সরকার ০৩ – ক্ষমতা কি আইনের উপরে?

প্রশ্ন: ক্ষমতা কি আইনের উপরে? অথবা আইন কি ক্ষমতার উপরে?

  • উদাহরণ: চৌরাস্তায় একটা ট্রাফিক জ্যাম দেখা গেল।
  • ট্রাফিক কোন নীতি অনুসরণ করে চলে? কোন যানবাহনটি শক্তিশালী?
  • ট্রাফিক আইন বনাম প্রতিদিন যা ঘটে, আইন বনাম প্রকৃত বাস্তবতা
  • কি হওয়া উচিত: আইনের উপর ক্ষমতা (যারা ক্ষমতাশালী তারা কি আইনের উর্দ্ধে)?
  • অথবা: ক্ষমতার উপর আইন (যদিও একজন ক্ষমতাশালী, তাকেও আইন মানতে করতে হবে)?
  • পৃথিবীর মধ্যে এমন কেউ নেই যে এর সঠিক উত্তর জানে না: আইন ক্ষমতার উপরে থাকা উচিত।
  • বাইবেল কি বলে?

    

               আইন                                           ক্ষমতা

           ————–              না কি             —————-  ?

                ক্ষমতা                                           আইন

 
পুরাতন নিয়মের রাজা … আইনের অধীনে – ১ শমূয়েল ১০:২৪-২৫

“তখন লোকেরা বলল, “রাজা চিরজীবী হোন।”শমূয়েল তখন রাজ্য শাসনের নিয়ম-কানুনগুলো লোকদের কাছে ঘোষণা করলেন। তিনি সেগুলো একটা বইয়ে লিখে সদাপ্রভুর সামনে রাখলেন।”

  • পরিস্থিতি: ইস্রায়েলীয়রা একজন রাজা দাবী করে। ঈশ্বর বলেন যে রাজতন্ত্র একটা ভাল রাজনৈতিক পদ্ধতি নয়। ইস্রায়েলের জনগণ যেকোন ভাবে রাজতন্ত্র দাবী করে।
  • ঈশ্বর তাদের দাবী পূরণ করেন কারণ সরকার নিয়োগ করার জন্য তিনি জনগণকে কর্তৃত্ব দিয়েছেন (দ্বিতীয় বিবরণ ১:১৩)। ঈশ্বর তাঁর নিজের দেওয়া আইনের প্রতি বাধ্য হন।
  • ইস্রায়েল শৌলকে রাজা হিসেবে মনোনীত করতে একমত হয়। দ্বিতীয় বিবরণ ১:১৪ পদে উল্লিখিত জনগণের ঐক্যমতের নীতিমালা এভাবেই পূর্ণ হয়।
  • রাজাকে মুকুট দেওয়ার পরই শমূয়েল কি করেন? > তিনি রাজ্য শাসনের নিয়ম-কানুনগুলি (রাজার দায়িত্ব ও অধিকার) লিখে রাখেন।
  • রাজার দায়িত্ব ? রাজাকে প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধ-বিগ্রহের কাজ দেওয়া হয়েছে (১ শমূয়েল ৮:২০)
  • রাজার অধিকার ? কাজ করার জন্য রাজার কর্তৃত্ব, টাকা, মানুষ, উৎস দরকার, তা দাবী করা তার অধিকার।
  • সরকারকে কোন ক্ষমতা না দিলে সরকার কোন কাজ করতে পারবে না। তা হল স্বাভাবিক।
  • রাজার অধিকার ও দায়িত্ব লিখিত রেখে তা সদাপ্রভুর সামনে রাখা হয়। তার মানে কি? > লেখাটি সম্ভবত তাঁম্বুতে রাখা হয়, ঈশ্বরের চোখের সামনে এবং মানুষের চোখের সামনে। তা হল দায়বদ্ধতার কথা।
  • উপসংহার: পুরাতন নিয়মের একজন রাজা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও দায়বদ্ধ।
 
পুরাতন নিয়মের রাজা … আইনের অধীনে – দ্বিতীয় বিবরণ ১৭:১৪-২০

“তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশটা তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেখানে গিয়ে তা দখল করে যখন তোমরা সেখানে বাস করতে থাকবে এবং বলবে, ‘আমাদের আশেপাশের জাতিগুলোর মত এস, আমরা আমাদের জন্য একজনকে রাজা হিসাবে বেছে নিই।”

  • ঈশ্বর ভবিষ্যৎ জেনে অগ্রিম (১৪০৫ খ্রিঃপূঃ) তাদের ভবিষ্যৎ রাজার বিষয়ে নির্দেশনা দেন (১০৫০ খ্রিঃপূঃ)

“তখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যাকে ঠিক করে দেবেন তাকেই তোমরা তোমাদের রাজা করবে।”

  • ঈশ্বর রাজতন্ত্র চান নি কিন্তু তিনি সরকার পদ্ধতি পছন্দ করার অধিকার ইস্রায়েলকে দিয়েছেন। তাই তাদের প্রজাতন্ত্রের উপর রাজতন্ত্র বেছে নেওয়ার অধিকার আছে, ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও। রাজাকে পছন্দ মানে রাজপরিবারকে পছন্দ। এখন থেকে এই রাজপরিবার রাজত্ব করবে, ভাল হোক বা মন্দ হোক, তাই রাজা ও রাজপরিবার কে হবে সেই বিষয়ে ঈশ্বরকে যাচ্ঞা করা জ্ঞানের বিষয়। প্রজাতন্ত্রে তা বড় বিষয় নয়।

“সে যেন তোমাদের ইস্রায়েলীয় ভাইদের মধ্যে একজন হয়। যে তোমাদের ইস্রায়েলীয় ভাই নয় এমন ভিন্ন জাতির কোন লোককে তোমরা তোমাদের রাজা করবে না।”

  • প্রতিনিধিত্বের সরকারের নীতিমালা (দ্বিতীয় বিবরণ ১:১৩): একজন বিদেশী প্রতিনিধি হতে পারে না।
  • আধুনিক উদাহরণ: সোনীয়া গান্ধী নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরেও মনমোহন সিং কে তিনি নেতা হতে দিয়ে ছিলেন।

সেই রাজা যেন নিজের জন্য অনেক ঘোড়া জোগাড় করবার দিকে মন না দেয় এবং তার পরে আরও ঘোড়া জোগাড় করবার জন্য ইস্রায়েলীয়দের মিসর দেশে না পাঠায়, কারণ সদাপ্রভু তোমাদের বলেছেন, ‘তোমরা ঐ পথে আর ফিরে যাবে না।’ সে যেন অনেক বিয়ে না করে; তাতে তার মন বিপথে যাবে। সে যেন নিজের জন্য অতিরিক্ত সোনা ও রূপা জড়ো না করে।”

  • রাজার যা বেশি বেশি থাকা উচিত নয়: অনেক ঘোড়া (১৬)… অনেক স্ত্রী (১৭)…. অনেক সম্পদ (১৭) … অনেক সম্মান (২০)
  • ঘোড়া কেন সমস্যা? – ঘোড়া হলো সেই সময়ের উচ্চ-প্রযুক্তিসম্পন্ন সামরিক সরঞ্জাম। সৈন্য খুবই দামী। সামরিক পরাশক্তি ক্ষোভ জন্মায় ও দায়িত্বশীল করে তোলে। আধুনিক উদাহরণ: আমেরিকা।
  • বহু স্ত্রী কেন সমস্যা? – ব্যক্তিগত অভিলাষ, ইচ্ছামত ব‍্যবহার, রাজ-পরিবারের অস্থিতিশীলতা > সন্তানদের উপর খারাপ প্রভাব (প্রতিদ্বন্দ্বিতা, অশান্তি, বাবার কাছ থেকে বেশী সময় ও শিষ্যত্ব পায় না, পরিবারিক জীবন নেই)
  • অনেক সম্পদ কেন সমস্যা? – ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ নেওয়া, অন্য লোকদের চেয়ে সম্পূর্ন ভিন্ন ধরণের জীবন, সাধারণ লোকদের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই, প্রতিনিধিত্ব কমে যাওয়া।
  • যদি অনেক সম্মান থাকে তাহলে?
    • খ্যাতি ও অহংকার বোধের প্রলোভন
    • লোকদের সাথে যোগাযোগ বা সম্পর্ক হারানো, যা শোনা দরকার তা শোনা হচ্ছে না।
    • যা বলা দরকার তা বলার অনুমতি নেই, হ্যাঁ হ্যাঁ বলা লোকদের সংগ্রহ করা
    • আপনি নিজেকে বিব্রত করবেন!
  • কেন অতিরিক্ত সম্মান গ্রহণ করা বা দাবী করা নিষেধ?
    • আপনি তাদের একজন, তাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন, একটা কাজের জন্য আপনাকে বেছে নেওয়া হয়েছে, নিজেকে আগানোর জন্য না।
    • উদাহরণ: জিম্বাবুয়ের রবার্ট মুগাবে (জাতীয় নায়ক থেকে সবচেয়ে ঘৃনার পাত্র)

‘লেবীয়দের মধ্যে যারা পুরোহিত তাদের কাছে আইন-কানুনের যে বই আছে সিংহাসনে বসবার সময় তাকে সেই বই থেকে তার নিজের জন্য সব আইন-কানুন একটি বইয়ে নকল করে নিতে হবে। সেটা তার কাছেই থাকবে এবং সারা জীবন তাকে তা পড়তে হবে যাতে সে তার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভক্তিপূর্ণ ভয় করতে শেখে এবং এই আইন-কানুন ও নিয়মের কথাগুলো মেনে চলে। এর ফলে অন্যান্য ইস্রায়েলীয় ভাইদের চেয়ে নিজেকে বড় করে দেখবার ভাব তার মনে আসবে না এবং আইন-কানুন থেকে সে এদিক ওদিক সরে যাবে না। এতে সে ও তার বংশধরেরা ইস্রায়েলীয়দের উপর অনেক দিন রাজত্ব করতে পারবে।’

  • প্রত্যেক রাজার তার জীবনের প্রত্যেকটা দিন আইন পড়া ও ধ্যান করা অবশ্যই দরকার > যাতে তিনি ঈশ্বরকে ভয় করতে শিখেন, আইনের বাধ্য হতে পারেন, দীর্ঘদিন রাজত্ব করতে পারেন।
  • উপসংহার: পুরাতন নিয়মের রাজারা আইনের প্রতি দায়বদ্ধ ছিলেন… নতুন নিয়মে কেমন ছিল?
 
নতুন নিয়মে মণ্ডলীর নেতৃত্ব … আইনের অধীনে – তীত ১:৫-৯

“মণ্ডলীর প্রধান নেতাকে এমন হতে হবে যেন কেউ তাঁকে দোষ দিতে না পারে। তাঁর মাত্র একজনই স্ত্রী থাকবে। তাঁর ছেলেমেয়েরা যেন খ্রীষ্টে বিশ্বাসী হয়, যেন তারা নিজেদের খুশীমত না চলে এবং অবাধ্য না হয়। ঈশ্বরের কাছ থেকে দায়িত্বভার পাওয়া লোক হিসাবে সেই পরিচালককে এমন হতে হবে যাতে কেউ তাঁর নিন্দা করতে না পারে। তিনি যেন একগুঁয়ে, রাগী, মাতাল বা বদ্‌মেজাজী না হন। অন্যায় লাভের দিকে যেন তাঁর ঝোঁক না থাকে; তার বদলে অতিথি সেবা ও দয়ার কাজ করতে তিনি যেন ভালবাসেন। তাঁর ভাল বিচারবুদ্ধি থাকবে, তিনি সৎ ও ঈশ্বরের বাধ্য হবেন এবং নিজেকে দমনে রাখবেন। ঈশ্বরের বিশ্বাসযোগ্য বাক্য, যা আমি শিক্ষা দিয়েছি, তাঁকে তা শক্ত করে ধরে রাখতে হবে, যেন সত্য শিক্ষার বিষয় তিনি প্রচার করতে পারেন এবং যারা বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাদের ভুল দেখিয়ে দিতে পারেন।”

  • মণ্ডলীর নেতা হতে চাইলে: ঈশ্বর চরিত্রের ক্ষেত্রে অনেক শর্ত বা দাবী রাখেন।
  • মণ্ডলীর সাধারণ লোকদের জন্য: কোন আবশ্যকতা নেই, বিশ্বাসী হলে মণ্ডলীর সদস্য হওয়া যায়।
  • নীতিমালা: যত উঁচু নেতৃত্ব ঈশ্বর তত বেশী চরিত্রের আবশ্যকতা দাবী করেন।
  • কেন? বেশি প্রভাব অর্থাৎ, লোকদের আঘাত করতে ও ভুলভাবে পরিচালনা দিতে আরও বেশি ক্ষমতা থাকা।
 
নতুন নিয়মে শিক্ষক … আইনের অধীনে – যাকোব ৩:১

“আমরা শিক্ষক বলে অন্যদের চেয়ে আমাদের আরো কঠিন ভাবে বিচার করা হবে।”

  • কেন? আবারও > বেশি প্রভাব > লোকদের আঘাত করতে ও ভুলভাবে পরিচালনা দিতে আরও বেশি ক্ষমতা।
  • নেতৃত্ব = প্রভাব = দায়বদ্ধতা = কঠোরভাবে বিচার।
  • আপনি কি নেতা হতে চান? … ভাল, কিন্তু নেতৃত্বের অর্থ হল তাই।
  • উপসংহার: নতুন নিয়মে মণ্ডলীর নেতারা ঈশ্বরীয় চরিত্রের উচ্চমানের মানদন্ডে দায়বদ্ধ।
 
যীশু, সবচেয়ে ক্ষমতাশালী মানুষ … আইনের অধীনে
  • যীশু তার অসীম ক্ষমতা নিয়ে কি করেছেন, তিনি কি আইন পালন করেছেন?
  • তিনি কিভাবে তাঁর অসাধারণ ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন?
  • যীশু তার পিতামাতার সম্পূর্ণ বাধ্য ছিলেন (একজন ছেলে হিসেবে, লুক ২:৫১), দেশের আইনের প্রতি বাধ্য ছিলেন (মথি ২৬:৫২), সরকারের প্রতি বাধ্য ছিলেন (যোহন ৬:১৫), ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি (মথি ১৭:২৭) এবং – আরো গুরুত্বপূর্ণ – অবশ্যই পিতা ঈশ্বরের প্রতি সম্পূর্ণ বাধ্য ছিলেন (যোহন ৮:২৯)।
  • যীশু নিজের সুযোগ-সুবিধা, আরাম, নিজের স্বার্থের জন্য তাঁর ক্ষমতা কখনই ব্যবহার করেননি।
  • যীশু মোশির আইনের প্রতি বশীভূত ছিলেন এবং সম্পূর্ণভাবে আইন পালন করেন (মথি ৫:১৭, যদিও তিনি মানুষের যোগ করা সকল আইন বা ঐতিহ্য পালন করেননি)।
  • যীশু আমাদেরকে স্বার্থহীনভাবে সেবা করতে এবং উৎসর্গীকৃত ভাবে উদ্ধার করতেতাঁর ক্ষমতা ত্যাগ করেন।
  • উপসংহার: যদিও যীশুর অন্য সকল লোকের চেয়ে বেশি ক্ষমতা ছিল, তথাপি তিনি আইনের প্রতি বাধ্য ছিলেন।
 
পিতা ঈশ্বর … আইনের অধীনে?
  • সর্বশক্তিমানের দিকে তাকানো:
  • পিতা ঈশ্বর কি আইনের প্রতি বাধ্য? ঈশ্বর কি আইনের ঊর্দ্ধে? অথবা আইনের অধীনে?
  • সর্বশক্তিমান কি কোন কিছুর অধীনে থাকতে পারেন? এটা ভাল নাও লাগতে পারে।
  • যদিও ঈশ্বর নিজের পরিচয় এভাবে দেন
    • ঈশ্বর, যিনি তাঁর নিজের ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ করেন   (যিশা ৪৪:৬-৮)
    • ঈশ্বর, তিনি তাঁর নিজের প্রতিজ্ঞা রক্ষা করেন     (যিশা ৪৪:২৬, গালা ৪:৪, যাকোব ১:১৮, …)
    • ঈশ্বর, তিনি তাঁর নিজের বাক্যের প্রতি বিশ্বস্ত     (মথি ৫:১৮, …)
    • ঈশ্বর তাঁর প্রকাশিত চরিত্রের প্রতি বিশ্বস্ত         (যাত্রা ৩৪:৬-৭, ইব্রীয় ১৩:৮, যাকোব ১:১৭)
    • ঈশ্বর চুক্তি রক্ষা করেন                        (আদি ১৫:১৮, যাত্রা ১৯:৪-৬)
  • ঈশ্বর আমাদের তাঁর চরিত্রের উপর নির্ভর করতে বলেন, তাঁর নিজের কথায় নিজেকে দায়বদ্ধ করতে আমাদের উৎসাহিত করেন।
  • উদাহরণ: ইয়োবের প্রশংসা করা হয় কারণ তিনি ঈশ্বরকে তাঁর চরিত্রে দায়বদ্ধ রাখেন! ‘তুমি তো ন্যায্য’।
  • ঈশ্বর আইন দেন। ঈশ্বরের চরিত্রই হল আইন।
  • ঈশ্বর তিনি নিজেই সত্য, নিজের প্রতি বিশ্বস্ত এবং তিনি নিজে তাঁর আইন পালন করেন।
  • ঈশ্বর এমন কোন আদেশ দেন না, যা তিনি নিজে পালন করেন না।
 
ঈশ্বর যে ‘সর্বশক্তিমান’ তার মানে কি?

অনেকে এভাবে বলে:

  • ‘সর্বশক্তিমান’ মানে যে ঈশ্বর যা চান তাই করতে পারেন। তার ক্ষমতার সীমানা নেই। কেউ কোন প্রশ্ন করতে পারে না, আপত্তি উঠাতে পারে না, বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। ঈশ্বর দায়বদ্ধতার ঊর্ধ্বে। তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ হয়। যা কিছু সম্পন্ন হয় তাই হল তাঁর ইচ্ছা। ঈশ্বরই আইন। ঈশ্বর আইন দেন, ঈশ্বর আইনের চেয়ে মহান। শক্তিশালীরা আইন পালন করে না, বরং অন্যদেরকে আদেশ দেন আইন পালন করতে।
  • তা যদি আমরা মনে করি তবে বাইবেলে ইয়োব হলেন বিদ্রোহী, আদর্শ নন। আমরা মনে করি যে ক্ষমতা নিজেই এর বৈধতা: আপনি যদি সর্বশক্তিমান হন, আপনিই ঠিক বলেছেন। Might is right. Power legitimizes itself. এখানে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।
  • তা যদি মনে করি আমরা উঁচু-নীচু সরকার তৈরি করব। আমরা শক্তিশালী নেতার অনুসন্ধান করব। আমরা মনে করব যে জোর করলে মানুষ আইন পালন করবে।

 

অন্যরা এভাবে বলে:

  • ‘সর্বশক্তিমান’ মানে যে ঈশ্বর যা চান, তাই বিস্তার করার ক্ষমতা আছে। ঈশ্বরই আইন। তাঁর চরিত্র আইনের ভিত্তি। তিনি আইন দেন, তিনি আইন নিজেই মানেন। তিনি সর্বশক্তিমান, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে ‘যা চাই তাই’ বা ‘এক এক দিন এক এক রকম’ বা ‘স্বেচ্ছায় চলা’। ঈশ্বর ঘোষণা করেছেন তাঁর চরিত্র কেমন, ও কেমন নয়। তিনি তার কথা ও প্রতিজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি তাঁর চরিত্রের বাইরে বা তাঁর ঘোষিত ইচ্ছা ও কথার বাইরে কখনও কাজ করবেন না। বলা যায় যে তিনি নিজেকে সীমাবদ্ধ করেছেন: তিনি ন্যায্য, তিনি ন্যায্যতার বাইরে কখনও কাজ করবেন না। তিনি তাঁর নিজের প্রতি ও তাঁর বাক্যের প্রতি বিশ্বস্ত। তিনি প্রতিজ্ঞা ও চুক্তি রক্ষাকারী ঈশ্বর, তিনি আইন ও কথা পালনকারী ঈশ্বর। তাঁর মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই, কোনো ‘এক এক দিন, এক এক রকম’ নয়।
  • তা যদি মনে করি তবে বাইবেলে ইয়োব হলেন আদর্শ। তিনি ঈশ্বরের চরিত্র ধরে রেখে তাঁর কাছে অভিযোগ করেছেন। ঈশ্বরকে তাঁর নিজের কথায় দায়বন্ধ রাখা বিদ্রোহ নয়, বরং বিশ্বাস।
  • তা যদি মনে করি তবে আমরা দায়বদ্ধ একটি সরকার তৈরী করব, যেখানে সবাই (বড় ও ছোট) সমানভাবে আইন পালন করে, যেখানে কেউ নিজেকে ‘আইনের ঊর্ধ্বে’ মনে করে না।
  • ঈশ্বরের প্রাথমিক পরিচয় কি যে তিনি সর্বক্ষমতার অধিকারী? বা তিনি সত্য ও তাঁর চরিত্রে বিশ্বস্ত?
  • ঈশ্বর কি সার্বভৌম, দায়বদ্ধতাবিহীন সর্বশক্তিমান বা সুশৃঙ্খল, নিজের প্রতি বিশ্বস্ত, দায়বদ্ধ সর্বশক্তিমান?