সুসমাচার বলতে আমরা ঠিক কি বুঝি?
যদিও আমরা বিশ্বাসী হিসাবে ‘সুসমাচার’ বা ‘সুখবর’ এই শব্দ প্রায়ই ব্যবহার করি, তার সংজ্ঞা যদি আমাদের দিতে হয় তবে বিষয়টি যত পরিষ্কার মনে করি, তত পরিষ্কার নয়। সুসমাচার বলতে আমরা ঠিক কি বুঝি? কিছু চিন্তা করা যায়:
- ‘সুসমাচার’ বলতে আমরা নতুন নিয়মের চারটি পুস্তককে, অর্থাৎ মথি, মার্ক, লূক এবং যোহন বুঝি যেখানে যীশুর জীবন, মৃত্যু ও পুনরুত্থানের একটি বর্ণনা পাওয়া যায়।
- ‘সুসমাচার’ বলতে আমরা ‘যীশুর সংবাদ’ বুঝি। ‘সুসমাচার’ আমরা একটি সারাংশ শব্দ হিসাবে বুঝি:
- কি প্রচার করব? > সুসমাচার।
- পৃথিবীতে কি ছড়ানো দরকার? > সুসমাচার।
- লোকদের কি গ্রহণ করতে হবে? > সুসমাচার।
- বাইবেলের মূল বিষয় কি? > সুসমাচার।
কিন্তু ‘সুসমাচার’ ঠিক কি? ‘সুসমাচার প্রচার’ করলে, আমরা ঠিক কি বলি? কিছু প্রচলিত উত্তর হল:
- “যীশুর জন্ম, মৃত্যু ও পুনরুত্থানের বর্ণনা”
- “একজন ভিক্ষুক আর একজন ভিক্ষুককে বলে কোথায় খাবার পাওয়া যায়”
- “৪টি আত্মিক নিয়ম:
- ১) ঈশ্বর আমাদের ভালবাসেন এবং আপনার সাথে সম্পর্ক চান।
- ২) আমাদের পাপের কারণে আমরা ঈশ্বর থেকে আলাদা এবং আমরা নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারি না।
- ৩) যীশু ক্রুশে আমাদের পাপের জন্য মারা গেছেন যেন আমরা ক্ষমা পেতে পারি।
- ৪) যীশুর উপর বিশ্বাস যদি রাখি এবং তাঁকে গ্রহণ করি তবে আমরা পরিত্রাণ পাই।
- রং দ্বারা বুঝানো:
- সাদা (= ঈশ্বর পবিত্র)।
- কালো (=মানুষ পাপী)।
- লাল (= যীশু আমারদের পাপের জন্য মারা গেছেন)।
- সোনালি (= পরিত্রাণ পেয়ে আমরা নিশ্চিত স্বর্গে যাওয়ার অধিকার পেয়েছি)।
আমাদের আধুনিক প্রচলিত চিন্তা এই:
- সুসমাচার আমাদের দেখায় কিভাবে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি।
- আমি কিভাবে স্বর্গে যেতে পারি? সুসমাচারই হল এই প্রশ্নের উত্তর।
আমাদের সাধারণ চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ
- এতদূর সব ভাল। সুসমাচার পরিত্রাণ সম্বন্ধীয়। সুসমাচার আমাদের দেখাই আমরা কিভাবে পরিত্রাণ পেতে পারি।
- পরিত্রাণের বিষয়ে অধ্যয়ন হল আমাদের থিয়লজির একটি বড় বিষয়: soteriology, অর্থাৎ ‘soteria’ সম্বন্ধে অধ্যয়ন। সোটেরিয়া (soteria) হল সেই গ্রীক শব্দ যার অনুবাদ হল: পরিত্রাণ।
সোটেরিয়া (“soteria”) শব্দ নিয়ে অধ্যয়ন
- যদি আমরা নতুন নিয়মে ‘সোটেরিয়া’ এই শব্দের অধ্যয়ন করি তবে বেশ আশ্চর্য লাগার মত কিছু পাওয়া যায়:
- মথি এবং মার্ক সুসমাচারে ‘পরিত্রাণ’, অর্থাৎ “soteria” শব্দ একবারও পাওয়া যায় না, যোহন সুসমাচারে মাত্র একবার উল্লিখিত আছে এবং লূক সুসমাচারে ৫ বার উল্লিখিত আছে।
- চারটি সুসমাচার মিলিয়ে ‘সোটেরিয়া’ শব্দটি মাত্র ৬ বার উল্লিখিত করা আছে এবং যীশু এই শব্দটি মুখে নিয়েছেন, তার মাত্র ৩টি উল্লেখ আছে!
- অবশ্যই, যদি আমরা ‘উদ্ধার করা’ সেই ক্রিয়াও সঙ্গে গুনি তবে সংখ্যাগুলো একটু বাড়ে কিন্তু তারপরেও তা বিস্ময়কর হওয়ার মত বিষয়।
- আমরা মনে করি সুসমাচারের মূল বিষয় হল পরিত্রাণ – অথচ এই শব্দের উল্লেখ খুবই কম।
আর একটি চিন্তার বিষয়
- আর একটি চিন্তার বিষয় হল এই: যখন যীশু শিষ্যদের প্রচারে পাঠান (এক সময় ১২জন শিষ্যদের এবং অন্য এক সময় ৭০জন শিষ্যদের) তখন যীশু তাদেরকে ‘সুসমাচার প্রচার’ করতে বলেন। কিন্তু তারা ঠিক কি প্রচার করেছিলেন?
- যীশু তাদেরকে অন্য ক্ষেত্রে বিস্তারিত নির্দেশনা দেন: তারা কি নিয়ে যাবে, একটি গ্রামে এসে কি করবে ইত্যাদি (মথি ১০:৮-২৩, মার্ক ৬:৮-১১, লূক ৯:৩-৫, ১৯:১-১২) কিন্তু ঠিক কি প্রচার করবে, এই বিষয়ে যীশু কি বলেন?
মথি ১০:৭-৮ “তোমরা যেতে যেতে এই কথা প্রচার কোরো যে, স্বর্গ-রাজ্য কাছে এসে গেছে (অথবা: “স্বর্গ-রাজ্য সন্নিকট হইল”) এছাড়া তোমরা অসুস্থদের সুস্থ কোরো, মৃতদের জীবন দিয়ো, চর্মরোগীদের ভালো কোরো ও মন্দ আত্মাদের ছাড়ায়ো।”
মার্ক ৬:৬-৭,১২-১৩ “এর পরে যীশু গ্রামে গ্রামে গিয়ে লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন। ৭ পরে তিনি তাঁর সেই বারোজন শিষ্যকে নিজের কাছে ডাকলেন এবং প্রচার করবার জন্য দু’জন দু’জন করে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি মন্দ আত্মাদের উপরে তাঁদের ক্ষমতা দিলেন। …১২ তখন শিষ্যেরা গিয়ে প্রচার করতে লাগলেন যেন লোকেরা পাপ থেকে মন ফিরায়। ১৩ তাঁরা অনেক মন্দ আত্মা ছাড়ালেন এবং অনেক অসুস্থ লোকের মাথায় তেল দিয়ে তাদের সুস্থ করলেন।”
লূক ৯:১-২ “যীশু সেই বারোজন শিষ্যকে ডেকে একত্র করলেন এবং সব মন্দ আত্মার উপরে ক্ষমতা ও অধিকার দান করলেন। তিনি তাঁদের রোগ ভাল করবার ক্ষমতাও দিলেন। ২ তারপর তিনি তাঁদের ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে প্রচার করতে ও রোগীদের সুস্থ করতে পাঠিয়ে দিলেন।”
লূক ১০:৯ “অসুস্থদের সুস্থ কোরো এবং তাদের বোলো, ‘ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে এসেছে।”
- এই শাস্ত্রাংশগুলোর অনেক মিল আছে। মূল ঘোষণা হল:
- ঈশ্বরের রাজ্য কাছে এসে গেছে
- মন ফিরাও! বিশ্বাস কর!
- পরিষ্কারভাবে বলা আছে যে, যা তারা প্রচার করেন, তা হল ‘সুসমাচার’। কিন্তু যা আমরা ‘সুসমাচারের মূল বিষয়’ মনে করি, সেগুলো তো এখনও ঘটে নি:
- যীশু এখনও ক্রুশে মারা যান নি।
- যীশু এখনএ মৃত্যু থেকে উঠেন নি।
- তাঁর মৃত্যুর দ্বারা পাপের ক্ষমা এখনও অর্জন করা হয় নি।
তাহলে শিষ্যেরা ঠিক কি প্রচার করেছিলেন?
- তাহলে শিষ্যেরা ঠিক কি প্রচার করেছিলেন? ‘পরিত্রাণ’, ‘ক্ষমা পাওয়া’, ‘স্বর্গে যাওয়া’ এসব আধুনিক ধরণের ব্যাখ্যার আমরা একটাও শব্দ পাই না।
- পদগুলো আর একবার লক্ষ্য করলে আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারি যে, তাদের প্রচারে মূল শব্দ ‘পরিত্রাণ’ নয় বরং ‘রাজ্য’। যদি আমরা এই দু’টি শব্দ লক্ষ্য করি তবে দেখা যায়:

- তাই সরলভাবে বললে: তারা রাজ্য প্রচার করতেন, আমরা পরিত্রাণ প্রচার করি।
- অবশ্যই এই দু’টি শব্দের সংযোগ আছে, কিন্তু তারপরেও বিষয়টি আশ্চর্যজনক।
যীশু ঠিক কি প্রচার করতেন?
মার্ক তার সুসমাচারের শুরুতে যীশুর প্রচারের বিষয়ে এই বর্ণনা দেন (মার্ক ১:১৪-১৫): ”যোহন জেলখানায় বন্দী হবার পরে যীশু গালীল প্রদেশে গেলেন। সেখানে তিনি এই কথা বলে ঈশ্বরের দেওয়া সুখবর প্রচার করতে লাগলেন, ১৫ “সময় হয়েছে, ঈশ্বরের রাজ্য কাছে এসে গেছে। আপনারা পাপ থেকে মন ফিরান এবং এই সুখবরে বিশ্বাস করুন।”
- শিষ্যদের ক্ষেত্রে যেমন, ঠিক তেমনি যীশুর ক্ষেত্রেও আমরা দেখতে পাই যে, প্রচারের মূল বিষয় ছিল “রাজ্য”।
তারা রাজ্যের বিষয়ে প্রচার করেছেন, এর অর্থ কি?
- এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আমরা আরো কিছুক্ষণ ধরে নতুন নিয়মে ‘পরিত্রাণ’ শব্দের অধ্যয়ন করি:
সুসমাচার, অর্থাৎ গ্রীক শব্দ ‘euaggelion’ নতুন নিয়মে কিভাবে ব্যবহৃত?
গ্রীক শব্দ ‘euaggelion’ , অর্থাৎ ‘সুসমাচার’ নতুন নিয়মে ৭৭ বার উল্লেখ করা আছে। নিচে দেখানো হয়েছে কোন কোন পদে:

পৌল তার চিঠিতে ‘সুসমাচার’ শব্দ প্রায়ই ব্যবহার করেন, পিতর তা ১ বার ব্যবহার করেন, যোহন তা প্রকাশিত বাক্যে ১ বার ব্যবহার করেন। অবাক লাগার বিষয় যে, সুসমাচারে তা মাত্র মথি ও মার্ক পুস্তকে পাওয়া যায়, এবং সেখানেও অতি বেশি উল্লেখ নেই। এমন কি প্রেরিত পুস্তকেও শব্দটি মাত্র ২ বার ব্যবহৃত।
‘সুসমাচার’ বা ‘Euaggelion’ শব্দের অর্থ কি?
- ‘সুসমাচার’ শব্দটি Strong’s number G2098 ‘εὐαγγέλιον’ অথবা ইংরেজি অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করলে ‘euaggelion’।
- শব্দটির শুরুতে ‘eu’ হল ইতিবাচক একটি প্রারম্ভিকা (যেমন বাংলায় “সু”, “সুফল”)। শব্দটির বাকি অংশ ‘aggelion’ যার অর্থ হল ‘খবর’, ‘সংবাদ’। ইংরেজি ভাষায় ‘angel’, যার অর্থ হল ‘সংবাদদাতা’, ‘দূত’, ‘রাষ্টদূত’ হল এই একই শব্দ থেকে আসা একটি কথা।
- একারণে ‘euaggelion’ -এর অনুবাদ হল ‘সু-খবর’ বা ‘সু-সংবাদ’ বা ‘সুসমাচার’ এবং এর অর্থ ঠিক তাই: ভাল খবর। গ্রীক ‘euaggelion’ শব্দ থেকে আসেছে আমাদের আধুনিক খ্রিষ্টান শব্দ ‘evangelism’ বা ‘evangelical’ ইত্যাদি।
- কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার যে, ‘euaggelion’ ঐযুগে কোন খ্রিষ্টান শব্দ ছিল না, বরং তা ছিল সরকারি শব্দ, যা রোমীয়রা প্রায়ই ব্যবহার করত।
রোমীয় সরকার ‘euanggelion‘ শব্দ কিভাবে ব্যবহার করতেন?
- উদাহরণস্বরূপ: ২৭ খ্রীষ্টপূর্বে আগস্ত নামে একজন শক্তিশালী রোমীয় সেনাপতি তার প্রতিদ্বন্দ্বী যুদ্ধে জয় করেন এবং রোম সাম্রাজ্য নিজের অধিনে নিয়ে আসেন। তিনি ‘সম্রাত আগস্ত’ হিসাবে রাজত্ব করেন এবং তার আমলে যীশু জন্ম গ্রহণ করেন।
- ক্ষমতা দখল করার সাথে সাথে তিনি সারা রোম রাজ্যে ঘোষণাকারীদের বা ‘evangelist’-দের পাঠান যারা শহরে শহরে ‘euaggelion’ প্রকাশ করে: “আগস্তই রাজা”। ‘evangelist’-এরা সম্রাতের ভাল গুণ উল্লেখ করে সবাইকে সৌভাগ্যবান হিসাবে ঘোষণা করত যে, তারা এখন আগস্তের রাজত্বের অধীনে আছে। এর আধুনিক উদাহরণ: নির্বাচনে যিনি বিজয়ী হন তাকে নতুন ‘প্রধান মন্ত্রী’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
- নতুন নেতার বিজয়ের ঘোষণা শুনে অবশ্যই সবাই খুশি নাও হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে আগস্তই সম্রাত এবং এটা এখন মেনে নিতে হবে।
- ‘euaggelion’ শ্বদের অর্থ তাহলে ‘সরকার পরিবর্তন’ অর্থাৎ নতুন রাজার আগমন। লোকেরা এটা শুনে ইতিবাচক বা নেতিবাচক সাড়া দিতে পারে, কিন্তু নতুন রাজা এখন ঠিকই রাজত্ব করছেন।
খ্রিষ্টানরা শব্দটি দখল করে
- সুসমাচারগুলোর লেখকেরা তাই একটি সরকারি শব্দ দখল করে তা তাদেরই কাজে লাগান: একজন নতুন রাজা ও তাঁর রাজ্য এসে গেছে, এমন একজন রাজা যিনি সম্পূর্ণ ভিন্ন!
- মার্ক যখন তার সুসমাচারের প্রথম পদে বলেন “ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে সুখবরের আরম্ভ” (মার্ক ১:১) তখন তিনি একঘেয়েমি সূচনা দেন না বরং তিনি সাহসের সঙ্গে ‘নির্লজ্জভাবে’ ঘোষনা করেন যে, রোমীয় সম্রাত নন বরং যীশু খ্রীষ্টই হলেন পৃথিবীর কর্তা!
সুসমাচার প্রচার = সরকারের পরিবর্তনের প্রচার
- তাই “ঈশ্বরের রাজ্য কাছে এসে গেছে” অথবা প্রায় একই পরিমানের পদগুলোতে “ঈশ্বরের রাজ্য এসে গেছে।” যীশু রাজত্ব করতে শুরু করেছেন। তার রাজত্ব আর অনেক বিস্তার লাভ করবে।
- লক্ষ্য করুন যে, “ঈশ্বরের রাজ্য কাছে এসে গেছে” এই ঘোষণার সাথে আসে এই দাবি: “বিশ্বাস কর!”। এটা অবাক লাগার কিছু নয়। আমাদের বলা হয়েছে যে, এখন একটি নতুন বাস্তবতা উপস্থিত: যীশুই রাজা। এই নতুন বাস্তবতার আলোতে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আচরণ করতে হবে এবং প্রাধান্য কোথায় দিব, তা চিন্তা করতে হবে।
- লক্ষ্য করুন যে, “ঈশ্বরের রাজ্য কাছে এসে গেছে” এই ঘোষণার সাথে আর একটি বিষয় যুক্ত আছে: সুস্থতা দান, মন্দ আত্মাদের তাড়ানো এবং এমন কি মৃত্যদের পুনরায় জীবিত করে তোলা। এটাও অবাক লাগার কিছু নয়: যীশুর অধিকার ও ক্ষমতা এখন বিস্তার হচ্ছে এবং এর বাস্তবতার সম্মুখে মন্দ আত্মারা, রোগগুলো এবং এমন কি মৃত্যু পালিয়ে যায়। যেখানে যীশু রাজত্ব করেন সেখানে আছে সুস্বাস্থ্য, মুক্তি ও জীবন।
- লক্ষ্য করুন যে, “ঈশ্বরের রাজ্য কাছে এসে গেছে”, এই ঘোষণার সাথে আর একটি বিষয় যুক্ত আছে: “অনুতপ্ত হও!”। যদি যীশু সত্যিকার রাজত্ব করেন তবে আমাদের জীবনে সব কিছু পরিবর্তিত হতেই হবে, সব কিছু তাঁকে এবং তাঁর ইচ্ছা মানতে হবে।

সুসমাচার প্রচার = সরকারের পরিবর্তনের প্রচার, এই কথা কি প্রেরিত পুস্তকে দেখা যায়?
পঞ্চাসপ্তমী দিনে পিতরের প্রচার
প্রেরিত ২:১৪-২১ পঞ্চাসপ্তমী দিনের ঘটনা বুঝানোর জন্য পিতর যোয়েল ২ থেকে উদ্ধৃতি করেন: “রক্ষা পাবার জন্য যে কেউ সদাপ্রভুকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে”।
প্রেরিত ২:২২-২৪ পিতর স্মরণ করিয়ে দেন: যীশু, তাঁর চিহ্নগুলো, ঈশ্বর থেকে তাঁর অনুমোদন, ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থান।
প্রেরিত ২:২৫-৩৫ পিতর এখানে গীতে ১৬ থেকে উদ্ধৃতি করে দেখানে যে, যীশুর পুনরুত্থান ভাববাদীদের বাণী পূর্ণ করেছে “কারণ তুমি আমাকে মৃতস্থানে ফেলে রাখবে না, তোমার ভক্তের দেহকে তুমি নষ্ট হতে দেবে না।”
প্রেরিত ২:৩৬ পিতর উপসংহারে আসেন: “এইজন্য সমস্ত ইস্রায়েল জাতি এই কথা নিশ্চিত ভাবে জানুন যে, যাঁকে আপনারা ক্রুশে দিয়েছিলেন ঈশ্বর সেই যীশুকেই প্রভু এবং মশীহ-এই দুই পদেই নিযুক্ত করেছেন।”
চোখের সাক্ষ্য ও ভাববাণীর পূর্ণতা তুলে পিতর প্রমাণ করেন যে, যীশুই হলেন প্রভু ও মসীহ।
পঙ্গুকে সুস্থ করার পরে উপাসনা-ঘরে পিতরের প্রচার
প্রেরিত ৩:১২.১৬ পিতর ও যোহন বুঝান যে, পঙ্গু লোকটি তাদের ধার্মিকতার কারণে সুস্থ হয়েছে, এমন নয়, বরং সে যীশুর সুস্থতাকারী ক্ষমতার উপর বিশ্বাস রেখেই সুস্থ হয়েছে।
প্রেরিত ৩:১৩-১৫ পিতর যীশুর মামলা, মৃত্য ও পুনরুত্থান স্মরণ করিয়ে দেন এবং তার বর্ণনায় বলেন “আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর এই কাজের দ্বারা নিজের দাস যীশুর মহিমা প্রকাশ করেছেন”। তিনি যীশুকে “জীবনদাতা” বলেন।
প্রেরিত ৩:১৭-২৫ ভাববাদীরা যেমন বলেছিলেন ঠিক তেমনি মসীহের কষ্টভোগ করতে হয়েছে। মোশি বলেছিলেন যে ঈশ্বর তার মত একজন ভাববাদী দাঁড় করবেন, যিনি অব্রাহামের বংশধর এবং যাকে দ্বারা অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা “তোমরা বংশের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত জাতিই আশীর্বাদ পাব” পূর্ণ করেছেন।
প্রেরিত ৩:১৯ পিতরের উপস্ংহার: “এইজন্য আপনারা পাপ থেকে মন ফিরিয়ে ঈশ্বরের দিকে ফিরুন যেন আপনাদের পাপ মুছে ফেলা হয়”।
যীশুই প্রভু, তাই অুতপ্ত হও কারণ যীশু ছাড়া পাপের কোন ক্ষমা নেই।
যিহূদী পরিষদের সামনে পিতর ও যোহনের প্রচার
প্রেরিত ৪:৮-১০ পিতর ও যোহন সাহসের সঙ্গে ঘোষণা করেন যে পঙ্গু লোকটি যীশুরই নামে সুস্থ হয়েছে।
প্রেরিত ৪:১০-১১ দরকারী পাথর বাদ, অর্থাৎ তারা যীশুকে ক্রুশে দিয়েছে। ঈশ্বর তাঁকে পুনরুত্থিত করেছেন।
প্রেরিত ৪:১২ উপসংহার: “জগতে আর এমন কেউ নেই যার নামে পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারি”।
যীশুই হলেন সর্বশক্তিমান, ভিত্তি পাথর, উদ্ধারকর্তা এবং আরাধনার একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি।
যিহূদী পরিষদের সামনে পিতর এবং প্রেরিতদের প্রচার
প্রেরিত ৫:২৯ প্রেরিতেরা বলেন: “মানুষের চেয়ে বরং ঈশ্বরের আদেশই আমাদের পালন করা উচিত”।
প্রেরিত ৫:৩০-৩১ “যাকে আপনারা ক্রুশে মেরে ফেলেছিলেন … ঈশ্বর সেই যীশুকে মৃত্যু থেকে জীবিবত করে তুলেছেন, তাঁকে রাজা ও উদ্ধারকর্তা হিসাবে … গৌরব দান করেছেন”।
প্রেরিত ৫:৩২ “আমরাই এবং যারা বাধ্য ঈশ্বর তাদের যে পবিত্র আত্মা দিয়েছেন”… হলেন সাক্ষী।
প্রেরিতেরা নির্ভয়ে ঘোষণা করেন যে, যিহূদী পরিষদের চেয়ে এবং এই জগতের চেয়ে যীশুরই প্রত্যেকজনের জীবনের উপর ক্ষমতা ও অধিকার আছে।
যিহূদী পরিষদের সামনে স্তিফানের প্রচার
প্রেরিত ৬:১২-১৫ দোষারোপ: পবিত্র স্থান ও ঈশ্বরের আইনের বিরুদ্ধে যীশুর কথা: তিনি তা ধ্বংস করবেন।
প্রেরিত ৭:২-৫০ ইস্রায়েলের ইতিহাসের পুনরালোচনা: অব্রাহাম থেকে উপসনা-ঘরের নির্মাতা শলোমন।
প্রেরিত ৭:৫১-৫৩ উপসংহার: একগুঁয়ে জাতি, অযিহূদী মত, পবিত্র আত্মাকে বাধা, খ্রীষ্টকে খুন।
যিহূদী পরিষদ মিথ্যা সাক্ষী ব্যবহার করে। স্তিফান নিজের জীবন রক্ষা করতে চেষ্টা করেন না, তাদের মন পরিবর্তন দেখার আশাও করেন না। তিনি কেবল যীশুর রাজত্ব ঘোষণা করেন এবং তার জন্য মারা যান।
কর্ণীলিয়ের বাসায় পিতরের প্রচার
প্রেরিত ১০:৩৪-৩৬ পিতর উপসংহার নিয়ে শুরু করেন: যীশু সবার প্রভু, যিহূদী বা অযিহূদী।
প্রেরিত ১০:৩৭-৪৩ “পিতর যীশুর জীবন, আশ্চর্য কাজ, মৃত্যু, পুনরুত্থান, ঈশ্বর দ্বারা সবার উপরে নিযুক্ত বিচারক। ভাববাদীদের সাক্ষ্য: তাঁর উপরে যারা বিশ্বাস করে তারা পাপ থেকে ক্ষমা পায়।”
যীশুর জীবন ও মৃত্যুর বর্ণনা। উপসংহার: যীশু যিহূদী বা অযিহূদী সবার উপরে প্রভু। পিতর এখানে প্রচলিত মতবাদ বা ঐতিহ্যের চেয়ে পবিত্র আত্মার বাধ্যতায় চলেন।
আন্তিয়খিয়ার সমাজ গৃহে পৌলের প্রচার
প্রেরিত ১৩:১৬-২২ রাজা দায়ূদ পর্যন্ত ইস্রায়েল জাতির ইতিহাসের পুনরালোচনা।
প্রেরিত ১৩:২৩-২৫ উপসংহার: দায়ূদের বংশধর যীশুই হলেন প্রতিজ্ঞাত উদ্ধারকর্তা। বাপ্তিস্মদাতা যোহন তাঁর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
প্রেরিত ১৩:২৬-৩৭ যীশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থান। চোখের সাক্ষীদের এবং পুরাতন নিয়মের উদ্ধৃতি থেকে (গীত ২, গীত ১৬) প্রমাণ: যীশুর দেহ নষ্ট হয় নি, বরং ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যু থেকে জীবিত করে তুলেছিলেন।
প্রেরিত ১৩:৩৮-৪১ যীশুর দ্বারা পাপের ক্ষমা। উপহাস বা তামাশা না করে বরং বিশ্বাস কর!
যীশু পুরাতন নিয়মের ভাববাণীর পূর্ণতা এবং প্রতিজ্ঞাত মসীহ, তাই তার উপর বিশ্বাস রেখো!
লূস্ত্রাতে দেবতাপূজারী গ্রীকদের কাছে পৌলের প্রচার
প্রেরিত ১৪:১৫-১৭ মরণশীল মানুষ হলেও প্রেরিতেরা অনেক অলৌকিক কাজ সাধন করেন। ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা, তাই অপদার্থ প্রতিমা ত্যাগ করে জীবিত ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখ!
পৌল যখন দেবতাপূজারী এলাকায় তিনি পুরাতন নিয়মের ভিত্তি দিয়ে শিক্ষা শুরু করে, অর্থাৎ আদি ১ অধ্যায় নিয়ে শুরু করেন: ঈশ্বর সৃষ্টকর্তা এবং মঙ্গলময় যোগানদাতা, তাই তাকে সসম্মান করো!
এথেন্স শহরে পৌলের প্রচার
প্রেরিত ১৭:২২-২৩ পৌল এথেন্সে “অজানা দেবতার উদ্দেশ্যে” বেদী প্রচারের সুযোগ হিসাবে ধরেন।
প্রেরিত ১৭:২৪-২৮ ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা ও জীবনদাতা, তাঁকে সোনা-রূপার মূর্তি মনে করা উচিত নয়। তিনি আদম থেকে সব জাতিগুলো সৃষ্টি করেছেন, জাতিদের জায়গা, সীমানা ও সময় ঠিক করেছেন। অন্বেষণকারীদের কাছে তিনি নিজেকে প্রকাশ করেন।
প্রেরিত ১৭:২৯-৩১ আগের যুগে প্রকাশ কম ছিল কিন্তু এখন ঈশ্বর চান যেন সবাই পুনরুত্থিত যীশুর উপর বিশ্বাস রেখে সাড়া দেয়। যীশু সমস্ত জগতকে বিচার করবেন।
পৌল যখন দেবতাপূজারীদের কাছে বা গ্রীক দর্শনে প্রভাবিত লোকদের কাছে প্রচার করেন তখন তিনি পুরাতন নিয়ম, অর্থাৎ আদিপিুস্তক থেকে ভিত্তিক শিক্ষা দেন: ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা, মঙ্গলময় ও দয়ালু। তিনি তাদের জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে সুসমাচারের সত্যগুলো দেখান। যীশুই বিচারক ও প্রভু। দেবতাকে নয় বরং যীশুকে আরাধনা কর!
প্রেরিতেরা যদিও বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিছিন্ন শ্রোতাদের কাছে প্রচার করেন তবুও বেশ কিছু মিল পাওয়া যায়:
- যীশুর জীবনের বাস্তব ঘটনা তাঁর জীবন, তাঁর অলৌকিক কাজ, তাঁর মৃত্যু ও পুনরুত্থান।
- প্রমাণ চোখের সাক্ষী, পুরাতন নিয়মের ভাববাণীর পূর্ণতা।
- উপসংহার যীশুই প্রভু ও জীবনদাতা, (তাঁর সত্যিকারের ক্ষমতা ও অধিকার আছে)। যীশুই উদ্ধারকর্তা (ক্ষমা কেবলমাত্র তাঁরই দ্বারা পাওয়া যায়)।
- এইকারণে মন ফিরাও! বিশ্বাস কর! তাঁকে প্রভু হিসাবে গ্রহণ কর!
১ করিন্থীয় ১৫ অধ্যায়ের পৌলের সংজ্ঞা সুসমাচারের বিষয়ে
করিন্থীয়দের কাছে পৌলের প্রথম চিঠিতে পৌল সুসমাচারের একটি বর্ণনা দেন। তিনি এভাবে শুরু করে আগান:
- ১ করি ১৫:১-৩ “সুখবরের কথা তোমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছি। তোমরা তা গ্রহণ করেছ আর তাতে স্থিরও আছ … ৩ আমি নিজে যা পেয়েছি তা সব চেয়ে দরকারী বিষয় হিসাবে তোমাদেরও দিয়েছি। সেই বিষয় হল এই-
- সুখবর = সত্যকে ঘোষণা = পরিত্রাণের ভিত্তি … পেলাম, প্রচার করলাম
- ১ করি ১৫:৩ “পবিত্র শাস্ত্রের কথামত খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মরেছিলেন …”
- পাপের ক্ষমা শুধুমাত্র যীশু দ্বারা
- ১ করি ১৫:৪-২৩ “তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল, শাস্ত্রের কথামত তিন দিনের দিন তাঁকে মৃত্যু থেকে জীবিত করা হয়েছে, আর তিনি পিতরকে ও পরে তাঁর প্রেরিত্দের দেখা দিয়েছিলেন।”
- যীশুর পুনরুত্থান বাস্তব
- ১ করিন ১৫:২৪ “এর পরে খ্রীষ্ট যখন সমস্ত শাসন-ব্যবস্থা, অধিকার আর ক্ষমতা ধ্বংস করে পিতা ঈশ্বরের হাতে রাজ্য দিয়ে দেবেন তখনই শেষ সময় আসবে। ঈশ্বর যে পর্যন্ত না খ্রীষ্টের সমস্ত শত্রুকে তাঁর পায়ের তলায় রাখেন সেই পর্যন্ত খ্রীষ্টকে রাজত্ব করতে হবে।”
- রাজ্য = যীশু খ্রীষ্টের প্রভুত্ব
সুসমাচারে সংজ্ঞা দিতে গেলে পৌল বলেন যা সুসমাচারের লেখকেরা বলেন অথবা প্রেরিতেরা প্রচার করেন (প্রেরিত): সুসমাচার মানে যীশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থান বাস্তব। পুনরুত্থান দ্বারা ঈশ্বর প্রমাণ করেছেন যে যীশু উভয় উদ্ধারকর্তা (পরিত্রাণ) এবং প্রভু (রাজ্য)।
শুধুমাত্র পরিত্রাণ নয় বরং সাথে রাজ্যও প্রচার কর!

- পরিত্রাণ, কিভাবে পরিত্রাণ পাব, কিভাবে স্বর্গে যাওয়া টিকেট পাব, আমরা এটা নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলাম যে আমরা ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় হারিয়ে ফেলেছি।
- আমরা ভুলে গিয়েছি যে পরিত্রাণ চূড়ান্ত উদ্দেশ্য নয়। এরচেয়ে বলা উচিত যে পরিত্রাণ হল ঈশ্বরের রাজ্যে বাস করার জন্য প্রয়োজনীয় শুরু।
- পাপে পতনের বিপর্যয় (আদিপুস্তক ৩) পরিত্রাণ দ্বারা সমাধান করা হয়। ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি করেছিলেন, আমরা পতিত হয়েছি, এখন তিনি আমাদের ক্ষমা করে উদ্ধার করেছেন … কিন্ত কিসের জন্য?
- পরিত্রাণ হল পুনরায় শুরু, অর্থাৎ যীশুর দয়ায় আগের পথে ফিরে আসা, পিতার সাথে সম্পর্কের পুনরায় স্থাপন। এখন আমাদের হৃদয়ে যীশু আছেন এবং পবিত্র আত্মার সাহায্য আমরা পাচ্ছি, পিতার সন্তান ও উত্তরাধিকারি আবার হলাম … কিন্তু সন্তান হিসাবে এখন কি করব?
- একই বিষয় অন্যভাবে প্রকাশ করলে: পরিত্রাণ একটি নতুন জীবনের শুরু, এমন একটি জীবন যা অনন্তকাল পর্যন্ত চলবে, বৃদ্ধি পেতে থাকে, উন্নত হতে থাকে, ফলবান হতে থাকে। আমরা চিরকালের জন্য যীশুর সাথে সম্পর্কে বৃদ্ধি পাব। আমরা চিরকালের জন্য তাঁকে আরো জানব। আমরা চিরকালের জন্য আরো তাঁর মত হয়ে যাব।
- উপমা: আমরা দরজা নিয়ে ব্যস্ত, আমরা দরজার চারিদিকে ভিড় করি।
- যীশুই দরজা। রাজ্যে প্রবেশ করতে গেলে আর কোন পথ নেই। আর কোন নাম নেই যা দ্বারা আমরা উদ্ধার পাই। কিন্তু তিনি যে মাত্র দরজা, এমন নয়। তিনি রাজাও!
- দরজায় ভিড় জমাবেন না। চিন্তা করবেন না: পরিত্রাণ হারানো যায় কিনা? কি করলে পরিত্রাণ হারানো যায়? এই ধরণের প্রশ্নের উত্তরে অনেক থিওলজি বই লেখা হয়েছে।
- কিন্তু কেন পরিত্রাণ হারাতে চাইবেন? কেন প্রবেশদ্বারের কিনারায় নাচবেন? কেন আমরা প্রশ্ন করি: পরিত্রাণ না হারিয়ে কতদূর যাওয়া যায়, কত কি করা যায়? আমরা একেবারে ভুল দিকে মনোযোগ দেই।


- হ্যাঁ, আমরা কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করি যে, যীশু আমাদের ক্ষমা দান করে উদ্ধার করেছেন। আমরা সন্তান হয়েছি, আমরা রাজ্যের নাগরিক হয়েছি। এখন জিজ্ঞাসা করা দরকার: আমার রাজা কোথায়? তিনি কি চান? তিনি তাঁর রাজ্য কিভাবে চালান? তাঁর ইচ্ছা ও পথ কি?
- পরিত্রাণ হল পরিবর্তিত জীবনের শুরু, রাজ্যে একটি অনন্তকালীন জীবনের শুরু।
- যীশু আমাদের শুধুমাত্র পরিত্রাণ-প্রাপ্ত মানুষ হিসাবে চান না, তিনি আমাদের সম্পূর্ণ পরিবর্তিত, শক্তিশালী, ফলবান, প্রভাবশালী ও বাধ্য মানুষ হিসাবে চান, এমন মানুষ যারা তাঁর সঙ্গে সৃষ্টির উপর রাজত্ব করবেন।


ঈশ্বরের রাজ্য বলতে আমরা কি বুঝি?
“রাজ্য” মানে কি?
- রাজ্য = এমন একটি জায়গা যার উপর একজন রাজা রাজত্ব করেন।
- রাজ্য = যতদূর রাজা রাজত্ব করে = যতদূর তার ইচ্ছা মানা হয় ।
ঈশ্বরের রাজ্য তাহলে কোথায়?
- যেখানে ঈশ্বর রাজত্ব করেন সেখানেই তাঁর রাজ্য। যেখানে তাঁর ইচ্ছা মান্য হয় সেখানেই তাঁর রাজ্য। যেখানে ঈশ্বরের চরিত্র অনুসারে কাজ করা হয় সেখানেই তাঁর রাজ্য। যেখানে তাঁকে শুধুমাত্র কথায় নয় বরং আচরণে ও অন্তরে সম্মান করা হয়, সেখানেই তাঁর রাজ্য।
- তাই বলা যায় যে, যদি আমি হৃদয় থেকে ঈশ্বরের প্রতি বাধ্য হই তবে আমার হৃদয় হয়ে গেছে তাঁর রাজত্বের স্থান। তাঁর রাজ্য আমার মধ্যেই উপস্থিত। আমার হৃদয় হয়ে গেছে তাঁর রাজ্যের স্থান ও তাঁর রাজ্যের বিস্তারের অংশ। আমি যদি ঈশ্বরের নীতি অনুসারে জীবন-যাপন করি তবে ঈশ্বরের রাজ্য উপস্থিত। যদি আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে আচরণ করি তবে আমরা তাঁর রাজ্য বিস্তার করি।
- তাঁর রাজ্যের বিস্তার প্রচার দ্বারা হয়, তা ঠিক। তা হল প্রয়োজনীয় শুরু। কিন্তু যদি আমি প্রচারক হিসাবে ঈশ্বরের ই্চ্ছা অনুসারে না চলি তবে যত কথা খরচ করি প্রচারে, তার কোন লাভ নেই।
- কিন্তু যদি আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে জীবন-যাপন করি, তাঁর নীতি অনুসারে চলি, যদি আমরা রাস্তা-ঘাটে দয়ালু ব্যবহার করি, যদি আমরা ক্রয়-বিক্রয়ে ন্যায্য, যদি আমরা মিথ্যা না বলি, যদি আমরা নিজের কাজ মনে-প্রাণে করি – তবে ঈশ্বরের রাজ্যের বিস্তার হয়। আমাদের আচরণই হল শক্তিশালী প্রচার। যেখানে ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ হয়, সেখানে ঈশ্বরের রাজ্য এবং সেখানে তিনিই উপস্থিত।
- কিন্তু বিপরীত কথাও ঠিক: যদি আমরা বড় আত্মিক নেতা কিন্তু আমরা সহজে অপমানিত, আমরা নিজের সম্মান নিয়ে ব্যস্ত, আমরা অন্য নেতাদের বিষয়ে সমালোচনা করি, যদি আমরা অন্যদের উপর দোষ চাপিয়ে দেই বা নিজেকে প্রাধান্য দেই, তবে আমরা যা বলি না কেন, আমরা ঈশ্বরের রাজ্য বিস্তার করছি না।
- যতবার আমি ক্ষমা করি, ততবার আমি ঈশ্বরের রাজ্য বিস্তার করি। যতবার আমি ক্ষমা না করি, ততবার আমি ঈশ্বরের রাজ্যের বিস্তারের বিরুদ্ধে কাজ করি। যতবার আমি সত্য বলি, আমি ঈশ্বরের রাজ্য এগিয়ে নিয়ে যাই, যতবার আমি মিথ্যা বলি ততবার আমি ঈশ্বরের রাজ্য পিছিয়ে দেই। প্রকৃতপক্ষে আমি শয়তানের রাজ্য বিস্তার করি, কারণ শয়তান হল মিথ্যাবাদী।
- এর অর্থ এই নই যে আমি একটি মিথ্যা বলি আমি আমার পরিত্রাণ হারাছি। তবুও আমার খারাপ আচরণের ফল ঠিকই প্রভাব ফেলে।
- যাকে আমরা মানি, তাকে আমরা নিজের জীবনের উপর রাজত্য করতে দেই। পৌল বিষয়টি এভাবে বলেন: “তোমরা কি জান না যে, দাসের মত যখন তোমরা কারও হাতে নিজেদের তুলে দাও এবং তার আদেশ পালন করতে থাক তখন তোমরা আসলে তার দাসই হয়ে পড়?” … দেহের কোন অংশকে অন্যায় কাজ করবার হাতিয়ার হিসাবে পাপের হাতে তুলে দিয়ো না। মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে ওঠা লোক হিসাবে তোমরা বরং ঈশ্বরের হাতে নিজেদের তুলে দাও এবং ন্যায় কাজ করবার হাতিয়ার হিসাবে তোমাদের সম্পূর্ণ দেহকেই ঈশ্বরকে দিয়ে দাও” (রোমীয় ৬:১৬, ৬:১৩)।
- এর জন্যই প্রত্যেকটি ছোট বিশ্বস্ততা এত গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্যই প্রত্যেকটি ছোট অবিশ্বস্ততা এত ক্ষতিকারক। কার রাজ্য আমি বিস্তার করি?

পরিবর্তিত জীবন, রাজ্যে জীবন
- বাইবেল আমাদের পরিষ্কারভাবে বলে: পরিত্রাণ মানে পরিবর্তিত জীবন। অথবা: পরিত্রাণের ফল হতেই হবে পরিবর্তিত জীবন।
- ঈশ্বর আমাদের তাঁর প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি চান যেন আমরা তাঁরই মত হই, তাঁর সন্তান, তাঁর উত্তরাধিকারি, তাঁর প্রতিনিধি, তাঁর রাজদূত, তাঁর সহরাজত্বকারী।
- যদি আমরা যেমন আছি তেমনি থেকে থাকি (ছোট মনের মানুষ, স্বার্থপর ও অবিশ্বস্ত, বেশ কৃপণ, অহংকারী ও নিজেকে আগানোতে ব্যস্ত) তবে ঈশ্বর আমাদের কাজে লাগাতে পারেন কিভাবে? আমাদের সহ-রাজত্বকারি হিসাবে আমাদের কিভাবে নেবেন?
- আমাদের পরিবর্তন দরকার। পরিবর্তিত যেন আমরা হই, তা ঈশ্বরের একটি দাবি, ঈশ্বরের একটি আকাঙ্ক্ষা এবং ঈশ্বরের একটি প্রতিজ্ঞা: পরিবর্তন সম্ভব। তিনি তা ঘটাবেন। আমাদের জন্য তা বিশ্বাস করা হল বড় চ্যালেঞ্জ: ঈশ্বর সত্যিকারের পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম।
- সৎ কথা যদি বলি: আপনি এখন যেমন আছেন, আপনি কি তেমনি চিরকাল থাকতে চান? আপনার বর্তমান চরিত্রের কোন নেতা যদি পেতেন, তবে কি খুশি হতেন? আপনার মত মনোভাবের মানুষ দিয়ে যদি স্বর্গ ভরা থাকে, আপনি কি স্বর্গে যেতে চাইবেন?
কোন দিকে পরিবর্তিত হব?
- তাহলে কোনদিকে পরিণত হব? > বাধ্যতায়। বাধ্যতা মানে ঈশ্বরের মঙ্গলময়তা এবং তাঁর পথের শ্রেষ্ঠতা জেনে স্বেচ্ছায় ও মনে-প্রাণে তাঁর বাধ্য হওয়া।
- অনেক বার আমরা ঈশ্বরের আদেশ খারাপ দৃষ্টিতে দেখি। আমরা চিন্তা করি: ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, তাই তিনি নেতা, তিনি যা চান তা-ই দাবি করতে পারেন। তিনি আমাদের ব্যর্থ হওয়ার জন্যই প্রস্তুত করেন, তিনি শয়তানকে সরিয়ে দেন না এবং এদোন বাগানে পরীক্ষার জন্য গাছ রাখেন। আমরা তার আদেশ নিয়ে বিরক্ত। কেন সব আনন্দভোগ নিষেধ?
- এই ধরণের চিন্তা প্রকাশ করে যে আমরা ঈশ্বরের চরিত্র এবং তাঁর আইন-কানুনের মঙ্গলময়তা এখনও বুঝি নি। তিনি নিজের ক্ষমতা বিস্তারের জন্য বা আমাদের সংকটে ফেলার জন্য কোন নিয়ম তৈরি করেন না। নিষেধ করার আকাঙ্ক্ষা, নিজের ক্ষমতা প্রমাণ করা বা দমনে আনন্দ তাঁর মধ্যে নেই। তিনি কখনও ভাল কিছু নিষেধ করেন না। তিনি কখনও ক্ষতিকারক বা জীবন নষ্ট করার মত কিছু ভাল বলবেন না।
- হয়তো আমরা একটি আইনের প্রয়োজনীয়তা বা মঙ্গলময়তা এখনও বুঝতে পারি নি। আমরা একটি নিষেধ আচরণের ক্ষতিকারক ও জীবন ধ্বংসকারী ফলাফলও বুঝতে পারি নি এবং তা বুঝতে বেশি সাহায্যও পাই নি। আমাদের অধিকাংশ প্রচার হল ‘এটা করো! এটা করা যাবে না!’ কিন্তু কেন তা করব বা কেন তা নিষেধ, এই বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয় নি। একারণে আমরা ঈশ্বরের আইন বা আদেশকে অনেক সময় বিরক্তিকর মনে করি।
- কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বর মঙ্গলময়। তাঁর স্বার্থহীন ভালবাসার শেষ নেই। নিষেধ করাতে তিনি কোন আনন্দ পান না। আমার নিজের জন্য এবং অন্যদের জন্য যা মঙ্গলময়, তিনি শুধুমাত্র এমন কিছু করার আদেশ দেন। নিজের বুদ্ধি অনুসারে যে মঙ্গল আমি নিজের জন্য (যে ভাবে হোক) আনতে চাই, এর চেয়ে ঈশ্বর যা আমাকে দিতে চান, তা আরো ভাল।
রাজ্য এখানেই স্থাপন করা
- হ্যাঁ, আমাদের পরিত্রাণের বিষয়ে প্রচার করা দরকার, যা দ্বারা আমরা ঈশ্বরের সন্তান হই এবং রাজ্যের নাগরিকত্ব পাই। আমাদের দরজায় ভিড় না জমিয়ে বরং সিংহাসনের দিকে এগিয়ে গিয়ে নিজেদেরকে এই প্রশ্নগুলো করা দরকার: আমার রাজা কে? আমার রাজা কেমন? আমার রাজা তাঁর রাজ্য কিভাবে চালান? তাঁকে কিভাবে খুশি করা যায়? কিভাবে আরো তাঁর মত হতে পারি?
- কিন্তু ছবিটি এখনও সম্পূর্ণভাবে ঠিক হয় নি। হ্যাঁ, আমরা অন্ধকারের রাজ্য থেকে যীশু দ্বারা আলোর রাজ্যে এসেছি, আমরা যীশুর দয়ায় পরিত্রাণ পেয়েছি। আমাদের পরিত্রাণ নিশ্চিত, আমাদের অনন্ত জীবন আছে এবং আমরা “খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত হয়ে” ঈশ্বরের সমস্ত আশীর্বাদ লাখ করেছি (ইফিষীয় ১:৩-১৪)। কিন্তু এখন কি করব? মুক্ত হয়ে স্বর্গের নিশ্চয়তা পেয়ে আমরা কি বসে থাকব?
- না। ছবিটি পরিবর্তন করা দরকার: আমরা ঈশ্বরের রাজ্যে ঠিকই আশ্রয় নিয়েছি কিন্তু এই রাজ্য দখলকারী একটি রাজ্য। ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষকে উদ্ধার করে তার হৃদয়ে স্বর্গীয় রাজ্য বিস্তার করতে চান। ঈশ্বর বলেছেন: রাজ্য আসছে। রাজ্য এসে গেছে। কোথায়? এখানে। আমার হৃদয়ে। এই পৃথিবীতে।


- যীশু আমাদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছেন: “তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক” (মথি ৬:১০)।
- আমাদের কাজ কি? রাজ্যের অংশ হওয়া, রাজ্য পৃথিবীতে আনা এবং এখানেই বিস্তার করা।
- স্বর্গে ঈশ্বরের ইচ্ছা সিদ্ধ হচ্ছে, তাঁর রাজ্য আছে – এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই। কিন্তু তাঁর রাজ্য যেন এই পৃথিবীতে আসে, তাঁর মঙ্গল ইচ্ছা যেন এখানে সিদ্ধ হয়, তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করা দরকার। পৃথিবী এবং পৃথিবীর মানুষ হল যুদ্ধের ক্ষেত্র। এই পৃথিবীকেই আমরা তাঁর অধীনে নিয়ে আসতে চাই। প্রথমে আমরা আমাদের নিজের জীবন ও আচরণ তাঁর অধীনে নিয়ে আসব, পরবর্তীতে আমরা আমাদর পরিবার, পরিবেশ, সমাজ এবং এই ভাল পৃথিবী তাঁর অধীনে নিয়ে আসব, যতদূর তারা রাজি। ঈশ্বরের মঙ্গলময়তাই দেখে মানুষ অনুতপ্ত হয় এবং স্বেচ্ছায় নিজের জীবন ঈশ্বরের অধীনে নিয়ে আসে (রোমীয় ২:৪)। এভাবে ঈশ্বরের রাজ্য অন্ধকার ও মন্দতার উপর জয়লাভ করে এবং আরো করবে।
উপসংহার
- নতুন নিয়মে সুসমাচারকে ‘gospel of salvation’, অর্থাৎ ‘পরিত্রাণের সুসমাচার’ বলা হয় নি বরং ‘রাজ্যের সুসমাচার’ বলা হয়েছে।
- সুসমাচার ঘোষণা করে যে, “রাজ্য এসে গেছে” – এবং যীশুর জীবন, মৃত্যু ও পুনরুত্থান দ্বারা তিনি নিজেকে সেই উদ্ধারকর্তা-রাজা হিসাবে প্রমাণ করেছেন, তাঁর রাজ্যও স্থাপন করেছেন।
- কোথায়? যেমন স্বর্গে তেমনি এখন পৃথিবীতে। তিনি আমাদের দেখিয়েছেন এই রাজ্যের মধ্যে কি ধরণের আচার-ব্যবহার করতে হয় (পাহাড়ে দত্ত উপদেশ) এবং তিনি আশ্চর্য কাজ দ্বারা প্রমাণ করেছেন যে, শয়তানের চেয়ে শক্তিশালী একজন উপস্থিত।
- তিনি তাঁর ত্যাগ-স্বীকারের জীবন ও মৃত্যু দ্বারা আমাদের দেখিয়েছেন তাঁর কর্ত্তৃত্ব কি ধরণের।
- যীশুকে পুনরুত্থিত করা দ্বারা ঈশ্বর তাঁকে উভয় উদ্ধারকর্তা হিসাবে প্রমাণ করেছেন (শুধুমাত্র যীশুর নামেই পরিত্রাণ ও পাপের ক্ষমা পাওয়া যায়) এবং তাঁকে প্রভু হিসাবেও প্রমাণ করেছেন (শুমাত্র যীশুই সৃষ্টির উপর অধিকারগত রাজা হওয়ার যোগ্য)।
- তাই এই রাজার প্রতি সাড়া দাও: অনুতপ্ত হও! বিশ্বাস করো! তাঁর সন্তান এবং তাঁর রাজ্যের নাগরিক হিসাবে জীবন-যাপন করো!
- এখন এই পৃথিবীতে এবং চিরকাল পর্যন্ত, যখন তাঁর রাজত্ব সব কিছুর উপর সম্পূর্ণভাবে বিস্তার করা হবে।
- প্রশ্ন করো: আমার রাজা কে? আমার রাজা কেমন? আমার রাজা কি চান? আমার রাজা কিভাবে কাজ করেন? কিভাবে আমার জীবন সম্পূর্ণভাবে তাঁর মঙ্গলময়তার অধীনে আনব? তাঁর রাজ্যের বিস্তারের জন্য আমি কি করতে পারি? যখন ‘এই পৃথিবীতে তাঁর ইচ্ছা সিদ্ধ হয়’ তা দেখতে কেমন?
- মনে রাখুন: যেখানে ঈশ্বর রাজত্ব করেন সেখানেই স্বর্গ। “তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক” ।
পরিশিষ্ট
‘euaggelion’ শব্দ নতুন নিয়মে যে পদগুলোতে পাওয়া যায়, এর তালিকা
মথি ৪:২৩, ৯:৩৫, ২৪:১৪, ২৬:১৩। মার্ক ১:১, ১:১৪-১৫, ৮:৩৫, ১০:২৯-৩০, ১৩:১০, ১৪:৯, ১৬:১৫।
প্রেরতি ১৫:৭, ২০:২৪। রোমীয় ১:১, ১:৯, ১:১৬, ২:১৬, ১০:১৬, ১১:২৮, ১৫:১৬, ১৫:১৯-২০, ১৬:২৫। ১ করি ৪:১৫, ৯:১৪, ৯:১৬, ৯:১৮, ৯:২৩, ১৫:১। ২ করি ২:১২, ৪:৩-৪, ৮:১৮, ৯:১৩, ১০:১৪, ১১:৪, ১১:৭। গালাতীয় ১:৬-৯ (২ বার), ১:১১, ২:২, ২:৫, ২:৭, ২:১৪। ইফিষীয় ১:১৩, ৩:৭, ৬:১৫, ৬:১৯। ফিলিপীয় ১:৫, ১:৭, ১:১২, ১:২৭, ২:২২, ৪:৩, ৪:১৫। কলসীয় ১:৫, ১:২৩। ১ থিষ ১:৫, ২:২, ২:৪, ২:৮, ২:৯, ৩:২। ২ থিষ ১:৮, ২:১৪। ১ তীম ১:১১। ২ তীম ১:৮। ফিলীমন ১:১৩। ১ পিতর ১:১৩, ৪:১৭। প্রকাশিত ১৪:৬।
ইংরেজিতে যেখানে ‘সুসমাচার’, অর্থাৎ ‘gospel’ শব্দ সারাংশ হিসাবে ব্যবহৃত
‘সুসমাচার’ বা ‘gospel’ এখানে সংক্ষিপত্ভাবে বুঝায়:
সুসমাচার = যীশু দ্বারা জীবনদায়ী সংবাদ = ঈশ্বরের দয়া = যা প্রচার করতে হয় = ঈশ্বরের বাক্য = সত্য = নিরাময় শিক্ষা = প্রেরিতদের লেখাগুল = যীশু দ্বারা স্থাপিত আনোলন
মথি ২৪:১৪, ২৬:১৩। মার্ক ১:১, ১:১১, ১:১৪-১৫, ৮:৩৫, ১০:২৯-৩০, ১৪:৯, ১৬:১৫। প্রেরিত ১৫:৭। রোমীয় ১:১, ১:৯, ২:১৬, ১১:২৮, ১৬:২৫। ১ করি ৪:১৫, ৯:১৪, ৯:১৬, ৯:১৮, ৯:২৩, ১৫:১। ২ করি ২:১২, ৪:৩-৪, ৮:১৮, ৯:১৩, ১০:১৪, ১১:৪, ১১:৭। গালাতীয় ১:৬-৯, ১:১১, ২:২, ২:৫, ২:৭, ২:১৪। ইফিষীয় ৬:১৫, ৬:১৯। ফিলিপীয় ১:৫, ১:১২, ১:১৭, ১:২৭, ৪:১৫। কলসীয় ১:৫, ১:২৩। ১ থিষ ২:২, ২:৪, ২:৮-৯। ১ তীম ১:১১। ফিলীমন ১:১৩। ১ পিতর ৪:১৭।
‘সুসমাচার’কে ইংরেজি অনুবাদে (NRSV) কিভাবে বর্ণনা করা হয়েছে
gospel of the kingdom মথি ৪:২৩, ৯:৩৫, ২৪:১৪। মার্ক ১:১৫।
gospel of (Jesus) Christ মার্ক ১:১। ২ করি ২:১২, ১০:১৪। ১ থিষ ৩:২।
gospel of the glory of Christ ২ করি ৪:৩-৪
gospel of God’s grace প্রেরতি ২০:২৪
gospel of your salvation ইফিষীয় ১:১৩
gospel of peace ইফিষীয় ৬:১৫
সুসমাচার সম্পর্কীয় আচরণ ইংরেজি অনুবাদে (NRSV)
সুসমাচারের জন্য জীবন হারানো (মার্ক ৮:৩৫)
সুসমাচার ঘোষণা করা (রোমীয় ১:৯)
সুসমাচার বিশ্বাস করা (রোমীয় ১০:১৬)
সুসমাচার বিকৃত করা (গালাতীয় ১:৭)
সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়া (ফিলিপীয় ১:১২)
সুসমাচারকে সমর্থন বা সুরক্ষা করা (ফিলিপীয় ১:৭)
সুসমাচারের নিশ্চয়তা দান করা (ফিলিপীয় ১:৭)
সুসমাচারের জন্য যুদ্ধ বা সংগ্রাম করা (ফিলিপীয় ১:২৭)
সুসমাচারের জন্য কাজ করা (ফিলিপীয় ২:২২, ৪:৩)
সুসমাচার দেওয়া (১ থিষ ২:৮)
সুসমাচারে বাধ্য হওয়া (রোমীয় ১০:১৬, ২ থিষ ১:৮)
সুসমাচারের জন্য কষ্টভোগ করা (মার্ক ৮:৩৫, ২ তীম ১:৮, ২:৮)
সুসমাচার প্রচার করা (মথি ৪:১২, ৯:৩৫, মার্ক ১৩:১০, রো ১৫:১৯-২০, ১ করি ৯:১৬, ১৫:১, ২ করি ৮: ১৮, গালা ১:১১, ২:২, ইফিষ ৬:১৫, ২ থিষ ২:১৪)