পরিচর্যার সময়ে লেবীয় ও পুরোহিতদের বয়স
গণনা ৪:২-৩, ২৩, ৩০, ৩৫, ৩৯, ৪৩, ৪৭
“তোমরা লেবীয়দের মধ্য থেকে বংশ ও পরিবার অনুসারে কহাতীয়দের সংখ্যা গণনা কর। ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ বছর বয়সের যে কহাতীয় পুরুষেরা মিলন-তাম্বুর কাজ করতে আসবে কেবল তাদের সংখ্যা গণনা করবে।”
- লেবীয়দের পরিচর্যা করার বয়স হল ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত। তা লেবীয়দের ৩টি গোষ্ঠি, অর্থাৎ কোহাতীয়, গের্শোনীয় এবং মরারীয়দের জন্য প্রযোজ্য।
গণনা ৮:২৪-২৬
“লেবীয়দের সম্বন্ধে এই নিয়ম থাকবে যে, তাদের মধ্যে পঁচিশ কিম্বা তার বেশী বয়সের লোকেরা মিলন-তাম্বুর কাজ করতে আসবে, ২৫ কিন্তু পঞ্চাশ বছর বয়সের পরে ঐ কাজ থেকে তাদের অবসর নিতে হবে; তারা আর কাজ করবে না। ২৬ তখন এই লোকেরা মিলন-তাম্বুতে তাদের ভাইদের সংগে দেখাশোনার কাজে সাহায্য করতে পারবে কিন্তু নিজেরা কোন কাজে হাত দিতে পারবে না। এই নিয়ম অনুসারে তুমি লেবীয়দের কাজ ঠিক করে দেবে।”
- এখানে বলা হয়েছে যে লেবীয়দের পরিচর্যা ২৫ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত। আমরা পরিচর্যা শুরু করার দু’টি বয়স পাই, ২৫ এবং ৩০ বছর। এটি কেন?
- একটি ব্যাখ্যা হল যে পুরোহিতেরা ৩০ বছর বয়সে পরিচর্যা শুরু করতেন, কিন্তু লেবীয়রা ২৫ বছর বয়স থেকে। লেবীয়দের মধ্যে পুরোহিতেরা অন্তর্ভুক্ত, অর্থাৎ লেবীয়দের ৩টি গোষ্ঠির মধ্যে কহাতীয় গোষ্ঠি ছিল, যার মধ্যে একটি পরিবার ছিল হারোণের, অর্থাৎ পুরোহিত পরিবার। তাই সব পুরোহিতরা লেবীয় (এবং কহাতীয়), কিন্তু সব লেবীয়রা যে পুরোহিত, এমন নয়।
- আর একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হল যে সব লেবীয়রা ২৫ বছর বয়সে পরিচর্যা শুরু করতেন, কিন্তু তাদের মধ্যে বিশেষভাবে পুরোহিতদের বেশি প্রশিক্ষণ প্রয়োজন ছিল। হয়তো পুরোহিতেরা ২৫ বছর বয়স থেকে বেদীতে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু মাত্র ৩০ বছর বয়স থেকে প্রধান দায়িত্ব নিয়ে নিজেই উৎসর্গ দিতে শুরু করতেন।
কেন মাত্র ২৫ বছর বয়স (অথবা ৩০ বছর বয়স) থেকে পরিচর্যা শুরু করা যেত?
- লেবীয়দের (এবং আরো বেশি পুরোহিতদের) বিভিন্ন অতি নির্দিষ্ট ভূমিকা, দায়িত্ব ও কাজ করতে হত। তা শেখার জন্য এবং দায়িত্বশীলভাবে পালন করার জন্য সময় দরকার ছিল। হয়তো অল্প বয়সের মানুষ অতি গুরুত্বের সঙ্গে খুঁটিনাটি নিয়ম পালন করার ক্ষেত্রে বেশি নির্ভরযোগ্য নয় এবং অনিচ্ছাকৃত ভুল বা অবহেলার ভুলের সম্ভাবনা বেশি। উৎসর্গের ক্ষেত্রে এবং মিলন-তাম্বুর ক্ষেত্রে ঈশ্বরের নিয়ম অতি কঠোর, এমন কি জীবনের হুমকিস্বরূপ (গণনা ১০:১-২)।
কেন লেবীয়রা ৫০ বছর বয়সে পরিচর্যা থেকে বাদ পরে যেত?
- লেবীয়দের এবং পরোহিতদের ভূমিকা, দায়িত্ব ও কাজগুলো অনেকটি শারীরিক পরিশ্রমের ছিল, যেমন উৎসর্গ করা পশু ধরা, জবাই করা, অংশগুলো ধুয়ে ফেলা, বেদীতে রাখা ইত্যাদি। হতে পারে এইকারণে বেদীতে দায়িত্বগুলো ৫০ বছর বয়সের উপরে যারা, তাদের দ্বারা আর করা হত না।
অবসর নেওয়া কি আবশ্লেযক ছিল?
- যদি কেউ ৫০ বছর বয়সে অবসর নিতে না চায়, তবে তা অনুমোদিত ছিল? প্রকৃতপক্ষে প্রধান দায়িত্ব থেকে তাদের বাদ দেওয়া হত। কিন্তু লেখা আছে যে, তারা “তাদের ভাইদের সংগে দেখাশোনার কাজে সাহায্য করতে পারবে”। এর অর্থ বা গুরুত্ব কি?
- হয়তো এর অর্থ এই যে যারা আগ্রহী ও যারা স্বেচ্ছায় কাজ করতে চায়, তাদেরকে বাদ দেওয়ার চেয়ে সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে পরিচর্যার ধরণ পরিবর্তিত হয়ে যায়।
ঈশ্বরের উদ্দেশ্য বা নীতি কি কি?
- জীবনের নতুন পর্যায় এসে ঈশ্বর এই সংক্রমণগত পরিবর্তনের বিষয়ে নির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা দেন।
- যে পুরোহিতেরা বা লেবীয়রা যারা ৫০ বছরের চেয়ে বেশি বয়সের, তারা অন্যদের কিভাবে “সাহায্য” করত? > তাদের অনেক জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা আছে। তারাই সম্পদ।
- ঈশ্বর তাদেরকে আদর্শ, শিক্ষক, শিষ্যত্বদানকারী, উৎসাহদানকারী, গুণমান নিশ্চিত করার লোক হিসাবে ব্যবহার করেন … যদি তারা স্বেচ্ছায় ও ইচ্ছুক হৃদয়ে কাজে লেগে থাকে।
- ঈশ্বর তাদেরকে “কাজ করা” থেকে “coaching” বা “mentoring”এ নিয়ে আসেন।
- তারা প্রাচীনের মত ভূমিকা পালন করবে, আসল কাজ বা শারীরিক পরিশ্রম আর করবে না, কিন্তু তারা তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা নিয়ে ভাল প্রভাব ফেলতে পারে। তারা এমন নেতা হয়ে যাবেন যিনি নিশ্চিত করেন যেন নতুন প্রজন্ম হাল ধরে ভাল কাজ করতে পারে। তারা এমন প্রভাব ফেলবে যার উদ্দেশ্য হল নেতৃত্ব হস্তান্তর।

এমন ব্যক্তি যারা উচুঁ বয়স পর্যন্ত পরিচর্যা করতেন ও নেতৃত্ব দিতেন
- অব্রাহাম: অব্রাহাম ৭৫ বছর বয়সে ঈশ্বরের আহ্বান পান, ৮৭ বছর বয়সে ইশ্মায়েলের এবং ১০০ বছর বয়সে ইসহাকের বাবা হয়ে যান। তিনি ১৭৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকন (আদি ২৫:৭)।
- মোশি: মোশি ৮০ বছর বয়সে ঈশ্বরের আহ্বান পান এবং ১২০ বছর বয়স পর্যন্ত ইস্রায়েল জাতিকে নেতৃত্ব দেন। ঈশ্বর আশ্চর্যভাবে মোশির শারীরিক ক্ষমতা রক্ষা করে থাকেন যেন মোশি এই অত্যন্ত বড় দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত সুন্দরভাবে পালন করতে সক্ষম হন (দ্বিতীয় বিবরণ ৩৪:৭)।
- দায়ূদ: দায়ূদ ১৭ বছর বয়সে রাজা শৌলের সৈন্যে যোগ দেন এবং রাজ প্রাসাদে কাজ করেন। তিনি ৩৩ বছর বয়স থেকে যিহূদার রাজা এবং ৪০ থেকে ৭৩ বছর বয়স পর্যন্ত সারা ইস্রায়েল জাতির উপরে রাজা।
- যিশাইয়: যিশাইয়ের আহ্বান প্রায় ৭৩৯ খ্রীষ্টপূর্বে এবং তিনি ৬৮৭ খ্রীষ্টপূর্ব পর্যন্ত ভাববাদী হিসাবে কাজ করেন। তিনি তাই প্রায় ৫২ বছর ধরে যিহূদার ৪জন রাজার আমলে পরিচর্যা করেন।
- যিরমিয়: যিরমিয় ‘বালক’ বয়সে, অর্থাৎ ৬২৭ খ্রীষ্টপূর্বে ঈশ্বরের আহ্বান পেয়ে কম পক্ষে ৫৮৬ খ্রীষ্টপূর্ব পর্যন্ত ভাববাদী হিসাবে ভূমিকা পালন করেন। তিনি তাই ৪১ বছর ধরেই যিহূদার ধ্বংসের আগে শেষ ভাববাদী হিসাবে কাজ করেন।
- দানিয়েল: দানিয়েল যুবক বয়স থেকে, অর্থাৎ ৬০৫ খ্রীষ্টপূর্ব থেকে ৫৩৬ খ্রীষ্টপূর্ব পর্যন্ত অফিসার ও পরামর্শদাতা হিসাবে বাবিলীয় এবং মাদিয়-পারস্য রাজাদের জন্য কাজ করেন। তিনি তাই ৭০ বছর ধরে, আনুমানিক ১২ বছর বয়স থেকে ৮২ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করেন।
- প্রেরিত যোহন: প্রেরিত যোহন প্রায় ২৬ খ্রীষ্টাব্দে যীশুর আহ্বান পান এবং তিনি তার মৃত্যু, অর্থাৎ ৯৮ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ইফিষ শহরে পরিচর্যা করতে থাকেন। তিনি বুড়ো বয়স পর্যন্ত যীশুর শেষ জীবিত চোখের সাক্ষী, মণ্ডলীগুলোর দেখাশোনাকারী এবং লেখক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করেন। তিনি বুড়ো বয়স পর্যন্ত ভ্রমণ করতেন (২ যোহন ১২, ৩ যোহন ১৪)।
অসবরের বিষয়ে কিছু ভিত্তিক চিন্তা
২ থিষলনীকিয় ৩:১০ – কাজ করতে থাকা
“তোমাদের কাছে থাকবার সময়েই আমরা তোমাদের আদেশ দিয়ে বলেছিলাম যে, কেউ যদি কাজ করতে না চায় তবে সে যেন না খায়।”
- পৌলের মৌলিক নীতি হল যে, যতজন কাজ করতে পারে, তাদের কাজ করা উচিত যেন তারা কম পক্ষে নিজের খরচ বহন করতে পারে। তার চেয়ে বেশি যেন তাদের অন্যদের দায়িত্ব নেওয়া এবং অবদান করার ক্ষমতা থাকে।
- যারা অল্প বয়সের, যারা অসুস্থ, যারা বুড়ো-বুড়ি তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য না।
২ করিন্থীয় ১২:১৪ সন্তানদের জন্য সঞ্চয় করা
“ছেলেমেয়েরা যে তাদের বাপ-মায়ের জন্য টাকা-পয়সা জমাবে তা নয় বরং ছেলেমেয়েদের জন্য টাকা-পয়সা জমানো বাপ- মায়েরই উচিত।”
- পৌলের মৌলিক নীতি হল যে, যতক্ষণ পর্যন্ত তা করা যায় ততক্ষণ পর্যন্ত মা-বাবাদের কাজ করতে থাকা উচিত, যেন তারা তাদের সন্তানদের জন্য কিছু আশীর্বাদ ও সম্পদ রেখে যেতে পারে।
- ছেলের চাকরী হয়ে গেছে এবং এখন মা-বাবার কাছে কিছু টাকা দেওয়ার স্বামর্থ আছে, তার অর্থ এই নয় যে, মা-বাবার অবসরে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে (“অর্থনীতি ১৩ – সঞ্চয়” দেখুন)।
মা-বাবা দুর্বল বা অসুস্থ বা বেশি বয়স্কো হলে অবশ্যই এমন সময় আসে যখন তারা আর কাজ করতে পারে না, কিন্তু সন্তানরা বড় হওয়ার পরেও মা-বাবার কাজ চালিয়ে নিতে চেষ্টা করা উচিত।
আদি ১৮:১-৮ – বিভিন্ন ভূমিকা পালন করতে থাকা, কিছু ভূমিকা বাদ দেওয়া
- এই সময় অব্রাহামের বয়স ৯৯ বছর এবং আমরা তাকে দুপুরের গরমে বিশ্রাম নিতে দেখি। তবুও তিনি সেই তিনজন অতিথীদের সেবা করে তাদের জন্য ব্যবস্থা করার বিষয়ে অত্যন্ত স্বক্রীয়। দেখা যায় যে কিছু কাজ তিনি নিজেই করে নেন, অন্য কাজ তিনি তার কর্মীদের করতে দেন (আদি ১৮:৭)।
- অব্রাহামের যুগে অধিকাংশ লোকদের পেশা ছিল পশুপালন, ধীরে ধীরে পশুপালনের সাথে চাষ যোগ হয়।
- সম্ভাবনা বেশি যে, অধিকাংশ লোকেরা পশুপালন ও চাষের পাশাপাশি কারিগর, হস্তশিল্প, ব্যবসা, সৈন্য এবং স্থানীয় নেতৃত্বে কোনো রকম ভূমিকা পালন করত।
- ঐ যুগে সন্তানেরা ধীরে ধীরে বাবার পেশায় ঢুকত এবং বিভিন্ন দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে ক্রমবর্ধমান দায়িত্ব বহন করত। কোন পেশা বা দক্ষতা শেখার জন্য যে সময় প্রয়োজন, সেই সময় পাওয়া যেত এবং সন্তানেরা ব্যবহারিক চর্চা দ্বারা ধীরে ধীরে তাদের বাবা ও মাদের থেকে পেশা বা প্রয়োজনীয় দক্ষতা শিখত।

- যখন মা বা বাবার বয়স বেড়ে যেত, তারা কাজের সবচেয়ে কঠোর অংশগুলো (বিশেষভাবে যেখানে শারীরিক ক্ষমতা লাগত) ধীরে ধীরে সন্তানদের উপর ছেড়ে দিতে পারত। তবুও তাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সম্পদের ব্যবস্থাপনা অনেক দিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় অবদান ছিল।
- এভাবে অবসরের প্রশ্ন তেমন উঠত না। অবসরে যাওয়া ছিল বহুদিনের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তুলনায় আমাদের আধুনিক যুগের অবসরে যাওয়া হল বেশ চমকানোর মত, ‘১০০ থেকে শূণ্যতে যাওয়ার’ মত এবং অনেকের জন্য কষ্টের বিষয়। এক মুহুর্তে পেশার জীবনের ব্যস্ততা ও গুরুত্ব থেকে ‘কোনো ভূমিকা নেই’ অবস্থা পরে যাওয়া – তা অনেকের জন্য কঠিন।
- ঈশ্বরের নীতি কি? অবসর হওয়ার কথা প্রাকৃতিক ও ধীরে ধীরে প্রক্রিয়া, যা একজনের শারীরিক ও সাধারণ অবস্থা দ্বারা চালিত, নমনীয় ও ব্যক্তিগত স্বামর্থ দিয়ে চালিত।
উদাহরণ: দায়ূদ বয়সের কারণে আর সেনাপতির দায়িত্ব পালন করতে পারে না
২ শমূয়েল ২১;১৫-১৭ – পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
“পলেষ্টীয় এবং ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে আবার যুদ্ধ শুরু হল। দায়ূদ তাঁর লোকদের নিয়ে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। যুদ্ধ করতে করতে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। ১৬ তখন যিশ্বী-বনোব নামে একজন রফায়ীয় নতুন সাজে সেজে দায়ূদকে মেরে ফেলতে আসল। তার বর্শার ব্রোঞ্জের মাথাটার ওজন ছিল প্রায় চার কেজি। ১৭ কিন্তু সরূয়ার ছেলে অবীশয় দায়ূদকে রক্ষা করলেন। তিনি সেই পলেষ্টীয়কে আঘাত করে মেরে ফেললেন। তখন দায়ূদের লোকেরা শপথ করে দায়ূদকে বলল, “আপনি আর কখনও আমাদের সংগে যুদ্ধে যাবেন না, ইস্রায়েলের প্রদীপটা আপনি নিভিয়ে দেবেন না।”
- দায়ূদ ১০১১ খ্রীষ্টপূর্বে ৩০ বছর বয়সে যিহূদার উপর এবং ১০০৪ খ্রীষ্টপূর্বে ৩৭ বছর বয়সের সম্পূর্ণ ইস্রায়েল জাতির উপর রাজা হয়ে যান। তিনি ৯৭১ খ্রীষ্টাব্দে, অর্থাৎ ৭০ বছর বয়সে মারা যান।
- এই পদগুলোতে উল্লিখিত যুদ্ধের জন্য যদিও নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া হয় নি, তবুও দেখা যায় যে দায়ূদ বেশ উচুঁ বয়স পর্যন্ত সেনাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য বের হতেন।
- দেখা যায় যে দায়ূদ তার আগের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছিলেন, যখন তিনি সেনাদের সাথে না যাওয়া কারণে বৎশেবার সাথে ব্যভিচারের প্রলোভনে পড়েন (২ শমূয়েল ১১:১)।
- এখানে বর্ণিত যুদ্ধের সময়ে দায়ূদ বয়সের কারণে ক্লান্ত হয়ে যান এবং তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সেনাপতিদের অনুরোধে যুদ্ধে বের হওয়া বাদ দেন। অবশ্যই সৈন্য তাদের সাথে যাওয়া রাজার এই উদ্যোগে খুশি হত কিন্তু এখন তা করার ঝুঁকি অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে (বয়স, শারীরিক দুর্বলতা, রাজা হিসাবে বিশেষভাবে শত্রুর লক্ষ্য হওয়া ইত্যাদি)। তারা প্রকাশ করে যে, রাজাকে সরকার ও দেশের স্থিরতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং এইকারণে আর ঝুঁকি না নেওয়া ভাল। তারা তাকে “ইস্রায়েলের প্রদীপ” বলেন, যাতে দায়ূদের আদর্শ নেতৃত্বের জন্য তাদের সম্মান প্রকাশ পায়।
- ঈশ্বরের নীতি কি? একটি নির্দিষ্ট বয়সে যে দায়িত্ব ছেড়ে যেতে হবে, এমন নয় (আধুনিক যুগে যেমন: ৬৫ বছর বয়সের অবসর, একজনের অবস্থা কি হোক না কেন)। শুধুমাত্র বয়সের কারণে কাউকে বাদ দেওয়া দরকার নেই। তবুও যখন শারীরিক বা মানসিক অবস্থার কারণে একজন একটি ভূমিকা আর পালন করতে পারে না তবে তাকে সেই ভূমিকা থেকে বাদ দেওয়া দরকার। সব ভূমিকা থেকে যে বাদ দিতে হবে, এমন নয়। মোট কথা: ভূমিকা পালন থেকে স্বাভাবিকভাবে সীমানা তৈরি হয়।
বয়স ও সংখ্যা সম্বন্ধীয় অধয়ন
২৫ নাম্বার বা মাপ হিসাবে ব্যবহৃত
বিচার ২০:৩৫,৪৬। ১ রাজা ২২:৪২। ২ রাজা ১৫:৩৩, ১৮:২, ২৩:৩৬। ২ বংশা ২০:৩১, ২৫:১, ২৭:১,৮, ২৯:১, ৩৬:৫। যিহি ৮:১৬, ১১:১, ৪০:১৩,২১,২৫,২৯,৩০,৩৩,৩৬, ৪১:২, ৪৫:১,৩,৫,৬,১২, ৪৮:৮,৯,১০,১৩,১৫,২০,২১। যোহন ৬:১৯।
২৫ পরিচর্যা শুরু করার বয়স
গণনা ৮:২৪ লেবীয়রা ২৫ বছর বয়সে পরিচর্যা করতে শুরু করে।
৩০ নাম্বার বা মাপ হিসাবে ব্যবহৃত
আদি ৬:১৫, ১১:১৬,১৮,২২, ১৮:৩০, ৩২:১৫। যাত্রা ২৬:৮, ৩৬:১৫। বিচার ১০:৪, ১২:৯, ১৪,১১-১৩,১৯, ২০:৩১,৩৯। ১ শমূ ৯:২২। ১ রাজা ৪:২২, ৬:২, ৭:২,৬,২৩। ২ রাজা ১৮:১৪। ২ বংশা ৪:২। ইষ্রা ১:৯,১০। ইষ্টের ৪:১১। যির ৩৮:১০, যিহি ৪০:১৭, ৪১:৬,২২। দানিয়েল ৬:৭। সখরিয় ১১:১২-১৩। মথি ১৩:২৩, ২৬:১৫, ২৭:৩। মার্ক ১৩:২৩, ২৬:১৫, ২৭:৩। মার্ক ৪:৮। যোহন ৬:১৯।

৩০ বিশেষ নম্বর হিসাবে ব্যবহৃত
- আদি ১৮:৩০ সদোম শহরের জন্য অব্রাহামের বিনতি “যদি ৩০জনকে পাওয়া যায়?”
- যাত্রা ২১:৩২ একজন দাসের মৃত্যু ঘটালে মনিবকে ৩০ টুকরা রূপা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
- লেবীয় ২৭:৪ একজন দাসীর মৃত্যু ঘটালে মনিবকে ৩০ শেকেল ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
- গণনা ২০:২৯, দ্বিবি ৩৪:৮ মোশি ও হারোণের জন্য ইস্রায়েল জাতি ৩০ দিনের শোখ পালন করে
৩০ হতে পারে দলের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা
- ২ শমূ ২৩:১৩,২৩,২৪,৩৯। ১ বংশা ১১:১৫,২৫,৪২, ১২:৪, ১৫:৭, ২৭:৬ দায়ূদের ৩০জন বীর যোদ্ধা

৩০ পরিচর্যা শুরু করার বয়স
- গণনা ৪:৩,২৩,৩০,৩৫,৩৯,৪৩,৪৭, ১ বংশা ২৩:৩ লেবীয়রা ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত পরিচর্যা করে।
- আদি ৪১:৪৬ যোষেফের বয়স ৩০ বছর যখন তাকে ফরৌণের সামনে আনা হয়।
- ২ শমূয়েল ৫:৪ দায়ূদের বয়স ৩০ বছর যখন তিনি যিহূদার উপর রাজত্ব করতে শুরু করেন।
- লূক ২:২৩ যীশুর বয়স প্রায় ৩০ বছর যখন তিনি পরিচর্যা শুরু করেন।
- যিহিষ্কেল ১:১ যিহিষ্কেলের বয়স ৩০ বছর যখন ঈশ্বর এই মন্দির-বিহীন পুরোহিতকে আহ্বান করেন।
৫০ নম্বর বা মাপ হিসাবে ব্যবহৃত
আদি ৬:১৫, ৭:২৪, ৮:৩, ৯:২৮-২৯। যাত্রা ২৬:৫-৬, ২৫:১০-১১, ২৭:১২-১৩, ১৮, ৩০:২৩, ৩৬:১২-১৩, ৩৬:১৭-১৮, ৩৮:১২-১৩, ৩৮:২৬। লেবীয় ২৭:৩, ২৭:১৬। গণনা ১:২৩,২৫,৩১,৪৩,৪৬, ২:৬,৮,১৩,১৫,১৬,৩০-৩২, ৪:৩৬, ১৬:২,১৭,৩৫, ২৬:১০,৩৪,৪৭, ৩১:৫২। যিহো ৭:২১। ১ শমূ ৬:১৯। ২ শমূ ২৪:২৪। ১ বংশা ৫:২১, ৮:৪০, ৯:৯, ১২:৩৩। ২ বংশা ১:১৭, ২:১৭, ৩:৯, ৮:১০, ৮:১৮, ২৬:৩, ৩৩:১। ইষ্রা ২:৭,১৪,১৫,২২,২৯,৩০,৩১,৩৭,৬০, ৮:৬,২৬। নহি ৫:১৭, ৬:১৫, ৭:১০,১২,২০,৩৩,৩৪,৪০। ইষ্টের ৫:১৪। যিহি ৪০:১৫,২৫,২৯,৩৩,৩৬, ৪২:২,৭,৮, ৪৫:২, ৪৮:১৭। হগয় ২:১৬। লূক ৭:৪১, ১৬:৬। যোহন ২১:১১। প্রেরিত ১৩:২০, ১৯:১৯।
৫০ হতে পারে কিছু দলের নির্দিষ্ট সংখ্যা
- আদি ১৮:২৪,২৬,২৮ সদোম শহরের জন্য অব্রাহামের বিনতি “যদি ৫০জন পাওয়া যায়?”
- ২য় বিবরণ ১:১৫ ১০০০জন, ১০০জন, ৫০জন ও ১০জনের উপরে নেতা নিযুক্ত।
- ২ রজা ১:১০-১৩ ভাববাদী এলিয়কে ডেকে আনার জন্য ইস্রায়েলের রাজা অহসিয় তিন বার ৫০ সেনার দল পাঠান।
- ২ রাজা ১৩:৭ যিহোয়াহসের ৫০জন ঘোড়সওয়ার, ১০টা রথ ও দশ হাজার পদাতিক সৈন্য ছাড়া আর কেউ ছিল না।
- ২ রাজা ১৫:২৫ পেকহ ইস্রায়েল রাজা পেকহিয় এবং সঙ্গে ৫০জন গিলিয়দীয়দের খুন করেন।
- যিশাইয় ৩:১-৩ ইস্রায়েলে নেতৃত্বের ঘাটতি: যোদ্ধা, বিচারক, ভাববাদী ৫০জনের সেনাপতি আর নেই।
- ২ শমূ ১৫:১, ১ রাজা ১:৫ অবশোলন ও আদোনিয়ের রথের সামনে দৌঁড়ানের জন্য ৫০জন লোক রাখতেন।
- ১ রাজা ১৮:৪,১৩ ওবদিয় ভাববাদীদের ২টি গুহায়ে ৫০জন করে রাজা আহাব থেকে লুকান।
- ২ রাজা ২:৭,১৬,১৭ ৫০জন নবী এলিয় ও ইলীশাইয়ের খোঁজ নেয়, পরে এলিয়ের দেহ খুঁজতে যায়।
৫০ বিশেষ নম্বর হিসাবে ব্যবহৃত
- আদি ১৮:২৪,২৬,২৮ সদোম শহরের জন্য অব্রাহামের বিনতি “যদি ৫০জন পাওয়া যায়?”
- লেবীয় ২৩:১৬ নিস্তার বা উদ্ধার পর্ব থেকে গুনে ৫০ দিনের মধ্যে পঞ্চাশপ্তমী পর্ব।
- গণনা ৩১:৩০,৪৭ যুদ্ধে লূট করা জিনিস-পত্র ভাগ করা।
- ২য় বিবরণ ২২:২৯ বিবাহের আগে যদি কেউ একটি মেয়ের সাথে যৌন সম্পর্ক রাখে তবে তার বাবাকে ৫০ শেকেল জরিমানা দিতে হবে।
৫০ একটি নির্দিষ্ট বয়স হিসাবে ব্যবহৃত
- যোহন ৮:৫৭ “যিহূদী নেতারা যীশুকে বললেন, “তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বছর হয় নি, আর তুমি কি অব্রাহামকে দেখেছ?”