ডি.জে.হ্যামিল্টনের শিক্ষার ভিত্তিতে রচিত (D.J. Hamilton)

মহাজ্ঞার প্রকৃত অর্থ কি?

মার্ক ১৬:১৫

“Go into all the world and proclaim the good news to the whole creation.” কেরী “তোমরা সমুদয় জগতে যাও, সমস্ত সৃষ্টির নিকটে সুসমাচার প্রচার কর।”

মথি ২৮:১৯-২০

“Go therefore and make disciples of all nations, baptizing them in the name of the Father and of the Son and of the Holy Spirit, and teaching them to obey everything that I have commanded you.” কেরী “অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর; ২০ আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সেই সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও। আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।”

  • মার্ক: “জগত” হল গ্রীক শব্দ G2889 κόσμος (cosmos), যার অর্থ হল সৃষ্টি, মহাবিশ্ব, পৃথিবী।
    • “সমস্ত সৃষ্টির নিকটে” হল গ্রীক শব্দ G2937 κτίσις (ktisis) যার আক্ষরিক অর্থ হল ‘যারা সৃষ্টি তাদের সবার কাছে’।
  • মথি: “সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর” জাতিকে শিষ্য করা মানে কি? ‘জাতি থেকে কিছু লোকদেরকে শিষ্য করা’ এটা এর অর্থ নয়, বরং ‘জাতিকেই শিষ্য করা’।
    • “শিষ্য করা” হল গ্রীক শব্দ G3100 μαθητεύω (matheteuo), যার অর্থ হল শিষ্য করা, একজন শিক্ষার্থী হওয়া, শিক্ষা দেওয়া, নির্দেশনা দেওয়া, শিক্ষার্থী হিসাবে ভর্তি হওয়া।
    •  “জাতি” হল গ্রীক শব্দ G1484 ἔθνος (ethnos), যার অর্থ হল জাতি, গোষ্ঠি, অজানা, অযিহূদী, পরজাতি।
    • “সেই সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দে এর অর্থ হল ‘যে শিক্ষা তোমাদের দিয়েছি, তা যেন তারা পালন করে’।
    • “শিক্ষা” হল গ্রীক শব্দ G1321 διδάσκω (didasko), যার অর্থ হল শেখানো, শিক্ষা দান, শিক্ষা গ্রহণ।
    • “পালন করা” হল গ্রীক শব্দ G5083 τηρέω (tereo), যার অর্থ হল: গুরত্ব দান, মেনে নেওয়া, পালন করা, রক্ষা করা, পূর্ণ করা, আদেশ মানা, ধরে রাখা, লক্ষ্য করা, দেখাশোনা করা।
    • “আজ্ঞা” হল গ্রীক শব্দ G1781 ἐντέλλομαι (entellomai), যার অর্থ হল আদেশ, আজ্ঞা, রাজি করানো।
  • মার্ক মহাজ্ঞা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি ব্যক্তির দিকে গুরুত্ব দেন, অর্থাৎ সৃষ্টির সমস্ত ব্যক্তিরা যেন সুখবর পায়। মথি মহাজ্ঞা দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতিদেরকে বাধ্যতায় আনার উপর গুরুত্ব দেন, যেন সব জাতিদেরকে শিষ্য করে তোলা হয় এবং তারা যেন যীশুর আদেশ পালন করতে শেখে।
  • আমরা মার্ক ও মথির মহাজ্ঞা এভাবে বর্ণনা ও তুলনা করতে পারি:
  • প্রচার অল্পক্ষণের মধ্যে করা যায়, মন পরিবর্তন তাড়াতাড়ি ঘটতে পারে, কিন্তু প্রকৃত পরিবর্তন, অর্থাৎ সত্যিকার অর্থে শিষ্য করে তোলা, এরজন্য অনেক সময় লাগে। প্রকৃতপক্ষে, মৃত্যুর দিন পর্যন্ত আমাদের শিষ্যত্বে বৃদ্ধি পাওয়া দরকার আছে (আরো বাধ্য, আরো চেতনায় সাড়া, আরো ঈশ্বরীয় জীবন, আরো নম্রতা, আরো পরিপক্ক হওয়া ইত্যাদি)।
  • আমরা বলি ‘ধর্মান্তরিত করা’ বা ‘আত্মাকে জয়’, কিন্তু তা হল শুরু মাত্র, কাগজে টিক দিলেই হয় না। শিষ্য করে তোলা হল অনবরত কাজ করে যাওয়া: শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ দান, সত্যকে জীবনে প্রয়োগ করা, হৃদয়ের রূপান্তর, মনোভাব ও আচরণের পরিবর্তন করা, জীবনের একটা পর একটা বিষয় যীশুর প্রভুত্বের অধীনে আনা, এমন সময় পর্যন্ত যাতে ঈশ্বরীয় চরিত্র, সফলতা, উপযুক্ততা ও সৌন্দর্য দেখা যায় – এটা হল দীর্ঘ দিনের অনবরত প্রক্রিয়া।
  • মার্ক আমদের চ্যালেঞ্জ করেন যেন আমরা এই জগতের প্রত্যেকটি ব্যক্তির কাছে তারই ভাষায় এবং তারই সংস্কৃতি অনুসারে উপযুক্তভাবে সুসমাচার পৌঁছাতে পারি যেন সে তা বুঝতে পারে এবং সাড়া দিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
  • মথি আমাদের চ্যালেঞ্জ করেন যেন আমরা প্রত্যেকটি জাতিকে একটি সম্পূর্ণ সমাজ হিসাবে দেখি (যেখানো বিভিন্ন গোষ্ঠি, ক্ষেত্র ও সম্প্রদায় আছে) এবং শিক্ষা ও শিষ্যত্ব দানের মাধ্যমে ঈশ্বরের মঙ্গলময় পরিকল্পনা অনুসারে এই সমাজকে একটি ঈশ্বরীয়, শান্ত, ন্যায্য, সুরক্ষিত ও সুন্দর সমাজে পরিণত করি।
  • মার্ক আমাদেরকে ব্যক্তিদের গঠন করতে চ্যালেঞ্জ করেন। মথি আমাদেরকে জাতিদের গঠন করতে চ্যালেঞ্জ করেন।
  • এই আধুনিক যুগে খ্রিষ্টান মণ্ডলী হিসাবে আমরা ব্যক্তিদের কাছে সুসমাচার পৌঁছানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে অনেক পরিশ্রম করছি এবং বেশ সফলও হচ্ছি। জাতিদেরকে শিষ্য করার ক্ষেত্রে আমরা গুরত্ব কম দিয়ে বেশি ভাল কাজ করতে পারি নি, তেমন চেষ্টাও করি নি।
  • আমাদের বেশ পরিষ্কার লক্ষ্য, চিন্তা-ধারণা, কৌশল ও পরিকল্পনা আছে কিভাবে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে সুসমাচার পৌঁছিয়ে দিতে পারি, কিন্তু জাতিদের শিষ্য করে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের বেশি পরিষ্কার চিন্তা-ধারণা, কৌশল বা পরিকল্পনা নেই। একটি গোটা সমাজকে প্রভাবিত করব কিভাবে? একটি জাতিকে যদি ভালভাবে শিষ্য করে তোলা হয় তবে তা দেখতে কেমন?
  • ব্যক্তি হল এক প্রজন্মের, কিন্তু জাতি বা দেশ থেকে যাবে যখন এক প্রজন্ম মারা যায়। সমাজ, জাতি বা দেশ হল বহু-প্রজন্মের। তাই একটি সমাজকে শিষ্য করে তুলতে চাইলে বহু-প্রজন্মের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। একটি জাতিকে কিভাবে শিষ্য করে তুলব?

সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্ব

  • একটি জাতিকে শিষ্য করে তুলতে চাইলে সেই জাতির সব ক্ষেত্রে ঈশ্বরের পরিকল্পনা ও নীতির দিকে নিয়ে যেতে হবে।
  • প্রত্যেকটি জাতির এই ৮টি ক্ষেত্র আছে: সরকার, অর্থনীতি, বিজ্ঞান, পরিবার, শিক্ষা, যোগাযোগ, ধর্ম এবং শিল্প ও বিনোদন।
  • উপমা: মানুষের শরীর বিভিন্ন অঙ্গ ও অঙ্গের তন্ত্র দিয়ে তৈরি (কংকাল তন্ত্র, সংবহন তন্ত্র, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল তন্ত্র, শ্বসনতন্ত্র ইত্যাদি)। এইসব তন্ত্রগুলো সম্পর্কিত ও একে অন্যের উপর নির্ভরশীল।
  • ঠিক তেমনি একটি দেশে বা সমাজে এই ৮টি ক্ষেত্র প্রয়োজন। ক্ষেত্রেগুলোর গুরুত্ব আছে, ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কিত এবং ক্ষেত্রগুলো একে অন্যের উপর নির্ভরশীল।
  • সমাজের যে কোন ক্ষেত্রে যদি ঈশ্বরের নীতি বেশি পালন করা হয় তবে দেশটি এই ক্ষেত্রে ঈশ্বরীয় ও কার্যকারী। ঈশ্বরের নীতি যদি পালন করা না হয় তবে এই ক্ষেত্রে এবং গোটা সমাজে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। ক্ষেত্রগুলো ভালভাবে চলুক বা খারাপভাবে চলুক, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রের গুরুত্ব, ভূমিকা ও প্রভাব আছে। ঈশ্বর তা এমনভাবেই সৃষ্টি করেছেন।
  • ঈশ্বর যেমন বিভিন্ন ব্যক্তিদেরকে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিত্ব ও তালন্ত দিয়েছেন, ঠিক তেমনি ঈশ্বর জাতিদেরকেও নিজস্ব আহ্বান, ভূমিকা, দান-তালন্ত, দক্ষতা ও বৈশিষ্ট দিয়ে তৈরি করেছেন এবং “ঈশ্বর যা দান করেন এবং যাকে ডাকেন সেই বিষয়ে তাঁর মন তিনি বদলান না” (রোমীয় ১১:২৯)।
  • প্রেরিত ১৭:২৬-২৭ পদেও আমরা বিভিন্ন জাতির জন্য ঈশ্বরের ভিন্ন পরিকল্পনা, নকশা বা ভূমিকার বিষয়ে ইঙ্গিত পাই: “তিনি একজন মানুষ থেকে সমস্ত জাতির লোক সৃষ্টি করেছেন যেন তারা সারা পৃথিবীতে বাস করে। তারা কখন কোথায় বাস করবে তাও তিনি ঠিক করে দিয়েছেন। ২৭ ঈশ্বর এই কাজ করেছেন যেন মানুষ হাতড়াতে হাতড়াতে তাঁকে পেয়ে যাবার আশায় তাঁর খোঁজ করে। কিন্তু আসলে তিনি আমাদের কারও কাছ থেকে দূরে নন ”
  • তাই বলা যায় যে, মহাজ্ঞা আমাদের সামনে দু’টি বড় কাজ তুলে ধরছে:
    • ১) প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে সুসমাচার এমনভাবে পৌঁছানো যাতে সে তা বুঝতে এবং সাড়া দিতে পারে।
    • ২) সব জাতিদেরকে শিষ্য করে তোলা এবং ঈশ্বরের নীতিগুলো এমনভাবে শেখানো যেন সেই সমাজ আরো ঈশ্বরীয়, শান্ত, ন্যায্য, সুস্থ, কার্যকারী ও সুন্দর হয়ে উঠতে পারে।
  • পুরাতন নিয়মে আমরা দেখি যে, ভাববাদীরা ব্যক্তি এবং জাতি উভয়কে ঈশ্বরের বাণী ও দর্শন দেখিয়েছিলেন।যীশু নতুন নিয়মে কান্না করেছিলেন, তা দু’বার উল্লেখ করা হয়েছে: লাসারের বিষয়ে (ব্যক্তি) এবং যিরূশালেমের বিষয়ে (সমাজ)। ব্যক্তি এবং সমাজ উভয়কে আমাদের গুরুত্ব দিতে শিখতে হবে।

জাতিদের শিষ্যত্বদানের ক্ষেত্রে শিল্পের ভূমিকা

একটি জাতিকে শিষ্য করে তোলার ক্ষেত্রে একটি প্রকৃত ধারাবাহিকতা আছে:

  • প্রথমত, সমাজকে পরিবর্তন করার জন্য লাগে চিন্তা করার লোক, দার্শনিক, ভাববাদী, বাইবেলের অধ্যয়নকারী, ধর্মত্তত্ববিদ, বাইবেলীয় দৃষ্টিভঙ্গির শিক্ষক।
  • তারা ভিত্তিক বা মৌলিক চিন্তা বুঝে, তারা চিন্তা এবং চিন্তার গুরুত্ব ও ফলাফল বুঝে।
  • ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে: “ideas have consequences”, অর্থাৎ ‘চিন্তা প্রভাবশালী’। যেভাবে চিন্তা করি সেভাবে আচরণও করি এবং সেভাবে সমাজের উপরে প্রভাবও ফেলি।
  • দ্বিতীয়ত লাগে শিল্পী, গল্প বলার লোক, গান-কবিতার রচক ও গায়ক, যারা এই চিন্তার উপর কাহীনি বা চলচিত্র বানিয়ে উপস্থাপনা করে।
  • উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে গ্রীক ও রোমীয় কাহিনীরচকদের লেখা দ্বারা সম্পূর্ণ গ্রীক ও রোমীয় যুগ প্রভাবিত হয়েছিল (যেমন হোমেরের ‘ইলিয়াড’ ও ‘ওডিসি’)।
  • এই কাহীনিগুলোর মাধ্যমে গ্রীক ও রোমীয় সংস্কৃতি প্রভাবিত হয়েছিল, এই দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মকে দেওয়াও হয়েছিল (মানুষের পরিচয়, মানুষের ভূমিকা, উদ্দেশ্য, নীতি, যুক্তি ও আশা)।
  • আমাদের আধুনিক যুগে এই ভূমিকা পালন করা হয় লেখক, গায়ক, চলচিত্র প্রযোজক, নাট্যকার, নায়ক, গায়ক ও নর্তকী দ্বারা।
  • শিল্পীরা দার্শনিকদের চিন্তা-ধারণা আকর্ষণীয় ও সুন্দর কিছুতে পরিণত করে।
  • তাদের শ্রোতারা সৌন্দর্যের সঙ্গে গল্পের পিছনে যে মূল চিন্তা বা মূল্যবোধ আছে, তা গ্রহণ করে।
  • এটা দ্বারা গভীর প্রভাব এবং প্রকৃত রূপান্তর ঘটে। Ingmar Bergman নামে একজন নামকরা চলচিত্র প্রযোজক বলেছিলেন “তথ্য দিলে তা সরাসরি শ্রোতাদের মাথায় পৌঁছায়, গল্প বললে তা সরাসরি তাদের অন্তরে কাজ করে”।
  • বর্তমান যুগের একটি উদাহরণ: J.R.R. Tolkien-এর বই এবং চলচিত্র ‘Lord of the Rings’ এমন একটি গল্প যা শ্রোতাদের গভীরভাবে স্পর্শ করে, যা তাদের অন্তরে নির্দিষ্ট একটি দৃষ্টি ও আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে।
  • এই গল্প দ্বারা চমৎকার বাইবেলীয় মূল্যবোধ উপস্থাপনা করা হয়, যেমন বিশ্বস্ততা, বন্ধুত্ব, আত্ম-ত্যাগ, সেবা, নম্রতা ও সাহস। এই চলচিত্র দেখার বা এই বই পড়ার পরে শ্রোতারা মনে মনে চিন্তা করে ‘আমি অন্যদের আরো ত্যাগ-স্বীকার করব, আমি আরো সাহসের সঙ্গে সত্যের পক্ষে দাঁড়াব’।
  • শিল্প ও বিনোদনের মধ্য দিয়ে শ্রোতাদের চিন্তা-ধারণা খুব গভীরে প্রভাবিত হয়, তাদের মূল্যবোধ এবং নিজের জীবন মূল্যায়ন করার ধরণ পরিবর্তিত হয়ে যায়।
  • তৃতীয়ত সাধারণ শিক্ষকেরা বা অফিসারেরা ভূমিকা পালন করে।
  • তারা দার্শনিকদের ও শিল্পীদের চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে বলে শিক্ষক, নীতি নির্ধারক, ডাক্তার, অফিসার বা বাস্তবায়নকারী হিসাবে এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে প্রয়োগ ঘটায়।
  • চতুর্থতম এই শিক্ষক বা অফিসারদের মাধ্যমে দৃষ্টিভঙ্গিটি সাধারণ লোকদের কাছে পৌঁছায়।
  • উদাহরণ: চিত্রটি 1983 সালের একটি চার্টের উপরে তৈরি করা হয়েছে “Mel Gables, National Association of Christian Educators”।

শিল্পীদের কাছে কিছু কথা

  • লোকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে দার্শনিক ও শিল্পীরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে।
  • তারা নীতি ও মূল্যবোধে, চিন্তা ও আচরণ, মন ও আবেগের উপরে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।
  • যখন এইসব একসাথে প্রভাবিত হয় তখন প্রকৃতপক্ষে লোকদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং দৈনন্দিন জীবনে তাদের আচরণের পরিবর্তন ঘটে।
  • দেখা যায় যে, সমাজ পরিবর্তন যখন ঘটে তখন তা সব সময় ছোট দলের মাধ্যমেই ঘটে, অর্থাৎ এমন দল বা লোক দ্বারা যারা আকাঙ্ক্ষী, পরিকল্পিত ও সমর্পিত। যীশু তাদেরকে ‘লবণ’ রূপক দিয়ে বর্ণনা করেন। লবণ পরিমাণে বেশি লাগে না, সব জায়গায় অল্প একটু থাকলে খাবারের স্বাদ পরিবর্তন হয়।
  • খ্রিষ্টান শিল্পী, গণমাধ্যমের কর্মী এবং প্রভাব ফেলার লোক হিসাবে আমাদের শুধুমাত্র দক্ষ হতে হবে, তালন্ত থাকতে হবে, চর্চা করতে হবে, এমন নয়।
  • আমাদের জানতে হবে কি বলা দরকার, কি সংবাদ প্রয়োজন ও জীবনদায়ী।
  • ‘কিভাবে বলব?’ এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য দান-দক্ষতা প্রয়োজন।
  • ‘কি বলব?’ এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য বাইবেলীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন।
  • এমন খ্রিষ্টানরা যাদের দান-দক্ষতা আছে কিন্তু সত্যিকার বাইবেলীয় দৃষ্টিভঙ্গি নেই, তাদের প্রভাব স্থায়ী হবে না।
  • আমরা হয়তো মনে করি যে, শিল্প ও বিনোদন ‘মজা করার জন্য মাত্র’, অর্থাৎ শিল্প ও বিনোদনের অর্থ বা সংবাদ না থাকলেও হয়, কিন্তু এই চিন্তাটি অতি সরু।
  • শিল্প ও বিনোদনকে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা করা যায় না।
  • অপর পক্ষে দৃষ্টিভঙ্গি ছড়ানোর জন্য শিল্প ও বিনোদন অত্যন্ত প্রয়োজন।
  • একজন ব্যক্তিকে সঠিক তথ্য, মতবাদ বা দৃষ্টিভঙ্গি শোনানো, তা কার্যকারী নয়, তাতে পরিবর্তন আসবে না।
  • একারণে খ্রিষ্টান শিল্পী হিসাবে বাইবেলীয় দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়ার জন্য আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরকে এবং তাঁর বাক্যকে গুরুত্বের সঙ্গে অন্বেষণ করা দরকার।
  • সাথে সাথে আমাদের অবশ্যই দান-দক্ষতার সৃজনশীল ব্যবহার করা প্রয়োজন।
  • দু’টি একসাথে যদি আমাদের থাকে তবে আমরা সত্যিকার পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হব।
    ঠিক কিভাবে পরিবর্তন ঘটে? প্রকৃতপক্ষে আমরা তা ঠিক জানি না।
  • তবুও আমরা জানি যে, ঈশ্বর আমাদেরকে সাহায্য করতে সমর্পিত যেন আমরা সত্যিকার পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হই।
  • তিনি তো এর জন্যই আমাদের সৃষ্টি করেছেন।

বাইবেলীয় দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে কিছু বই

  • Francis Shaeffer Complete works (সব লেখা)
  • Darrow Miller Discipling Nations (জাতিদেরকে শিষ্যত্ব দান)
  • Landa Cope Old Testament Template (পুরাতন নিয়মের মূল নকশা)
  • Vishal Mangalwadi The book that made your world (যে পুস্তকটি আপনার জগতকে সৃষ্টি করেছে)
  • Loren Cunningham The Book that transforms nations (যে পুস্তকটি জাতিদেরকে পরিবর্তন করে)