক্ষা দেয় তাকে স্বর্গ-রাজ্যে সবচেয়ে ছোট বলা হবে। কিন্তু যে কেউ সেই আদেশগুলো পালন করে ও শিক্ষা দেয় তাকে স্বর্গ-রাজ্যে বড় বলা হবে।”

  • স্বর্গ-রাজ্যেও আইন পালন করা হবে।
  • স্বর্গ-রাজ্যে কে কে থাকবে, তা আইন পালনের উপরে নির্ভরশীল নয়। যিনি অমান্য করে (ছোট) এবং যিনি মানে (বড়) উভয়ই স্বর্গ-রাজ্যে।
  • যারা আইন পালন করে তারাই ‘বড়’, কার্য্যকারী ও সফল এবং ঈশ্বরকে গৌরব দেবে।
আইন-কানুন কিসের জন্য দেওয়া হয়েছিল?
  • আইন = ঈশ্বরের ইচ্ছা কি,                তার প্রকাশ        ঈশ্বর কি চান এবং কি চান না।
  • আইন = ঈশ্বরের চরিত্র কেমন,             তার প্রকাশ        ঈশ্বর ন্যায্য বলে তিনি চান যে মানুষের মধ্যেও ন্যায্যতা থাকুক।
  • আইন = কি ভাল, কি মন্দ,                তার প্রকাশ।
  • আইন = কি ঠিক, কি ভুল,                 তার প্রকাশ।
  • আইন = কি করা উচিত, কি করা উচিত নয়  তার প্রকাশ।
  • কিন্তু যেহেতু আমি আইন পালন করি না…
    • আইন আমাকে দোষী হিসাবে প্রমাণিত করে
    • আইন আমাকে বিচার করে
    • আইন আমাকে আমার পাপ দেখায়
    • আইন আমাকে দেখায় যে আমি আশাহীন
    • আইন আমাকে বুঝায় আমার কতটাই না সাহায্যের প্রয়োজন
    • আইন আমাকে দেখায় ক্ষমা পাওয়া গেলে যেন অবশ্যই গ্রহণ করি
    • আইন আমাকে পরিত্রাতার দিকে ঠেলে দেয়
  • উপমা: সাঁতার কাটার সময় ডুবে গেলে একটি স্পীডবোট আমার কাছে আসলে খুশি হব। বিপদ না হলে কাছে আসলে বিরক্ত হব।
আইন-কানুন কিসের জন্য দেওয়া হয় নি?

কিন্তু: আইনের আমাকে রক্ষা করার, আমাকে ধার্মিক বানানোর, আমাকে গ্রহন যোগ্য করার বা পরিত্রাণ দেওয়ার কোনো ক্ষমতাই নেই।

উপমা: আইন = আলো

  • অন্ধকারে বসে আমি বুঝি না আমার কাপড় কি নোংরা বা পরিষ্কার
  • আলোতে আমার অবস্থা প্রকাশ পায়।
  • কিন্তু আলো আমাকে পরিস্কার করে না।
  • পরিষ্কার হতে চাইলে কাপড় ধুতে হয় বা স্নান করতে হয়।
  • আইন হল আলো, কিন্তু যীশু হলেন স্নান।

উপমা: আইন = ডাক্তারের নির্নয়।

  • আইন হল ডিক্তারের নির্নয় বা রোগ ধরে পড়া।
  • কিন্তু যীশু = চিকিৎ-সা।
  • নির্নয় জানার লাভ আছে কারণ এখন জানি কি চিকিৎসা করা দরকার।
  • কিন্তু নির্নয় জানা আমাকে সুস্থ্য করে না।

উপমা: আইন = পথ নির্দেশক চিহ্ন।

  • আইন আমাকে দিক দেখায় এবং কোথায় গিয়ে সেই স্থান পাব।
  • কিন্তু পথ-নির্দেশক চিহ্ন আমাকে নিয়ে যায় না।
  • যদি পথ-নির্দেশক চিহ্নের নিচে বসে থাকি তবে কখরও লক্ষ্যে পৌঁছাব না।

উপমা: আইন = রেল ট্র্যাক।

  • রেল ট্র্যাক আমাকে যাওয়ার দিক দেখায়।
  • কিন্তু ট্র্যাক আমাকে নিয়ে যায় না।
  • যেতে গেলে ইঞ্জিন লাগে।
  • আইন হল ট্র্যাকের মত।
  • আইনের ভূমিকা আসলে কি? আইন কি পারে এবং কি পারে না?
  • আইন থেকে আইন পালন করার জন্য কোন সাহায্য আসে না।
  • আইন থেকে আইন পালন করার ক্ষমতা আসে না।
  • আইনের কোনো ক্ষমতা নেই আমাকে ‘ভাল বানাতে’।
  • আইন থেকে দাবি করবেন না যা আইন দিতে অক্ষম!
  • কিন্তু আইন পরিত্রান দিতে অক্ষম মানে এই না যে আইনের কোন ভূমিকা নেই।
    • যদি প্রশ্ন করি: পরিত্রান কিভাবে পাব? > তবে আইন কোন উত্তর দেয় না।
    • যদি প্রশ্ন করি: ঈশ্বর কেমন? তিনি কি ধরণের জীবন চান? > তবে আইন থেকে অনেক উত্তর পাই।
  • পরিত্রান পেয়েছি বলে, বিশ্বাস দ্বারা ঈশ্বরের পুত্র হয়েছি বলে,  ঈশ্বরের রাজ্যে এসেছি বলে…
    • রাজ্যের রাজাকে খুশি করার জন্য কি করতে পারি?
    • বাধ্যতা ও আইন পালন  … রাজ্য পাওয়ার জন্য না, কিন্তু রাজ্য পেলাম বলে।
    • বাধ্যতা ও  আইন পালন … শর্ত হিসাবে না, কিন্তু কৃতজ্ঞতা থেকে।
  • তা আরো পরিষ্কার করার জন্য কিছু উপমা:

উপমা: ঈশ্বরের রাজ্য

  • যীশু হলেন দরজা।
  • যীশু ছাড়া কেউ স্বর্গ রাজ্যে বা অনন্ত জীবনের কেউ ঢুকতে পারে না।
  • আইনের ভূমিকা যখন আমি এখনও রাজ্যের বাইরে আছি?
    • আইন আমাকে দোষ দেখীয়ে দেয়।
    • আইন আমাকে রাজ্যে ঢুকতে বলে।
    • আইন আমাকে দরজার দিকে ধাক্কা দেয়।
    • কিন্তু আইনের কোন ক্ষমতা নেই আমাকে ঢুকাতে।
  • একবার আমি যীশুর দয়া ও নিঃশর্ত ক্ষমা পেয়ে রাজ্যে ঢুকেছি আমার প্রশ্ন হওয়া উচিত: আমার রাজা কে? তিনি কি চান?
  • এবং সেই সময় আইন আবার কথা বলে: আমার রাজা কে হন ও তাঁর ইচ্ছা কি।
  • আইন তাহলে রাজ্যের বাইরে ধাক্কা দানকারী ও রাজ্যের ভিতরে দিক-নির্দেশনা দানকারী।
  • কিন্তু পরিত্রাণ পাওয়ার ক্ষেত্রে আইনের কোন ভূমিকা নেই।

উপমা: আইন = সীমানা, লাঠি বা মাপকাঠি

  • আইন আমাকে বুঝায় কত উচু পর্যন্ত লাফ দিতে হবে।
  • কিন্তু আইন আমাকে লাফাতে সাহায্য করে না।
  • যীশু আমার পক্ষে লাফ দেন।
  • যদি আমি যীশুতে আছি (বিশ্বাস দ্বারা) তিনি আমার পক্ষে শর্ত পূর্ণ করেন।
  • কিছু লোক এভাবে বলে: পুরাতন নিয়মে মাপকাঠি খুব উঁচু ছিল > ঈশ্বর শাস্তি দিতেন। কিন্তু ভাগ্য ভাল যে নতুন নিয়মে দয়ায় মাপকাঠি নীচু হয়ে গেছে, এরজন্য অনেকে বাঁচে।
  • এই কথা সম্পূর্ণ ভুল!
  • আইন পরিবর্তন হয় নি পুরাতন থেকে নতুন নিয়মে। লাঠি নামানো হয় নি। আসলে যীশু মাপখাঠি আরো উঁচুতে রাখেন, যেমন:

মথি ৫:২১-২২ তোমরা শুনেছ, আগেকার লোকদের কাছে এই কথা বলা হয়েছে, ‘খুন কোরো না; যে খুন করে সে বিচারের দায়ে পড়বে।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ তার ভাইয়ের উপর রাগ করে সে বিচারের দায়ে পড়বে। যে কেউ তার ভাইকে বলে, ‘তুমি অপদার্থ,’ সে মহাসভার বিচারের দায়ে পড়বে। আর যে তার ভাইকে বলে, ‘তুমি বিবেকহীন,’ সে নরকের আগুনের দায়ে পড়বে।

মথি ৫:২৭-২৮তোমরা শুনেছ, এই কথা বলা হয়েছে, ‘ব্যভিচার কোরো না।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ কোন স্ত্রীলোকের দিকে কামনার চোখে তাকায় সে তখনই মনে মনে তার সংগে ব্যভিচার করল।”

  • তাই আইনের দাবি নতুন নিয়মে কম, তা সম্পূর্ণ ভুল চিন্তা। লাঠি নামানো হয় নি।
  • আইন পবিত্র, ভাল, অনন্ত, অপরিবর্তনীয় …কেন?
  • কারণ আইন = ঈশ্বরের চরিত্রের প্রকাশ এবং ঈশ্বরের চরিত্র কখনও পরিবর্তিত হয় না।

ইব্রীয় ১৩:৮   “যীশু খ্রীষ্ট কালকে যেমন ছিলেন, আজকেও তেমনি আছেন এবং চিরকাল তেমনি থাকবেন।”
যাকোব ১:১৭    “আলোর পিতা … চঞ্চল ছায়া মত করে তিনি বদলে যান না।”

  • ঈশ্বর অন্যায় ঘৃণা করতেন পুরাতন নিয়মে।
  • ঈশ্বর অন্যায় ঘৃণা করেন নতুন নিয়মে!
  • পুরাতন নিয়মে খুন করা পাপ । নতুন নিয়মে কি ‘বড় ব্যাপার নয়’???                  এইটা একেবারে ভুল চিন্তা।
  • পুরাতন নিয়মে কি ঈশ্বর রাগী কিন্তু নতুন নিয়মে (ভাগ্য ভাল!) যীশু দয়ালু???             এইটা একেবারে ভুল চিন্তা।
    • ত্রিত্ব ঈশ্বরের মধ্যে কোন পার্থক্য বা বিভেদ বা মতের অমিল নেই।
    • নতুন নিয়মে লাঠি কোন রকম নামানো হয় নি।
  • যদি লাঠি নামানো হত তবে যীশুর মৃত্যু কি সের জন্য প্রয়োজন???
  • পুরাতন এবং নতুন নিয়মে ঈশ্বরের ন্যায্যতার কারণে তিনি অবশ্যই পাপকে বিচার করেন।
  • ঈশ্বর কি ন্যায্য বা দয়ালু? > ঈশ্বর সব সময় ন্যায্য এবং দয়ালু:
    • ঈশ্বরের বিচারই দয়া > আপনি কি চান যে মন্দকে থামানো না হোক?
    • ঈশ্বরের ক্ষমাই ন্যায্যতা > আপনি কি মনে করেন ‘যীশু মারা না গেলেও’ হত?
আইন-কানুন কিভাবে পূর্ণ হয়?
  • যীশু আসেন নি আইন বাতিল করতে বরং তা পূর্ণ করতে (মথি ৫:১৭)।
  • যীশু আমার পক্ষে আইন পালন করেন  এবং এভাবে আমাকে ধার্মিক, নির্দোষ বা গ্রহণযোগ্য করে তোলেন।
  • যীশু আমার হৃদয়ে বাস করে বলে আমার মধ্যেই আইন পালন করেন।
  • যীশু আমার হৃদয়ে আছেন বলে, পবিত্র আত্মা আমাকে পরিচালনা করেন বলে…
    • তারাই আমার মধ্যে আইন পূর্ণ করেন।
    • তাদের স্থান দিতে দিতে আমি আইন-শৃঙ্খলে পূর্ণ জীবন-যাপন করতে সক্ষম হই।
  • কিন্তু ঈশ্বরের রাজ্যে আইন পালন করা হবেই।