ধর্ম ০৬ – নতুন নিয়মে নেতৃত্ব – একজন ব্যক্তি নিয়ে অধ্যয়ন: বার্ণবা
বার্ণবার পরিচয়
প্রেরিত ৪:৩৬-৩৭ ‘যোষেফ নামে লেবির বংশের একজন লোক ছিলেন। সাইপ্রাস দ্বীপে তাঁর বাড়ী ছিল। তাঁকে প্রেরিতেরা বার্ণবা, অর্থাৎ উৎসাহদাতা বলে ডাকতেন। তাঁর এক খণ্ড জমি ছিল; তিনি সেটা বিক্রি করে টাকা এনে প্রেরিতদের পায়ের কাছে রাখলেন।’
- এখানে পরিচয় পাই যোষেফ নামে একজন যিহূদী, যিনি লেবি বংশের, সাইপ্রাস দ্বীপে বাসকারী এবং গ্রীক ভাষাভাষী লোক।
- সম্ভবত তিনি নিস্তার ও পঞ্চাশত্তমী পর্ব পালন করার জন্য যিরূশালেমে এসেছেন যেমন মোশির আইন-কানুনে লেখা আছে। তাই চিন্তা করা যায় যে তিনি একজন ঈশ্বরভক্ত ধার্মিক যিহূদী যিনি আইন মানেন যদিও তার বেশ দূর থেকে আসতে হয় (সাইপ্রাস > যিরূশালেম)।
- হয়তো তিনি যীশুর প্রচার কিছুটা শুনেছিলেন, অথবা পঞ্চাশত্তমীর দিনে পিতরের প্রচার শুনেছিলেন অথবা পরে যখন মণ্ডলী বৃদ্ধি পায় বিশ্বাসী হলেন।
- তিনি মণ্ডলীর জীবনে অংশ গ্রহণ করেন ও তাড়াতাড়ি তার উৎসাহ দানের কারণে চোখে পড়ে। তার সে দান এমন পরিষ্কার বা কার্যকারী যে প্রেরিতরা তাকে ‘বার্ণবা’ অর্থাৎ ‘উৎসাহদাতা’ বলে ডাকেন। তিনি বড় মনের লোক ও দানশীল, উভয় টাকা-পয়সার ক্ষেত্রে এবং উৎসাহের ক্ষেত্রে। তিনি সক্রিয় ও স্বচালিত।
- দেখা যায় যে লেবি বংশের যিহূদী হিসাবে তিনি যিরূশালেম এলাকার একটি ক্ষেতের মালিক। আইন-কানুন অনুসারে লেবীয়রা শুধুমাত্র ৪৮টি লেবীয় শহরে জমি পেত। হয়তো নির্বাসনের পরে বিষয় এইভাবে আর ছিল না। অথবা তিনি ক্ষেতের অস্থায়ী মালিক মাত্র (জুবল বছর বা ৫০ বছর পর্যন্ত)।
বার্ণবার পরিবার
কলসীয় ৪:১০ ‘আমার সংগে বন্দী ভাই আরিষ্টার্খ আর বার্ণবার আত্মীয় মার্কও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। মার্কের বিষয় তোমরা তো আগেই আদেশ পেয়েছ যে, তিনি যদি তোমাদের কাছে আসেন তবে তাঁকে আদরের সংগে গ্রহণ কোরো।
প্রেরিত ১২:১২ ‘এই কথা বুঝতে পেরে তিনি যোহনের মা মরিয়মের বাড়ীতে গেলেন। এই যোহনকে মার্ক বলেও ডাকা হত। সেই বাড়ীতে অনেকে একসংগে মিলিত হয়ে প্রার্থনা করছিল।’
- যোহন-মার্ক ছিলেন বার্ণবার একজন আত্মীয়। কিছু অনুবাদ ‘cousin’ দেয়, কিছু অনুবাদ ‘nephew’ দেয়। হতে পারে গ্রীক শব্দের বিভিন্ন অনুবাদ করা যায়। যোহনের মা মরিয়ম তাহলে বার্ণবার বোন বা ‘aunt’। মরিয়ম একজন দানশীল, শক্তিশালী ও সাহসী বিশ্বাসী যেহেতু তিনি মণ্ডলীকে তার বাসায় একত্রিত করতে দেয়, এমন কি অত্যাচারের সময়েও।
বার্ণবার সাহস ও বিচার করার সুবুদ্ধি
প্রেরিত ৯:২৭-২৮ ‘কিন্তু বার্ণবা তাঁকে সংগে করে প্রেরিতদের কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁদের জানালেন, দামেস্কের পথে শৌল কিভাবে প্রভু যীশুকে দেখতে পেয়েছিলেন এবং প্রভু তাঁর সংগে কিভাবে কথা বলেছিলেন, আর দামেস্কে যীশুর সম্বন্ধে তিনি কিভাবে সাহসের সংগে প্রচার করেছিলেন। এর পরে শৌল যিরূশালেমে শিষ্যদের সংগে রইলেন এবং তাঁদের সংগে চলাফেরা করতেন ও প্রভুর বিষয়ে সাহসের সংগে প্রচার করে বেড়াতেন।’
- বার্ণবা নতুন করে অনুতপ্ত পৌলের প্রচার শুনেন অথবা পৌলের অনুতাপ সম্বন্ধে গুজব-গল্প শুনে তার সাথে দেখা করতে যান। বার্ণবা নিশ্চিত করতে চান আসলে কি হল। তিনি ভয় পান না একজন অত্যাচারীর সাথে দেখা করতে।
- বার্ণবা আগ্রহী, সাহসী, সক্রিয় ও স্বচালিত। তিনি নিজে থেকে উদ্যোগ নেওয়া লোক। তার বিশ্বাস আছে যে ঈশ্বরের ক্ষমতা আছে মানুষকে পরিবর্তন করতে।
- বার্ণবা ও যত্নশীল, তিনি দুশ্চিন্তিত যে পৌল নতুন বিশ্বাসী হিসাবে একা পড়ে আছে কারণ সবাই তাকে নিয় ভয় পায়। বার্ণবা একটি প্রয়োজন দেখেন ও মেটান। তিনি নিশ্চিত করতে যান যে পৌল সহভাগিতা পায়।
- বার্ণবা যখন নিশ্চিত যে পৌলের অনুতাপ ফাঁদ নয় বরং আসল, তিনি তাকে প্রেরিতদের সাথে ও মণ্ডলীর সাথে পরিচয় করে দেন। তাতে বুঝা যায় যে বার্ণবার কথা ও তার বিচার বুদ্ধিতে লোকেরা কত বিশ্বাস করত। যেহেতু বার্ণবা অন্যদের চোখে বিশ্বাসযোগ্য তিনি পৌলের জন্য সুপারিশ করে একটা দরজা খুলতে সক্ষম।
- বার্ণবা অপেক্ষা করেন না ‘নেতারা যেন কিছু করেন’, তিনি অভিযোগও করেন না যে ‘তারা কিছু করেন না’, কিন্তু তিনি নেতৃত্ব অমান্য করেও কিছু করেন না। তিনি নিশ্চিত যে নেতারাও দেখবে ও বুঝবে যা তিনি দেখেছেন ও বুঝেছেন। তিনি তাদের নেতৃত্বকে সম্মান করেন, সরাসরি যোগাযোগ করেন এবং বিশ্বাস করেন যা তারা অনুমোদন দেবেন। তিনি নিজেকে তা করতে স্বাধীন মনে করেন ও লোকদের সামনে যা করেন তাই করেন। তিনি পদ বা টাইটেলের জন্য অপেক্ষা করেন না।
- নেতারা বার্ণবার বিচার বুদ্ধি ও প্রজ্ঞা জেনে তারা বিষয়টি বিবেচনা করে তা অনুসারে আগায়: তারা পৌলকে গ্রহণ করে ও মণ্ডলীর সদস্য হতে দেন।
নেতারা বার্ণবাকে বিশ্বাস করে ও কাজে লাগান
প্রেরিত ১১:১৯-২৪ ‘স্তিফানকে কেন্দ্র করে বিশ্বাসীদের উপর অত্যাচারের দরুন যারা ছড়িয়ে পড়েছিল তারা ফৈনীকিয়া, সাইপ্রাস ও সিরিয়া দেশের আন্তিয়খিয়া পর্যন্ত গিয়ে কেবল যিহূদীদের কাছেই ঈশ্বরের বাক্য বলল। কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন আন্তিয়খিয়াতে গিয়ে গ্রীক ভাষায় কথা বলা লোকদের কাছেও প্রভু যীশুর বিষয়ে সুখবর প্রচার করতে লাগল। এরা ছিল সাইপ্রাস দ্বীপ ও কুরীণী শহরের লোক। ঈশ্বরের শক্তি তাদের উপর ছিল বলে অনেক লোক প্রভুর উপর বিশ্বাস করে তাঁর দিকে ফিরল। এই খবর যিরূশালেমের মণ্ডলীর লোকদের কানে গেলে পর তারা বার্ণবাকে আন্তিয়খিয়াতে পাঠিয়ে দিল। ঈশ্বর যে কিভাবে আন্তিয়খিয়ার লোকদের দয়া করেছেন বার্ণবা এসে তা দেখে খুব আনন্দিত হলেন। তারা যেন সমস্ত অন্তর দিয়ে প্রভুর কাছে বিশ্বস্ত থাকে সেইজন্য তিনি তাদের সকলকে উৎসাহ দিতে লাগলেন। বার্ণবা একজন ভাল লোক ছিলেন এবং তিনি পবিত্র আত্মাতে ও বিশ্বাসে পূর্ণ ছিলেন। তখন প্রভু অনেককেই তাঁর নিজের কাছে নিয়ে এসেছিলেন।’
- ‘গ্রীক ভাষায় কথা বলা লোক’ এখানে ‘বাইরের যিহূদীদের’ বুঝায় না (যেমন বার্ণবা একজন ছিলেন) বরং অযিহূদীকে বুঝায়। খেয়াল করুন যে এখানে নতুন কিছু ঘটছে, কিন্তু প্রেরিতদের দ্বারা তা ঘটে না। সাধারণ বিশ্বাসীরা সাক্ষী হয় বলে সুসমাচার ছড়িয়ে পড়ছে।
- অযিহূদী বিশ্বাসী হয়ে যাচ্ছে, বিষয়টি এমন গুরুত্বপূর্ণ (ও হতে পারে তর্কের বিষয়), তাই যিরূশালেম নেতারা নিশ্চিত করতে চান কি হচ্ছে।
- তারা বার্ণবাকে এখানে যিরূশালেম মণ্ডলীর প্রতিনিধি হিসাবে ও অধিকারী রূপে পাঠান। আবারও বুঝা যায় বার্ণবার উপর কত বিশ্বাস ও নির্ভরতা ছিল। তার সুনাম ও ভাল বিচার বুদ্ধি আছে, তা সবাই জানেন। বর্ণনা ‘একজন ভাল লোক, পবিত্র আত্মাতে ও বিশ্বাসে পূর্ণ’ । হয়তো বার্ণবাকে এই দায়িত্ব দেওয়ার অন্য একটি কারণ ছিল যে তিনি গ্রীক ভাষাভাষী যিহূদী। তিনি আন্তিয়খিয়ায় যারা প্রচার শুরু করলেন, তাদের মত একজন।
- আন্তিয়খিয়ায় কি ঘটছে দেখে বার্ণবা ঈশ্বরের হাত বুঝতে পারেন এবং তিনি আনন্দিত। তিনি এমন কিছু নিয়ে আনন্দিত ও তিনি এমন কিছুকে সুপারিশ করেন যাতে তার কোনো হাত ছিল না। তাতে তার সুবুদ্ধি, বড় মন ও স্বার্থহীনতা বুঝা যায়। তিনি আসলে ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য আগ্রহী। তিনি কোনো ‘অধিকার’ রক্ষা করেন না, দমন করেন না, বা ‘ভিন্ন কিছু’ অগ্রাহ্য করেন না।
- তিনিও বুঝতে পারেন এই নতুন মণ্ডলীর কি প্রয়োজন: তিনি তাদের উৎসাহিত করেন (তারই দান!) যেন তারা মনে-প্রাণে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত হয়। তিনি বুঝতে পারেন যে তাদের আরো শিক্ষা ও শিষ্যত্ব দরকার এবং তিনি তা নিশ্চিত করার জন্য নিজেকে সমর্পিত করেন। তিনিও পৌলকে এনে এই কাজে লাগান।

বার্ণবা পৌলকে কাজে লাগান
প্রেরিত ১১:২৫-২৬ ‘এর পরে বার্ণবা শৌলের খোঁজে তার্ষ শহরে গেলেন, আর তাঁকে খুঁজে পেয়ে আন্তিয়খিয়াতে আনলেন। বার্ণবা আর শৌল এক বছর পর্যন্ত মণ্ডলীর লোকদের সংগে মিলিত হয়ে অনেক লোককে শিক্ষা দিলেন।’
- বার্ণবা অন্যদের মধ্যে সে দান, তালন্ত, আহবান বা সম্ভাবনা আছে, তা দেখেন ও উন্নতি করতে প্রস্তুত। তিনি এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেন যাতে লোকেরা নিজের আহবান অনুসারে ধাপ নিতে পারে এবং সুযোগ ও উৎসাহ পায়। তিনি একজন সংগ্রহকারী, অনুপ্রেরণাদাতা, উৎসাহদাতা।
- হয়তো বার্ণবা তার নিজের কি দান নেই বা নেতৃত্বে কি দুর্বলতা আছে, তা বুঝে অন্য লোকদের নিয়ে আসেন যেন তা মেটানো হয়।
- বার্ণবার কোনো অহংকার নেই বা কোন ভয় নেই যে একজন তার চেয়ে ভাল করবে। তার অধীনের শক্তিশালী লোককে তিনি সীমিত রাখেন না।
- বার্ণবার পরিচর্যা সফল এই ক্ষেত্রে যে অনেকে শিক্ষা পায়, কিন্তুও এই ক্ষেত্রে যে গভীর শিষ্যত্ব হয়। বার্ণবা এমন একজনকে শিষ্যত্ব দেন যিনি মণ্ডলীর সর্বপ্রধান ও কার্যকারী প্রেরিতদের মধ্যে একজন হবেন। বার্ণবা ভালই জানেন দীর্ঘদিনের জন্য শিষ্যত্ব কত গুরুত্বপূর্ণ, তা কারও চোখে না পড়লেও।
বার্ণবা ও পৌল যিরূশালেমে
প্রেরিত ১১:২৭-৩০ ‘এর মধ্যে কয়েকজন নবী যিরূশালেম থেকে আন্তিয়খিয়াতে আসলেন। তাঁদের মধ্যে আগাব নামে একজন উঠে দাঁড়িয়ে পবিত্র আত্মার পরিচালনায় বললেন যে, সারা রোম সাম্রাজ্যে এক ভীষণ দুর্ভিক্ষ হবে। (সম্রাট ক্লৌদিয়ের রাজত্বের সময়ে সেই কথা পূর্ণ হয়েছিল।) তখন শিষ্যেরা ঠিক করল, যিহূদিয়া প্রদেশের বিশ্বাসী ভাইদের সাহায্যের জন্য তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের সাধ্য অনুসারে টাকা পাঠাবে। তারা তা করেছিল। তারা বার্ণবা ও শৌলের হাতে যিহূদিয়ার মণ্ডলীগুলোর বৃদ্ধ নেতাদের কাছে সেই সাহায্য পাঠিয়ে দিয়েছিল।’
- আন্তিয়খিয়া মণ্ডলী এখানে ভবিষ্যদ্বাণীকে মূল্য দেয়। তারা দানশীল ও সাহায্য করতে ইচ্ছুক, দেখা যায় যে বার্ণবার শক্তিশালী দিক মণ্ডলীর শক্তিশালী-দিকে পরিণত হয়েছে। তারা বার্ণবা ও পৌলকে তাদের দান যিরূশালেমে পৌঁছানোর দায়িত্ব দেয়।
- বার্ণবা ও তার সহকর্মী পৌলকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করা হয়, টাকা-পয়সার ক্ষেত্রেও। তাদের প্রজ্ঞাপূর্ণ ও দক্ষতাশালী মনে করা হয়। কেন দুইজনকে একসাথে পাঠানো হয়? হয়তো রাস্তা-ঘাটে নিরাপত্তার জন্য ও দায়বদ্ধতার জন্য। বার্ণবার নাম আগে উল্লিখিত, তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বার্ণবার শিষ্য পৌলকে যিরূশালেমে অনুমোদিত
গালীতীয় ২:১-২ চৌদ্দ বছর পরে আমি বার্ণবার সংগে আবার যিরূশালেমে গেলাম, আর তীতকেও সংগে নিলাম। ঈশ্বরের ইচ্ছা প্রকাশিত হবার পরে আমি সেখানে গেলাম। যে সুখবর আমি অযিহূদীদের কাছে প্রচার করে থাকি তা বললাম। মণ্ডলীর গণ্যমান্য লোকদের কাছে সেই সব গোপনেই বললাম, কারণ আমার ভয় হচ্ছিল যে, হয়তো আমি অনর্থক পরিশ্রম করছি বা করেছি।
গালীতীয় ২:৯ ‘সেই গণ্যমান্য লোকেরা, অর্থাৎ যাকোব, পিতর ও যোহন এই সব দেখে বুঝতে পেরেছিলেন যে, আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে বিশেষ দয়া পেয়েছি। তাঁদের ও আমাদের মধ্যে যে যোগাযোগ-সম্বন্ধ আছে তা দেখাবার জন্য তাঁরা আমার ও বার্ণবার সংগে ডান হাত মিলালেন।’
- বার্ণবা ও পৌল এখানে দল হিসাবে যিরূশালেমে যায়। পৌল ‘তার সুখরকে’ যিরূশালেম মণ্ডলীর নেতাদের কাছে রাখেন। তারা তাকে অনুমোদিত করেন ও সহ-প্রেরিত হিসাবে সহভাগিতার অনুমোদন দেন। তাই পৌলকে (এবং সাথে বার্ণবার শিষ্যত্ব ও বিচার বুদ্ধিও) অনুমোদিত হয়।
বার্ণবা নতুন শিষ্য নিযুক্ত করেন
প্রেরিত ১২:২৫ ‘বার্ণবা ও শৌলের কাজ শেষ হওয়াতে তাঁরা যোহনকে সংগে নিয়ে গেলেন। এই যোহনকে মার্ক নামেও ডাকা হত।’
- আবারও বার্ণবার নাম আগে দেওয়া, তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি তার আত্মীয় যোহন-মার্ককে শিষ্য ও সহকর্মী হিসাবে নিযুক্ত করেন। বার্ণবার এই ভাল অভ্যাস বুঝা যায়: শিষ্যত্ব ও শিক্ষা, সুযোগ ও উৎসাহ দান।
বার্ণবা ও পৌলকে মিশনারী হিসাবে পাঠানো
প্রেরিত ১৩:১-৩ আন্তিয়খিয়ার মণ্ডলীতে কয়েকজন নবী ও শিক্ষক ছিলেন। তাঁদের নাম বার্ণবা, নীগের নামে পরিচিত শিমোন, কুরীণী শহরের লুকিয়, শাসনকর্তা হেরোদের সংগে লালিত-পালিত মনহেম এবং শৌল। তাঁরা যখন উপবাস করে প্রভুর উপাসনা করছিলেন তখন পবিত্র আত্মা তাঁদের বললেন, “বার্ণবা আর শৌলকে আমি যে কাজের জন্য ডেকেছি আমার সেই কাজের জন্য এখন তাদের আলাদা কর।” তখন তাঁরা উপবাস ও প্রার্থনা করে সেই দু’জনের উপর হাত রাখলেন এবং তাঁদের পাঠিয়ে দিলেন।
- বার্ণবা, পৌল এবং অন্যান্যদের ‘নবী ও শিক্ষক’ বলা হয়। দেখা যায় যে মণ্ডলী শুধুমাত্র বৃদ্ধি পায় নি, সাথে নতুন কর্মী ও নেতাও তৈরি হয়েছে।
- তারা নেতৃত্ব হিসাবে উপবাস করে ঈশ্বরকে আরাধনা ও অন্বেষণ করেন (একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে? রীতিমত?)। তারা পবিত্র আত্মার রব শুনেন ও বাধ্য হন।
- মণ্ডলীতে এত কর্মী তৈরি হয়েছে বলে হতে পারে বার্ণবা ও পৌল আর তেমন প্রয়োজন নয়। বুঝা যায় যে বার্ণবার বিশ্বাস আছে তার কর্মীদের নিয়ে, মণ্ডলীর নেতৃত্ব ধরে রাখেন না, ছাড়তেও ভিত নন বরং নতুন কিছু শুরু করতে রাজী।
- বার্ণবার নাম পৌলের আগে দেওয়া হয়েছে। তাতে বুঝা যায় যে তিনি এই ছোট দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বার্ণবা পৌলকে নেতৃত্ব দেন
- প্রেরিত ১৩:১৩ ‘এর পরে পৌল ও তাঁর সংগীরা…’ প্রেরিত পুস্তকের এই পদ থেকে হঠাৎ করে পৌলের নাম বার্ণবার নামের আগে দেওয়া শুরু হয়।
- মনে হচ্ছে সাইপ্রাস দ্বীপে পাফোতে ঘটনার পরে বার্ণবা ইচ্ছাকৃত ভাবে পৌলকে নেতৃত্ব দেন। তিনি নিজেকে সরিয়ে পৌলকে মুক্ত করেন যেন নেতৃত্ব দিতে পারেন। আবারও দেখা যায় যে বার্ণবা তার পদ ছাড়তে রাজী, ‘আরো অদৃশ্য’ হতে রাজী। এক মিনিট চিন্তা করুন: এক মণ্ডলীর পালক যদি নেতৃত্ব নতুন একজন পালককে দান করেন কিন্তু নতুন পালককে সমর্থন করার জন্য আগের পালক মণ্ডলীতে সদস্য হিসাবে থাকতেন, তা কেমন হত? কেন আমরা পারি না যা বার্ণবা পারতেন?
- যোহন মার্ক দল ছেড়ে যিরূশালেমে ফিরে যান। পরে দেখা যায় যে পৌল এই ঘটনা যথেষ্ট কারণ মনে করে যোহনকে কর্মী হিসাবে গ্রহণ আর না করতে (প্রেরিত ১৫:৩৮)। কেন যোহন মার্ক চলে যান? তার কি ভাল লাগে না যে এখন পৌল নেতা? না অন্য একটি কারণ ছিল?
- প্রেরিত ১৩:৪৩‘পরে অনেক যিহূদী…পৌল আর বার্ণবার সংগে সংগে গেল।’ ‘পৌল ও বার্ণবা’, এখন এইভাবে দেওয়া। তারা নতুন বিশ্বাসীদের উৎসাহ ও নির্দেশনা দেন।
- প্রেরিত ১৩:৪৬ ‘তখন পৌল ও বার্ণবা সাহসের সংগে তাদের এই উত্তর দিলেন…’ দুইজন মিলে মিশে ও কার্যকারী ভাবে কাজ করেন।
- প্রেরিত ১৩:৫০‘এইভাবে তারা পৌল ও বার্ণবার উপর অত্যাচার করিয়ে সেই এলাকা থেকে তাঁদের বের করে দিল’ ‘পৌল ও বার্ণবা’ এখানে অত্যাচারিত ও তাড়ানো।
- প্রেরিত ১৪:১১-১৪ ইকনিয় লোকেরা তারা এই প্রচার দল ও আশ্চর্য কাজ দেখে পৌলকে হের্মেস-বৃধ (Hermes-Mercury, যোগাযোগ, সংবাদ ও প্রকাশের দেব) মনে করেন যেহেতু তিনি কথা বেশি বলেন। তারা বার্ণবাকে জিউস-বৃহস্পতি (Zeus-Jupiter, দেব-দেবীদের প্রধান রাজা, আকাশের ও বিদ্যুৎ চমকানোর দেব) মনে করেন, হতে পারে কারণ তারা বার্ণবার অধিকার ও মর্যাদা বুঝে।
- প্রেরিত ১৪:২০ ‘পরদিন তিনি ও বার্ণবা দর্বী শহরে চলে গেলেন।’ পৌলের প্রায় মৃত্যু হওয়ার পরে।
- প্রেরিত ১৫:১-২ ‘তাতে পৌল ও বার্ণবার সংগে এই লোকদের ভীষণ কথা কাটাকাটি হল। পরে ঠিক হল যে, পৌল ও বার্ণবা আন্তিয়খিয়ার কয়েকজন বিশ্বাসীকে সংগে নিয়ে যিরূশালেমে যাবেন এবং প্রেরিতদের ও মণ্ডলীর নেতাদের সংগে এই বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করবেন।’ অযিহূদী বিশ্বাসীদের কি যিহূদী আইন-কানুন (যেমন সুন্নত) পালন করতে হবে, তার বিষয়ে যিরূশালেমে এই গুরুত্বপূর্ণ সভা।
- প্রেরিত ১৫:১২ ‘তখন সভার সবাই চুপ হয়ে গেলেন এবং পৌল ও বার্ণবার মধ্য দিয়ে ঈশ্বর অযিহূদীদের মধ্যে যে সব আশ্চর্য কাজ করেছিলেন তা তাঁদেরই মুখে শুনতে লাগলেন।’ এখানে বার্ণবার নাম আর একবার আগে আসে। কেন? হয়তো কারণ মণ্ডলী ও অন্যান্য প্রেরিতদের চোখে পৌলের চেয়ে এখনও বার্ণবা হলেন নেতা, বিশ্বাসযোগ্য ও ভাল বিচারের লোক।
- প্রেরিত ১৫:২২-২৫ ‘এই জন্য আমরা সবাই একমত হয়ে কয়েকজনকে বেছে নিয়ে আমাদের প্রিয় বন্ধু বার্ণবা ও পৌলের সংগে আপনাদের কাছে তাঁদের পাঠালাম।’ পৌল এখানে দলকে নেতৃত্ব দেন, তার সাথে যিহূদা ও সীল।
যোহন মার্ক নিয়ে বার্ণবা ও পৌলের তর্ক ও দল ভাগ
প্রেরিত ১৫:৩৫-৩৯ ‘কিন্তু পৌল আর বার্ণবা আন্তিয়খিয়াতেই রইলেন। সেখানে তাঁরা আরও অনেকের সংগে প্রভুর বাক্য শিক্ষা দিতে ও প্রচার করতে থাকলেন। কিছু দিন পরে পৌল বার্ণবাকে বললেন, “যে সব জায়গায় আমরা প্রভুর বাক্য প্রচার করেছি, চল, এখনই সেই সব জায়গায় ফিরে গিয়ে বিশ্বাসী ভাইদের সংগে দেখা করি এবং তারা কেমন ভাবে চলছে তা দেখি।” তখন বার্ণবা যোহনকে সংগে নিতে চাইলেন। এই যোহনকে মার্ক বলেও ডাকা হত। পৌল কিন্তু তাঁকে সংগে নেওয়া ভাল মনে করলেন না, কারণ মার্ক পাম্ফুলিয়াতে তাঁদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের সংগে আর কাজ করেন নি। তখন পৌল ও বার্ণবার মধ্যে এমন মতের অমিল হল যে, তাঁরা একে অন্যের কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেলেন। বার্ণবা মার্ককে নিয়ে জাহাজে করে সাইপ্রাস দ্বীপে গেলেন, আর পৌল সীলকে বেছে নিলেন।’

- পৌল এখানে বার্ণবার কথা অমান্য করে তার নেতৃত্ব একটু দমনকারী হিসাবে ব্যবহার করেন। তাদের এমন মতের অমিল হয়, এমন তর্ক হয় যে এই প্রমাণিত দল ভেঙ্গে যায়।
- বার্ণবা কি এখানে পক্ষপাতিত্ব করেন? কেন, কারণ মার্ক তার আত্মীয়? এইটা কি ‘নিজের লোকদের প্রাধান্য দেওয়ার’ একটি বিষয়? তিনি কি পৌলের দমন নিয়ে বিরক্ত পায়? তিনি কি পৌলকে নিয়ে নিরাশ? আমরা জানি না।
- বার্ণবা নিশ্চিত করেন যে যোহন মার্ক দ্বিতীয় একটি সুযোগ পায়। যখন কেও পৌলকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করে নি, বার্ণবা তাকে ভিন্ন চোখে দেখত। এখন বার্ণবা যোহন মার্ককে আর একবার সুযোগ দিতে চান যদিও মার্ক নিজেকে প্রমাণ করে নি।
- বার্ণবা ধৈর্যশীল, আশাবাদী, সুযোগ দিতে আগ্রহী, সম্ভাবনা দেখার ও ভালটা বিশ্বাস করতে রাজী। তিনি মনে করেন যে আরো শিষ্যত্ব দিয়ে যোহন মার্ক ঠিকই বেড়ে উঠবে ও ফলবান হবে।
- কি ঠিক বলেছেন, বার্ণবা বা পৌল? আসলে হয়তো বিষয়টি এত সরল নয়। পৌলের নেতৃত্বে থাকার চেয়ে বার্ণবার নেতৃত্ব থাকা যোহন মার্কের জন্য আর অনেক উপকারী ছিল।
পৌল ও বার্ণবা আবার সুসম্পর্কে
১ করিন্থীয় ৯:৪-৬ ‘আমাদের খাওয়া-দাওয়া করবার অধিকার কি নেই? অন্য সব প্রেরিতেরা, প্রভুর ভাইয়েরা আর পিতর যেমন নিজের নিজের স্ত্রীকে নিয়ে প্রচারে বের হন, সেইভাবে খ্রীষ্টে বিশ্বাসী নিজের স্ত্রীকে নিয়ে প্রচারে বের হবার অধিকার কি আমাদের নেই? বার্ণবা আর আমাকেই কি কেবল কাজ করে খেতে হবে?’
- পৌল এখানে নিজেকে ও বার্ণবাকে ভাল আদর্শ হিসাবে দেখান, এমন লোক যারা নিজের প্রয়োজন মেটানোর জন্য পরিশ্রম করতে প্রস্তুত। পৌল এখানে বার্ণবার সুপারিশ বা অনুমোদন দেন।
- পৌল করিন্থীয়দের কাছে তা মোটামুটি ৫৫ খ্রিব্দে লিখেন, বার্ণবার সাথে তর্ক করার ৫ বছর পরে। মনে হচ্ছে যে তাদের সুসম্পর্ক পুনরায় স্থাপিত।
- হয়তো পৌল পরিশ্রম ও পরিচর্যা কাজ একসাথে করার বিষয় প্রথম বার্ণবার কাছ থেকে শিখেছিলেন যখন তারা আস্তিয়খিয়ায় একসাথে কাজ করেছিলেন (প্রেরিত ১১:২৫-১৩:৩)।
- পৌল শুধুমাত্র মার্কের সাথে আবার সুসম্পর্কে আছেন। পৌল কল ৪:১০ পদে মার্কের সুপারিশ দেন এবং ২ তীম ৪:১১ পদে তাকে কর্মী হিসাবে চান: ‘মার্ককে…নিয়ে এস, কারণ আমার কাজে তাঁকে খুব দরকার’।
- তাই দেখা যায় যে যোহন-মার্ক বার্ণবার মাধ্যমে আরো উৎসাহ পেয়ে এবং আরো শিষ্যত্ব গ্রহণ করে একজন বিশ্বস্ত কর্মী হয়ে যান। তিনি শুধুমাত্র পৌলের সহকর্মী হয়ে যান না, তিনি পিতরের সহকর্মী ও অনুবাদক হয়ে যান। পিতর তাকে নিজের ‘সন্তান‘ বলেন ১ পিতর ৫:১৩ পদে। এই যোহন মার্ক কিছু বছর পরে পৌল ও পিতরকে মারা যাওয়ার পরে একটি সুসমাচার লেখকও হয়ে যাবেন (মার্ক সুসমাচার)। তিনি সম্রাট নীরোর অত্যাচারের সময়ে মণ্ডলীর জন্য স্তম্ভস্বরূপ হয়ে যান ।
- দেখা যাচ্ছে যে পৌল বার্ণবার সাথে একমত হতে শিখেন: যোহন মার্ককে দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়া ঠিক ছিল। তা মাত্র না, পৌল বার্ণবা থেকে এইভাবে অপ্রমাণিত লোকদের জন্য আশা ধরে রাখা ও তাদের মধ্যে বিনিয়োগ করা শিখেন: ফিলীমন চিঠি হল ঠিক তার একটি উদাহরণ, পৌল একজন পলাতক দাসের মধ্যে বিনিয়োগ করেন, তাকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন ও তার সুপারিশ দেন।
বার্ণবা সংশোধন গ্রহণ করেন
গালাতীয় ২:১৩-১৪ ‘আন্তিয়খিয়ার অন্যান্য বিশ্বাসী যিহূদীরাও পিতরের সংগে এই ভণ্ডামিতে যোগ দিয়েছিল। এমন কি, বার্ণবাও তাদের ভণ্ডামির দরুন ভুল পথে পা বাড়িয়েছিলেন। কিন্তু আমি যখন দেখলাম যে, সুখবরের সত্যের সংগে তাদের কাজের কোন মিল নেই তখন আমি সবার সামনে পিতরকে বললাম…’
- যিহূদীদের অপমানিত না করার জন্য দেখা যায় যে পিতর ও বার্ণবা এখানে ভুলভাবে আপোষ করেন। পৌল সাথে সাথে তাদের দোষ ধরেন। আবারও দেখা যায় যে পিতর ও বার্ণবা দুইজনই নম্রতার সাথে পৌলের ধমক মেনে নেন।
- এই গল্প গালাতীয়দের জানানোর পৌলের কি উচিত ছিল? এইটা কি নিন্দা? তিনি কি এই গল্প বলার অনুমতি নিয়েছিলেন? বার্ণবা তার এই লজ্জার গল্প পৌলকে ব্যবহার করতে বলেছেন যেন আরো লোক একই ভুল না করে?
- আসলে পৌলের গল্প বলার উদ্দেশ্য অন্য কিছু: তিনি গালাতীয়দের, যারা একই ফাঁদে পড়েছে, তা সান্ত্বনা ও আশা দেওয়ার জন্য বলছেন: তারা এই ভুল করেছেন, ভাল নেতাও এই ভুল করেছেন, এমন কি বার্ণবাও (কে বিশ্বাস করতে পারে?) কিন্তু তারা সবাই পরে নিজের ভুল বুঝে মন পরিবর্তন করেছেন।
- প্রেরিত ১৫:২ পদে দেখা যায় যে বার্ণবা তার শিষ্য পৌলের এই সংশোধন সম্পূর্ণ মেনে নিয়েছেন এবং যিরূশালেমে সভায় পৌলকে এই বিষয়ে শক্তিশালী ভাবে সমর্থন করেন।
সারাংশ
- বার্ণবা হলেন প্রথম মণ্ডলীর স্থাপন থেকে একজন শিষ্য ও তাড়াতাড়ি প্রথম মণ্ডলীর একজন স্তম্ভস্বরূপ।
- বার্ণবা আসলে ‘উৎসাহদাতা’। তিনি লোকদের মধ্যে ভাল কিছু দেখতে থাকেন, শিষ্যত্বের জন্য লোক বাছাই করতে থাকেন, তাদের শিক্ষা, শিষ্যত্ব ও উৎসাহ দান করতে থাকেন, লোকদের সাথে থেকে ও লোকদের উপরে বিশ্বাস রেখে তা করেন। তিনি যথেষ্ট কার্যকারী। তার শিষ্যরা মণ্ডলীর সব চেয়ে কার্যকারী, সফল ও স্তম্ভস্বরূপ কর্মী হয়ে যান, যেমন পৌল ও যোহন মার্ক।
- বার্ণবা কখনও ভুল করেন না, তা নয়, কিন্তু তিনি শিষ্যত্ব, বিনিয়োগ ও উৎসাহ দানের চমৎকার আদর্শ। তিনি লোকদের মধ্যে সম্ভাবনা দেখে, তাদের নিয়ে আশা করে, তাদের উপরে বিশ্বাস রাখে ও তাদের পরিচর্যা করতে ও নেতৃত্ব দিতে মুক্ত করেন।
- পৌলের চেয়ে বার্ণবা খুব কম চোখে পড়ে। অধিকাংশ লোক পৌল সম্বন্ধে কিছু জানে, কিন্তু বার্ণবার ভূমিকা প্রথম মণ্ডলী সম্বন্ধে আমাদের বেশি খেয়াল নেই।
- আমরা বলি: তার কোনো পদ, টাইটেল, বড় ভূমিকা ছিল না। তার কি ভূমিকা ছিল? চোখে পড়া বড় বিষয় নয়। বার্ণবা হলেন প্রথম মণ্ডলীতে সবচেয়ে প্রভাবশালীদের মধ্যে একজন:
- বার্ণবার শিষ্য পৌল ও মার্ক একসাথে নতুন নিয়মের ৩৬ % কথার লেখক (২১১ পৃষ্ঠার মধ্যে ৭৫ পৃষ্ঠা)। যদি আমরা লূককে নিয়ে চিন্তা করি, যিনি বার্ণবার শিষ্য পৌলের শিষ্য: তিনি নতুন নিয়মের আর ২৯ % ভাগের লেখক। তাই নতুন নিয়মের ৬৫% লিখিত হয়েছে বার্ণবার শিষ্য বা শিষ্যের শিষ্য দ্বারা। কি প্রভাব!
- ঈশ্বর বিভিন্ন লোক এবং তাদের ভিন্ন ব্যক্তিত্ব, দান ও তালন্ত ব্যবহার করেন। সব ও সবাই একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
- চোখে পড়ার মত বা সামনে দাঁড়ানোর মত পরিচর্যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা নয়। ভুল করবেন না: বার্ণবা বেশি বিখ্যাত না হলেও তিনি তার আহবানে দারুণভাবে সফল ছিলেন।