পরিবার ০৫ – নিষিদ্ধ যৌন সম্পর্ক

নিষিদ্ধ যৌন সম্পর্ক?
  • দ্বিতীয় বিবরণ ৫:১৮    “ব্যভিচার করিও না”। শুধুমাত্র আইনগত ভাবে স্বামী ও স্ত্রী ছাড়া কারও সাথে যৌন সম্পর্ক করা যাবে না। যদিও এই সংজ্ঞা সব ক্ষেত্রকেই প্রকাশ করে কিন্তু তারপরেও ঈশ্বর নির্দিষ্টভাবে আইন দেন। যেমন:
  • লেবীয় ১৮:১-২৩   এই পদগুলিতে ঈশ্বর নিষিদ্ধ যৌনসম্পর্কের তালিকা দিয়েছেন, যা এও প্রকাশ করে কাকে বিয়ে করা যাবে না।

এই অধ্যায়ের থেকে পদ ইস্রায়েলের আশে পাশের জাতিগুলোর বর্ণনা পাওয়া যায় (মিসর, কনান), যারা এই অনৈতিক কাজ করছিল। ঈশ্বর ইস্রায়েলের কাছে আশে পাশের জাতিগুলোর চেয়ে ভিন্ন কিছু দাবী করেন।

  • কাদের সাথে যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ?                 লেবীয় ১৮:৬-১৬
  • নিকট আত্মীয়                                   লেবীয় ১৮:৬
  • নিজের মা                                      লেবীয় ১৮:৭
  • সৎ মা, পিতৃভার্যা                                লেবীয় ১৮:৮, লেবীয় ২০:১১, দ্বি বি ২৭:২০   > মা, সৎ মা।
  • নিজের বোন, সৎবোন, তোমার ভগিনী              লেবীয় ১৮:৯, লেবীয় ২২:১৭, দ্বি বি ২৭:২২   > বোন, সৎ বোন।
  • ছেলে বা মেয়ের ঘরের নাতনী, পৌত্রী বা দৌহিত্রী    লেবীয় ১৮:১০                              > নাতনী।
  • সৎ মায়ের গর্ভে যে বোন, বিমাতৃকন্যা              লেবীয় ১৮:১১                              > সৎ বোন (বিয়ে দ্বারা)।
  • পিসিমা, পিসিমা                                 লেবীয় ১৮:১২, লেবীয় ২০:১৯                > পিসি, ফুফু।
  • মাসিমা, মাসিমা                                 লেবীয় ১৮:১৩, লেবীয় ২০:১৯                > মাসি, খালা।
  • বাবার ভাইয়ের স্ত্রী, কাকিমা বা জেঠিমা             লেবীয় ১৮:১৪, লেবীয় ২০:২০               > কাকি, জেঠি, চাচী।
  • ছেলের বৌ, পুত্রবধূ                              লেবীয় ১৮:১৫, লেবীয় ২০:১২                > বৌমা।
  • ভাইয়ের স্ত্রী, ভাতৃপত্নী                            লেবীয় ১৮:১৬, লেবীয় ২০:২১                > বৌদি, ভাবী।
  • মেয়ে এবং তার মা, স্ত্রী ও তার মা                 দ্বি বি ২৭:২৩, লেবীয় ২০:১৪                 > শাশুড়ী।
যৌন সম্পর্ক বা বিবাহ কার সাথ নিষিদ্ধ?
  • নিকট আত্মীয়, রক্তের সম্পর্ক।
  • পরিবারের মধ্যে বিবাহ যুক্ত (উদাহরণ: বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী)।
  • কারা এই তালিকায় নেই কিন্তু নীতি অনুসারে তালিকায় থাকার কথা?
    • নিজের মেয়ে            > কন্যা।
    • মায়ের ভাইয়ের স্ত্রী       > মামী।
  • সব আদেশগুলো পুরুষদের দিকে নির্দেশ করে (শুধুমাত্র পশুর ক্ষেত্রে মহিলাদের দিকেও দেওয়া)। কেন?
  • মহিলারা কি প্রলোভিত হয় না? এখানে কি দুই ধরণের মানদণ্ড আছে? না, ব্যভিচারের ক্ষেত্রে উভয়ই সমানভাবে শাস্তি পায়।
  • পুরুষরা কি বেশী প্রলোভিত? তাদের যৌন হরমোন কি বেশী তীব্র? পুরুষরা কি তাদের ইচ্ছা পূর্ণ করতে বেশী শক্তিশালী? যাদের বয়স বেশী, পরিবারে যাদের গুরুত্ব বেশী, যারা অর্থ যোগান দেয়, পরিবারে যারা সিদ্ধান্ত নেয়, তাদেরকে না বলা কঠিন অথবা অপমান করা কঠিন বা বিপজ্জনক? উদাহরণ: একটি পনের বছরের নতুন ছেলের বৌ কিভাবে পরিবারের কর্তাকে না বলবে?
  • এই একই আদেশ মহিলাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যদিও সরাসরি বলা হয় না। পশুর সাথে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারী পুরুষ উভয়কে সরাসরি নিষেধ করা হয়েছে। শশুড়ের ছেলের বউকে যৌন সম্পর্কের জন্য আহবান করা যেমন অনৈতিক, ঠিক তেমনি ছেলের বউয়েরও শশুড়ের আহবান গ্রহণ করা অনৈতিক (যদি তাকে জোর করা হয় বা ধর্ষণ করা হয় তবে তা ভিন্ন)।
  • বাইবেলে এই তালিকাগুলো প্রত্যেকবার একই রকমভাবে উল্লেখ নেই। তা থেকে বুঝা যায় যে এই আইন আক্ষরিক ভাবে ব্যাখ্যা করার চেয়ে নীতিমালা ভিত্তিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
  • উদাহরণস্বরূপ বাইবেলের কোথাও মেয়েদের সমকামিতার নিষেধ নিয়ে কোন পদ উল্লেখ নেই কিন্তু নীতিগতভাবে এইটি পুরুষের সমকামিতার মত গ্রহণযোগ্য নয়। যেহেতু যিহূদী আইনে মেয়ে-মেয়ে বিয়ে অবৈধ সেহেতু মেয়ে-মেয়ে যৌন সম্পর্কও ব্যভিচারের মধ্যে পড়ে।
  • আর একটি উদাহরণ: বাইবেলে কোথাও সরাসরি উল্লেখ নেই যে আপন মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করা নিষেধ। কিন্তু যেহেতু কেউ আপন মেয়ে বা ছেলেকে বিয়ে করতে পারে না সেহেতু মেয়ের বা ছেলের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ব্যভিচারের মধ্যে পড়ে।

 

কেন ‘নিকট আত্মীয়’ বা ‘রক্তের সম্পর্কে’ যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ?

শারীরিক সমস্যা

  • নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিবাহে জেনেটিক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে (শারীরিক ও মানসিক রোগ) কারণ মা ও বাবা থেকে একই দুর্বল জিন একত্রে মিলিত হয়ে জেনিটিক রোগ সৃষ্টি হয় (probability of re-combination of recessive genes)।
  • যেহেতু সূর্যের বা অন্যান্য রশ্মি ও ক্ষয়কারক রাসায়নিক পদার্থগুলো শরীরের জিনগুলো নষ্ট করতে থাকে সেহেতু সময় যত এগিয়ে যায় দুর্বল জিনের সংখ্যা বাড়তে থাকে ও তাই জেনেটিক রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।
  • বোনের সাথে বিয়ে সৃষ্টির শুরুদিকে স্বাভাবিক ছিল (আদি ৪), প্রাচীনযুগে মোটামুটি চলত কিন্তু বর্তমান যুগে অধিকাংশ সমাজে অবৈধ। বর্তমানে অনেক সমাজে কাকাতো মামাতো ভাই-বোনের মধ্যে বিয়ে অবৈধ হয়ে গেছে।
  • ভবিষ্যতে আত্মীয় বিয়ে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

 

নৈতিক সমস্যা

  • বাইবেলে উল্লিখিত নিষিদ্ধ যৌন সম্পর্কে মহিলাদের কোন আইনগত সুরক্ষা, অধিকার, কর্তৃত্ব, সম্মান বা ভূমিকা থাকে না যা বৈধ বিয়েতে থাকে। নিষিদ্ধ যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে মহিলাদের শুধুমাত্র ব্যবহার করা হয় কিন্তু সেখানে কোন প্রতিজ্ঞা বা সম্মান থাকে না।

 

সম্পর্কের ক্ষেত্রে সমস্যা

  • নিষিদ্ধ যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরিবারের চিত্র বদলে যায়। পরিবারের সাধারণ কর্তৃত্ব, সম্পর্কে যোগাযোগ, ইত্যাদি এলোমেলো হয়ে যায়।
  • উদাহরণ: যদি আমি আমার বাবার প্রেমিকা হই তাহলে আমার মায়ের সাথে আমার সম্পর্ক কি হবে যিনি তার আসল স্ত্রী?
  • এবং এই যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে যদি একটি সন্তান জন্ম নেয় তার পরিচয় ও সম্পর্ক অস্বাভাবিক হয়ে যায়।
  • উদাহরণ: যদি আমার বাবার মধ্য দিয়ে আমার সন্তান হয়, যে এক অর্থে আমার ভাই তার সাথে সম্পর্ক কি হবে ও তার উপর আমার অধিকার কি? উত্তরাধিকার পাওয়ার বিষয় কি আইন প্রযোজ্য তা দূরের বিষয়।

 

সুরক্ষার সমস্যা

  • একজন ব্যক্তির জন্য পরিবার সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থান হওয়া উচিত। কিন্তু সেই পরিবারের লোক দ্বারাই যদি একজনের প্রতি ভুল ব্যবহার হয় তবে তা সবচেয়ে বেশী কষ্টদায়ক।
  • যদি আপন পরিবারের লোক দ্বারা যৌন আক্রমণের শিকার হয়, এমন লোক যাকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকে না, তবে তার অবস্থা সবচেয়ে করুণ হয়।
  • অনেকভাবে এই নিষিদ্ধ তালিকা পরিবারের কর্তার অধিকারকে সীমিত রাখে। এই থেকে চিন্তা করা যায় যে যৌথ পরিবারে এই যৌন অপব্যবহার হওয়ার ঝুঁকি বেশী।
  • আদি ২:২৪ পদে স্বামীর জন্য মা-বাবা ছেড়ে যাওয়ার আদেশ তার স্ত্রীকে এই ধরণের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা করে।
  • কেন পরিবারে বিবাহযুক্ত ব্যক্তির সাথে যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ?
  • বিয়ের কারণে পরিবারে যুক্ত হওয়ায় তারা আপন রক্ত হিসাবে বিবেচিত হয়।
  • সবদিক থেকেই পরিবারে বিবাহযুক্ত যে কোন ব্যক্তির সাথে যৌন সম্পর্ক ব্যভিচারের মধ্যে পড়ে।
 
অন্যান্য নিষিদ্ধ যৌন সম্পর্ক (পরিবারের ক্ষেত্রে)         লেবীয় ১৮:১৭-১৮
  • কোন মহিলা এবং তার মেয়ে                         লেবীয় ১৮:১৭, ২০:১৪ > মা ও মেয়ে
  • কোন মহিলা এবং তার ছেলের বা মেয়ের মেয়ে         লেবীয় ১৮:১৭ > মা ও নাতনী
  • কোন মহিলা (জীবিত) এবং তার বোন                 লেবীয় ১৮:১৮ > বোনেরা

 

কেন এইটি নিষিদ্ধ?

  • এই ক্ষেত্রে জেনেটিক রোগের বিষয় উঠে না।
  • কিন্তু অস্বাভাবিক পারিবারিক সম্পর্ক, পরিচয়, কর্তৃত্ব ও উত্তরাধিকার অধিকার।
  • এইটি মহিলাদেরকে জোর করে সম্পর্কে অসম্মান, প্রতিযোগিতা, মানসিক যন্ত্রণা, বিরোধিতা ও অশান্তি করার জন্য।
 
অন্যান্য নিষিদ্ধ যৌন সম্পর্ক                           লেবীয় ১৮:১৯-২৩
  • আপন স্ত্রীর সাথ তার মাসিকের সময়ে                  লেবীয় ১৮:১৯, ২০:১৮
  • পুরুষের সঙ্গে পুরুষ                                  লেবীয় ১৮:২২, ২০:১৩
  • পুরুষ পশুর সঙ্গে, মহিলা পশুর সঙ্গে                   লেবীয় ১৮:২৩, ২০:১৫-১৬, ২০:২১

 

মাসিকের সময় কেন যৌন সম্পর্ক নিষেধ?

  • এইটা কি পরিষ্কার-পরিছন্নতার বিষয়? সংক্রমণ সম্ভাবনা বাড়ার কারণে? মাসিকের সময় মহিলার ব্যথা বেশী হওয়ার কারণে? ভাল যৌন সম্পর্কের জন্য কিছু দিন বিরত থাকা কি ভাল?

 

কেন পশুর সাথে যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ?

  • হয়তো বলতে পারি: পশুর সাথে যৌন সম্পর্ক নিষেধ করার কি প্রয়োজন আছে? হ্যাঁ, দরকার আছে।
  • ঈশ্বর মানুষের দুরাচার করার বিষয়ে বাস্তব কথা বলেন।বিভিন্ন জীবাণু সংক্রামণ ও নতুন রোগ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা।
  • কিছু মারাত্মক রোগ এইভাবে মানুষের শরীরে এসেছে।
  • আসল সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া: স্বাভাবিক সম্পর্কে কোন সমস্যা হওয়ার কারণে ও তা সমাধান না করে এড়িয়ে যাওয়ার কারণে পশুর সাথে যৌনতার প্রশ্ন উঠে।
  • এড়িয়ে যাওয়া হল স্বার্থপরতা যা সম্পর্ককে আরো খারাপ করে দেয়।
  • তা দ্বারা স্বামী বা স্ত্রীকে চূড়ান্ত পর্যায়ের অসম্মান করা হয়। ‘তুমি না চাইলে ছাগলও চলবে’।
  • শুধুমাত্র “ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি” একজন “ঈশ্বরের প্রতিমূর্তির” জন্য উপযুক্ত (আদি ২:২০)।
  • প্রজনন হয় না (ঈশ্বরের দয়ায়)।

 

সমকামিতা

  • পুরুষের সঙ্গে পুরুষ যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ (লেবীয় ১৮:২২, ২০:১৩)।
  • নীতিগতভাবে মহিলার সঙ্গে মহিলার যৌন সম্পর্কও নিষিদ্ধ।
  • তা দেখে বুঝা যায় যে একই লিঙ্গে আকর্ষণ সম্ভব ও ঘটতে থাকে।
  • কি কি কারণে একই লিঙ্গে আকর্ষণ ঘটে? হতে পারে শুধুমাত্র পুরুষ (বা মহিলা) একসঙ্গে বসবাসের ক্ষেত্রে যেমন সৈন্য, যুদ্ধ, হোস্টেল, জাহাজে। হতে পারে ছোটবেলার আঘাতের কারণে (নিজের পরিচয়, মূল্য, লিঙ্গের পরিচয় ক্ষেত্রে উৎসাহ না পাওয়া, ভুলভাবে যৌন ব্যবহার, ছোটবেলাতেই যৌন সম্পর্কের বিষয়ে জ্ঞান, খারাপ অভিজ্ঞতা, একই লিঙ্গের দ্বারা যৌন ব্যবহার, ইত্যাদি)

কেন একই লিঙ্গের যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ?

  • শারীরিক কারণ: যৌন রোগের সংক্রামণ ঝুঁকি অনেক বেশী (মলদ্বার দ্বারা যৌন সম্পর্কে রক্ত ক্ষরণের ঝুঁকি বেশি, তাই রোগ সংক্রামণ ঝুঁকি বেশি)
  • শারীরিক কারণ: এমন কি শারীরিক গঠন দ্বারাও প্রকাশ পায় যে একই লিঙ্গে যৌনসম্পর্ক প্রযোজ্য নয় বা সৃষ্টিকর্তার নকশা নয় (পুরুষের ক্ষেত্রে মুখোমুখি না হয়ে যৌন সম্পর্ক দ্বারাও তা প্রকাশ পায়)
  • শারীরিক কারণ: প্রজনন হয় না। এ দ্বারা প্রকাশ পায় যে একই লিঙ্গে যৌনসম্পর্ক প্রযোজ্য নয় বা সৃষ্টিকর্তার নকশা নয়। কিন্তু বাইবেলে কোথাও এই শর্ত নেই যে প্রজনন ক্ষমতার উপর বিবাহের সম্পর্ক নির্ভর করে (নিঃসন্তান স্ত্রীকে তালাক দেওয়া ঠিক না)।
  • নৈতিক কারণ: আদি ১-২ অধ্যায়ে ঈশ্বর একবিবাহই স্থাপন করেন, এবং তিনি এক পুরুষ ও এক নারীর মধ্যেই বিবাহ সীমাবদ্ধ রেখেছেন। ঈশ্বর দুই লিঙ্গকেই মূল্য দিয়েছেন এবং নারী ও পুরুষকে পরস্পরের পরিপূরক বা উপযুক্ত সঙ্গী হিসাবে সৃষ্টি করেছেন।
  • নৈতিক কারণ: বিশ্বস্ত সমকামী বিবাহের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায় যে সমকামী ব্যক্তিরা সেচ্ছাচারী ভাবে ও বাছবিচার ছাড়া যৌন সম্পর্ক রাখে।
    পৃথিবীর কিছু সংস্কৃতি সমকামিতাকে  সমর্থন করে না কিন্তু কিছু কিছু সমকামিতাকে  উৎসাহিত করে।
    অনেক বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করতে চেষ্টা করে যে সমকামিতা একটি সমকামিতা জেনেটিক বিষয়। যদি এই রকম জীন (gene) আবিষ্কার হত তবে তা প্রমাণ হিসাবে দেখাত যে সমকামিতা জেনেটিক বিষয়। সে ক্ষেত্রে দোষের কিছু নেই এবং সমকামিতা নিষেধ করা যায় না।

 

সমকামিতার বিষয়ে বাইবেলীয় দৃষ্টিভঙ্গি এবং মনোভাব

  • সমকামীদের তুচ্ছ করবেন না! তাদের নিয়ে মজা করবেন না! বলবেন না: “কিভাবে তার এমন?”
  • অবাক হবেন না! ঘোষণা করবেন না যে এর অস্তিত্ব নেই বা এইটা অসম্ভব। অনেক সময় বিশ্বাসীরা প্রমাণ করতে চেষ্টা করে যে এটি অস্বাভাবিক। তা প্রমাণ করার চেয়ে ঈশ্বরের মত বাস্তবিক হওয়া উচিত যে এই পতিত পৃথিবীতে এই ধরণের ঘটনা ঘটবে।
  • মনে করবেন না যে আপনি এই ধরণের আকর্ষণ থেকে সব সময় মুক্ত বা যে আপনি এর উর্ধ্বে!
  • সমকামিতাকেই একমাত্র পাপ হিসাবে দেখবেন না (অনেক সময় বিশ্বাসীরা তা করে থাকে)।
  • সমকামিতা যেমন নিষেধ, ব্যভিচারও তেমন নিষেধ। অনেক সময় আমরা অন্যান্য বিষয় (যেমন ব্যভিচার বা তালাক) হাল্কাভাবে দেখি।
  • মানুষ হিসাবে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি, একই লিঙ্গের প্রতি, পশুর প্রতি বা জিনিষের প্রতি আকর্ষিত হতে পারে। এইটা হতে পারে একটি সুন্দরী বা অনিচ্ছুক মহিলা, একজন বিবাহিত পুরুষ, একজন আকর্ষণীয় বৌদি, একই লিঙ্গের ব্যক্তি বা একটি শিশু।
  • আকর্ষিত হওয়াটি সমস্যা নয়। কিন্তু সব আকর্ষণ অনুযায়ী আচরণ বা জীবন-যাপন করা যায় না। আকর্ষণ পাপ না কিন্তু নিজের স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কারও সাথে যৌন সম্পর্ক করা পাপ। মনে রাখুন ইব্রীয় ৪:১৫ পদে যীশু সম্পর্কে কি বলা আছে: “আমাদের মহাপুরোহিত এমন কেউ নন যিনি আমাদের দুর্বলতার জন্য আমাদের সংগে ব্যথা পান না, কারণ আমাদের মত করে তিনিও সব দিক থেকেই পাপের পরীক্ষার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন অথচ পাপ করেন নি।”  > যীশু সমস্ত ক্ষেত্রে প্রলোভিত হয়েছিলেন, যার মধ্যে সমকামী আকর্ষণও অন্তর্ভুক্ত।
  • ঈশ্বরের মানদণ্ডের সাথে সমঝোতা করবেন না। সমকামিতার ক্ষেত্রে নয়, এবং অন্য ক্ষেত্রেও নয়।
  • অনেক লোক আছে যারা সমকামী আকর্ষণ ও আচরণ থেকে মন ফিরিয়েছে ও সুস্থ হয়েছেন: সময় প্রয়োজন কিন্তু তা সম্ভব।
  • কিছু পরিচর্যা আছে যা এই ধরণের মানুষকে সাহায্য করা নিয়ে কাজ করে।
  • যদি আপনি সমকামী আকর্ষণে আক্রান্ত, একজন বিশ্বাসযোগ্য মানুষের সাহায্য নিন … যেমন অন্য ক্ষেত্রেও সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন।
  • সাবধান হন যেন যারা এই বিষয়ে সংগ্রাম করছে বা যাদের উঠে আসতে সাহায্য বা সমর্থন প্রয়োজন, তাদের আলাদা করে দেবেন না বরং খোলা হৃদয় রাখুন ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। কখনই তাদের তুচ্ছ করবেন না। এই আক্রান্ত লোকদের কাছে একজন সত্য বন্ধু হন।

 

পরিচয়
  • সমস্যা হল আমরা আমাদের পরিচয় দিয়ে থাকি লিঙ্গ অনুসারে, উভয় নারী পুরুষ, উভয় সাধারণ লোক ও সমকামী লোক।
  • প্রাচ্য দেশে: মহিলাদের ক্ষেত্রে পরিচয় দেওয়া হয় ‘অমুকের কন্যা’, ‘অমুকের স্ত্রী’, ‘অমুকের মা’। তাহলে আপনি কে যদি আপনার বিয়ে না হয় বা সন্তান না হয়?
  • প্রাচ্যে: পুরুষরা নিজের পরিচয় দেয় পুরুষত্ব নিয়ে।
  • পাশ্চাত্যে: মহিলারা নিজেদের পরিচয় খোঁজে অন্যকে যৌন আকর্ষণ করে।
  • কিন্তু আমাদের আসল পরিচয় পাওয়া যায় ঈশ্বরের মধ্যেই: প্রথমে আমি তাঁরই সৃষ্টি, তাঁর সন্তান, তাঁর ভালবাসার পাত্র, তাঁর রাজদূত … এবং হ্যাঁ আমি একজন মহিলা এবং হয়তো একজন মা।