পরিবার ০৬ – আকর্ষণ

  • আকর্ষণ মানুষের জীবনের একটি সাধারণ বিষয় যা প্রকাশ করে যে আপনি জীবিত। আকর্ষণ বিবাহিত ও অবিবাহিত উভয় লোকদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।
  • বেশীর ভাগ আকর্ষণ সাময়িক, কিছু সময় থাকে, আবার চলেও যায়। বেশীর ভাগ আকর্ষণের ভবিষ্যৎ নেই।
  • আকর্ষণ কোন পাপ নয়। ইব্রীয় ৪:১৫ পদে যীশু সম্পর্কে বলা আছে: “আমাদের মহাপুরোহিত এমন কেউ নন যিনি আমাদের দুর্বলতার জন্য আমাদের সংগে ব্যথা পান না, কারণ আমাদের মত করে তিনিও সব দিক থেকেই পাপের পরীক্ষার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন অথচ পাপ করেন নি।”  তাতে পরিষ্কার বুঝা যায় যে আকর্ষণ কোন পাপ নয়, কিন্তু আকর্ষণ অনুযায়ী কাজ করলে তা পাপে পরিণত হতে পারে।
  • অনেক ক্ষেত্রে এমন লোকের প্রতি আকর্ষণ আসতে পারে যার সাথে সম্পর্ক সম্ভব নয়। এই ধরণের আকর্ষণকে উৎসাহিত করা যাবে না। যেমন: বিবাহিত হিসাবে কারও প্রতি আকৃষ্ট হওয়া, বিবাহিত কারও প্রতি আকৃষ্ট হওয়া, নিকট আত্মীয়ের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া, একই লিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি আকৃষ্ট হওয়া,  শিশু বা অল্প বয়সী কারও প্রতি আকৃষ্ট হওয়া, অবিশ্বাসীর প্রতি আকৃষ্ট হওয়া > এই আকর্ষণগুলির কোন ভবিষ্যৎ নেই কারণ এই ধরণের আকর্ষণ পূর্ণ করা হবে অনৈতিক।
  • কিছু আকর্ষণের ভবিষ্যৎ থাকতে পারে: যে আকর্ষণের বাস্তব সম্ভাবনা আছে যে তা বিয়েতে রূপান্তরিত হবে। আপনি একটি আকর্ষণ নিয়ে যত বেশি আশা করেন তত বেশি সাবধানে আগানো প্রয়োজন।
  • যে আকর্ষণের ভবিষ্যৎ নেই সেই ক্ষেত্রে কি করবেন?
ব্যভিচারের বিষয়ে সাবধানবাণী – হিতোপদেশ ৫:১-১৪

হিতো ৫:১-২  ‘ছেলে আমার, আমি যে জ্ঞানের কথা বলছি তা ভাল করে শোন; আমার বিচারবুদ্ধির কথায় কান দাও। তাতে তুমি ভাল-মন্দ বুঝবার শক্তি রক্ষা করতে পারবে, আর তোমার মুখ থেকে জ্ঞানের কথা বের হবে।’

  • এখানে শোনার, কান দেওয়ার, প্রজ্ঞার পথ পছন্দ করার ও কথা থেকে সরে না যাওয়ার আহবান

 

হিতো ৫:৩-৬  “ব্যভিচারিণীর ঠোঁট থেকে যেন মধু ঝরে পড়ে, তার কথাবার্তা তেলের চেয়েও মোলায়েম; কিন্তু তার শেষ ফল হয় বিষের মত তেতো, দু’দিকে ধার দেওয়া ছোরার মত ধারালো। তার পথ মৃত্যুর কাছে নেমে গেছে, তা সোজা চলে গেছে মৃতস্থানের দিকে। জীবনের দিকে যাবার পথের কথা সে চিন্তাও করে না; তার চলবার পথ বাঁকা, কিন্তু সে তা জানে না।”

  • যেমন দেখা যায় এবং যা বাস্তব এ দু’য়ের মধ্যে পার্থক্যের শক্তিশালী বর্ণনা

 

হিতো ৫:৯  “যদি যাও তাহলে তোমার যৌবনের শক্তি অন্যদের দিয়ে দেবে আর তোমার আয়ু দিয়ে দেবে নিষ্ঠুরদের।”

 

হিতো ৫:১৪  “সমাজের লোকদের হাতে পড়ে আমি প্রায় মরেই যাচ্ছিলাম।”

  • ব্যভিচারের ফলাফল হল লজ্জা, অসম্মান, শত্রুতা, আর্থিক ক্ষতি ও বহুদিনের কষ্ট
  • কেন শুধু পুরুষের কাছে সাবধানবাণী দেওয়া আছে (যেমন লেবীয় ১৮ অধ্যায়)? শুধু মহিলারাই কি প্রলোভনে পড়ার একমাত্র কারণ? কোনটি নয়। ঈশ্বর নারী-পুরুষ উভয়কে আইন দ্বারা দায়বদ্ধ রাখেন।
  • তারপরেও সাবধানবাণীগুলো বেশীর ভাগ পুরুষদেরকে দেওয়া হয়েছে। কেন? হতে পারে কারণ তারাই সাধারণত সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়, তারাই দ্রুত বাহ্যিক ভাবে প্রলোভিত, তাদের তীব্র হরমন আছে, সমাজে তাদের বেশী স্বাধীনতা আছে ও তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশী ক্ষমতা আছে।
  • এখানে আহবান করা হয়েছে শোনার জন্য, প্রজ্ঞায় বাধ্য হতে, প্রলোভনের বিষয়ে সচেতন থাকতে, ব্যভিচারের অসীম খারাপ ফলাফল বুঝতে ও ভাল সিদ্ধান্ত নিতে। এতে দেখায় যে:
    • প্রলোভন বাস্তব এবং মানুষের জন্য স্বাভাবিক। এখানে ৩ অধ্যায় ধরে ঈশ্বর এই বিষয়ে কথা বলেন।
    • প্রলোভন অতিক্রম করা সম্ভব। এমন কোন আকর্ষণ নেই যা প্রতিরোধ করা বা যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় না।
    • মন এবং চিন্তাকে শরীরের উপর কর্তৃত্ব করা উচিত এবং তা সম্ভব।
    • প্রলোভন অস্বীকার করার চেয়ে বরং তা নিয়ে সৎভাবে ও স্বক্রিয়ভাবে কাজ করা প্রয়োজন।
  • অতি আবেগপ্রবণ কথার কোন বাইবেলীয় সমর্থন নেই। যেমন ‘তাকে ছাড়া বাঁচব না’ > ‘তাই তাকে জোর করব বা রাজি না হলে মেরে ফেলব।’

কিভাবে প্রলোভন প্রতিরোধ করব? “এই স্ত্রীলোক থেকে তোমার পা দূরে রাখ।”

  • প্রলোভনের শক্তি সম্বন্ধে সচেতন হন। মনে করবেন না আপনি এর থেকে সুরক্ষিত। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হারানোর আগে অনেক ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নেওয়া দ্বারা প্রলোভন প্রতিরোধ করা যায়।
  • শুরু থেকে প্রজ্ঞাবান সিদ্ধান্ত নেওয়া দ্বারা প্রলোভনের পরিমাণ কমানো সম্পূর্ণ সম্ভব।
  • আপনার চিন্তার সাথে খেলবেন না। সতর্কতার সাথে নিজের চিন্তা বা মনকে সুরক্ষা করুন এবং প্রলোভনকে প্রতিরোধ করুন।
 
ব্যভিচারের বিরুদ্ধে সাবধানবাণী বা বিবাহকে উপভোগ করুন

হিতো ৫:১৫-২৩  “তোমার নিজের জমা করা জল থেকেই তুমি জল খাও; তোমার নিজের কূয়ার টাটকা জল খাও। তোমার নিজের ফোয়ারার জল কেন বাইরে উপ্‌চে পড়বে? তোমার স্রোতের জল কেন গিয়ে পড়বে রাস্তায় রাস্তায়? তোমার সন্তানেরা তোমার একারই থাকুক, ব্যভিচারিণীদের তাতে ভাগ না থাকুক, তোমার ফোয়ারায় আশীর্বাদ থাকুক, তোমার যৌবনের স্ত্রীকে নিয়েই তুমি আনন্দ কর। সে ভালবাসাপূর্ণ হরিণী, সৌন্দর্য-ভরা হরিণী; তারই বুক তোমাকে সব সময় সন্তুষ্ট রাখুক, তুমি সব সময় তার ভালবাসায় মেতে থেকো। ছেলে আমার, কেন তুমি ব্যভিচারিণীকে নিয়ে মজে থাকবে? তার বুক কেন তুমি জড়িয়ে ধরবে?”

  • এই পদগুলো অনুসারে বিবাহ এবং বিবাহে যৌন সম্পর্কের আনন্দকে উপভোগ করতে বলা হয়। বিবাহে যৌন সম্পর্ক খারাপ না বরং ভাল বিষয়।
  • নিজের স্ত্রীকে মূল্য দেওয়া এবং সুরক্ষা করা এমনকি তখনও যখন তার বয়স বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  • প্রবাদ: ‘এপারের চেয়ে ওপারের ঘাস বেশী সবুজ’। আসলে তা সঠিক নয়।
  • অল্প সময়ের আনন্দের জন্য দীর্ঘমেয়াদী আনন্দকে পরিত্যাগ করবেন না।
  • ঈশ্বর বিবাহে যৌন সম্পর্কের আনন্দের বিরোধী নন, বরং এর সৃষ্টিকর্তা। পরমগীতেও তা প্রকাশ পায়।
  • মনের দিক থেকে ব্যভিচারের বিরুদ্ধে সাবধানবাণী

 

হিতোপদেশ ৬:২০-৩৫  “ছেলে আমার, তুমি তোমার বাবার আদেশ পালন কর আর মায়ের দেওয়া শিক্ষা ত্যাগ কোরো না। চিরদিনের জন্য তোমার অন্তরে তা গেঁথে রাখ, তোমার গলায় তা বেঁধে রাখ। চলবার সময় তা তোমাকে পথ দেখাবে, ঘুমাবার সময় তোমাকে পাহারা দেবে আর জেগে উঠলে তোমার সংগে কথা বলবে; কারণ এই সব আদেশ বাতির মত, এই শিক্ষা আলোর মত, আর কঠোর বকুনি দিয়ে শাসন করাই হল জীবনের পথ। এই সব তোমাকে খারাপ স্ত্রীলোকের হাত থেকে রক্ষা করবে, রক্ষা করবে বিপথে যাওয়া স্ত্রীলোকের মিষ্টি কথার হাত থেকে।”

গীত ১১৯:১১  “তোমার বাক্য আমার অন্তরে আমি জমা করে রেখেছি, যাতে তোমার বিরুদ্ধে পাপ না করি।”

  • যত বেশী আমি ঈশ্বরের বাক্য দিয়ে আমার অন্তর পূর্ণ করব, যত বেশী আমি ঈশ্বরের সাথে একমত হব, যত বেশী আমি ঈশ্বরের মত চিন্তা করব, তত বেশী আমি প্রলোভনকে প্রতিরোধ করতে পারব।
    কিন্তু এর বিপরীতও হওয়া সম্ভব: “তার সৌন্দর্য দেখে তুমি অন্তরে লোভ কোরো না, তার চোখের পাতায় তুমি নিজেকে বন্দী হতে দিয়ো না;…যদি কেউ আগুন তুলে নিয়ে নিজের কোলে রাখে তবে কি তার কাপড় পুড়ে যাবে না?” (হিতো ৬:২৫,২৭)
  • আমি আমার মনকে কি ধরণের চিন্তা দ্বারা পূর্ণ রাখি? যত বেশী আমি এই ধরণের চিন্তা দ্বারা আমার মনকে ব্যস্ত রাখি, তত বেশী এই প্রলোভনকে প্রতিরোধ করতে অক্ষম হব।
  • আগুনের রূপকটি অনেক শক্তিশালী: আগুনকে নিজের কোলে রাখা যাবে না, এটি সব পুড়িয়ে দিবে। নিজেকে বোকা বানাবেন না। এটি নিয়ে খেলা করবেন না। নিজেকে এর থেকে প্রতিরোধ করুন।
  • আর একটি রূপক ব্যবহার: আগাছা ছোট থাকতেই তুলে ফেললে, তা বেশী কষ্টদায়ক হবে না। কিন্তু যদি অপেক্ষা করেন, আগাছা বাড়তে দিতে থাকেন এবং তার শিকড় অনেক বড় ও গভীর হয়, তখন আগাছা কাটতে চাইলে তা অনেক কঠিন হবে।
  • আপনি বিবাহিত হন বা অবিবাহিত হন, আপনাকে অবশ্যই শিখতে হয় প্রলোভন প্রতিরোধ করতে।
  • মনে করবেন না বিবাহ করলেই প্রলোভন থেকে রেহাই পাবেন। বিবাহিতরাও অনেক সময় নিজের স্বামী বা স্ত্রী থেকে অন্য কারও প্রতি আকর্ষিত হতে পারে।
  • বিবাহের ক্ষেত্রেও যৌন সম্পর্কে আত্ম-দমন আবশ্যক। যদি আপনি বিবাহে একে অন্যকে প্রাধান্য না দেন, যদি আপনি স্বার্থপর মনোভাব দেখান (উদাহরণ: যৌন সম্পর্ক দাবী বা জোর করে যৌন সম্পর্ক) তবে আপনার বিবাহকে
  • সমস্যায় ফেলবেন এবং শেষে বিবাহকে ধ্বংস করবেন।
  • অনেক আত্মিক নেতারা ব্যভিচারের ফাঁদে পড়েছেন।
  • বলবেন না: কিভাবে নেতারা এমন করেন? তার চেয়ে বরং বলা ভাল: ‘আমার হৃদয়ের কোথাও কি এই একই আগাছা জন্মেছে? কিন্তু হ্যাঁ, যখন নেতারা পাপে পড়েন তা অনেক কষ্টদায়ক ও হতাশাজনক।

হিতো ৬:৩২-৩৪  “যে ব্যভিচার করে তার বুদ্ধির অভাব আছে; সে তা করে নিজেকেই ধ্বংস করে। তার ভাগ্যে আছে আঘাত আর অপমান, তার দুর্নাম কখনও মুছে যাবে না; কারণ অন্তরের জ্বালা স্বামীর ভয়ংকর রাগকে জাগিয়ে তোলে; প্রতিশোধ নেবার সময় সে কোন দয়াই দেখাবে না।”

  • ব্যভিচার করা দ্বারা ব্যভিচারীকে, তার পরিবারকে ও ব্যভিচারীর ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা হয়।
  • হিতো ৭:১-২৭     পদে এই রূপক ব্যবহৃত ব্যভিচার    = যে পথ মৃত্যুর ঘরে নিয়ে যায়।
  • হিতো ২৩:২২-২৮  পদে এই রূপক ব্যবহৃত ব্যভিচার    = সরু গর্ত, সঙ্কীর্ণ কূপ।
 
আকর্ষণ, কামনা ও ঘৃণা করার একটি উদাহরণ  ২ শমূয়েল ১৩:১১-১৬ 
  • দায়ূদের পুত্র অম্নোন তার সুন্দরী সৎ-বোন তামরের প্রতি আকর্ষিত হয়েছিলেন, তাকে নিয়ে ভেবেছিলেন   ও তাকে পাওয়ার জন্য আকাঙ্ক্ষিত ছিলেন। একজন কৌশলী আত্মীয়ের সমর্থন দ্বারা তিনি একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন যা চান তা পাওয়ার জন্য:

২ শমূয়েল ১৩:১১-১৬  “কিন্তু খাওয়ার জন্য যখন সে তা তার কাছে নিয়ে গেল তখন সে তাকে ধরে বলল, ‘বোন, তুমি আমার সংগে শোও।’ তামর তাকে বলল, ‘না ভাই, না; তুমি আমার ইজ্জত নষ্ট কোরো না। ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে এমন কাজ করা উচিত নয়। এই রকম জঘন্য কাজ তুমি কোরো না। আমার কি হবে? কেমন করে আমি এই কলঙ্কের মুখ লোকদের দেখাব? আর তোমাকেও ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে একজন খারাপ লোক বলে সবাই জানবে। মিনতি করি, তুমি বরং রাজার কাছে গিয়ে বল; তাহলে তিনি তোমার হাতে আমাকে দিতে অমত করবেন না।’ কিন্তু অম্নোন তামরের কথা শুনল না। তামরের চেয়ে শক্তিশালী হওয়াতে সে তার ইজ্জত নষ্ট করল। এর পরে অম্নোন তাকে ভীষণ ঘৃণা করতে লাগল। আসলে সে তাকে যতখানি ভালবেসেছিল এখন তার চেয়েও বেশী ঘৃণা করতে লাগল। অম্নোন তাকে বলল, ‘তুমি উঠে চলে যাও।’ তামর তাকে বলল, ‘না, তুমি আমার প্রতি যে অন্যায় করেছ এখন আমাকে বের করে দিলে তার চেয়েও বেশী অন্যায় করা হবে।’ কিন্তু অম্নোন তার কথা শুনতে চাইল না।”

  • তামর সম্মান ও প্রজ্ঞার সাথে এবং বাইবেলের নীতি অনুসারে দুই বার অম্নোনকে না বলেন। কিন্তু অম্নোন তার কথাকে দুইবারই অগ্রাহ্য করে তাকে ধর্ষণ করেন ও পরে প্রত্যাখ্যান করেন।
  • কামনা থেকে ঘৃণা সৃষ্টি হয়: যাকে আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাকে সম্মান করতে পারেন না। যাকে আপনি জোর করতে পারেন তাকে ভালবাসতে পারেন না।
  • অম্নোন তামরকে ধর্ষণ করার পর যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য তিনি কোন দায়িত্ব নেওয়া, ন্যায্য হওয়া এবং ক্ষতিপূরণ করার চেষ্টাও করেন না (দ্বি বি ২২:২৮-২৯ মেয়ের বাবাকে জরিমানা দিতে হয়, তাকে বিয়ে করতে হয় ও জীবনে কখনও তালাক দিতে পারবে না)।
  • দুঃখের বিষয় যে দায়ূদ এই ক্ষেত্রে ন্যায্যতার জন্য কোন ধাপই নেন না (২ শমূ ১৩:২১) যার ফলে তামর মন মরা অবস্থায় জীবন-যাপন করেন (২ শমূ ১৩:২১) ও তার ভাই অবশালোমের অন্তরে ঘৃণা জন্মায় ও শেষে অম্নোনকে খুন করেন (২ শমূ ১৩:২৮-২৯)। পাপ তার কাজের পূর্ণতা পায় ধ্বংস ও মৃত্যু আনার মধ্যে।
কামনা ও ব্যভিচার বিষয়ে যীশুর শিক্ষা

মথি ৫:২৮  “আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ কোন কোন স্ত্রীলোকের দিকে কামনার চোখে তাকায় (কেরী অনুবাদে: কামভাবে দৃষ্টিপাত করে) সে তখনই মনে মনে তার সঙ্গে ব্যভিচার করল।’

  • অনেকে এই পদ থেকে মনে করেন তাদের কোন আশা নেই যেহেতু কেউই নিজের মনকে ১০০ ভাগ খাঁটি রাখতে পারে না। ফলে তারা নিজের মনকে সুরক্ষা করার যুদ্ধ ছেড়ে দেয় কারণ তারা মনে করে তারা ইতিমধ্যেই পরাজিত। যীশু এই পদে আত্ম-ধার্মিক ও অতি সুরক্ষিত ফরীশীদের চ্যালেঞ্জ করেন।
  • আর একটি বিষয়: “কামনার চোখে তাকানো” মানে ইচ্ছাকৃত ভাবে যৌনতার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তাকানো এবং না চেয়ে কিছু দেখতে পেলাম ও মনে চিন্তা ঢুকল দু’টি ভিন্ন বিষয়।
  • প্রবাদ: ‘আমার মাথার উপর কামনার পাখি উড়া প্রতিরোধ করতে পারি না কিন্তু আমার মাথায় বাসা তৈরি করা প্রতিরোধ করতে পারি’। কামনার চিন্তা আমার মনে আসতে পারে কিন্তু আসল বিষয় হচ্ছে সে চিন্তা আমার মনে
  • আসলে আমি কিভাবে সাড়া দেই? আমি যত বেশি এই চিন্তা বৃদ্ধি পেতে দেই তত বেশী নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলি।
মন এবং হৃদয়কে রক্ষা করা

(পুরুষরা)    বাহ্যিক রূপ দ্বারা বিভ্রান্ত হই?                 (মহিলারা)       সুন্দরী হওয়ার প্রচেষ্টায় বিভ্রান্ত হই?

(পুরুষরা)   আমার দৃষ্টি কোথায় যায়?                      (মহিলারা)       আমার মনের চিন্তা কোথায় যায়?

(পুরুষরা)    তাকানোর বিষয়ে সাবধানবাণী                 (মহিলারা)       জেগে জেগে স্বপ্নের বিষয়ে সাবধানবাণী

(পুরুষরা)   খারাপ ছবি থেকে দূরে থাক!                   (মহিলারা)       প্রেমের ছবি দেখা থেকে দূরে থাক!

  • যদি আমার সমস্ত চিন্তাকে যৌনতা-কেন্দ্রিক করি তবে এই যৌনতা ছাড়া আর অন্য কোন চিন্তাই আমার মনে থাকবে না। প্রভাবশালী (নেতিবাচক ভাবে) জার্মান ডাক্তার সিগ্মুণ্ড ফ্রৈড (Sigmund Freud) শিক্ষা দিতেন যে মানুষের সমস্ত আচরণের কেন্দ্র (কারণ ও উদ্দেশ্য) যৌন আকাঙ্ক্ষা। যদি আপনি এই শিক্ষা বিশ্বাস করেন (এবং এই শিক্ষা মনে স্থান দেন) তবে আপনার ক্ষেত্রে তা সত্য প্রমাণিত হবে। কিন্তু তার মানে এই না যে সবার ক্ষেত্রে এই শিক্ষা সত্য ও প্রমাণিত। বরং তার চেয়ে উভয় লিঙ্গের লোকদের সাথে প্রকৃত বন্ধু হতে শিখুন।
  • কেন ঈশ্বর যৌন আকর্ষণ বা আকাঙ্ক্ষার মত শক্তিশালী বিষয় সৃষ্টি করেছেন?
  • আপনি কি চান? একটি পৃথিবী যেখানে কোন প্রলোভন নেই, কোন বিপদ নেই, কোন ঝুঁকি নেই, কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই, কিছু করার ক্ষমতা নেই, এবং ফলে এমন পৃথিবী যেখানে ভালবাসাও সম্ভব নয়।
  • অথবা একটি পৃথিবী যেখানে প্রলোভন আছে, বিপদ আছে, ঝুঁকি আছে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আছে, কিছু করার ক্ষমতা আছে, এবং ফলে এমন পৃথিবী যেখানে ভালবাসাও সম্ভব।
  • আপনি কি সত্যি চান যে ঈশ্বর ভালবাসা ও যৌনতাকে বাতিল করে দেন কারণ তা ভুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে? আসলে যেকোনো কিছুই ভালভাবে ব্যবহৃত হতে পারে।
  • সি.এস. লুইস (C.S. Lewis) তার ‘The great divorce’ বইয়ে এই বিষয়ে বলেছেন: ‘ঘোড়া শক্তিশালী, তাকে চালাতে শিখুন!’