সরকার ০৫ – সৈন্য ও যুদ্ধ
খুন বনাম যুদ্ধে হত্যা
দ্বিতীয় বিবরণ ৫:১৭ “খুন কোরো না।”
খুন কি? – ইচ্ছাকৃত, পূর্বপরিকল্পিত, উদ্দেশ্যমূলক হত্যা।
তাহলে নিম্নলিখিতগুলি কি খুন?
- একজন প্রমাণিত দোষী ও শাস্তিপ্রাপ্ত খুনিকে ফাঁসি দেওয়া – এটা কি খুন?
- যুদ্ধে শত্রুপক্ষের একজন সৈন্যকে হত্যা করা – এটা কি খুন?
অনেক খ্রিষ্টানরা এই দৃষ্টিভঙ্গি: যেকোনভাবে হত্যা করা নিষেধ। সবই খুন। তাই
- কোন মৃত্যুদন্ড দেওয়া উচিত নয়।
- সৈন্য হওয়া উচিত নয় বা যুদ্ধ করা ঠিক নয়। ‘শান্তিবাদ’ (Pacifism)।
কোন মৃত্যুদন্ড নয়?
- যেকোন দেশে সর্বোচ্চ শাস্তি দরকার (মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড)।
- দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে মৃত্যুদন্ড ছাড়া অনেক সহিংসতা বা অপহরণ শুরু হবে।

কোন সৈন্য থাকা কি উচিত?
- একটি জাতি সৈন্য না রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারে (যেমন: লেবানন) কিন্তু ‘যুদ্ধ হবে না’ তা নিশ্চিত করতে পারে না।
- কোন সৈন্য না থাকলে শত্রু পক্ষের আক্রমণ করার সুযোগ ও সম্ভাবনা বাড়ে।
- একটি জাতির দায়িত্ব হলো তার নিজস্ব টিকে থাকা, নিরাপত্তা ও সীমানার সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
- কিন্তু: যুদ্ধ করার চেয়ে দেশের সাথে দেশের চুক্তি থাকা ভাল।
- একটা দেশ শুধুমাত্র প্রতিরোধ করার জন্য সৈন্য রাখতে পারে।
বিজয় ও সামরিক শক্তি
দ্বিতীয় বিবরণ ২০:১-২ “যুদ্ধ করতে গিয়ে শত্রুর পক্ষে তোমাদের চেয়ে বেশী ঘোড়া, রথ ও সৈন্যদল দেখে তোমরা ভয় পেয়ো না, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি মিসর দেশ থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন তিনি তোমাদের সংগে থাকবেন।”
আমরা এটা থেকে কি শিখতে পারি?
- যুদ্ধে বিজয় প্রথমত যন্ত্রপাতি, সৈন্য সংখ্যা, ক্ষমতা ও প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে না।
- যুদ্ধে বিজয় প্রথমত ঈশ্বরের অনুগ্রহের উপর নির্ভর করে।
কিন্তু কিভাবে আমি জানতে পারি ঈশ্বর একটি যুদ্ধ চান কি না? কোন সময় যুদ্ধ করা কি ঠিক?
- কঠিন! মোশির সময়ের ইস্রায়েলকে ঈশ্বর দখল করার সরাসরি আদেশ দিয়েছিলেন, তা একটি বিশেষ ঘটনা। কিন্তু আজকের যুগের জন্য আমাদের এই ধরণের সরাসরি আদেশ নেই।
ঈশ্বর সকলের পক্ষে – যিহোশূয় ৫:১৩-১৫
যিহোশূয়ের নেতৃত্বে প্রতিজ্ঞাত দেশ দখল করার সেই যুদ্ধ হলো বাইবেলের ইতিহাসে সবচেয়ে সরাসরি ও সবচেয়ে পরিস্কারভাবে ঈশ্বরের অনুমোদন প্রাপ্ত যুদ্ধ।
কিন্তু তারপরেও – যিহোশূয় যিরীহের সাথে যুদ্ধের আগে একটি দূত দেখে বলেন:
যিহোশূয় ৫:১৩-১৫ “আপনি কার পক্ষের লোক- আমাদের, না আমাদের শত্রুদের?” উত্তরে তিনি বললেন, “আমি কারও পক্ষের লোক নই। আমি সদাপ্রভুর সৈন্যদলের সেনাপতি; এখন আমি এখানে এসেছি।”
- ঈশ্বর শুধু ইস্রায়েলের পক্ষে ও অন্যদের বিপক্ষে, এরকম নয়!
- ঈশ্বর সব সময় লোকদের জন্য, যুদ্ধের উভয় পক্ষের লোকদের জন্য।
- ঈশ্বর সব সময় অন্যায়, মন্দতা ও বন্ধনের বিরুদ্ধে, যেই তা করুক না কেন।
- ঈশ্বর সবসময় নায্যতা, ধার্মিকতা এবং স্বাধীনতার পক্ষে, যার মধ্যেই তা পাওয়া যাক না কেন।
তাই যদি হয়, তাহলে প্রশ্ন উঠে আসে: একটি যুদ্ধ কতটা ‘ঠিক’ বা ‘নায্য’? একটি যুদ্ধ ‘ভুল বা ‘অন্যায়’?
- যদি আক্রমনাত্মক বা অপমানকর যুদ্ধ হয়।
- যদি পূর্বে কোন অবিচার বা অন্যায্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিনা উস্কানিতে একটি যুদ্ধ হয়।
- যদি আগে অন্য পথে সমাধান না খুঁজে এমন একটি যুদ্ধ বা অঘোষিত একটি আক্রমণ হয়।
- যদি অপ্রয়োজনীয় সহিংসতা দিয়ে সেই যুদ্ধ পরিচালিত হয়।
নিয়োগে স্বাধীন ইচ্ছা – দ্বিতীয় বিবরণ ২০:৩-৮
“তোমরা ভয় কোরো না কিম্বা ভয়ে ভেংগে পোড়ো না; … ‘তোমাদের মধ্যে যদি কেউ নতুন ঘর তৈরী করে… কেউ যদি আংগুর ক্ষেত করে তার ফল না খেয়ে থাকে … বিয়ের সম্বন্ধের পরে যদি কেউ বিয়ে না করে থাকে …সে-ও বাড়ী যাক; তোমাদের মধ্যে যদি কেউ ভয় পেয়ে থাকে কিম্বা সাহস হারিয়ে থাকে, তবে তা দেখে যাতে অন্য ইস্রায়েলীয় ভাইদের মনোবল নষ্ট হয়ে না যায় সেইজন্য সে বাড়ী ফিরে যাক।’
- সৈন্যদের অবশ্যই তাদের দায়িত্ব, বিপদ ও ঝুঁকি বুঝা দরকার।
- সৈন্যদের কাজের (সেবার) নিয়োগ অবশ্যই স্বেচ্ছায় হওয়া দরকার, জোর করে সৈন্য নিয়োগ করা যাবে না।
- এমন লোকদের সেনা হিসাবে নিয়োগ করতে হবে যাদের পূর্বে কোন একধরণের জীবন ছিল (যুবক বা অল্প বয়সীদের নিয়োগ নিষিদ্ধ)।
- এমন লোকদের সেনা হিসাবে নিয়োগ করতে হবে যাদের যুদ্ধের পর আবার ফিরে যাওয়ার মত একটি জীবন আছে।
সৈন্যদের জন্য বয়স – গণনা ১:২-৩ ও ২৬:২
“তুমি বংশ ও পরিবার অনুসারে ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে যে সমস্ত পুরুষের বয়স বিশ বা তার বেশী, অর্থাৎ যারা যুদ্ধে যাওয়ার মত হয়েছে তাদের নাম এক এক করে লিখে প্রত্যেকের দল অনুসারে তুমি ও হারোণ লোকদের গণনা করবে।”
- এখানে সেনা নিয়োগের জন্য বয়স ২০ বছর, এর আগে না। ইস্রায়েলীয় পুরুষেরা ১২ বছরে বৈধভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবে বিবেচিত হত, অনেকে অল্প বয়সে বিয়েও করত। তাই যখন তারা সেনা নিয়োগের বয়সে পৌঁছায়, তাদের ইতিমধ্যে একরকম জীবন বা পরিবার ছিল।
- সুইজারল্যান্ডে সেনা নিয়োগের জন্য বয়স ১৮ বছর, অনেক দেশেই এর চেয়েও অল্প বয়সে সেনা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

- দীর্ঘ যুদ্ধ হলে অনেক বার সেনার অভাবে দেখা যায় যে যুদ্ধ যত বছর চলে, তত কম বয়সের ছেলেদের জোর করে সেনা হিসেবে নিয়োগ করা হয় (১৮ > ১৬ > ১৪ বছর)। তা একেবারেই ভাল না কারণ:
- বয়স্ক সৈন্যরা বেশি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, সহজে প্রভাবিত হয় না, আরও ভাল বিচারবুদ্ধি থাকে, বেশি সাহস থাকে, কিন্তু অল্প বয়সী সৈন্যদের ক্ষেত্রে তা হয় না।
- প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (WW I and WW II) এর মধ্যে দেখা গেছে যে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে বয়স্ক সৈন্যরা আগের জীবনে (পরিবার, চাকরি, কাজের অভিজ্ঞতা) ফিরে গিয়ে সেখানে আবার খাপ খায়ইয়ে নিতে পেরে ছিল > দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্ষতি ও মানসিক আঘাত কম।
- কিন্তু অল্প বয়সী সৈন্যদের ফিরে যাওয়ার কোন জীবন নেই। তারা ‘যুদ্ধ ছাড়া’ কিছু জানে না > পরে বড় সমস্যা।
- শিশু সৈন্যের নিয়োগ পৃথিবীতে বড় অপরাধ ছোট ছেলেদের জোর করে, নেশাগ্রস্ত করে, মানসিক আঘাত দিয়ে বা প্রতারণা করে সামরিক বাহিনীতে নেওয়া হয়।
পূর্ব সমঝোতা – দ্বিতীয় বিবরণ ২০:১০
“তোমরা কোন গ্রাম বা শহর আক্রমণ করতে যাওয়ার আগে সেখানকার লোকদের কাছে বিনা যুদ্ধে অধীনতা মেনে নেবার প্রস্তাব করবে।”
- সমঝোতা অবশ্যই যুদ্ধের আগে হতে হবে। সমঝোতা ব্যর্থ হলে: যুদ্ধ হল শেষ সমাধান মাত্র।
- যুদ্ধ অবশ্যই ঘোষণা করতে হবে, শান্তিতে থাকার সময় হঠাৎ আক্রমণ করা অবৈধ।
আত্ম-সমর্পণের অধিকারকে সম্মান করা – দ্বিতীয় বিবরণ ২০:১১
“যদি তাতে তারা রাজী হয়ে তাদের ফটক খুলে দেয় তবে সেখানকার সমস্ত লোকেরা তোমাদের অধীন হবে এবং তোমাদের জন্য কাজ করতে বাধ্য থাকবে।”
- যদি কোন সেনা বা বেসামরিক লোক আত্ন-সমর্পণ করে, তাকে হত্যা আর করা যাবে না।
- আত্ম-সমর্পণ করলে, চুক্তি রক্ষা করতে ও পরাজিত যুদ্ধ বন্দীদের অধিকার অব্যশ্যই সুরক্ষিত থাকতে হবে।
- শ্রমের জন্য বল প্রয়োগ করা যেতে পারে কিন্তু হত্যা করা, যন্ত্রনা দেওয়া বা অনাহারে রাখা যাবে না।
সামরিক বনাম বেসামরিক – দ্বিতীয় বিবরণ ২০:১২-১৫
“কিন্তু তারা যদি সেই প্রস্তাবে রাজী না হয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে তবে সেই জায়গা তোমরা আক্রমণ করবে। …সব পুরুষ লোকদের তোমরা মেরে ফেলবে। তবে স্ত্রীলোক, ছেলেমেয়ে, পশুপাল এবং সেই জায়গার অন্য সব কিছু তোমরা লুটের জিনিস হিসাবে নিজেদের জন্য নিতে পারবে।”
- যুদ্ধে আপনাকে অবশ্যই পার্থক্য করতে হবে: সামরিক(পুরুষ) এবং বেসামরিক(মহিলা, ছেলেমেয়ে, প্রাচীন, প্রতিবন্দী ইত্যাদি)।
- শুধুমাত্র সামরিক লোকদের যুদ্ধের সময় হত্যা করা যাবে।
- বেসামরিক লোকদের অবশ্যই জীবিত রাখতে হবে (নিচে তাদের অধিকার উল্লেখ করা হল)।
- বেসামরিক লোকদের প্রতি কোন উৎপীড়ন (হত্যা, ধর্ষন, মানসিকভাবে অত্যাচার, অনাহার) করা যাবে না
- যে অস্ত্র-শস্ত্রগুলো সামরিক ও বেসামরিক পার্থক্য করে না সেগুলো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ (পরমাণু, জীবাণু, রাসায়নিক অস্ত্র, indiscriminate ABC weapons)


দীর্ঘ-সময়ের ক্ষতির নিষেধ – দ্বিতীয় বিবরণ ২০:১৯-২০
“তোমরা অনেক দিন ধরে যখন কোন গ্রাম বা শহর ঘেরাও করে রেখে তা দখল করবার জন্য যুদ্ধ করতে থাকবে তখন কুড়াল দিয়ে সেখানকার কোন গাছ নষ্ট করবে না, কারণ সেগুলোর ফল তোমরা খেতে পারবে। সেগুলো তোমরা কেটে ফেলবে না। মাঠের সেই গাছগুলো তো আর মানুষ নয় যে, সেগুলোকে তোমাদের আক্রমণ করতে হবে। তবে যেগুলো ফলের গাছ নয় বলে তোমাদের জানা থাকবে সেগুলো তোমরা কেটে ফেলতে পারবে এবং যে জায়গার লোকেরা তোমাদের সংগে যুদ্ধ করছে তারা হেরে না যাওয়া পর্যন্ত সেই গাছগুলো তোমরা আক্রমণ করবার কাজে ব্যবহার করতে পারবে।”
অবরোধের সময়:
- ফলের গাছ কাটা যাবে না। কারণ অবরোধের যন্ত্রপাতি বানানোর কারণে যুদ্ধের সময় সাধারণত গাছে ফল ধরতে পারে না।
- এমন গাছ থেকে কাঠ নেওয়া যাবে, যে গাছের কোন ফল ধরে না।
ঈশ্বর এটা কেন আদেশ দিয়েছেন?
- ফলের গাছ কাটলে > খাবার কম উৎপাদন হয়।
- গাছ বড় হতে সময় লাগে।
- অনেক বছরের বিনিয়োগ এক মূহুর্তে নষ্ট করার কোন অধিকার নেই।
- যুদ্ধে ধ্বংস করার একটা সীমা রাখা, বিশেষ করে দীর্ঘ-মেয়াদী ক্ষতি বা অপরিবর্তনীয় ক্ষতির একটি সীমা রাখা।
- যুদ্ধে কি কোন নিয়ম আছে? যুদ্ধ কি নিয়ম ও ক্ষমা ছাড়া ‘ধ্বংস মাত্র’? – না! ঈশ্বর ক্ষতি কমানোর আইন দিয়েছেন।
আশাহীন অবিরাম যুদ্ধ নিষেধ – লূক ১৪:৩১-৩২
“যদি একজন রাজা অন্য আর একজন রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যান তবে তিনি প্রথমে বসে চিন্তা করবেন, ‘বিশ হাজার সৈন্য নিয়ে যিনি আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসছেন, মাত্র দশ হাজার সৈন্য নিয়ে আমি তাঁকে বাধা দিতে পারব কি? ৩২ যদি তিনি তা না পারেন তবে সেই অন্য রাজা দূরে থাকতেই লোক পাঠিয়ে তিনি তাঁর সংগে সন্ধির কথা আলাপ করবেন।”
- এটি একটি দৃষ্টান্ত, কিন্তু তারপরও এখান থেকে নীতিমালা নেওয়া যায়: যুদ্ধ ঘোষনা করুন একমাত্র তখনই যদি জয় লাভ করার সম্ভাবনা থাকে।
- আশাহীন অবিরাম যুদ্ধ নিষেধ। মাত্র প্রতিশোধ, গন্ডগোল বা নিজের ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতি করা এমন যুদ্ধ নিষেধ।
মহিলা বন্দীদের সাথে ব্যবহার – দ্বিতীয় বিবরণ ২১:১০-১৪
“যদি তাদের মধ্যেকার কোন সুন্দরী স্ত্রীলোককে দেখে তোমাদের কারও তাকে ভাল লাগে তবে সে তাকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে। স্ত্রীলোকটিকে সে তার বাড়ীতে নিয়ে যাবে। তারপর স্ত্রীলোকটি তার চুল কামিয়ে ফেলবে ও নখ কেটে ফেলবে, আর বন্দী হবার সময়ে তার গায়ে যে সব কাপড়-চোপড় ছিল তা খুলে ফেলবে। এর পর তার বাড়ীতে থেকে সেই স্ত্রীলোকটি পুরো এক মাস তার মা-বাবার জন্য শোক করবে। তারপর সেই লোকটি তাকে বিয়ে করে তার স্বামী হবে এবং স্ত্রীলোকটিও তার স্ত্রী হবে। পরে যদি স্ত্রীলোকটির উপর সে অখুশী হয় তবে তাকে যেখানে ইচ্ছা চলে যেতে দিতে হবে। সে তাকে বিক্রি করতে পারবে না কিম্বা দাসী হিসাবে রাখতে পারবে না, কারণ সে তার অসম্মান করেছে।”
- মহিলা বন্দীদের সাধারণভাবে ‘নেওয়া’ ‘ব্যবহার করা’ ধর্ষণ করা যাবে না > একটা প্রক্রিয়া রাখা দরকার।
- এটা হলো ধর্ষণ প্রতিরোধ… বিবাহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ নয়, কিন্তু মহিলা বন্দীদের শুধুমাত্র বৈধ প্রক্রিয়ায় বিবাহ করা যাবে > বন্দীদের অধিকারের সুরক্ষা করা।

কেন এক মাসের প্রক্রিয়া ?
- শোক করার, জায়গা পরিবর্তন করার, নতুন পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়ানোর জন্য সময় দেওয়া।
- চুল ও নখ কাটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয় (সংক্রমণের সুযোগ কমায়)।
- কিন্তু এটা আবারও ‘মাথা ঠান্ডা করুন’ এরকম বিষয় কারণ চুল ও নখ কাটালে, মহিলার আকর্ষণও কমে আসে।
- পরিবারের অন্য সদস্যদের মূল্যায়ন করা, কথা বলা ও আপত্তি উঠানোর সুযোগ দেওয়া।
- সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি হলো ধীরভাবে করার জন্য, চিন্তা করতে দেওয়া, বাস্তবতা পরীক্ষা করা: ‘আমি কি আসলেই এটা চাই?’, ‘এটা কি আসলেই যোগ্য বা ভাল?’।
ভবিষ্যৎতে এই ধরণের মহিলার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তাকে আর দাস হিসেবে বিক্রি করা চলবে না, তাকে একজন স্বাধীন মানুষ হিসেবে ছেড়ে দিতে হবে। এটা কেন বলা হয়েছে?
- যেহেতু এই বিয়ের ভাল ভিত্তি নেই, সেহেতু মহিলার অধিকার আরও রক্ষা করা দরকার।
- অসম্মান করার ও ছেড়ে দেওয়ার কারণে তাকে লাভের জন্য আর বিক্রি করা যাবে না।
যুদ্ধে আধুনিক আইন-কানুন <=> জেনেভা চুক্তি (Geneva Convention)
আজকের জেনেভা চুক্তি এই ধরনের বাইবেলীয় চিন্তার উপর ভিত্তি করে।
- যুদ্ধ শুরু করার পূর্বে অবশ্যই ঘোষণা করতে হবে।
- সামরিক এবং বেসামরিকের মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য করতে হবে।
- যুদ্ধ কৌশল হিসেবে ধর্ষণ, বেসামরিক হত্যা, অনাহারে রাখা ইত্যাদি নিষেধ।
- শুধুমাত্র সামরিক বনাম সামরিক যুদ্ধ। এমনকি সামরিক ক্ষেত্রে কোন নৃশংসতা, অসম্মান, অপমান করা যাবে না।
- উভয় পক্ষের আঘাতপ্রাপ্ত ও পরাজিত সামরিক বা অসামরিক লোকদের সুরক্ষা করতে হয়।
- এ.বি.সি. অস্ত্র নিষেধ (এবিসি মানে পরমাণু, জীবানু, রাসায়িক অস্ত্র) যেহেতু এই অস্ত্রগুলো সামরিক ও বেসামরিক পার্থক্য করতে পারে না।
- প্রতিরোধযোগ্য বা অপ্রয়োজনীয় কোন ক্ষতি করা যাবে না (প্রত্নত্বাত্তিক ক্ষেত্র, ঐতিহাসিক দালান, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট, বাঁধ, ইত্যাদি)।
- যদি জয় লাভের কোন সম্ভাবনা না থাকে যুদ্ধে যেও না।


উদাহরণ
- যুদ্ধে একজন মহিলাকে হত্যা করা যাবে না। মহিলা অস্ত্র হাতে নিলে, তাকে সেনা হিসেবে হত্যা করা যাবে, কিন্তু ধর্ষণ করা যাবে না।
- জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশী এরকম জায়গায় অস্ত্রের গুদাম বা হেড কোয়ার্টার স্থাপন করা হল ‘নোংরা খেলা’। বিস্ফোরক দ্রব্য বোরকার ভিতরে লুকানো একটা ‘নোংরা খেলা’।
সন্ত্রাসবাদ ঠিক তাই করে; এইসব নীতি ইচ্ছাকৃত ভাবে ভাঙ্গে: হঠাৎ আক্রমণ, বেসামরিক লোকদের খুন করা।