যোগাযোগ ০৩ – ঈশ্বরের নাম অর্র্থক না নেওয়া

দ্বিতীয় বিবরণ ৫:১১ ‘কোন বাজে উদ্দেশ্যে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম নেবে না। যে তা করবে তাকে মাবুদ শাস্তি দেবেন।’ (সাধারণ) ‘তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম অনর্থক লইও না…’ (কেরী)

  • ‘সদাপ্রভুর নাম’ বললে এর অর্থ কি? ‘সদাপ্রভুর নাম’ বাইবেলে কিভাবে ব্যবহৃত?
  • সদাপ্রভুর নাম’ মানে ঈশ্বরের বর্ণনা, তাঁর চরিত্রের ও পরিচয়ের বর্ণনা।
  • ঈশ্বরের চরিত্র ও পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপনা করাকে হাল্কাভাবে নেওয়া উচিত নয়।

 

বাজে উদ্দেশ্যে সদাপ্রভুর নাম নেওয়া মানে কি? অনর্থক ব্যবহার মানে কি?
  • তাঁর বিষয়ে মিথ্যা বলা বা তাঁকে ভুলভাবে উপস্থাপনা করা।
  • ‘তাঁর নামে’ এমন কিছু করা যা তাঁর চরিত্রের সাথে যায় না বা তাঁকে গৌরবান্বিত করে না।
  • ‘তাঁর নামে’ এমন কিছু করা যা তিনি আদেশ দেন নি, এমন কি নিষেধ করেছেন।
  • ঈশ্বরের নাম বাজে কথায় বা গালাগালিতে ব্যবহার করা।
  • তাঁর নাম মুখে আনা তাঁকে স্মরণ না করে বা গুরুত্ব না দিয়ে বা না বুঝেই।
  • ‘তাঁর পক্ষে’ বাড়িয়ে বলা, মিথ্যা বলা, সমস্যা অস্বীকার করা বা ‘তাঁর নাম সুরক্ষা করার জন্য’ মিথ্যা বলা।
  • মন্দ উদ্দেশ্যে সদাপ্রভুর নাম নিয়ে অভিশাপ দেওয়া (সাধারণ), নিন্দা করে শাপ দেওয়া (কেরী)।

দ্বিতীয় বিবরণ ৫:১১ ‘কোন বাজে উদ্দেশ্যে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম নেবে না। যে তা করবে তাকে মাবুদ শাস্তি দেবেন।’ (সাধারণ) ‘তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম অনর্থক লইও না…’ (কেরী)

  • ‘সদাপ্রভুর নাম’ বললে এর অর্থ কি? ‘সদাপ্রভুর নাম’ বাইবেলে কিভাবে ব্যবহৃত?
  • সদাপ্রভুর নাম’ মানে ঈশ্বরের বর্ণনা, তাঁর চরিত্রের ও পরিচয়ের বর্ণনা।
  • ঈশ্বরের চরিত্র ও পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপনা করাকে হাল্কাভাবে নেওয়া উচিত নয়।

 

বাজে উদ্দেশ্যে সদাপ্রভুর নাম নেওয়া মানে কি? অনর্থক ব্যবহার মানে কি?
  • তাঁর বিষয়ে মিথ্যা বলা বা তাঁকে ভুলভাবে উপস্থাপনা করা।
  • ‘তাঁর নামে’ এমন কিছু করা যা তাঁর চরিত্রের সাথে যায় না বা তাঁকে গৌরবান্বিত করে না।
  • ‘তাঁর নামে’ এমন কিছু করা যা তিনি আদেশ দেন নি, এমন কি নিষেধ করেছেন।
  • ঈশ্বরের নাম বাজে কথায় বা গালাগালিতে ব্যবহার করা।
  • তাঁর নাম মুখে আনা তাঁকে স্মরণ না করে বা গুরুত্ব না দিয়ে বা না বুঝেই।
  • ‘তাঁর পক্ষে’ বাড়িয়ে বলা, মিথ্যা বলা, সমস্যা অস্বীকার করা বা ‘তাঁর নাম সুরক্ষা করার জন্য’ মিথ্যা বলা।
  • মন্দ উদ্দেশ্যে সদাপ্রভুর নাম নিয়ে অভিশাপ দেওয়া (সাধারণ), নিন্দা করে শাপ দেওয়া (কেরী)।

 

বাজে কথা বলা বা গালি দেওয়া

বাজে কথায় বা গালাগালিতে অনেক বার ঈশ্বরের নাম (অথবা তার পরিবর্তে ঈশ্বরকে বুঝায় এমন কোন শব্দ) ব্যবহৃত। তাতে রাগ, অমত, বিরক্তি, তাচ্ছিল্য, ঘৃণা, আচমকা বা ভয় প্রকাশ করা হয়।

  • অনেক বার বাজে কথা ব্যবহার করি, লোকদেরকে অসম্মান দেখানো, আঘাত দেওয়া, তুচ্ছ করার জন্য বা প্রতিশোধ নেওয়া, নিচু করা, হুমকি দেওয়া বা নিজের ইচ্ছা বিস্তার করার জন্য।
  • যদিও রাগ অন্যায়ের বিপক্ষে উপযুক্ত আবেগ এবং রাগ নিজেকে বা অন্যকে সুরক্ষা করতে বা মন্দের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সাহায্য করে, তবুও বেশির ভাগ সময় রাগ ব্যবহার করি অন্যকে দমন বা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।
  • গালি দিলে ভাষায় আরো আবেগ, জোর ও শক্তি যুক্ত করে, অনেক বার তা অনুপযুক্ত ও অনিয়ন্ত্রিত আবেগ ও শক্তি যুক্ত করে।
  • বাজে কথা (ঈশ্বরের নাম থাকুক বা না থাকুক) ঈশ্বরকে ভুলভাবে উপস্থাপনা করে, কারণ ঈশ্বর মানুষকে সব সময় সম্মান ও মূল্য দেন, আশা ধরে রাখেন, অনুতাপ গ্রহণ করেন ও লোকদের মঙ্গল চান।
  • সাধারণত বাজে কথা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বলা হয়। অনেক বার এমন কথা বলে ফেলি যার জন্য পরে অনুশোচনা করি। এই ক্ষেত্রেও তা ঈশ্বরকে ভুলভাবে প্রকাশ করে কারণ ঈশ্বর কখনই নিয়ন্ত্রণ হারান না এবং যা একবার বলেন তা কখনও ফেরত নেওয়া যায় না।

 

মানুষের স্বভাবে সীল দেওয়া বা নেতিবাচক ‘ভাববাণী’ দেওয়া
  • মাঝে মাঝে আমরা অন্যের সম্পর্কে নেতিবাচক উপসংহার, নেতিবাচক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ বা ‘ভাববাণী’ করি, যেমন: ‘সে কোনো দিনও শিখবে না’…’তারা জীবনেও বদলাবে না’…’কুকুরের লেজ কখনও সোজা হয় না …সেও কোনো দিন সোজা হবে না’।
  • এই ধরণের নেতিবাচক মন্তব্য নিয়ে সাবধান কারণ এতে একজন ব্যক্তির অনেক আঘাত ও দীর্ঘদিনের ক্ষতি হতে পারে।
  • ভবিষ্যৎ নির্ধারণ নিয়ে সাবধান কারণ এক বার বলে ফেললে তা ব্যক্তির চিন্তা প্রভাবিত করে ও সেইভাবে কাজ করতে পরিচালনা দেয় (self-fulfilling prophecy)। অথবা ব্যক্তি ঠিক বিপরীতটি করার শপথ নেয়, কিন্তু বিপরীতটা করতে গেলেও সে সেই নেতিবাচক নির্ধারণের শিকার হয়।
  • শুধুমাত্র ঈশ্বর জানেন ভবিষ্যৎ কি। মানুষের দিয়ে করা ভাববাণীকে ঈশ্বর হাল্কাভাবে দেখেন না। মিথ্যা ভাববাণী খুব ধ্বংসাত্মক বলে পুরাতন নিয়মে ঈশ্বর মিথ্যা ভাববাণীর জন্য মৃত্যুদণ্ড দেন (দ্বি বি ১৩:৫)।

 

অভিশাপ দেওয়া
  • অভিশাপ দেওয়া মানে (অনেক বার ঈশ্বরের নাম মুখে এনে) লোকদের অমঙ্গল বা দুর্ভোগ কামনা করা।
  • একজন ব্যক্তি অনেক বার অন্যায্য ব্যবহার পেলে নিজেকে সুরক্ষা করার জন্য বা (অন্য উপায় না দেখে) প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অভিশাপ দিয়ে থাকে।
  • এই ক্ষেত্রে অভিশাপ হল হুমকিস্বরূপ ‘ঈশ্বরকে ডাকা’ যেন তিনি অন্যায়কারীকে শাস্তি দেন, যেহেতু সে ব্যক্তির নিজের কিছু করার ক্ষমতা নেই।
  • উদাহরণ: দ্বিতীয় বিবরণ ২৪:১৫ “সূর্য ডুববার আগেই তোমরা তার মজুরি দিয়ে দেবে…তা না করলে তোমাদের পাপ হবে, আর সে তোমাদের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর কাছে কাতর হয়ে বিচার চাইতে পারে।”

 

না বুঝে বা এমনি এমনি ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করা

প্রায়ই সময় আমরা হাল্কাভাবে ঈশ্বরের নাম মুখে নেই, আমরা খেয়াল করি না আসলে কি বলছি বা অভ্যাস-বশত অনেক কিছু বলে ফেলি যার কোনো অর্থ নেই।

  • এই বিষয়টি বিশ্বাসীদের মধ্যে যথেষ্ট প্রচলিত, বিশেষভাবে ঈশ্বরের নামে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে। যেমন: ‘হাল্লেলুইয়া’, ‘আমেন’, ‘Praise the Lord! , ‘জয় যীশু’, ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে’, ‘ঈশ্বর চাইলে থামাবে কে?’, ‘ও প্রভু!’, ‘হায় যীশু’, ‘ঈশ্বর না করুক’, ‘যীশু!’ … তা দ্বারা আমরা প্রকাশ করি সমর্থন, একমত, উৎসাহ, আচমকা, ভয় বা দুঃখ। কিন্তু প্রায়ই আমরা এই ধরণের শব্দগুলি ব্যবহার করি, খেয়াল না করে শব্দের অর্থ আসলে কি।
  • কিছু প্রচারে বক্তা ক্রমাগতভাবে শ্রোতাদের তাৎক্ষনিক সাড়া চান, যদিও শ্রোতারা এখনও চিন্তা করা, মূল্যায়ন করা বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় পায় নি।
  • ‘আমার পরে পরে এই প্রার্থনা করুন’: অনেক সময় এমন প্রার্থনায় জীবনের বড় বড় প্রতিজ্ঞা বা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কিন্তু প্রার্থনা শোনা ও মুখে বলার মাঝখানে চিন্তা করার সুযোগও থাকে না।
  • জোরে সমবেত প্রার্থনায় প্রায়ই খেয়াল না করে অনেক বেশি কথা বলে ফেলা হয়, কিন্তু কি বলছি বা কি চাচ্ছি তা নিজেরাই চিন্তা করি না বা কোন বিষয়ে ‘আমেন’ বলছি, তা নিজে জানি না।
  • যদিও এই ধরণের প্রার্থনা সঠিক মনোভাব ও ভাল উদ্দেশ্যে করা হয়, তবুও সব মিলিয়ে তাতে মুখের কথার ভার কমানো হয়, এবং এই ক্ষেত্রে তা ক্ষতিকারক।
  • এই ধরণের প্রার্থনা প্রায়ই ‘চার্চ সংস্কৃতি’, ‘চার্চ ট্র্যাডিশন’, ‘আমরা এইভাবে করি’, ‘ঢেউয়ের সাথে যাওয়া’, ‘আবেগপ্রবণ সাড়া’ হয়ে যায়, কিন্তু যা বলে ফেললাম তার প্রয়োগ এবং গুরুত্বের সঙ্গে তা দৈনিক জীবনে পূর্ণ করার কোনো উৎসাহ থাকে না। প্রার্থনাই হয়ে গেছে প্রয়োগ। অনিচ্ছাকৃতভাবে তাতে বলা এবং করার মাঝখানে বিভেদ চলে আসে। এতে ব্যক্তিগতভাবে জীবনে পরিবর্তন আনার চেয়ে সামনে মুখে বড় বড় প্রতিজ্ঞা করতে উৎসাহিত হই। বাইরের লোকেরা তা সহজেই ভণ্ডামি হিসাবে দেখে।
  • যীশু এই ধরণের বিষয়ে সাবধানবাণী দেন: মথি ৬:৭-৮ ‘যখন তোমরা প্রার্থনা কর তখন অযিহূদীদের মত অর্থহীন কথা বার বার বোলো না। অযিহূদীরা মনে করে, বেশী কথা বললেই ঈশ্বর তাদের প্রার্থনা শুনবেন। ৮ তাদের মত কোরো না, কারণ তোমাদের পিতার কাছে চাইবার আগেই তিনি জানেন তোমাদের কি দরকার।’
  • যীশু বেখেয়ালী কথার বিষয়ে বলেন: মথি ১২:৩৬ ‘কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, লোকে যে সব বাজে কথা বলে, বিচারের দিনে তার প্রত্যেকটি কথার হিসাব দিতে হবে।’
  • ঈশ্বর যখন কথা বলেন, তা কখনই হাল্কা নয়, অনর্থক নয়, গুরুত্ব ছাড়া নয় বা প্রতিজ্ঞা ছাড়া নয়।
  • ঈশ্বরের কথা, ইচ্ছা ও তাঁর কাজে কখনই বিভেদ থাকে না। ঈশ্বর সব সময় সত্য ও বিশ্বস্ত, যা বলেন তাই করেন।
  • আমাদের কথাও তাঁর কথার মত হওয়া উচিত: এমন কথা যার মূল্য, অর্থ ও গুরুত্ব থাকে।
  • এমন কোনো কথা বলবেন না যা নিজেই মানবেন না।
  • যদি আপনার হৃদয় ও মন প্রস্তুত না থাকে তবে রাজিত হওয়ার কথা বলবেন না।
  • আপনার যদি কিছু বলার না থাকে তবে কিছু বলবেন না।
  • নিশ্চিত না হলে, প্রতিজ্ঞা করবেন না।
  • চেষ্টা করুন শুধু শুধু কথা বলার অভ্যাস কমাতে।
  • অত্যন্ত চেষ্টা করুন যেন আপনার কথা বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য হয়, যেন কথা ও কাজের ভিন্নতা না হয়।

 

কোনো কিছুতে ঈশ্বরের নাম যুক্ত করা
  • আমি কি ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করি…
    • কোনো কিছু প্রমাণ করার জন্য?              ‘… বাইবেলে লেখা আছে যে…’
    • কোনো কিছুকে অনুমোদন দেওয়ার জন্য?      ‘… তা ঈশ্বরের কাজের জন্য…’
    • কোনো কিছুকে আরো শক্তি দেওয়ার জন্য?    ‘… প্রভু বলেছেন…’
    • নিজের ক্ষমতা, অধিকার, সুনাম, নির্ভরতা, প্রভাব বাড়ানোর জন্য?
  • আমার মতামতে সমর্থন বাড়ানোর জন্য ঈশ্বরের নাম বা বাক্য ব্যবহার করা নিয়ে সাবধান!
  • ধর্মীয় তর্কের মতবাদ সমর্থন করার জন্য বাইবেল পদ ব্যবহার করা নিয়ে সাবধান! (যাকোব ৩:১৩-১৮)।
  • ‘ঈশ্বরের পক্ষে’ লোকদের জোর করা নিয়ে সাবধান! মানুষের ইচ্ছা বা সিদ্ধান্তের প্রতি ঈশ্বরের সর্বোচ্চ সম্মান আছে, তাই আমাদেরও থাকা দরকার। ঈশ্বর কখনও জোর খাটিয়ে মানুষের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন না।
  • সত্য তখনই সত্য যখন তা সত্যের আত্মার (পবিত্র আত্মা) মনোভাবে ও অধীনে বলা হয় ।
  • এটি সম্ভব যে আমরা আইনের শিক্ষক, অনেক আইন মুখস্থ করেছি কিন্তু তারপরেও আইনের উদ্দেশ্য বা মূল বিষয় বুঝতে পারি না (মথি ২৩ অধ্যায়)। মথি ২৩:২৩ পদে যীশু বলেন,“ভণ্ড ধর্ম-শিক্ষক ও ফরীশীরা, ধিক্‌ আপনাদের! আপনারা পুদিনা, মৌরি আর জিরার দশ ভাগের এক ভাগ ঈশ্বরকে ঠিকমতই দিয়ে থাকেন; কিন্তু ন্যায়, দয়া এবং বিশ্বস্ততা, যা মোশির আইন-কানুনের আরও দরকারী বিষয় তা আপনারা বাদ দিয়েছেন। আগেরগুলো পালন করবার সংগে সংগে পরেরগুলোও পালন করা আপনাদের উচিত।’
  • এটি সম্ভব যে আমরা আত্মিক নেতা, কিন্তু মশীহকে দেখার পরেও তাকে মশীহ হিসাবে চিনতে পারি না, ঈশ্বরের চেতনা বা পরিচালনাও গ্রহণ করি না। যীশুর সময়ও তা প্রলোভন ছিল, আজকেও তা প্রলোভন। আমরা সবাই ভাল ফরীশী।
  • ‘খ্রীষ্টিয় বিজ্ঞাপন’ নিয়ে সাবধান। অনেক বার এমন দাবী করা হয় যা দাবী করা আমাদের উচিত নয়। উদাহরণ: ‘এই গান-বাজনা আপনাকে সরাসরি ঈশ্বরের উপস্থিতিতে নিয়ে যাবে’।

 

ঈশ্বরকে ভুলভাবে উপস্থাপনা করা
  • ঈশ্বরকে ভুলভাবে উপস্থাপনা হল ঈশ্বরের নাম অনর্থকভাবে নেওয়ার একটি পথ। বিশ্বাসীরা হল অন্য ব্যক্তিদের কাছে ঈশ্বরের প্রতিনিধি। আমি কি উপস্থাপনা করছি? আমার জীবন দেখে অন্যরা ঈশ্বর সম্বন্ধে কি বুঝবে?
  • আমার জীবনের কোনো ক্ষেত্র যদি ঈশ্বরকে প্রতিফলন না করে এর অর্থ হল আমি ঈশ্বরকে ভুলভাবে উপস্থাপনা করছি।
    • ব্যক্তিগতভাবে > আমার সময় কিভাবে কাটাই? অর্থ কিভাবে খরচ করি?
      • কেউ যখন দেখে না তখন আমি কি করি?
      • আমার চিন্তা কোথায়?
      • অন্যদের সাথে কেমন ব্যবহার করি?
    • মণ্ডলী বা পরিচর্য্যা > আমি কি উঁচু-নীচু মনোভাবে পরিচালনা করি?
      • মণ্ডলীতে গেলে কি আমি সাধারণের চেয়ে ভিন্ন ব্যবহার করি?
      • আমি কি অন্য মণ্ডলীর বিশ্বাসীদেরকে নীচু চোখে দেখি?
    • কাজের ক্ষেত্রে > আমি কতটা পরিশ্রমী? কোন ক্ষেত্রে অর্থ বেশী খরচ করি?
      • আমার রিপোর্ট কতটা সত্য?
      • আমি কি ‘রাজনীতি’ করি?

 

‘ঈশ্বরের পক্ষে’ বাড়িয়ে বলা
  • ‘ঈশ্বরের পক্ষে’ মিথ্যা বলবেন না! ঈশ্বরের কাজের বিষয়ে বাড়িয়ে বলবেন না! ‘ঈশ্বরের পক্ষে’ প্রশংসা পাওয়ার জন্য অতিরঞ্জিত করে রিপোর্ট দেবেন না! কঠিন বিষয় বা কাজে আশা অনুযায়ী ফল না পাওয়াকে অস্বীকার করবেন না!
  • মিথ্যা দ্বারা ঈশ্বর কখনই প্রশংসিত বা গৌরবান্বিত হন না। মিথ্যা দ্বারা ঈশ্বর কাজ করেন না। সুন্দর গুছানো কথা, মিথ্যা রিপোর্ট বা বাড়িয়ে বলা গল্প দ্বারা বিশ্বাসীদের কখনই উৎসাহিত করা যায় না।
  • ঈশ্বর সত্যের ঈশ্বর এবং তিনি শুধুমাত্র সত্য দ্বারাই গৌরবান্বিত হন। ঈশ্বর বাস্তবতার ঈশ্বর এবং বাস্তব ঘটনার রিপোর্ট নেতিবাচক হলেও তাঁর গৌরব কমে না এবং তিনি আমাদের বাস্তবতা সামলাতে সাহায্য করেন। সত্যই একমাত্র পথ।

 

‘ঈশ্বরের সুনাম রক্ষার জন্য’ নেতিবাচক ঘটনা লুকানো
  • ঈশ্বরের লোকদের দ্বারা বা ঈশ্বরের নামে যখন মন্দ কাজ করা হয় কিন্তু এখনও প্রকাশিত হয় নি, সে ক্ষেত্রে বিষয় আরো অনেক জটিল হয়ে যায়।
  • এই ধরণের মন্দ ঘটনা লোকদের কাছে প্রকাশিত করলে হয়তো আমি খ্রীষ্টিয় মণ্ডলীর উপর বা ঈশ্বরের নামের উপর বড় লজ্জা নিয়ে আসব।
  • এই ক্ষেত্রে আমার ভূমিকা কি? আমি কি বলব? আমার প্রকাশ করা কি আবশ্যক? কাকে বলা দরকার? কিভাবে বলা দরকার?
  • কখন নৈতিকতা আমাকে বাধ্য করে প্রকাশিত করতে? প্রকাশ করলে তা কি নিন্দা হয়ে যাবে না?
  • মূলত: কখনও ‘ঈশ্বরের পক্ষে’ মিথ্যা বলবেন না। অবশ্যই বিশ্বাসীরা মন্দ কাজ করলে ঈশ্বরের সুনাম নষ্ট হয়। কিন্তু ঈশ্বর চিন্তিত পাপ নিয়ে, কেউ জানল বা না জানল তা নিয়ে চিন্তিত নন। প্রশ্ন না যে কেউ জানে কিনা, প্রশ্ন হল পাপ ঘটেছে কিনা।
  • ঈশ্বরের সুনাম রক্ষা করার জন্য আমি দায়ী নই, ঈশ্বর নিজের সুনাম রক্ষা করবেন। শুধুমাত্র এক ক্ষেত্রে তাঁর সুনাম রক্ষার জন্য আমি দায়ী: যেন আমি আমার আচরণ দ্বারা তাঁকে ভুলভাবে উপস্থাপন না করি।
  • ঈশ্বর তাঁর সুনামের বিষয়ে চিন্তা করেন, কিন্তু তা ঈশ্বরের সর্বোচ্চ প্রাধান্য নয় (উদাহরণ: যিরমিয়ের বিলাপ ৩:১-২১)।
  • ঈশ্বর তাঁর সুনামের চিন্তা করেন, কিন্তু মিথ্যার পাপ দ্বারা কখনই তাঁর সুনাম বা সম্মান রক্ষা করা সম্ভব নf।
  • মন্দ কাজ হলে কখন আমার বলা আবশ্যক? যদি ক্রমাগত মানুষ আঘাত পায়, হুমকিতে থাকে অথবা তাদের মানবীয় অধিকার নষ্ট করা হয় তবে আমি দায়ী, তার প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া।
  • উদাহরণ: মণ্ডলীর পালক বা নেতা যখন ইয়ূথ গ্রুপের একজন যুবতীকে ভুল ব্যবহার করেন।
  • উদাহরণ: আমার স্বামী যখন মাতাল হয়ে সন্তানদের মারধর করতে থাকেন।
  • উদাহরণ: একজন ব্যক্তি যখন পালকের কাছে একটি খুন বা ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। যদিও পালক হিসাবে লোকদের পাপ স্বীকার গোপন রাখা আবশ্যক, কিছু অপরাধের ক্ষেত্রে পালক আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে দায়ী।
  • একইভাবে ডাক্তার বা শিক্ষক হিসাবে কিছু ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দিতে আইনগতভাবে দায়ী।
  • কিন্তু নিন্দা করা পাপ। নিন্দা মানে একজন ব্যক্তির সম্পর্কে মিথ্যা বা ভুল তথ্য দেওয়া দ্বারা এই ব্যক্তির সুনাম নষ্ট করা, তাকে আঘাত করা, লজ্জায় ফেলা, তার সাক্ষ্য বাতিল করা, তাকে নীচু বা অপমানিত করা।

 

সত্য বলার অভ্যাস করার জন্য কি করতে পারি?
  • ঈশ্বর ‘ভাল’কে ‘ভাল’ ও ‘মন্দ’কে ‘মন্দ বলেন            ভালকে ভাল হিসাবে স্বীকার করুন
  • মানুষের মূল্য ও সম্মান বুঝে তাদের সাথে কথা বলেন        প্রতিজ্ঞা রক্ষা করুন
  • যার সত্য মূল্য আছে তার মূল্য দেন                        সব সময় সৎ থাকুন
  • অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যার সঙ্গে একমত হবেন না               নিজের বিষয়ে মিথ্যা চিন্তা অগ্রাহ্য করুন
  • আপনার বিরুদ্ধে বলা খারাপ কথা মন থেকে ছেড়ে দেন       ঈশ্বরের দৃষ্টির সাথে একমত হন
  • লোকদের বিষয়ে অনুমান করা থেকে সাবধান                পূর্বধারণা করা থেকে সাবধান
  • নিজের মনকে সব সময় শুদ্ধ রাখুন                         আরো সাবধানে ও সচেতনভাবে কথা বলুন

 

বাস্তবতা বনাম দর্শন
  • অনেক সময় আমরা বড় বড় দর্শন দেখি ও বড় প্রতিজ্ঞা করে ফেলি, যদিও বাস্তবতা অনেক ভিন্ন।
  • আমাদের বাস্তবতা দেখা ও গ্রহণ করা দরকার, বর্তমান অবস্থা নিয়ে সৎ হওয়া দরকার।
  • যদি আমি বাস্তবতা না বুঝি তবে আমি বাস্তবতাকে পরিবর্তন করতে পারব না।
  • নতুন দর্শন বা নতুন কাজ শুরু করার জন্য যা প্রয়োজন তা হল:
    • উভয় বর্তমান অবস্থা জানা।
    • কি পরিবর্তন আসতে পারে সে বিষয়ে ঈশ্বরের দৃষ্টি বা আশা রাখা।