যোগাযোগ ০৬ – যীশুর কথা বলার ধরণ: ফরীশীরা ও হেরোদীয়রা
যীশুর কথা বলার ধরণ: ফরীশীরা ও হেরোদীয়রা (মার্ক ১২:১৩-১৭)

ঐতিহাসিক পরিস্থিতি
- পৃথিবীতে যীশুর সাধারণ জীবনের শেষ সপ্তা শুরু হয়েছে, কিছু দিনের মধ্যে তাঁকে ক্রুশে দেওয়া হবে।
- মার্ক ১১:১-১১ যীশু জয় যাত্রার মত যিরূশালেমে প্রবেশ করেছেন যা দ্বারা লোকদের প্রতাশা বেড়ে গেল।
- মার্ক ১১-১২ অধ্যায় যীশু মন্দিরে শিক্ষা দেন। রাজনৈতিক ও আত্মিক নেতারা তার প্রত্যেক কথা লক্ষ্য করেন।
ছবি: পুনঃগঠনের মডেল: বামদিকে মন্দিরের জায়গা (ধর্ম) ও ডানদিকে আন্টোনিয়া দূর্গ (রোমীয় সরকার)
- মার্ক ১১:১৫-১৯ যীশু মন্দির থেকে ব্যবসায়ীদের তাড়িয়ে দিয়ে অনেক লোকদের অপমানিত করেন।
- মার্ক ১১:২৭-৩৩ প্রধান পুরোহিতেরা ও ধর্ম-শিক্ষকেরে যীশুর অধিকারের বিষয়ে আপত্তি উঠান।
- মার্ক ১২:১-১২ উত্তরে যীশু একটি খুব করা দৃষ্টান্ত বলেন: আঙ্গুর ক্ষেত্রের মন্দ চাষীরা।
- মার্ক ১২:১৩-১৭ ফরীশীরা ও হেরোদীয়রা যীশুর দোষ ধরার উদ্দেশ্যে একটি প্রশ্ন করেন।
মার্ক ১২:১৩ “পরে সেই ধর্ম-নেতারা যীশুকে তাঁর কথার ফাঁদে ধরবার জন্য কয়েকজন ফরীশী ও হেরোদীয়কে পাঠিয়ে দিলেন।”
- আমরা আছি যিরূশালেমের মন্দিরে যীশুর শেষ সপ্তায়। আর কিছু দিন পরে তাঁকে ক্রুশে দেওয়া হবে।
- যীশু ইতিমধ্যে তিন বছরের চেয়েও বেশি ধরে সবার সামনে শিক্ষা দিয়েছেন ও পরিচর্য্যা করেছেন।
- তিনটি দল বিশেষভাবে যীশুর বিরুদ্ধীয় হয়ে গেছে: ফরীশীরা, হেরোদীয়রা ও সদ্দূকীরা।
ফরীশীদের বিষয়ে কিছু তথ্য
- তারা বিশ্বাস করতেন যে যদি সব যিহূদীরা এমন কি মাত্র ২৪ ঘন্টা সমস্ত আইন আসলে পালন করত
- তবে ঈশ্বর উদ্ধারকর্তা-মশীহকে পাঠাবেন।
- তবে ইস্রায়েল আগের মত অত্যাচারী মন্দ রোমীয়দের থেকে মুক্ত হয়ে একটি স্বাধীন দেশ হবে।
- তবে দায়ূদের সন্তান আবার সিংহাসনে বসে রাজত্ব করবেন।
- তবে যিহূদীরা আবার জয়ী হবে এবং সব পরজাতীয় দেশের উপরে রাজত্ব করবে।
- তবে ধার্মিক ও খাঁটি পুরোহিতেরা আবার সঠিকভাবে উৎসর্গ দিবে।
- তারা ছিলেন সাধারণ লোকদের মধ্য থেকে একটি সেচ্ছাই ধার্মিক আন্দোলন। যে কেউ যোগ দিতে পারত।
- তারা গ্রামে গ্রামে শহরে শহরে যিহূদীদের সমাজ গৃহে আইন পালনের বিষয়ে শিক্ষা দিতেন।
- তারা যিহূদীদের নিজেকে অযিহূদীদের থেকে দূরে রাখতে বলতেন যেন তারা দূষিত না হয়ে বরং পবিত্র হয়।
- তারা আইন-কানুন থেকে বিশেষভাবে সুন্নত, শুচি-অশুচি ও বিশ্রামবার পালনের উপর জোর দিতেন।
- সাধারণ যিহূদীরা ফরীশীদের খুব সম্মান দিয়ে দেখত।


হেরোদীয়দের বিষয়ে কিছু তথ্য
- হেরোদীয় ছিলেন হেরোদ পরিবারের বা আত্মীয়-স্বজনরা, হেরোদের কর্মচারীরা ও সমর্থনকারীরা।
- যখন ১০০ বছর আগে রোমীয়রা গালীল ও যিহূদা দখল করেছিল হেরোদ পরিবার যিহূদীদের পাশে দাঁড়ায় নি বরং রোমীয়দের সমর্থন করল।
- জয় ও দখল করার পরে রোমীয়রা রোম রাজ্যের অধীনে স্থানীয় রাজা হিসাবে হেরোদ পরিবারকে পছন্দ করেছিল।
- যিহূদীরা হেরোদ পরিবারকে ঘৃণা করত কারণ তারা যুদ্ধে রাজাকারের মত কাজ করেছিল এবং তারা সত্যিকারের যিহূদী ছিল না বরং ইদোমীয় বা ইদোম-যিহূদী মিশানো রক্তের লোক।
হেরোদীয়দের বিষয়ে কিছু তথ্য
- হেরোদীয় ছিলেন হেরোদ পরিবারের বা আত্মীয়-স্বজনরা, হেরোদের কর্মচারীরা ও সমর্থনকারীরা।
- যখন ১০০ বছর আগে রোমীয়রা গালীল ও যিহূদা দখল করেছিল হেরোদ পরিবার যিহূদীদের পাশে দাঁড়ায় নি বরং রোমীয়দের সমর্থন করল।
- জয় ও দখল করার পরে রোমীয়রা রোম রাজ্যের অধীনে স্থানীয় রাজা হিসাবে হেরোদ পরিবারকে পছন্দ করেছিল।
- যিহূদীরা হেরোদ পরিবারকে ঘৃণা করত কারণ তারা যুদ্ধে রাজাকারের মত কাজ করেছিল এবং তারা সত্যিকারের যিহূদী ছিল না বরং ইদোমীয় বা ইদোম-যিহূদী মিশানো রক্তের লোক।
মার্ক ১২:১৩ “পরে সেই ধর্ম-নেতারা যীশুকে তাঁর কথার ফাঁদে ধরবার জন্য কয়েকজন ফরীশী ও হেরোদীয়কে পাঠিয়ে দিলেন।”
- ফরীশীরা ও হেরোদীয়রা পরস্পর্কে ঘৃণা করতেন কারণ:
- ফরীশীরা ছিলেন খাঁটি, ধার্মিক যিহূদী, দেবতাপূজারী রোমীয়দের বিরুদ্ধে ও ‘আলাদা হওয়ার’ প্রচারক
- হেরোদীয়রা ছিলেন মিশানো রক্তের, রাজনৈতিক সুবিধাবাদী ও রোমীয়দের সাথে হাত মিলানোর লোক
- শত্রু হলেও তারা এখানে একসাথে হাত মিলিয়ে যীশুকে ফাঁদে ফেলার জন্য আসেন কেন? কারণ দুইদল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে যীশু বিপজ্জনক, তাঁকে মেরে ফেলা ভাল।
- ফরীশীরা তাঁকে ভ্রান্ত মশীহ মনে করেন:
- কারণ যীশু মোশির আইনের পাশাপাশি সে মৌখিক ঐতিহ্য মানেন না।
- কারণ যীশু অযিহূদীদের থেকে নিজেকে আলাদা করেন না।
- কারণ যীশু পাপী, গরীব, অযিহূদী, রাজাকার ও অনৈতিক লোকদের সাথে মিশেন।
- হেরোদীয়রা কেন যীশুর মৃত্যু চান? তারা মনে করেন তিনি বিপজ্জনক বিদ্রোহী, যিনি লোকদের উত্তেজিত করে তোলেন, তাদের অনুসরণকারী বানান এবং রোমীয়দের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবেন।
- রোমীয়দের খুশি করার জন্য যীশু মারা গেলে ভাল।
- হেরোদীয়রা দেশে শান্তি নিশ্চিত করতে না পারলে, তবে রোম তাদের সরিয়ে নিজেই রাজত্ব করবে।
- এখানে ফরীশীরা হেরোদীয়দের সাথে হাত মিলান আরো দেখায়:
- যে তারা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সাধন করার জন্য নিজের নীতি ভাঙ্গতে ও আপোষ করতে রাজি।
- যে তারা মনে করেন ‘উদ্দেশ্য ভাল হলে, যে কোনো পথে তা সাধন করা যায়।
- যে তারা শুধুমাত্র আত্মিক জাগরণে সমর্পিত, তা নয়। বরং তারা রাজনৈতিক কৌশল দিয়ে নিজের ক্ষমতাও নিশ্চিত করতে চান।
মার্ক ১২:১৪-১৫ “তাঁরা যীশুর কাছে এসে বললেন, “গুরু, আমরা জানি আপনি একজন সৎ লোক। লোকে কি মনে করবে না করবে, তাতে আপনার কিছু যায় আসে না, কারণ আপনি কারও মুখ চেয়ে কিছু করেন না। আপনি সত্যভাবে ঈশ্বরের পথের বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে থাকেন।”
- নিজেকে সৎ অনুসরণকারী হিসাবে উপস্থাপন করে তারা যীশুকে তেল মেখে কথা বলেন ও এমন তোষামোদ করেন যা মিথ্যা ছাড়া কিছু নয়: তারা মনে করেন না যে যীশু ”সত্যভাবে ঈশ্বরের পথের বিষয়ে শিক্ষা” দেন।
- এই ক্ষেত্রেও তারা নিজের উদ্দেশ্য পূর্ণ করার জন্য আইন ভাঙ্গতে রাজি (“মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না”)
“এখন আপনি বলুন, মোশির আইন-কানুন অনুসারে রোম-সম্রাটকে কি কর্ দেওয়া উচিত? ১৫ আমরা তাঁকে কর্ দেব কি দেব না?”
- তারা বুদ্ধি করে এমন একটি প্রশ্ন নিয়ে আসে যা নিয়ে তারা (ফরীশীরা ও হেরোদীয়রা) একমত হতে পারে না!
- প্রশ্নের পিছনে প্রশ্ন হল: রোমীয় সম্রাট কি আইন-গত বা ঈশ্বর-অনুমোদিত সরকার?
- এই প্রশ্ন হল ঐ যুগের যিহূদীদের প্রধান প্রশ্ন।
- যদি যীশু উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বলেন, তবে অধিকাংশ যিহূদী এবং বিশেষভাবে ফরীশীরা অপমানিত হবে ও তাকে একজন সুবিধাবাদী-আপোষকারী, এমন কি একজন রাজাকার হিসাবে অগ্রাহ্য করা হবে।
- যদি যীশু উত্তরে ‘না’ বলেন, তবে তাঁকে একজন বিপজ্জনক বিদ্রোহী মনে করা হবে যিনি রোমীয় সরকার অগ্রাহ্য করেন এবং যিহূদীদের তা অগ্রাহ্য করতে বলেন।
- তারা যীশুকে এভাবে একটি কালো-সাদা, হ্যাঁ-না প্রশ্নে রাজি করাতে চান।
- ‘হ্যাঁ-না’ প্রশ্নগুলির উত্তর দিলে উত্তরকারীকে বাধ্য করা হয়, প্রশ্নের পিছনে সে ধারণাগুলিও গ্রহণ করতে।
“যীশু তাঁদের ভণ্ডামি বুঝতে পেরে বললেন, ‘আপনারা কেন আমাকে পরীক্ষা করছেন?”
- তারা তামাশা দ্বারা যীশুকে ভুলাতে পারেন নি, তিনি ভালই জানেন যে প্রশ্নটি ফাঁদস্বরূপ।
- তারা যেমন তোষামোদ ও প্রতারণা ব্যবহার করেছেন, যীশু তেমন করেন না: তিনি সৎ ও সরাসরি কথা বলেন।
- যীশু তাদের ফাঁদ বা গোপন উদ্দেশ্য বুঝে তা প্রকাশ করেন।
- কিন্তু যীশু তারপরেও উত্তর দেন – কেন?
- যীশু বিষয়টি এড়িয়ে যান না, পিছিয়ে যান না।
- তাদের চিন্তার চেয়ে ঈশ্বরের চিন্তা কত মহান ও ভিন্ন, যীশু তা প্রকাশ করতে যাচ্ছেন।
- যীশু তাদের মনে এমনভাবে ধাক্কা দেবেন যাতে তাদের নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।
- যীশু আশা করেন যে তিনি তারপরেও তাদের হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারেন।
- যদিও প্রশ্নকারীরা খোলা মনের নয়, উপস্থিত শ্রোতাদের মনে একই প্রশ্ন আছে বলে যীশু উত্তর দেন।
মার্ক ১২:১৫-১৬ “আমাকে একটা দীনার এনে দেখান।’ ১৬ তাঁরা একটা দীনার আনলে পর যীশু তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এর উপরে এই ছবি ও নাম কার?’ তাঁরা বললেন, ‘রোম-সম্রাটের।”
- কেন যীশু উত্তর হিসাবে এই নতুন প্রশ্ন ও ব্যবহারিক উদাহরণ পছন্দ করেন?
- তিনি সোজাভাবে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতে প্রত্যাখ্যান করেন।
- তিনি তাদের অংশ গ্রহণ করতে বাধ্য করেন এবং নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করতে জোর করেন।
- হয়তো তিনি তাদের লজ্জা দেন কারণ ধার্মিক যিহূদীরা এই ‘নোংরা টাকা’র মালিক হতে চান নি, তা পকেটে রাখতেও রাজি ছিলেন না, কিন্তু তাদের পকেটে টাকা ঠিক-ই আছে।
মার্ক ১২:১৭ “যীশু তাঁদের বললেন, ‘যা সম্রাটের তা সম্রাটকে দিন, আর যা ঈশ্বরের তা ঈশ্বরকে দিন।’ যীশুর এই কথায় তাঁরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন।”
- তারা বুঝতে পারেন যে যীশু এড়িয়ে না গিয়ে পরিবর্তে একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ও আশ্চর্য উত্তর দিয়েছেন।
- যীশু নির্দিষ্টভাবে বলেন না, কার কি দাবী করা ঠিক।
- যীশু ‘হ্যাঁ-না’ প্রশ্ন ও এই বিষয়ে তাদের সীমিত ধারণাগুলি প্রত্যাখ্যান করে সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টি দান করেন।
ঠিক কিভাবে যীশুর এই উত্তর এত আশ্চর্য?
- মন্দিরের নিজস্ব মুদ্রা ছিল। তাই হয়তো যীশু এখানে শুধুমাত্র মুদ্রার পার্থক্য দেখান। কিন্তু এর চেয়ে গভীরে:
- যীশু আসলে কি বলেন? তাদের কোন ধারণাগুলিতে তিনি রাজি নন?
- যে সম্রাটকে কর দেওয়া বা তার নেতৃত্ব গ্রহণ করাই মানে ঈশ্বরকে অগ্রাহ্য করা, যীশু এতে রাজি নন।
- যীশু বরং বলেন যে উভয় ঈশ্বর এবং সম্রাটের অধিকার ও নেতৃত্ব আইনগত ও উপযুক্ত, যদিও ভিন্ন।
কিন্তু তাহলে কাকে ঠিক কি দেব?
- নাগরিকদের থেকে সরকারের কি কি দাবী করার অধিকার আছে?
- কর দাবী করা যেন সরকার যে দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়েছে সেগুলি পালন করতে পারে।
- দেশের আইনের প্রতি নাগরিকদের বাধ্যতা দাবী করা।
- সরকারের প্রতি নাগরিকদের বাধ্যতা যতদূর আইন বাধ্য হতে বলে।
- কিন্তু নাগরিকদের থেকে সরকার যা দাবী করার অধিকার নয়:
- সরকারের সাথে নাগরিকদের একমত হওয়া বা নাগরিকদের সিদ্ধান্ত নিয়ন্ত্রণ করা।
- নাগরিকদের নিঃশর্ত বাধ্যতা, এমন ক্ষেত্রে যাতে ঈশ্বর সরকারের অধিকার দেন না।
- আরাধনা দাবী করা।
মুদ্রাটি কি দেখাল? তাতে কি লেখা ছিল?
- যীশুর ক্রুশীয় মৃত্যু ঘটল সম্রাট তিবিরিয়ের রাজত্বের মধ্যে (১৪-৩৭ খ্রিঃ)।
- যে মুদ্রা দেখিয়ে যীশু এখানে কথা বলেন, সে ধরণের মুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে ও কিছু যাদুঘরে আজ পর্যন্ত দেখা যায় (ছবি দেখুন)।
- তিবিরিয়ের সময়ের সে মুদ্রায় এক পাশে লেখা আছে: ‘Ti(berius) Ceasar Divi Aug(usti)’ = মানে ‘সম্রাট তিবিরিয়, আগষ্টের পুত্র।
- আগষ্ট ছিল একটি টাইটেল যা সম্রাট তিবিরিয়ের বাবা নিলেন। নামের অর্থ হল ‘সম্মানিত’। আগষ্ট আরো টাইটেল নিলেন ‘ঈশ্বরের পুত্র’ বা ‘ঐশ্বরিক পুত্র’।
- মুদ্রার অন্য পাশে একটি দেবতা পূজার চিহ্ন আছে যা: ‘Pontifex Maximus’ = রোমীয় দেবতাপূজা ধর্মের প্রধান পুরোহিত।

- যীশু তাই এই কথা দ্বারাও বলেন যে সম্রাটের কি দাবী করা ঠিক নয়: আরাধনা বা পূজা। কিন্তু রোম রাজ্য ঠিক এই সময় সম্রাটের পূজার দাবি বাড়তে থাকে:
- প্রথম রোমীয় সম্রাট যিনি তার নিজের ব্যক্তির পূজা দাবী করতেন হলেন সম্রাট কালিগুলা (৩৭-৪১ খ্রিঃ)। পরে সম্রাট নীরো (৫৪-৬৮ খ্রিঃ) নিজেকে দেবতা হিসাবে ঘোষণা করতেন ও তার ব্যক্তির পূজা দাবী করতেন। সম্রাট ডোমিটায়ান (৮১-৯৬ খ্রিঃ) থেকে রোমীয় সম্রাট পূজা এমন প্রচলিত হয়েছিল যে সারা রোম রাজ্যে প্রত্যেকটি বড় শহরে সম্রাটের উদ্দেশ্যে মন্দির ছিল। মন্দিরে সম্রাটের উদ্দেশ্যে ধূপ না জ্বালানো ছিল একটি অপরাধ যার শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড।
- তাই যীশু বলেন যে সরকার ও ধর্ম আলাদা বিষয়!
- “যা সম্রাটের তা সম্রাটকে দিন”, আর যা ঈশ্বরের, তা ঈশ্বরকে দিন’ তার অর্থও এই যে কর ও আইনের প্রতি বাধ্যতা ছাড়া সরকারের অন্য কিছু দাবি করা নিষেধ: সরকারের নিজের পূজা, নিঃশর্ত বাধ্যতা ও নাগরিকদের মন বা সিদ্ধান্ত নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার নেয়। কিন্তু সরকারকে ঈশ্বর যে ভূমিকা দিয়েছেন, সে অনুসারে সরকারের কাজ করার অধিকার আছে।
মার্ক ১২:১৭ “যীশুর এই কথায় তাঁরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন।’ কেরী ‘তখন তাহারা তাঁহার বিষয়ে অতিশয় আশ্চর্য জ্ঞান করিল।”
- তারা “অতিশয় আশ্চর্য”। তাতে বুঝা যায় যীশুর উত্তর কত গভীর, কত ভিন্ন, কত অনির্ভরযোগ্য, কত প্রশ্নাতীত। এই বিষয় সম্বন্ধে সাধারণ চিন্তা ও তর্কের চেয়ে যীশু সম্পূর্ণ অন্য ধরণের ঈশ্বরীয় দৃষ্টি ও প্রজ্ঞার কথা দেন।
- যীশুর এই উত্তরের গুরুত্ব বুঝতে ও উত্তরটি সম্পূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করতে আর অনেক বিষয় বাকি আছে।