ভাববাদী যোয়েলের নাম বেশিরভাগ পঞ্চাশত্তমী দিনে পিতরের একটি উদ্ধৃতির কারণেই পরিচিত: “তার পরে আমি সমস্ত লোকের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব। তাতে তোমাদের ছেলেরা ও মেয়েরা নবী হিসাবে ঈশ্বরের বাক্য বলবে, তোমাদের বুড়ো লোকেরা স্বপ্ন দেখবে ও তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে। এমন কি, সেই সময়ে আমার দাস ও দাসীদের উপরে আমি আমার আত্মা ঢেলে দেব।… রক্ষা পাবার জন্য যে কেউ সদাপ্রভুকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে” (যোয়েল ২:২৮-২৯,৩২)। কিন্তু এই ভবিষ্যদ্বাণীর পারিপার্শিক অবস্থা কি? কোথা থেকে উদ্ধৃতিটি নেওয়া হল? যোয়েলের সময়ে তার শ্রোতারা এই কথাটি কিভাবে বুঝত?
বাইবেলের ঐতিহাসিক লেখায় ভাববাদী যোয়েলের নামের উল্লেখ নেই বলে শুধুমাত্র যোয়েল পুস্তক থেকে তার সম্বন্ধে তথ্য পাওয়া যায়। তিনি এমন সময়ে যিহূদা ও যিরূশালেম লোকদের কাছে কথা বলেন যখন তারা ঈশ্বরের ভক্তিপূর্ণ ভয়ে চলে এবং পুরোহিতেরা তাদের ভূমিকা সুন্দরভাবে পালন করেন। যোয়েল পুস্তকের একটি লক্ষণীয় বিষয় হল যে, তিনি বাইবেলের শুধুমাত্র ভাববাদী যিনি লোকদের কোনো পাপ বা অন্যায় উল্লেখ করেন না, বিচারের একটা কারণও উল্লেখ করেন না। তারপরেও যোয়েল যিহূদার লোকদের মনেপ্রাণে অনুতপ্ত হতে বলেন, কারণ সেই মুহূর্তে যিহূদার উপর পঙ্গপালের আঘাত এসে দেশকে অনেক ক্ষতি করছিল (যোয়েল ১:৪, ২:২৫)। ভাববাদী যোয়েল পঙ্গপালটি ঈশ্বরের কাছ থেকে সাবধানবাণী ও আংশিক বিচার হিসাবে দেখেন, যেমন মোশির আইন-কানুনেও বলা হয়েছে (২য় বিবরণ ২৮:৩৮)।
যোয়েল পঙ্গপালের একটি প্রাণবন্ত বর্ণনা দেন, যার আধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সাথেও যথেষ্ট মিল আছে (যোয়েল ১:১০-১২,১৭-৩০, ২:১-১১)। তিনি অনেক খুঁটিনাটি বিষয় উল্লেখ করেন, যা আধুনিক যুগের পঙ্গপালের ক্ষেত্রেও ঘটে থাকে: এক ঝাঁকে অসংখ্য পঙ্গপাল থাকা, ঝাঁক আসার সময়ে আকাশ অন্ধকার হয়ে যাওয়া ও ভয়ংকর আওয়াজ, ক্ষেতে ফসলের ও সমস্ত সবুজ গাছ-পালার ধ্বংস, গাছের চামড়া ও শিকড়ের ক্ষতি ইত্যাদি। পঙ্গপালের জীবনের চারটি ধাপ এবং প্রত্যেকটি ধাপে কি কি ক্ষতি হয়, যোয়েল তাও নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন (পঙ্গপালের বৈজ্ঞানিক নাম: Schistocerca gregaria, চারটি ধাপ হল adult (প্রাপ্ত) > egg (ডিম) > larva (শূককীট) > pupa (মূককীট), যোয়েল ১:৪, ২:২৫)।
এই সংকটের সময়ে যোয়েল যিহূদাকে মন ফিরানোর ডাক দেন। তিনি নির্দিষ্টভাবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর লোকদের কাছে কথা বলেন: পুরোহিত, বৃদ্ধ নেতা, কৃষক, আঙ্গুর ক্ষেতের চাষী, মাতাল, মদখোর, বৃদ্ধ, যুবক, এমন কি বর ও কনের কাছে। তিনি তাদের চ্যালেঞ্জ করেন যেন তারা নত হয়, উপবাস করে এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা ও কান্না করে, যেন তিনি করুণা দেখান। যোয়েল পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারেন যে, আঘাতটি ঈশ্বর অনুমোদিত এবং শুধুমাত্র ঈশ্বরই তা তুলে নিতে পারেন। যোয়েল তার শ্রোতাদের দেখান ঈশ্বরের প্রতি কিভাবে সাড়া দেওয়া যায়: নম্রভাবে তাঁর এই আংশিক বিচার মেনে নেওয়া, মনেপ্রাণে অনুতপ্ত হওয়া এবং ঈশ্বরের কাছে বিনতি করা।
সম্ভবত, লোকেরা যোয়েলের প্রচারে ভালভাবে সাড়া দিয়েছিল, কারণ পুস্তকের মাঝখানে যোয়েল ঈশ্বরের পুনরুদ্ধারের ঘোষণা করতে পারেন: “তখন সদাপ্রভু তাঁর দেশের জন্য আগ্রহী হবেন এবং তাঁর লোকদের প্রতি মমতা করবেন। সদাপ্রভু তাদের কথার উত্তর দিয়ে বলবেন, “আমি তোমাদের কাছে শস্য, নতুন আংগুর-রস ও তেল পাঠাচ্ছি … সদাপ্রভু বলছেন, “ঝাঁক-বাঁধা পংগপাল, ধ্বংসকারী পংগপাল, লাফিয়ে-চলা পংগপাল ও কামড়ানো পংগপাল যত বছর ধরে তোমাদের ফসল খেয়েছে তা আমি শোধ করে দেব” (যোয়েল ২:১৮-২৫)।
পঙ্গপালের আঘাতটি অল্পক্ষণের মধ্যে পার হয়ে যায়। যোয়েল তার শ্রোতাদের (এবং পরবর্তী প্রজন্ম পাঠকদের) উৎসাহিত করেন, যেন তারা রেহাই পেয়ে আগের অবস্থায় ফিরে না যায়। অর্থাৎ যেন ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি, নম্রতা ও অনুতাপ জরুরী সময়ের অল্প-মেয়াদী বিষয় না হয়, বরং যেন তারা সেই মনোভাব দিনে দিনে ধরে রাখতে থাকে। যোয়েল আরো বুঝতে পারেন যে, পঙ্গপালটি ছিল অল্পক্ষণের জন্য আংশিক একটি বিচার মাত্র। কিন্তু যুগের শেষে একটি চূড়ান্ত বিচার আসবে, “সদাপ্রভুর দিন” (যোয়েল ২:৩১) যা এই আংশিক বিচারের তুলনায় আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যোয়েল ভবিষ্যদ্বাণী দিয়ে বলেন যে, ঈশ্বর তাঁর পবিত্র আত্মা সব ধরণের মানুষদের উপর ঢেলে দেবেন এবং ঈশ্বরের জ্ঞানের ও দয়ার একটি অপূর্ব সময় আসবে (যোয়েল ২:২৮-২৯)। পরিত্রাণ পাওয়ার সুযোগ সব মানুষদেরই দেওয়া হবে “রক্ষা পাবার জন্য যে কেউ সদাপ্রভুকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে” (যোয়েল ২:৩২)।
যোয়েল, যিনি সবাইকে মন ফিরানোর ডাক দিয়েছিলেন (পুরোহিতদের থেকে শুরু করে মাতালদের পর্যন্ত), ঈশ্বর তাকে এখন আরো বড় কিছু ঘোষণা করতে দেন: “সমস্ত লোকদের উপরে” পবিত্রা আত্মা আসবে এবং “রক্ষা পাবার জন্য যে কেউ সদাপ্রভুকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে” (যোয়েল ২:২৮,৩২)। তিনি নির্দিষ্টভাবে পুরুষ ও মহিলা, বৃদ্ধ ও যুবক, স্বাধীন ও দাসদের উল্লেখ করেন। ভাববাণীতে “সব জাতিদের”ও উল্লেখ করা হয় (যোয়েল ৩:২), যাদের “শাস্তির উপত্যকায়” (বা ইংরেজিতে “সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপত্যকায়”) আনা হবে (যোয়েল ৩:১৪)। নতুন নিয়মে এই পদগুলো উদ্ধৃতি করা হয়েছে বলে, এর অর্থ পরিষ্কারভাবে বুঝা যায়: পিতর পদগুলোর উল্লেখ করেন যখন তিনি যিহূদীদের কাছে ও যিহূদী ধর্মে বিভিন্ন জাতির ধর্মাবলম্বীদের কাছে প্রচার করেন। তিনি তাদের সবাইকে যীশু খ্রীষ্টের পরিত্রাণ লাভ করার আহ্বান করেন (প্রেরিত ২:১৪-৪২)। প্রথম মণ্ডলী তাড়াতাড়ি উপসংহারে আসে যে, যীশু ছাড়া “পাপ থেকে উদ্ধার আর কারও কাছে পাওয়া য়ায় না” (প্রেরিত ৪:১২) এবং পিতরের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর আরো বুঝান যে, “প্রত্যেক জাতির মধ্য থেকে যারা তাঁকে ভক্তি করে এবং তাঁর চোখে যা ঠিক তা-ই করে তিনি তাদের গ্রহণ করেন” (প্রেরিত ১০:৩৫)।
সারাংশ করে বলা যায় যে, যোয়েল এই পদগুলোতে একটি অদ্বিতীয় আশা ঘোষণা করেন: যতজন অনুতপ্ত হয়ে নম্রভাবে ঈশ্বরের কাছে আসে ততজনই তাঁর দয়া পায়, উভয় যোয়েলের যুগে এবং বর্তমান সময়েও।
ভাববাদী যোয়েলের নাম বেশিরভাগ পঞ্চাশত্তমী দিনে পিতরের একটি উদ্ধৃতির কারণেই পরিচিত: “তার পরে আমি সমস্ত লোকের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব। তাতে তোমাদের ছেলেরা ও মেয়েরা নবী হিসাবে ঈশ্বরের বাক্য বলবে, তোমাদের বুড়ো লোকেরা স্বপ্ন দেখবে ও তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে। এমন কি, সেই সময়ে আমার দাস ও দাসীদের উপরে আমি আমার আত্মা ঢেলে দেব।… রক্ষা পাবার জন্য যে কেউ সদাপ্রভুকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে” (যোয়েল ২:২৮-২৯,৩২)। কিন্তু এই ভবিষ্যদ্বাণীর পারিপার্শিক অবস্থা কি? কোথা থেকে উদ্ধৃতিটি নেওয়া হল? যোয়েলের সময়ে তার শ্রোতারা এই কথাটি কিভাবে বুঝত?
পুস্তকের লেখক এবং লেখার তারিখ
বাইবেলের ঐতিহাসিক লেখায় ভাববাদী যোয়েলের নাম ও তার বাবা পথুয়েলের নাম উল্লেখ নেই বলে, শুধুমাত্র যোয়েল পুস্তক থেকে তার সম্বন্ধে তথ্য পাওয়া যায়। যোয়েল তার পুস্তকে লেখার তারিখের বিষয়ে কোন রাজা বা ভাববাদীর কথা উল্লেখ করেন না।
তিনি এমন সময়ে যিহূদা ও যিরূশালেম লোকদের কাছে কথা বলেন যখন তারা ঈশ্বরের ভক্তিপূর্ণ ভয়ে চলে এবং পুরোহিতেরা তাদের ভূমিকা সুন্দরভাবে পালন করেন। একটি লক্ষণীয় বিষয় হল যে, যোয়েল বাইবেলের শুধুমাত্র ভাববাদী যিনি তার বাণীতে লোকদের কোনো পাপ বা অন্যায় উল্লেখ করেন না, বিচারের একটা কারণও দেখান না। হয়তো তার অর্থ এই যে, যোয়েল যিহূদার ইতিহাসের শুরুদিকে কথ বলেন যখন জাতি এখনও বেশি মন্দতার দিকে যায় নি। কিন্তু তার বাণীর একটি জরুরী কারণ আছে: এই মুহূর্তে যিহূদার উপর পঙ্গপালের আঘাত এসে দেশকে অনেক ক্ষতি করছে (যোয়েল ১:৪, ২:২৫)। এই পঙ্গপালের আঘাত হল শুধুমাত্র ঐতিহাসিক ঘটনা যা যোয়েল উল্লেখ করেন। কিন্তু কখন পঙ্গপালের আঘাতটি ঘটেছিল? ভিত্তিকভাবে দু’টি উত্তর দেওয়া যায়।
- প্রথম সম্ভাবনা: অনেকে চিন্তা করে যে, যোয়েল প্রায়ই ৮৪০ খ্রীষ্টপূর্বে পরিচর্যা করেন, যখন রাজা আসা ও রাজা যিহোশাফৎ যিহূদার উপরে রাজত্ব করতেন। উভয়ই ছিলেন ঈশ্বরীয় রাজা। কিন্তু যখন তাদের পরবর্তীতে মন্দ রাজা যিহোরাম সিংহাসনে বসেন (৮৪৮-৮৪১ খ্রীঃপূঃ), তখন তিনি দেশকে দেবতাপূজার দিকে প্রভাবিত করেন। ভাববাদী এলিয় রাজা যিহোরামের কাছে একটি চিঠি পাঠান যেখানে তিনি একটি আঘাত উল্লেখ করেন: “কাজেই সদাপ্রভু এখন তোমার লোকদের, তোমার ছেলেদের ও তোমার স্ত্রীদের উপর ভয়ংকর আঘাত করবেন এবং তোমার সমস্ত সম্পত্তি ধ্বংস করবেন” (২ বংশা ২১:১৪)। হয়তো এই আঘাতটি ছিল যোয়েলের পঙ্গপালের আঘাত, যদিও তা নিশ্চয়তার সঙ্গে বলা যায় না। যদি আমরা ধরি যে যোয়েল এই সময়ে পরিচর্যা করেন, তবে তার পুস্তকের শুরুতে রাজা উল্লেখ না করার কারণ হতে পারে যে, তিনি ঠিক যিহোরামের পরেই লেখেন, যখন অথলিয়া নামে একটি রাণী যিহূদার সিংহাসন দখল করেছিলেন (৮৪১-৭৩৫ খ্রীঃপূঃ, ২ বংশা ২২:১০-২৩:২১) এবং তাকে অধিকারগত রাণী মনে না করে যোয়েল লেখার তারিখের ক্ষেত্রে তার নাম উল্লেখ করেন না।
- দ্বিতীয় সম্ভাবনা: যোয়েল কোন রাজার নাম উল্লেখ করেন না কারণ তিনি অনেক পড়ে লেখেন, অর্থাৎ বাবিলে নির্বাসনের পরে, যখন যিহূদা দেশে আর রাজা নেই (ইষ্রা, নহিমিয় পুস্তকের সময়ে)। সেই সময়েও যিহূদার অনেকে ঈশ্বরের ভক্তিতে চলত এবং জাতির আত্মিক জীবনের কেন্দ্র ছিল যিরূশালেমের উপাসনা-ঘর। তাই যদি হয় তবে যোয়েল পুস্তকের লেখার তারিখ হল ৪০০ খ্রীষ্টপূর্বের দিকে।
একটি ধ্বংসাতক পঙ্গপালের আঘাত
যোয়েল পুস্তকে একটি লক্ষণীয় বিষয় হল যে, যোয়েল যিহূদা লোকদের কোনো পাপ বা অন্যায় উল্লেখ করেন না, বিচারের একটা কারণও দেখান না। কিন্তু তারপরেও যোয়েল তাদেরকে মনেপ্রাণে অনুতপ্ত হতে বলেন, কারণ সেই মুহূর্তে যিহূদার উপর পঙ্গপালের আঘাত এসেছিল বলে দেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছিল (যোয়েল ১:৪, ২:২৫)। ভাববাদী যোয়েল পঙ্গপালটি ঈশ্বরের কাছ থেকে সাবধানবাণী ও আংশিক বিচার হিসাবে দেখেন, যেমন মোশির আইন-কানুনেও বলা হয়েছে (২য় বিবরণ ২৮:৩৮)। মিসর দেশে পঙ্গপালের আঘাতের সময় থেকে পঙ্গপালের অর্থই হল ‘ঈশ্বরের অভিশাপ’ (যাত্রা ১০:১৩-১৫, ১ রাজা ৮:৩৭-৩৯, আমোষ ৪:৯)। মধ্য প্রাচ্য দেশে আধুনিক যুগেও পঙ্গপাল এমন ভয়ংকর বিষয় যে, স্থানীয় লোকেরা ‘পঙ্গপাল’ শব্দটি কোন মতে উচ্চারণ করতে রাজি না।
যোয়েল পঙ্গপালের একটি প্রাণবন্ত বর্ণনা দেন, যার আধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সাথেও যথেষ্ট মিল আছে (যোয়েল ১:১০-১২,১৭-৩০, ২:১-১১)। তিনি অনেক খুঁটিনাটি বিষয় উল্লেখ করেন, যা আধুনিক যুগের পঙ্গপালের ক্ষেত্রেও ঘটে থাকে:
- একটি পঙ্গপালের ঝাঁকের অদ্ভূত সংখ্যা (যোয়েল ১:৬ “অসংখ্য”, যোয়েল ২:১১ ”সংখ্যা গোণা যায় না” )। প্রকৃতপক্ষে পঙ্গপালের একটি ছোট ঝাঁকে সহজে ৫ কোটি পোকা থাকতে পারে। অনুমান করা হয় যে, বড় ঝাঁকে ২৪০০ কোটি পর্যন্ত পঙ্গপাল থাকতে পারে।
- পঙ্গপালের আগমনে আকাশ অন্ধকার হয়ে যায় (যোয়েল ২:২ “তা অন্ধকার ও গাঢ় অন্ধকারের দিন, মেঘের ও ঘোর অন্ধকারের দিন”, যোয়েল ২:১০ “চাঁদ ও সূর্য অন্ধকার হয়ে যায় এবং তারাগুলো আলো দেওয়া বন্ধ করে দেয়”)।
- পঙ্গপালের ঝাঁক উড়ে আসার সময়ে দূর থেকে তাদের আওয়াজ শোনা যায় (যোয়েল ২:৫ “রথের শব্দের মত, নাড়া পোড়ানো আগুনের শব্দের মত তারা পাহাড়ের উপর দিয়ে লাফিয়ে আসে। তারা যুদ্ধের জন্য সারি বাঁধা একদল শক্তিশালী সৈন্যের মত”, যোয়েল ২:১০ “তাদের সামনে পৃথিবী কাঁপে, আকাশ কাঁপতে থাকে”)।
- ক্ষেতের ফসল ও সমস্ত সবুজ গাছ-পালার ধ্বংস (যোয়েল ১:৭,১০-১২,১৭-২০, ২:৩)।
- পঙ্গপাল গাছের চামড়া এবং গাছের শিকড়ও খেয়ে ফেলে, যার ফলে গাছের বহুবছরের ক্ষতি হয় (যোয়েল ১:৭,১০-১২)।
- যোয়েল পঙ্গপালের জীবনের চারটি ধাপ এবং প্রত্যেকটি ধাপ দ্বারা কি কি ক্ষতি হয়, তা নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন। পঙ্গপালের আধুনিক বৈজ্ঞানিক নাম: Schistocerca gregaria। চারটি ধাপ হল adult (প্রাপ্ত) > egg (ডিম) > larva (শূককীট) > pupa (মূককীট), যোয়েল ১:৪, ২:২৫)।
- পঙ্গপাল যদি এক জায়গায় নেমে পড়ে, এক হাটু গভীর পর্যন্ত পড়তে পারে। পরবর্তীতে তারা মাটিতে ডিম দেয়, একটি বর্গ মিটারে সহজে ৫০০০ ডিম থাকতে পারে। যখন ডিম থেকে শূককীটগুলো বের হয়, সেগুলো মাটিতে গাছ-পালার সব চিকন শিকড়গুলো খেয়ে ফেলে, যার ফলে গাছের দীর্ঘ-মেয়াদী ক্ষতি হয়। পরে মূর্ককীট পর্যায়ে এসে সেগুলো মাটির উপরে হাঁটাহাঁটি শুরু করে এবং সারি বেঁধে এগিয়ে যায়, দেওয়ালে উঠে, বাসায় ঢোকে ইত্যাদি (যোয়েল ২:৬-৯)।
শ্রোতাদের কাছে যোয়েলের সংবাদ
পঙ্গপালের দুর্দশার মাঝখানে দাঁড়িয়ে যোয়েল লোকদেরকে জরুরীভাবে অনুতপ্ত হতে আহ্বান করেন। তিনি নির্দিষ্টভাবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর লোকদের কাছে কথা বলেন: পুরোহিত, সদাপ্রভুর সেবাকারী, বৃদ্ধ নেতা, কৃষক, আঙ্গুর ক্ষেতের চাষী, মাতাল, মদখোর, বৃদ্ধ, যুবক, এমন কি বর ও কনের কাছে। তিনি আশা করেন যে, সাধারণ লোকেরা ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি সাড়া দেবে, সব কিছু রেখে জরুরীভাবে ঈশ্বরকে অন্বেষণ করবে এবং নত হয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উপবাস, প্রার্থনা, বিনতি ও কান্না করবে, কারণ তিনিই করুণার ঈশ্বর।
যোয়েল পরিষ্কারভাবে দেখান যে, পঙ্গপালের আঘাতটি ঈশ্বরের অনুমতিতে এবং নির্দিষ্ট কারণে ঘটছে। শুধুমাত্র ঈশ্বর দ্বারাই পঙ্গপালটি তুলে নেওয়া হবে। যোয়েল যিহূদা লোকদেরকে দেখান যে, ঈশ্বরের প্রতি উপযুক্ত সাড়া হল নম্র হয়ে তাঁর বিচার মেনে নেওয়া এবং মনে প্রাণে অনুতপ্ত হওয়া। সবার কাছে আদর্শ হয়ে তিনি নিজেই তা-ই করেন।
যোয়েল লোকদেরকে অনেক ছোট ব্যবহারিক আদেশ দেন “হে বৃদ্ধ লোকেরা, তোমরা এই কথা শোন; হে দেশে বাসকারী লোকেরা, তোমরা সবাই শোন। … ওহে মাতালেরা, জেগে ওঠো ও কান্নাকাটি কর। ওহে সমস্ত মদখোর, তোমরা টাটকা আংগুর-রসের মদের জন্য বিলাপ কর … তোমরা … বিলাপ কর … পুরোহিতেরা শোক করছে … লজ্জিত হও … হে পুরোহিতেরা, তোমরা চট পরে শোক প্রকাশ কর; বেদীতে যারা সেবার কাজ কর তোমরা বিলাপ কর। যারা আমার ঈশ্বরের সেবা কর তোমরা এসে চট পরে রাত কাটাও … তোমরা পবিত্র উপবাসের ব্যবস্থা কর; একটা বিশেষ সভা ডাক। বৃদ্ধ নেতাদের ও দেশে বাসকারী সবাইকে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘরে ডেকে আন এবং সদাপ্রভুর কাছে কান্নাকাটি কর” (হোশেয় ১:২-১৪)। যোয়েল যিহূদা লোকদেরকে জরুরীভাবে ও গুরুত্বের সঙ্গে সাড়া দিতে আদেশ দেন, সঙ্গে তিনি তাদেরকে তা করতে ব্যবহারিক পথও দেখান।
সম্ভবত, লোকেরা যোয়েলের প্রচারে সাড়া দিয়েছিল। কারণ দেখা যায় যে, পুস্তকের মাঝখানে ঈশ্বর যোয়েলকে পুনরুদ্ধারের ঘোষণা দিতে বলেন “তখন সদাপ্রভু তাঁর দেশের জন্য আগ্রহী হবেন এবং তাঁর লোকদের প্রতি মমতা করবেন। সদাপ্রভু তাদের কথার উত্তর দিয়ে বলবেন, “আমি তোমাদের কাছে শস্য, নতুন আংগুর-রস ও তেল পাঠাচ্ছি … সদাপ্রভু বলছেন, “ঝাঁক-বাঁধা পংগপাল, ধ্বংসকারী পংগপাল, লাফিয়ে-চলা পংগপাল ও কামড়ানো পংগপাল যত বছর ধরে তোমাদের ফসল খেয়েছে তা আমি শোধ করে দেব” (যোয়েল ২:১৮-২৫)। যোয়েল লোকদের নিশ্চয়তা দেন যে, যদিও ঈশ্বর বিচার করেন তবুও তিনি ক্রোধ বা ক্ষোভ ধরে রাখেন না। যখন লোকেরা মন ফিরায় ঈশ্বর তখনই তাদেরকে ক্ষমা করেন এবং তাদেরকে পুনরুদ্ধারের প্রতিজ্ঞা দেন – এমন চমৎকার একটি প্রতিজ্ঞা যা লাভ করতে কেউ যোগ্য নয়। ঈশ্বরেরই নাম উদ্ধারকর্তা এবং পুনরুদ্ধার হল তাঁরই কাজ। বিচারের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তিনি তা পিছাতে আগ্রহী ও সক্ষম। আমরাও যদি নিজের উপরে সমস্যা টেনে নিয়ে আসি, অনুতপ্ত হলে প্রতিজ্ঞাটি আমাদের জন্য প্রযোজ্য: “তা আমি শোধ করে দেব।”
দীর্ঘ দিনের দৃষ্টি
পঙ্গপালের আঘাতের বিপদ যখন কেটে যায় তখন লোকেরা সহজেই আবার আগের মত চলাফেরা করতে শুরু করে। যোয়েল তার শ্রোতাদের এবং পরবর্তী যুগের পাঠদেরকে উৎসাহিত করেন, যেন তারা শুধুমাত্র জরুরী সময়ে নম্র, অনুতপ্ত ও ঈশ্বর ভক্ত না হয় বরং যেন তারা এই মনোভাব দিনে দিনে ধরে রাখতে থাকে। আরো অনেক দূরে দেখে যোয়েল বুঝতে পারেন যে, পঙ্গপাল ছিল একটি ক্ষণিক আংশিক বিচার মাত্র। কিন্তু যুগের শেষে একটি চূড়ান্ত বিচার আসবে, “সদাপ্রভুর দিন” (যোয়েল ২:৩১) যা এই আংশিক বিচারের তুলনায় আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু “সদাপ্রভুর দিন” শুধুমাত্র হুমকিস্বরূপ ও ভয়ংকর, এমন নয়। বরং তার সঙ্গে সংযুক্ত আছে অদ্ভূত একটি প্রতিজ্ঞা: “তোমাদের ছেলেরা ও মেয়েরা নবী হিসাবে ঈশ্বরের বাক্য বলবে, তোমাদের বুড়ো লোকেরা স্বপ্ন দেখবে ও তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে। এমন কি, সেই সময়ে আমার দাস ও দাসীদের উপরে আমি আমার আত্মা ঢেলে দেব” (যোয়েল ২:২৮-২৯)। যোয়েল, যিনি সবাইকে মন ফিরানোর ডাক দিয়েছিলেন (পুরোহিতদের থেকে শুরু করে মাতালদের পর্যন্ত), ঈশ্বর তাকে এখন আরো বড় কিছু ঘোষণা করতে দেন: “সমস্ত লোকদের উপরে” পবিত্রা আত্মা আসবে। তিনি নির্দিষ্টভাবে পুরুষ ও মহিলা, বৃদ্ধ ও যুবক, স্বাধীন ও দাসদের উল্লেখ করেন। এছাড়া পরিত্রাণ পাওয়ার সুযোগ সব মানুষদেরই দেওয়া হবে “রক্ষা পাবার জন্য যে কেউ সদাপ্রভুকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে” (যোয়েল ২:৩২)।
পিতর পঞ্চাশত্তমী-পর্বের দিনে পবিত্র আত্মার আগমন (৩০ খ্রীঃ) যোয়েলের এই ভাববাণীর পূর্ণতা হিসাবে ঘোষণা করেন (প্রেরিত ২:১৬-১৭)। তিনি সেই পঞ্চাশত্তমী দিনকে “শেষকাল” বলেন (প্রেরিত ২:১৭), অর্থাৎ শেষকাল সেই দিনই শুরু হয়েছে। নতুন নিয়মে তাই “শেষকাল” শুধুমাত্র যীশুর দ্বিতীয় আগমনকে বুঝায় না, তা মণ্ডলীর যুগও বুঝায়, যাতে আমরা এখন ২০০০ বছর ধরেই আছি!
যোয়েলের ভাববাণীতে তিনি “সব জাতিদের”ও উল্লেখ করেন (যোয়েল ৩:২), যাদের “শাস্তির উপত্যকায়” (বা ইংরেজিতে “সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপত্যকায়”) আনা হবে (যোয়েল ৩:১৪)। নতুন নিয়মে এই পদগুলো উদ্ধৃতি করা হয়েছে বলে, এর অর্থ পরিষ্কারভাবে বুঝা যায়: পিতর পঞ্চাশত্তমী-পর্বের দিনে শ্রোতাদের সবাইকে যীশু খ্রীষ্টের পরিত্রাণ লাভ করার আহ্বান করেন (প্রেরিত ২:১৪-৪২)। প্রথম মণ্ডলী তাড়াতাড়ি উপসংহারে আসে যে, যীশু ছাড়া “পাপ থেকে উদ্ধার আর কারও কাছে পাওয়া য়ায় না” (প্রেরিত ৪:১২) এবং পিতরের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর আরো বুঝান যে, “প্রত্যেক জাতির মধ্য থেকে যারা তাঁকে ভক্তি করে এবং তাঁর চোখে যা ঠিক তা-ই করে তিনি তাদের গ্রহণ করেন” (প্রেরিত ১০:৩৫)। তিনি উপসংহারে আরো বলেন: “জলে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করতে কি এই লোকদের কেউ বাধা দিতে পারে? তারা তো আমাদেরই মত পবিত্র আত্মাকে পেয়েছে” (প্রেরিত ১০:৪৭).
প্রেরিত পৌল যখন যোয়েলের এই ভাববাণী রোমীয় ১০:১১-১৩ পদে উদ্ধৃতি করেন, তিনি তা ঠিক পিতরের মত ব্যাখ্যা করেন: যোয়েলের কথা “রক্ষা পাবার জন্য যে কেউ সদাপ্রভুকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে” (যোয়েল ২:৩২) উদ্ধৃতি করে পৌল বুঝান যে, যিহূদী বা গ্রীক, অর্থাৎ যে কোন জাতির মানুষ ঈশ্বরের নাম ডাকলে উদ্ধার পাবে।
এভাবে যোয়েল আশার ভাববাদী: যত মানুষ নম্র হয়ে ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসে এবং তাঁর নাম ডাকেন ততজনই তার দয়া পাবে, যোয়েলের যুগে এবং বর্তমান সময়েও। এই সত্যের আলোতে যোয়েলের পরবর্তী কথাগুলো (যোয়েল ৩) ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন, যদিও সেগুলো বেশ কঠিন বলে অনেক বার তর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
যোয়েল ৩ অধ্যায়
যোয়েল তার পুস্তকের তৃতীয় অধ্যায় একটি উদ্ধারবাণী দিয়ে শুরু করেন: “শোন, সেই দিনে ও সেই সময়ে যখন আমি যিহূদা ও যিরূশালেমের অবস্থা ফিরাব …” (যোয়েল ৩:১)। এই বাণী কখন পূর্ণ হয়? একটি সম্ভাব্য উত্তর হল যে, তা পূর্ণ হয়েছে যখন ৫৩৬ খ্রীষ্টপূর্বে যিহূদীরা সরুব্বাবিলের নেতৃত্বে বাবিলের নির্বাসন থেকে প্রতিজ্ঞাত দেশে ফিরে যায় (ইষ্রা ১-৬)। কিন্তু ঠিক আগের পদগুলো (যোয়েল ২:২৮-৩২) নতুন নিয়মে উদ্ধৃতি করা হয়েছে বলে এবং এ্যাপোকলিপ্টিক অর্থাৎ প্রকাশিত বাক্যের মত ভাষাও ব্যবহার করা হয়েছে বলে (যোয়েল ২:৩০-৩১), আমাদের অন্য ব্যাখ্যাও বিবেচনা করতে হবে।
পরবর্তী পদগুলো (যোয়েল ৩:২-৩) বলে: “তখন আমি সব জাতিদের জড়ো করব এবং যিহোশাফটের উপত্যকায় তাদের নামিয়ে আনব। সেখানে আমার সম্পত্তি, অর্থাৎ আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের বিষয় নিয়ে আমি তাদের বিরুদ্ধে বিচার করব, কারণ তারা জাতিদের মধ্যে আমার লোকদের ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং আমার দেশ ভাগ করেছিল। তারা আমার লোকদের ভাগ করে নেবার জন্য গুলিবাঁট করেছিল এবং বেশ্যা পাবার জন্য তারা ইস্রায়েলীয় ছেলেদের বিক্রি করেছিল; আংগুর-রসের জন্য তারা ইস্রায়েলীয় মেয়েদের বিক্রি করেছিল যাতে তারা আংগুর-রস খেতে পারে।” এই বাণীর অর্থ কি? তা কখন পূর্ণ হয়? “জাতিদের মধ্যে আমার লোকদের ছড়িয়ে দিয়েছিল” এই কথা হয়তো বাবিলে যিহূদীদের নির্বাসন বুঝায় (যদি তা-ই হয় তবে যোয়েল পুস্তকের লেখার তারিখ নির্বাসনের পরে)। অথবা তা আগের শতাব্দীর ঘটনাগুলো বুঝায় যখন পরজাতিরা বিভিন্ন সময়ে যিহূদাকে আক্রমণ, দখল ও লুটপাট করে এবং যিহূদার লোকদেরকে দাস হিসাবে বিক্রি (যদি তা-ই হয় তবে যোয়েল পুস্তক লেখার তারিখ আগেও হতে পারে, যেমন ৮৪০ খ্রীঃপূঃ)। ঈশ্বর যুগের শেষে চূড়ান্তভাবে বিচার করবেন, এই কথাটি প্রকাশিত বাক্য ২০ অধ্যায়েও পাওয়া যায়।
এই ব্যাখ্যাটি যোয়েলের পরিবর্তী পদগুলোর সাথে মিল আছে (যোয়েল ৩:৯-১৪): “তোমরা জাতিদের মধ্যে এই কথা ঘোষণা কর: “তোমরা পবিত্র যুদ্ধের জন্য নিজেদের প্রস্তুত কর, বলবান লোকদের ডেকে আন। সব যোদ্ধারা কাছে গিয়ে আক্রমণ করুক … জাতিদের ডেকে আনা হোক; তারা যিহোশাফটের উপত্যকায় এগিয়ে যাক, কারণ সেখানে আমি চারদিকের সব জাতিদের বিচার করতে বসব। তাদের দুষ্টতা অনেক, সেইজন্য তোমরা কাস্তে লাগাও, কারণ ফসল পেকেছে। তোমরা এসে আংগুর মাড়াও … আংগুর-রসের পাত্র থেকে রস উপ্চে পড়ছে … শাস্তির উপত্যকায় অনেক লোকের ভিড়, অনেক লোকের ভিড়, কারণ শাস্তির উপত্যকায় সদাপ্রভুর দিন কাছে এসে গেছে।”
এই পদগুলোর অর্থ কি? তা কখন পূর্ণ হয়? পদগুলোতে এ্যাপোকালিপ্টিক ভাষা ব্যবহৃত বলে, তা সম্ভবত যুগের শেষে চূড়ান্ত বিচার বুঝায়: আঙ্গুর ফসল, আঙ্গুর মাড়ানো (যিশাইয় ৬৩, প্রকাশিত বাক্য ১৪:১৭-২০), শেষ যুদ্ধের বর্ণনা (প্রকাশিত ১৯), যিহোশাফট নামের উল্লেখ (যিহোশাফট নামের অর্থ হল ‘যিহোবা বিচার করেন’) এবং কাস্তে লাগানো ও ফসল কাটা (প্রকাশিত ১৪:১৪-১৬), এই সব শব্দ বা রূপকগুলো বাইবেলে চূড়ান্ত বিচারের বর্ণনায় ব্যবহৃত।
ইতিহাসের এই শেষ সময়ে মানুষ কি এখনও ঈশ্বরকে গ্রহণ বা অগ্রাহ্য করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে? অথবা “সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপত্যকা” হল সেই স্থান যেখানে মানুষের আগের সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হয়?
যোয়েল ৩:৪-৮ পদে ঈশ্বর সোর, সিদোন ও পলেষ্টীয়দের দোষ ধরেন: তারা ঈশ্বরের জাতিকে লুটপাট করেছে, লুট করা মাল তাদের দেবতার কাছে সমর্পিত করেছে এবং এভাবে ঈশ্বরকে অসম্মান দেখিয়েছে। সোর, সিদোন, ও পলেষ্টীয়েরা আগের যুগে যিহূদার শত্রু ছিল, যখন বড় সাম্রাজ্যগুলো (যেমন আসিরিয়া, বাবিল ও মাদিয়-পারস্য) এখনও ক্ষমতায় উঠে আসে নি। ঈশ্বর তাঁর লোকদের নিশ্চয়তা দেন যে, শত্রুদের অন্যায় কাজের কারণে তাদেরকে অবশ্যই বিচার করা হবে।
যোয়েল ৩:১৬ পদ বলে: “সদাপ্রভু সিয়োন থেকে গর্জন করবেন, যিরূশালেম থেকে জোরে কথা বলবেন; পৃথিবী ও আকাশ কাঁপতে থাকবে। কিন্তু সদাপ্রভুই হবেন তাঁর লোকদের জন্য আশ্রয়স্থান, ইস্রায়েলের লোকদের জন্য একটা দুর্গ”। ভয়ংকর যুদ্ধ ও বিচারের বর্ণনার মাঝখানে ঈশ্বর তাঁর লোকদেরকে নিশ্চয়তা দেন যে, তিনি তাদেরকে উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন।
যোয়েল ৩:১৭-১৮ পদ বলে: “সদাপ্রভু বলছেন, “তখন তোমরা জানবে যে, আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু; আমি সিয়োনে, আমার পবিত্র পাহাড়ে বাস করি। যিরূশালেম পবিত্র হবে; বিদেশীরা আর কখনও সেখানে যাবে না। “সেই দিন বড় বড় পাহাড়গুলো থেকে প্রচুর নতুন আংগুর-রস পাওয়া যাবে আর ছোট ছোট পাহাড়গুলো থেকে প্রচুর দুধ পাওয়া যাবে। যিহূদার সব জলের খাদগুলো দিয়ে জল বয়ে যাবে। সদাপ্রভুর ঘর থেকে একটা ফোয়ারা উঠে শিটীমের উপত্যকাকে জল দান করবে”। এখানে ঈশ্বরের উদ্ধারের একটি ছবি দেখানো হয়েছে। ঈশ্বর তাঁর লোকদের সঙ্গে সঙ্গে আছেন এবং তিনি তাদেরকে প্রাচুর্য ও আশীর্বাদ দান করবেন। সদাপ্রভুর ঘর থেকে জল বের হয়ে তা জীবনদায়ী স্রোত হয়ে যাবে, এই ছবি যিহিষ্কেল ৪৭ অধ্যায়ে এবং প্রকাশিত বাক্য ২২ অধ্যায়েও ব্যবহৃত। এছাড়া যীশু তা ব্যবহার করেন যখন তিনি বলেন যে, তাঁর কাছে আসলে “জীবন্ত জল” পাওয়া যাবে (যোহন ৪:১০, ৭:৩৭)। পদে উল্লিখিত “শিটীমের উপত্যকা” হল যর্দন উপত্যকায় মরু সাগরের কাছাকাছি একটি খুব গরম, শুকনা ও নোনতার জায়গা। ঈশ্বর থেকে সেই জল এমন কি এই এলাকায় পৌঁছিয়ে জীবন দান করবে। “শিটীম” শব্দের অর্থ হল ‘বাবলা গাছ’, যা এমন এলাকায় বাঁচতে পারে যেখানে বেশি গাছ আর নেই। ঈশ্বর এমন কি শিটীম উপত্যকায় জলের যোগান দেবেন।
যোয়েল ৩:১৯ পদ বলে: “কিন্তু মিসর ধ্বংসস্থান হবে আর ইদোম ধ্বংস হয়ে যাওয়া মরু-এলাকা হবে”। এই ভবিষ্যদ্বাণী কিভাবে পূর্ণ হয়? ইদোমের ক্ষেত্রে তা পূর্ণ হয়েছে, সেই সময়ের ইদোম দেশ হলেন আধুনিক যুগের যর্দন দেশের দক্ষীণে অবস্থিত একটি নির্জন এলাকা। মিসরের ক্ষেত্রে তা পূর্ণ হয় নি এবং সম্ভবত ভবিষ্যতেও পূর্ণ হবে না। ঈশ্বরের বিচারবাণীগুলো প্রায় সব শর্তাধীন, অর্থাৎ যদি একটি জাতি অনুতপ্ত হয় তবে ঈশ্বর বিচার বাণী বাতিল করে দেন।
যোয়েল ৩:২০ পদ বলে: “আগে এদের আমি দোষী বলে ধরেছিলাম, কিন্তু এখন তাদের দোষ আমি ক্ষমা করব। লোকেরা যিহূদায় চিরকাল বাস করবে ও যিরূশালেমে বাস করবে বংশের পর বংশ ধরে, আর আমি সদাপ্রভু সিয়োনে বাস করব।” এই ভবিষ্যদ্বাণী আক্ষরিকভাবে নিলে তবে এখানে একটি দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়: ৭০ খ্রীষ্টাব্দে রোমীয়েরা যিরূশালেম শহরকে ধ্বংস ও জোরপূর্বকভাবে জনশূন্য করে দেয়। এভাবে বেশ কিছু শতাব্দী ধরে যিরূশালেমে কেউ বাস করে না, যা যোয়েলের এই কথার সাথে (“চিরকাল বাস করবে”) মিল নেই। যদি পদটি রূপকভাবে ব্যাখ্যা করা হয় তবে তা সব জাতির বিশ্বাসীদের, অর্থাৎ মণ্ডলীকে বুঝায়, যা অত্যাচারিত হলেও কখনও শেষ হবে না।
যোয়েল ৩:২১ পদ ঈশ্বরের বিচারের ও প্রতিশোধের নিশ্চয়তা দিয়ে পুস্তকটি সমাপ্ত করে।
যোয়েল ৩ অধ্যায়ের অর্থ কি এবং তার পূর্ণতা কি?
এই অধ্যায়ের ব্যাখ্যা বিভিন্নভাবে দেওয়া হয়। সারাংশ হিসাবে বলা যায় যে, দু’টি ব্যাখ্যা করা সম্ভব:
- সম্ভাবনা ১ এই পদগুলো পূর্ণ হয়েছে যখন যিহূদীরা ৫৩৬ খ্রীষ্টপূর্বে বাবিলে নির্বাসন থেকে ফিরে এসে আবার প্রতিজ্ঞাত দেশে বাস করে। সিদোন, সোর ও পলেষ্টীয়দের কি সেই সম বিচার করা হয়েছিল? আসলে হ্যাঁ, তাদের সবাইকে সেই সময় আত্রমণ ও পরাজিত করা হয়, কিন্তু যিহূদাকেও সাথে আক্রমণ ও পরাজিত করা হয়। একারণে তা যোয়েলের কথার সাথে তোমন মিলে না।
- সম্ভাবনা ২ এই পদগুলো ইতিহাসে পূর্ণ হয় নি, তাই তা শেষকালে কোনো সময়ে ঘটবে। প্রকৃতপক্ষে তিন অধ্যায়ের বাণীটি শেষকালের কথা হিসাবে প্রারম্ভিকা করা হয়েছে (যোয়েল ২:২৮-৩২) এবং বেশ কয়েকটি শেষকাল ধরণের শব্দ ও রূপকও পাওয়া যায়।
- সম্ভাবনা ২এ বাণীটি আক্ষরিকভাবে ব্যাখ্যা করলে তবে বলতে হয় যে তা পূর্ণ হয় নি। বরং শেষকালে কোন সময়ে ঘটবে, যখন ঈশ্বর রক্ত-মাংস যিহূদী জাতিকে উদ্ধার করবেন এবং সমস্ত অন্য জাতিদের বিচার করবেন।
- সম্ভাবনা ২বি বাণীটি রূপকভাবে ব্যাখ্যা করলে তবে বাণিটি হল পুরাতন নিয়মের ভাষায় নতুন নিয়মের মণ্ডলীর একটি শক্তিশালী বর্ণনা: ঈশ্বর ইস্রায়েলকে (অর্থাৎ তাঁর লোকদেরকে বা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্তদেরকে) উদ্ধার করবেন এবং অন্য জাতিদেরকে (অর্থাৎ যারা মন্দ, অত্যাচারী ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধীয়) বিচার করবেন। প্রকৃতপক্ষে এই ব্যাখ্যাটি আগের পদগুলোর সাথে মিলে: যোয়েল ২:২৮-৩২ পদে নতুন নিয়মের মণ্ডলীর বর্ণনা দেয় এবং “যে কেউ সদাপ্রভুকে ডাকবে” এই কথাটি দেখায় যে, এখন তা আর জাতিগত বিষয় নয় বরং ঈশ্বরের প্রতি ব্যক্তিগত সাড়া দেওয়ার বিষয়। এছাড়া প্রকাশিত বাক্যে যখন যোহন ভক্তিহীনদের দ্বারা অত্যাচারিত মণ্ডলীর উদ্ধার নিয়ে কথা বলেন, তিনি যোয়েল পুস্তক থেকে বেশ কিছু শব্দ ও রূপক ব্যবহার করেন। তাই এভাবে এই ব্যাখ্যাটি আরো সমর্থন পায়।
যোয়েলের পুস্তকে ভিত্তিক বিষয়গুলো পরিস্কারভাবে প্রকাশ পায়: একটি শক্তিশালী ভয়ংকর “সদাপ্রভুর দিন” আসবে, যখন ঈশ্বর অবশেষে বিচার করবেন। “সদাপ্রভুর দিন” বিচারের দিন – কিন্তু কাদের বিচার করা হবে?
- সম্ভাবনা ২এ > যত জাতি রক্ত-মাংস ইস্রায়েল জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে, তাদেরকে বিচার করা হবে।
- সম্ভবনা ২বি > জাতিদের মধ্যে যারা মন্দ, অর্থাৎ ঈশ্বরের লোকদেরকে অত্যাচার করে, তাদেরকে বিচার করা হবে।
“সদাপ্রভুর দিন” হবে একটি সুরক্ষা, উদ্ধার, প্রমাণিত হওয়ার এবং পুনরাুদ্ধারের দিন – কিন্তু কাদের জন্য?
- সম্ভাবনা ২এ > রক্ত-মাংস ইস্রায়েল জাতির জন্য তা উদ্ধারের দিন।
- সম্ভাবনা ২বি > ঈশ্বরের লোকদের জন্য, অর্থাৎ যে কোন জাতি থেকে বিশ্বাসীদের জন্য তা উদ্ধারের দিন।
ইস্রায়েল জাতি প্রায়ই “সদাপ্রভুর দিন” সম্বন্ধীয় ভবিষ্যদ্বাণীগুলো আনন্দের বিষয় মনে করত, অর্থাৎ তাদের শত্রুদের বিনষ্ট হওয়ার দিন হিসাবে বুঝত। এই চিন্তা নতুন নিয়মের যিহূদীদের মধ্যেও দেখা যায়। কিন্তু যোয়েল সাবধাণ করেন: যে জাতিকে অনেক কিছু দেওয়া হয়েছে, সেই জাতিকে ঈশ্বর অবশ্যই যাছাই করে দেখবেন। “সাদপ্রভুর দিন” আনন্দের দিন নয় বরং তা হল পরীক্ষার দিন। নম্রতায় সেই দিনের জন্য প্রস্তুত থাকা, তা হল সঠিক মনোভাব।
কিছু চিন্তা ও প্রয়োগ
যদি আমরা বর্তমান যুগের ঘটনাগুলো বুঝতে চাই তবে ঈশ্বরের আইন-কানুন ও নীতিমালা বুঝা আবশ্যক। বর্তমান যুগের বিষয়গুলো ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যদি দেখি তবে আমরা সঠিক আচরণ করতে সক্ষম হব।
যে কোন জরুরীতে পড়লে আমাদের কি করা দরকার? যোয়েলের উত্তর হল: নম্রতায় অনুতপ্ত হওয়া এবং ঈশ্বরকে অণ্বেষণ করা। অনুতাপ সব কিছু পরিবর্তন করে ফেলে। অনুতাপের কারণেই আমাদের জীবন ভালদিকে মোড় নেয়। আশাহীনতা নয় বরং নম্রতা হল বর্তমান সংকটে ঈশ্বরীয় দৃষ্টি। ‘সব হারানো’, ‘পরিবর্তন সম্ভব নয়’, ‘আশা নেই’ এই সব চিন্তাগুলো কখনও ঠিক নয় – কারণ ঈশ্বর বলতে কেউ আছেন। তিনি উদ্ধারের ও পুনরুদ্ধারের সেই মহান ঈশ্বর। এমন কিছু নেই যা তিনি ভাল দিকে নিয়ে আসতে না পারেন।
এমন কোন দ্বন্দ্ব বা সমস্যা নেই যা নম্রতা ও ঈশ্বরকে ডাকার মধ্য দিয়ে সমাধান করা না যায়। আমি নিজেই যদি প্রত্যেক মুহূর্তে অনুতপ্ত হওয়ার জীবন করি তবে অন্যদের অনুতপ্ত হওয়ার অনুপ্রেরণা দিতে পারি।
যোয়েল সমস্যার সমাধান করার পথ দেখান: ‘নিচ থেকে উপর দিকে’ এবং ‘ভিতর থেকে বাইরে দিকে’, অর্থাৎ যোয়েল সাধারণ লোকদের ব্যক্তিগতভাবে অনুতপ্ত হতে বলেন এবং তিনি দাবি করেন যে এভাবেই সংকট কেটে যাবে। কিন্তু আধুনিক যুগে আমরা প্রত্যেক সমস্যা ঠিক বিপরীত পথে সমাধান করতে চাই: ‘উপর থেকে নিচ দিকে’ এবং ‘বাইরে থেকে ভিতর দিকে’, যেমন আমরা বলি ‘সরকার যদি পরিবর্তিত হত’ অথবা ‘পরিবেশ যদি আরো ভাল হত’। কিন্তু বাইবেল বলে যে, পরিবর্তন আসে ‘নিচ থেকে উপর দিকে’ এবং ‘ভিতর থেকে বাইরে দিকে’!
ভবিষ্যৎ এবং শেষকাল সম্বন্ধীয় যে কোন ভয় নিয়ে আমরা ঈশ্বরের উপরে নির্ভর করতে পারি, আসলে আমাদেরকে তাঁর উপর নির্ভর করতেই হবে। কোনো জটিল বা ভয়ংকর শেষকাল সম্বন্ধীয় শিক্ষা নিয়ে ভয় পাবেন না – যারা ঈশ্বরের নাম ডাকে, তাদের ভয়ের কিছু নেই।
যোয়েলের ভবিষ্যদ্বাণীর ঐতিহাসিক পূর্ণতা
যোয়েল ২:১৮–২০ | পঙ্গপালের সংকট থেকে উদ্ধার | অল্পক্ষণের মধ্যে (৮৩০ বা ৪০০ খ্রীঃপূঃ, লেখার তারিখ যেভাবে ধরা হয়) |
যোয়েল ২:১২৮–২৯ | পবিত্র আত্মা লোকদের উপরে | পঞ্চাশত্তমী দিনে (৩০ খ্রীঃ) ও মাণ্ডলিক জীবনে অনবরতভাবে পূর্ণ হয়। |
যোয়েল ৩:৪–৮ | যিহূদীদের দাসত্ব | সোর ও ঘসা ইতিহাসে আলেকজান্দারের সময়ে (৩৩২ খ্রীঃপূঃ) যিহূদীদের কাছে দাস হিসাবে বিক্রি করা হত। |
যোয়েল ৩:৪–৮ | যিহূদীদের দাসত্ব | সিদোন অর্তক্ষস্ত–৩এর সময়ে (৪৩৫ খ্রীঃপূঃ) যিহূদীদের কাছে দাস হিসাবে বিক্রি করা হত। |
যোয়েল ৩:৭ | যিহূদীরা প্রতিজ্ঞাত দেশে ফিরে যায় | যিহূদীরা ৫৩৮ খ্রীষ্টপূর্বে মাদিয়–পারস্য সম্রাট কোরস দ্বারা ফিরে যাওয়ার অনুমতি পায়। |
যোয়েল ৩:১৯ | ইদোম মরুভূমি হয়ে যাবে | আরব জাতি, নাবাতীয়েরা ও যিহূদীদের দ্বারা আংশিকভাবে পূর্ণ হয়, ৭০ খ্রীষ্টাব্দে রোমীয়দের দ্বারা চূড়ান্তভাবে পূর্ণ হয়। |
নতুন নিয়মে যোয়েল পুস্তক থেকে উদ্ধৃতিগুলোর তালিকা
প্রেরিত ২:১৬ | যোয়েল ২:২৮–২৯ পদের উদ্ধৃতি | পিতর তার প্রচারে পঞ্চাশত্তমী দিনের ঘটনা যোয়েলের ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা হিসাবে ঘোষণা করেন। তাই সেই দিন থেকে মণ্ডলী “শেষকালে” আছে। |
প্রেরিত ২:৩৯ | যোয়েল ২:৩২ পদের সাথে মিল | “যে কেউ সদাপ্রভুকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে কারণ সিয়োন পাহাড়ে ও যিরূশালেমে কতজন লোক রক্ষা পাবে।” |
রোমীয় ১০:১১–১৩ | পৌল যোয়েল ২:২৬খ ও ২:৩২ পদ উল্লেখ করেন | “যে কেউ সাদপ্রভুকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে।” |
মার্ক ৪:২৯ | যোয়েল ৩:১৩ পদের ছবি ব্যবহৃত | ‘কাস্তে লাগিয়ে ফসল’ শেষকালীন বিচারের ছবি হিসাবে ব্যবহৃত। উভয় আগাছা ও ভাল ফসল একসাথে কাটা হয়। |
প্রকাশিত ৬:১২ | যোয়েল ২:১০, ২:৩১, ৩:১৫ | “চাঁদ ও সূর্য অন্ধকার হয়ে যায়” |
প্রকাশিত ৬:১৭ | যোয়েল ২:১১ | “সদাপ্রভুর দিন মহৎ ও ভয়ংকর; কে তা সহ্য করতে পারে? “ |
প্রকাশিত ৯:৭–৯ | যোয়েল ১:৬, ২:৪–৫ | অটল গর্ত থেকে পঙ্গপালের বর্ণনায় তা ঘোড়ার সাথে তুলনা করা হয়। |
প্রকাশিত ১৪:১৫,১৮ | যোয়েল ৩:১৩ | “তোমরা কাস্তে লাগাও, কারণ ফসল পেকেছে। তোমরা এসে আংগুর মাড়াও, কারণ আংগুর মাড়াইয়ের গর্ত পূর্ণ হয়েছে। আংগুর–রসের পাত্র থেকে রস উপ্চে পড়ছে।” |
প্রকাশিত ২২:১ | যোয়েল ৩:১৮খ | “সদাপ্রভুর ঘর থেকে একটা ফোয়ারা উঠে শিটীমের উপত্যকাকে জল দান করবে।“ |