ধর্ম ০৫ – নতুন নিয়মে নেতৃত্ব – মণ্ডলীতে বিভিন্ন ধরণের নেতা

নতুন নিয়মে মণ্ডলীর নেতাদের সম্বন্ধে ব্যবহৃত শব্দসমূহ:

বাংলাষ্ট্রংগ্স নংইংরেজীকত বারগ্রীককাকে এই টাইটেল দেওয়া হয়
নবী, ভাববাদী G4396 prophet ১৪৩ বারprophetes পুরোহিত সখরিয় (লূক ১:৬৭), বাপ্তিস্মদাতা যোহন (লূক ৭:২৬), যীশু (লূক ১৩:৩৩), কাইয়াফা (যো ১১:৫১), সীল ও যিহূদা (প্রে ১৫:৩২), আন্তিয়খিয়ায় নবী (প্রে ১৩:১), ফিলিপের ৪জন কন্যা (প্রে ২১:৯), আগাব (প্রে ২১:১০), মণ্ডলীতে ৫টি ভূমিকার মধ্যে একটি (ইফি ৪:১১), নানা দানের মধ্যে একটি দান ( ১ করি ১২:২৮-২৯)
প্রচারকG2099evangelist৩ বারevvangelistesফিলিপ (প্রে ২১:৮), তীমথিয় (২ তীম ৪:৫), মণ্ডলীতে ৫টি ভূমিকার মধ্যে একটি ভূমিকা (ইফি ৪:১১)
পালকG4166pastor১৭ বারarchi(poimen)যীশু (ইব্রীয় ১৩:২০, ১ পিতর ২:২৫), মণ্ডলীতে ৫টি ভূমিকা (ইফি ৪:১১)
প্রেরিতG652apostle৮০ বারapostolosযীশুর ১২ শিষ্য, পৌল, বার্ণবা (প্রে ১৪:৪), আন্দ্রনীক ও যূনিয় (রোমীয় ১৬:৬), যীশুর ভাই যাকোব (গালা ১:১৯), মণ্ডলীতে ৫টি ভূমিকা (ইফি ৪:১১), নানা দানের মধ্যে একটি দান (১ করি ১২:২৮-২৯), ফিলিপীয় মণ্ডলী দ্বারা পাঠানো ইপাফ্রদীত (ফিলি ২:২৫), যীশু (ইব্রীয় ৩:১)
প্রাচীনG4245elders৬৭ বারpresbuterosআন্তিয়খিয়ার মণ্ডলীর প্রাচীনরা (প্রে ১১:৩০), গালাতীয় মণ্ডলীর প্রাচীনরা (প্রে ১৪:২৩), যিরূশালেম মণ্ডলীর প্রাচীনরা (প্রে ১৫:২), ইফিষ মণ্ডলীর প্রাচীনরা (প্রে ২০:১৭), ক্রীট মণ্ডলীর প্রাচীনরা (তীত ১:৫), যোহন (২ যোহন ১, ৩ যোহন ১), পিতর (১ পিতর ৫:১), প্রকাশিত বাক্যে ২৪জন প্রাচীনরা (প্রকা ৪:৪)
অধ্যক্ষ / পরিচালকG1985bishop৭ বারepiskoposইফিষ মণ্ডলীর অধ্যক্ষরা (প্রে ২০:২৮)
পরিচালক/পরিচারকG1249deacon৩০ বারdiakonosপৌল (ইফিষ ৩:৭, কল ১:২৩,২৫), ফৈবী (রোমীয় ১৬:১), আপল্লো (১ করি ৩:৫), ইপাফ্রা (কল ১:৭), তুখিক (ইফি ৬:২১, কল ৪:৭), তীমথিয় (১ থিষ ৩:২), ইপাফ্রা (কল ১:৭), পৌল ও আপল্লো (১ করি ৩:৫)
দাসG1401servant১২৫ বারdoulosপৌল (রোমীয় ১:১,…), ইপাফ্রা (কল ৪:১২), তীমথিয় বা একজন মণ্ডলীর নেতা (২ তীম ২:২৪), যাকোব (যাকোব ১:১), পিতর (২ পিতর ১:১), যিহূদা (যিহূদা ১), নবীরা (প্রকা ১০:৭, ১১:১৮)
শিক্ষকG1320teacher৫৭ বারdidaskolosআন্তিয়খিয়ায় শিক্ষক: বার্ণবা, নীগের, শিমোন, লুকিয়, মনহেম, শৌল (প্রে ১৩:১), পৌল (১ তীম ২:৭, ২ তীম ১:১১), তীমথিয় (১ তীম ৪:১১, ৬:২), তীত (তীত ২:১), বয়স্কা স্ত্রীলোক (তীত ২:৪), রোমে যীহূদী বিশ্বাসীরা (রোমীয় ২:২০, ইব্রীয় ৫:১২), যাকোব ও অন্যরা (যাকোব ৩:১), নানা দানের মধ্যে একটি দান (১ করি ১২:২৮-২৯), প্রাচীনরা (তীত ১:৯, ১ তীম ৩:২), বিশ্বস্ত যারা (২ তীম ২:২), সমস্ত বিশ্বাসীরা (মথি ২৮:১৯)
সহকর্মীG4904co-worker১৩ বারsunergosপ্রিষ্কিল্লা ও আকিলা (রোমীয় ১৬:৩), উর্বাণ (রোমীয় ১৬:৯), তীমথিয় (রোমীয় ১৬:২১), পৌল (১ করি ৩:৯), ইপাফ্রদিত (ফিলি ২:২৫), উবদিয়া, সুন্তখী, ক্লীমেন্ত (ফিলিপীয় ৪:২), আরিষ্টার্খ, মার্ক, যীশু-যুষ্ট (কল ৪:১১), ফিলীমন (ফিলীমন ১), ইপাফ্রা, দীমা, লূক (ফিলীমন ২৪), যোহন (৩ যোহন ৮)
ঘোষকG2783herald৩ বারkeruxপৌল (১ তীম ২:৭, ২ তীম ১:১১), নোহ (২ পিতর ২:৫)

বাংলা অনুবাদ, বিশেষভাবে সাধারণ ভাষায় অনুবাদ, একটি শব্দের বিভিন্ন পদে ভিন্ন অনুবাদ অথবা নামের পরিবর্তে ত্রিয়া রাখা হয়েছে। তাই কিছু শব্দের ব্যবহার আর তেমন দেখা যায় না। স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট হওয়ার জন্য তাই এই অধ্যয়নে নতুন নিয়মের সে গ্রীক শব্দ ব্যবহৃত, সেইগুলি ভিত্তি করে এই অধ্যয়ন করা হয়েছে।

নবী বা ভাববাদী                  G4396                          ‘prophetes’                      ১৪৩ বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: যে ভবিষ্যৎ জানায়, নবী, ভাববাদী, অনুপ্রাণিত বক্তা, কবী

মালাখি ৪:৫, মথিতে ১২ বার, লূক ৩:৪ এক বার, যোহন ১:২৩ ও ১২:৩৮ পদে ২ বার

  • নবীদের শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃতির মাধ্যমে প্রমাণিত করার জন্য যে যীশুতে ভবিষদ্বাণী পূর্ণ হয়েছে।          OT

লূক ৪:১৭, মথি ২৪:১৫, মার্ক ১৩:১৪

  • লোকদের শিক্ষা, চ্যালেঞ্জ বা প্রচার দান করার জন্য যীশু পুরাতন নিয়মের নবীদের উদ্ধৃতি করেন।     OT

মথি ১২:৩৯, মথি ১৬:৪, লূক ১১:২৯

  • যারা চিহ্ন দেখতে চায়, তাদেরকে শুধুমাত্র নবী যোনার চিহ্ন দেখানো হবে।                         OT

লূক ১:৬৭      যোহন বাপ্তিস্মদাতা যোহনের বাবা পুরোহিত সখরিয় যোহন সম্বন্ধীয় ভাববাণী দেন।           NT

লূক ১:৭৬, মথি ১১:৯, লূক ৭:২৬-২৮, যোহন ১:২১, ১:২৫

  • বাপ্তিস্মদাতা যোহনকে ঈশ্বরের একজন নবী বলা হয়।                                            NT

মথি ১৪:৫, ২১:২৬, ২১:৪৬, মার্ক ১১:৩২, লূক ২০:৬

  • লোকেরা যোহন বাপ্তিস্মদাতাকে নবী মনে করে।                                                 NT

মথি ১০:৪১    যীশু: যে একজন নবীকে গ্রহণ করে সে নবীর পুরস্কার পাবে।                              NT

মথি ১৩:৫৭, মার্ক ৬:৪, লূক ৪:২৪, যোহন ৪:৪৪

  • যীশু: নিজের গ্রাম ও নিজের বাড়ী ছাড়া আর সব জায়গাতেই নবী সম্মান পান।                     NT

মথি ২১:১১, মার্ক ৬:১৫, লূক ৭:১৬, ২৪:১৯, যোহন ৪:১৯, ৬:১৪, ৭:৪০, ৯:১৭

  • লোকেরা যীশুকে নবী মনে করে।                                                              NT

লূক ৭:৩৯, যোহন ৭:৫২    লোকেরা সন্দেহ করে যে যীশু নবী।                                         NT

লূক ১৩:৩৩     যীশু নিজেকে নবী বলেন: যিরূশালেম ছাড়া আর কোথাও নবীর মৃত্যু হয় না।               OT / NT

মথি ২৬:৬৮, মার্ক ১৪:৬৫, লূক ২২:৬৪

  • যীশুর চোখ বেঁধে দিয়ে বলে: কে তোমাকে মারল? নবীকে ঠাট্টা দেওয়া।                            NT

যোহন ১১:৫১   মহা পুরোহিত কাইয়াফা ভবিষ্যদ্বাণী দেন যে যিহূদী জাতির জন্য যীশু মরবেন।               NT

প্রেরিত ২:১৬, ২:৩০, ৩:১৮, ৩:২১-২৫, ৭:৩৭, ৭:৪২, ৭:৪৮, ৭:৫২, ৮:২৮, ৮:৩০, ৮:৩৪, ১০:৪৩

  • প্রথম মণ্ডলী নবীদের থেকে উদ্ধৃতি ব্যবহার করে শিক্ষা দেয় ও প্রচার করে।                         OT

প্রেরিত ৩:২২-২৩, ৭:৩৭

  • প্রথম মণ্ডলী যীশুকে ‘মোশির মত সে নবী’ বলে যাতে দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১৫ পদ পূর্ণ হয়।           OT

প্রেরিত ১১:২৭    কয়েকজন নবী যিরূশালেম থেকে আন্তিয়খিয়ায় যায়।                                    NT

প্রেরিত ১৩:১     আন্তিয়খিয়া মণ্ডলীতে নবী আছে: বার্ণবা, নীগের, শিমোন, লুকিয়, মনহেম, শৌল।           NT

প্রেরিত ১৫:৩২   সীল ও যিহূদা হলেন নবী।                                                           NT

প্রেরিত ২১:১০    নবী আগাব।                                                                       NT

প্রেরিত ১৫:১৫    প্রেরিতেরা যিরূশালেমের সভায় পুরাতন নিয়মের নবীদের ভাববাণীর উদ্ধৃতি করেন।         OT

প্রেরিত ১৩:১৫, ১৩:২০, ১৩:২৭, ১৩:৪০, ২৪:১৪, ২৬:২২, ২৬:২৭, ২৮:২৩, ২৮:২৫

  • পৌল তার শিক্ষায় ও প্রচারে মোশির আইন ও নবীদের ভাববাণী থেকে উদ্ধৃতি করেন।                OT

রোমীয় ১:২       নবীদের দ্বারা প্রতিজ্ঞা দেওয়া হয়েছে যে একজন এসে সুখবর দেবে।                     OT

রোমীয় ৩:২১     ঈশ্বর মানুষকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করবে, তা আইনে ও নবীদের লেখায় প্রকাশিত।         OT

রোমীয় ১১:৩     এলিয় থেকে উদ্ধৃতি: প্রভু, তারা তোমার নবীদের মেরে ফেলেছে।                         OT

১ করি ১২:২৮-২৯  ঈশ্বর মণ্ডলীতে প্রেরিত, নবী, শিক্ষক ইত্যাদি নিযুক্ত করেছেন। সকলেই কে নবী?         NT

১ করি ১৪:২৯,৩২,৩৭  মণ্ডলীর উপাসনায় শৃঙ্খলা: নবীদের কেমন ব্যবহার করা উচিত।                     NT

ইফিষীয় ২:২০       ঈশ্বরের পরিবারের লোকদের ভিত্তি হলেন প্রেরিতরা ও নবীরা।                         OT / NT

  • ইফিষীয় ৩:৫  সেই গুপ্ত উদ্দেশ্য পবিত্র প্রেরিত ও নবীদের কাছে প্রকাশিত হল।                      NT

ইফিষীয় ৪:১১

  • ঈশ্বর নিযুক্ত করেছেন: কিছু লোককে প্রেরিত, নবী, প্রচারক, পালক, শিক্ষক হিসাবে যেন সব বিশ্বাসীরা সেবা বা পরিচর্যা করার জন্য প্রস্তুত হয়। OT
  • ১ থিষ ২:১৫   যিহূদীরা নিজের নবীদের ও প্রভু যীশুকে মেরে ফেলেছিল।                           OT / NT
  • তীত ১:১২     পৌল এপিমেনিদেস্ নামে একজন অবিশ্বাসী গ্রীক নবীকে উদ্ধৃতি করেন।
  • ইব্রীয় ১:১      ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে নবীদের দ্বারা কথা বলেছিলেন।                  OT
  • ইব্রীয় ১১:৩২  যারা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে আদর্শ হিসাবে দাঁড়ায় তাদের মধ্যে আছে: নবীরা।               OT
  • যাকোব ৫:১০  নবীরা কষ্টভোগের সময়ে ধৈর্য্য ধরত বলে তারা আদর্শস্বরূপ।                        OT
  • ১ পিতর ১:১০  নবীরা এই উদ্ধারের বিষয় জানার জন্য অনেক খোঁজ-খবর নিয়েছিলেন।              OT
  • ২ পিতর ২:১৬  ভ্রান্ত নবী বিলিয়মের কথা স্মরণ করে সাবধানবাণী।                                OT
  • ২ পিতর ৩:২   পবিত্র নবীরা যে সব কথা আগে বলে গেছেন সেগুলো মনে রেখো।                  OT
  • প্রকাশিত ১০:৭ ঈশ্বরের গুপ্ত উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হবে যা তিনি নবীদের কাছে জানিয়েছিলেন।             OT / NT
  • প্রকাশিত ১১:১০ দুইজন সাক্ষী যা মণ্ডলী বা বিশ্বাসীদের বুঝায়।                                    NT
  • প্রকাশিত ১১:১৮, ১৬:৬, ১৮:২০, ১৮:২৪ পবিত্ররা, প্রেরিতরা, নবীরা হল ঈশ্বরেরই লোক।            OT / NT
  • প্রকাশিত ২২:৬  ঈশ্বর নবীদের মধ্য দিয়ে বলেছিলেন এখন দূত দ্বারা: কথা নির্ভরযোগ্য ও সত্য।       OT / NT
  • প্রকাশিত ২২:৯  দূত যোহনকে বলেন: তুমি ও তোমার বিশ্বাসী ভাই অর্থাৎ নবী।                      OT / NT
  • দেখা যায় যে পুরাতন নিয়মে এবং নতুন নিয়মে নবীদের ভূমিকা প্রায় একই রকম ছিল: ঈশ্বরের বাক্য বলা, দিক-নির্দেশনা, ঈশ্বরের দৃষ্টি, চ্যালেঞ্জ, চেতনা, সংশোধন, উৎসাহ ও ভবিষদ্বাণী দান।
  • পুরাতন এবং নতুন নিয়মের পুরুষ নবী এবং মহিলা নবী উভয়ই ছিল।
  • পুরাতন নিয়মের নবীরা প্রায়ই নিজের জাতি, রাজা, রাষ্টদূত, নেতা এবং অন্য জাতিদের কাছে কথা বলেছিলেন।
  • কিছু পুরাতন নিয়মের নবীদের খুব নির্দিষ্ট একটি আহবানের কথা উল্লেখ আছে। নতুন নিয়মে তার উল্লেখ নেই, যদিও তাদের একইভাবে ‘ঈশ্বর দ্বারা আহবান প্রাপ্ত’ হিসাবে দেখা হয়।
  • নতুন নিয়মে কিছু পুরুষ ও মহিলাদের নির্দিষ্টভাবে ‘নবী’ বলা হয়, কিন্তু ভাববাণী বলা হচ্ছে পবিত্র আত্মার একটি দান যা যে কোনো একজনকে দ্বারা হতে পারে। সবাইকে উৎসাহিত করা হয়, যেন ভাববাণী বলে (১ করি ১৪:১)।
  • নতুন নিয়মের লেখকরা প্রায়ই পুরাতন নিয়মের নবীদের কথা উদ্ধৃতি করত, বিশেষভাবে যিহূদী শ্রোতাদের জন্য। লেখকদের উদ্দেশ্য ছিল দেখাতে যে যীশু আসলেই পুরাতন নিয়মের ভাববাণী পরিপূর্ণ করেছেলেন, যে পুরাতন নিয়মের আইন ও নবীদের লেখায় তাঁর পরিচয় ও পরিচর্যা সম্বন্ধে অগ্রিম কথা বলা আছে।

প্রচারক                         G2099                          ‘euaggelistes’                        ৩ বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: প্রচারক, সুসমাচার প্রচারক, সুখবরদাতা

প্রেরিত ২১:৮     ফিলিপকে প্রচারক বলা হয়।
ইফিষীয় ৪:১১    মণ্ডলীতে ৫টি ভূমিকার মধ্যে একটি হল: প্রচারক।
২ তীমথিয় ৪:৫   পৌল তীমথিয়কে উৎসাহ দেন প্রচারকের কাজ করতে।

  • নতুন নিয়মের যে মণ্ডলীতে শুধুমাত্র দুইজন প্রচারক ছিল, ফিলিপ ও তীমথিয়, তা নয়। একইভাবে পিতর, যোহন, ১২ শিষ্য, স্তিফান, পৌল, আপল্লো ও আর অনেকজনকে ‘প্রচারক’ বলা যেত। তাতে বুঝা যায় যে যখন নতুন নিয়মে একজনকে ‘প্রচারক’ বলা হয়, তার অর্থ এই নয় যে আর কেউ প্রচার করত না। তাই শব্দটি অতি আক্ষরিক বা অতি সীমিতভাবে বুঝা উচিত নয়।
  • যেমন নবীদের বিষয়েও দেখলাম, কারও হয়তো বিশেষভাবে দান ছিল প্রচারক হিসাবে, কিন্তু পরিষ্কারভাবে সব মণ্ডলীর এবং সমস্ত বিশ্বাসীদের দায়িত্ব ছিল প্রচার করা (মথি ২৮:১৮, মার্ক ১৬:১৫)। একজন বিশ্বাসী হওয়া মানেই অন্যদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়া বা যীশুর জন্য সাক্ষী হওয়া (প্রেরিত ১:৮)।
  • ফিলিপকে শুধুমাত্র প্রচারক বলা হয় না, নবীও বলা হয়। তীমথিয়কে শুধুমাত্র প্রচারক বলা হয় না, তাকে সহকর্মী ও সহ-লেখকও বলা হয়। তাতে বুঝা যায় যে এই ‘বর্ণনা’গুলি কোনো ‘টাইটেল’ নয় বা একজনের যে শুধুমাত্র এই ভূমিকা থাকবে, তা নয়। কাজটা এত ভাগ করা ছিল না। কেউ প্রশ্ন করত না: ‘তুমি কি এইটা অথবা ঐটা?
  • তাতেও বুঝা যায় যে ইফিষীয় ৪:১১ পদে উল্লিখিত ‘মণ্ডলীতে ৫টি ভূমিকা’কে অতি সীমিতভাবে বা অতি নির্দিষ্টভাবে দেখা উচিত নয়। একটা ভূমিকা থাকলে যে অন্য ভূমিকা পালন করা যায় না, তা নয়।
  • যেমন পৌল ছিলেন প্রেরিত, কিন্তু তিনিও প্রচারকের ভূমিকা পালন করতেন ও শিক্ষা দান করতেন। ইফিষীয় মণ্ডলীতে তীমথিয় এমন ভূমিকা পালন করতেন যা আমরা আজকে ‘পালক’ বলতাম। কিন্তু পৌল তাকে চ্যালেঞ্জ করেন প্রচারক কাজ করতে (২ তীম ৪:৫) ও শিক্ষা দিতে (১ তীম ৪:১৬)। সীলকে পৌলের সহকর্মী বলা হয়, নেতা বলা হয় (প্রেরিত ১৫:২২), নবীও বলা হয় (প্রেরিত ১৫:৩২)। ফিলিপকে পরিচালক বলা হয় (প্রেরিত ৬:৫), এমন একজন যিনি বড় বড় আশ্চর্য কাজ করেন (প্রেরিত ৮:১৩) এবং তাকে প্রচারকও বলা হয় (প্রেরিত ২১:৮)।
  • পবিত্র আত্মার দানের কয়েকটি তালিকা আছে, তাই এক একটি তালিকা দেখলে বলা যাবে না যে ‘তা ছাড়া কিছু নেই’, বরং বলা উচিত ‘কিছু উদাহরণ দেওয়া হয়েছে’।

পালক                       G4166                              ‘(archi)poimen’                         ১৮ বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: রাখাল, মেষপালক, পালক। ‘archi’ মানে প্রধান রাখাল বা প্রধান পালক।

লূক ২:৮, ২:১৫, ২:১৮, ২:২০        বৈথলেহমের রাখালরা যীশুর জন্মের সাক্ষী হয়

  • পালক এখানে আসল রাখাল বা মেষপালক বুঝায়, যারা যীশুর জন্মের সাক্ষী হয়ে যায়।

মথি ৯:৩৬, মার্ক ৬:৩৪               লোকেরা রাখালহীন ভেড়ার মত

  • পালক এখানে যীশুকে বুঝায় লোকদের দেখে যীশুর মমতা হয় কারণ তারা রাখালহীন ভেড়ার মত।

মথি ২৫:৩২                         ছাগল ও ভেড়ার দৃষ্টান্ত, রাখাল পশুদের আলাদা করেন

  • পালক এখানে যীশুকে বুঝায় যীশুর বর্ণনা বিচারক হিসাবে।

মথি ২৬:৩১, মার্ক ১৪:২৭             আমি রাখালকে মেরে ফেলব, তাতে ভেড়াগুলো ছড়িয়ে পড়বে

পালক এখানে যীশুকে বুঝায় যীশুকে গ্রেফতার বিষয়ে নবী সখরিয়ের ভবিষদ্বাণী উদ্ধৃতি করা হয়।

যোহন ১০:২, ১০:১১-১২, ১০:১৪,১৬   যীশু নিজেকে ভাল রাখাল হিসাবে বর্ণনা করেন

  • পালক এখানে যীশুকে বুঝায় যীশু মেষপালকের রূপক ব্যবহার করে নিজের বর্ণনা দেন।

ইব্রীয় ১৩:২০                         যীশু, মেষদের সে মহান পালক

  • পালক এখানে যীশুকে বুঝায়

১ পিতর ২:২৫                        যীশু সে রাখাল যিনি তোমাদের অন্তরের দেখাশোনা করেন

  • পালক এখানে যীশুকে বুঝায় যীশুর বর্ণনা দেওয়া হয় রাখাল ও রক্ষাকারী বা দেখাশোনাকারী।

ইফিষীয় ৪:১১                         মণ্ডলীর ৫টি ভূমিকার মধ্যে একটি হল পালক

  • শুধুমাত্র এই একটি পদেই (!) ‘পালক’ মণ্ডলীতে একটি ভূমিকা হিসাবে উল্লিখিত আছে (ইফিষীয় ৪:১১)। পালক যে মণ্ডলীর নেতা (যেমন আমরা আজকাল বলি), তাও এখানে বুঝানো হয় নি। পালক ৫টি ভূমিকার মধ্যে একটি ভূমিকা মাত্র।
  • অনেক আধুনিক মণ্ডলীতে: আমাদের খুব নির্দিষ্ট ও বেশ কঠোর কাঠামো আছে মণ্ডলীতে যেখানে পালক হচ্ছে সব কিছুর উপর প্রধান ও কেন্দ্র। পালকের উপর সব কিছু নির্ভর করে ও প্রায়ই পালক সব ভূমিকাগুলি নিজেই পালন করেন। নতুন নিয়মে আমরা এই ধরণের কেন্দ্রিক কাঠামো, নির্দিষ্ট পদ বা কঠোর পদ্ধতি দেখি না। সারা নতুন নিয়মে মাত্র এক পদে ‘পালক’ বলতে একটি মণ্ডলীর ভূমিকা উল্লেখ আছে। তার চেয়ে মণ্ডলীর অন্যান্য ভূমিকাগুলি আরো অনেক ঘন ঘন উল্লিখিত রয়েছে।
  • নতুন নিয়মে মণ্ডলীর নেতৃত্ব প্রথমে একজন স্থাপনকারী প্রেরিতের কাছে থাকে (অথবা একটি জরুরী সময়ে প্রেরিত আবার এই ধরণের ভূমিকা পালন করে) কিন্তু সাধারণত মণ্ডলী স্থানীয় প্রাচীনদের দ্বারা পরিচালিত (প্রেরিত ১৪:২৩)। কিছু পদে অধ্যক্ষ বা পরিচালকদের উল্লেখ আছে।
  • যে একজন পালক যীশুর প্রতিনিধি হিসাবে মেষদের দেখাশুনা করবে, তা হল একটি উপযুক্ত রূপক যা যীশুর ভূমিকা থেকে নেওয়া যায়। কিন্তু কঠোর কেন্দ্রিক পরিচালনা এভাবে আসে না।

প্রেরিত                     G652                                 ‘apostolos’                ৮১ বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: রাষ্ট্রদূত, প্রতিনিধি, খ্রিষ্টের কমিশনার, প্রেরিত, সংবাদদাতা, পাঠানো একজন।

‘প্রেরিত’ শব্দ যে পদে শুধুমাত্র ১২ শিষ্যদের বুঝায় (যীশুর অন্যান্য অনুসরণকারী নয়):
মথি ১০:২, লূক ৬:১৩ ১২      শিষ্যদের তালিকা, যাদের যীশু ‘প্রেরিত-পদ’ দিলেন / প্রেরিত বলে ডাকতেন
মার্ক ৬:৩০                    ৫০০০ লোকদের খাওয়ানোর সময় ১২ শিষ্যদের প্রেরিত বলা হয়
লূক ৯:১০ ১২                 শিষ্যদের প্রচারে পাঠানোর পরে যীশু তাদের প্রেরিত ডাকেন
লূক ১৭:৫ ১২                 প্রেরিত প্রভুকে বললেন, ‘আমাদের বিশ্বাস বাড়িয়ে দিন।’
লূক ২২:১৪                   প্রভুর ভোজে: যীশু প্রেরিতদের সংগে খেতে বসলেন
প্রেরিত ৫:১৮                  পুরোহিতরা ও সদ্দূকীরা প্রেরিতদের গ্রেফতার করেন
প্রেরিত ৫:২৯                  পিতর ও প্রেরিতরা যিহূদী পরিষদের সামনে উত্তর দেন
প্রেরিত ৫:৩৪                  গমলীয়েল প্রেরিতদের বাইরে রাখতে আদেশ দেন ও পরিষদের কাছে কথা বলেন
প্রেরিত ৫:৪০                  প্রেরিতদের আবার পরিষদের সামনে এনে তাদের বেত মেরে ছেড়ে দিলেন
১ পিতর ১:১                  পিতর, যীশু খ্রিষ্টের একজন প্রেরিত
২ পিতর ১:১                  শিমোন-পিতর, যীশু খ্রিষ্টের দাস ও প্রেরিত
প্রকাশিত ২১:১৪               শহরের ১২টি ভিত্তির উপরে মেষ-শিশুরবারোজন প্রেরিতদের নাম লেখা ছিল
এমন পদ যেখানে ‘প্রেরিত’ ১২ শিষ্যদের বুঝায় অন্যান্য নেতাদের সাথে পার্থক্য করে
প্রেরিত ৮:১                   অত্যাচারের ফলে প্রেরিতদের বাদে সবাই যিহূদা ও শমরিয়ায় ছড়িয়ে পড়ল
১ করি ১৫:৭                  যীশু যাকোবকে দেখা দেন, পরে সব প্রেরিতদের দেখা দেন, শেষে পৌলকে দেখা দেন
এমন পদ যেখানে ‘প্রেরিত’ ১২ শিষ্যদেরও বুঝায় কিন্তু হতে পারে যীশুর অন্যান্য শিশুদেরও:
লূক ২৪:১০                   মহিলারা পুনরুত্থানের বিষয়ে প্রেরিতদের সাক্ষাত দেন
প্রেরিত ১:২                   লূক: যীশু প্রেরিতদের যিরূশালেমে অপেক্ষা করতে বলেন
প্রেরিত ২:৩৭                 পঞ্চাশত্তমী-পর্বের শ্রোতারা পিতর এবং অন্যান্য প্রেরিতদের প্রশ্ন করে
প্রেরিত ২:৪২                 বিশ্বাসীরা প্রেরিতদের শিক্ষা শুনে সময় কাটাত।
প্রেরিত ২:৪৩, ৫:১২          সবাই ভক্তিপূর্ণ ভয়ে পূর্ণ হল, প্রেরিতেরা অনেক আশ্চর্য কাজ করেন
প্রেরিত ৪:৩৩                 প্রেরিতেরা মহাশক্তিতে সাক্ষ্য দেন যে যীশু মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন
প্রেরিত ৪:৩৫,৩৭, ৫:২        অনেকে টাকা-পয়সা এনে প্রেরিতদের পায়ের কাছে রাখে (বার্ণবা, অননিয়, সাফীরা)
প্রেরিত ৪:৩৬                 প্রেরিতেরা লেবীয় যোষেফকে ‘বর্ণবা’ বলে ডাকেন
প্রেরিত ৬:৬                   প্রেরিতেরা ৭জন নিযুক্ত করা সেবাকারীদের উপরে হাত দেন
প্রেরিত ৮:১৪                 প্রেরিতেরা শুনে শমরিয় লোকেরা ঈশ্বরের বাক্য বিশ্বাস করল > পিতর ও যোহনকে পাঠান
প্রেরিত ৮:১৮                 যাদুকর শিমোন প্রেরিতদের থেকে পবিত্র আত্মা দান দেওয়া ক্ষমতা কিনতে চায়
প্রেরিত ৯:২৭                 পৌলের মন পরিবর্তনের পরে বার্ণবা তাতে প্রেরিতদের কাছে এনে পরিচয় দেন
প্রেরিত ১১:১                 যিহূদিয়ায় প্রেরিতেরা শুনে যে অযিহূদীরাও ঈশ্বরের বাক্য বিশ্বাস করেছে
প্রেরিত ১৫:২                 মতের অমিল > পৌল ও বার্ণবা প্রেরিতদের সাথে দেখা করার জন্য যিরূশালেমে যান
প্রেরিত ১৫:৪                 মণ্ডলী, প্রেরিতেরা, প্রাচীনরা পৌল ও বার্ণবাকে আগ্রহের সঙ্গে গ্রহণ করলেন
প্রেরিত ১৫:৬                 প্রেরিতেরা ও প্রাচীনরা বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করার জন্য একসাথে বসেন
প্রেরিত ১৫:২২                প্রেরিতেরা, প্রাচীনরা, মণ্ডলীর লোকেরা একমত > কিছু লোকদের দ্বারা চিঠি পাঠানো হবে
প্রেরিত ১৫:২৩                প্রেরিত ও প্রাচীনদের থেকে সে চিঠি
প্রেরিত ১৫:৩৩               কিছু লোকদের শান্তিতে পাঠানো হয় (‘প্রেরিত’ এখানে কাকে বুঝায় তেমন পরিষ্কার না)
প্রেরিত ১৬:৪                 প্রেরিতেরা ও প্রাচীনরা সেই সিদ্ধান্ত মণ্ডলীদের জানান
লূক ১১:৪৯                  যীশু ফরীশীদের দোষ ধরেন: তারা ভাববাদী ও প্রেরিতদের (পাঠানো লোকদের) মেরে ফেলেছে। তা হতেও পারে নবীদের পাশাপাশি পুরাতন নিয়মের অন্য নেতাদের বুঝায়।
১ করি ৪:৯                  ঈশ্বর আমাদের অর্থাৎ প্রেরিতদের শেষে রাখেন। পৌল নিজেকে প্রেরিতদের মধ্যে রাখেন।
১ করি ৯:৫                  অন্যান্যা প্রেরিতদের মত অধিকার নেই? পৌল কম পক্ষে নিজেকে প্রেরিতদের মধ্যে রাখেন
পৌল তার প্রেরিত্ব দাবী বা রক্ষা করেন:
রোমীয় ১:১                  পৌল, যীশু খ্রিষ্টের দাস… তার প্রেরিত হওয়ার জন্য ঈশ্বর আমাকে ডেকেছেন
রোমীয় ১১:১৩               পৌল…অযিহূদীদের কাছে প্রেরিত
১ করি ১:১                  ঈশ্বরের ইচ্ছায় তাঁরই আহবানে আমি পৌল খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত হয়েছি
১ করি ৯:১                 আমি কি স্বাধীন নই? আমি কি প্রেরিত নই? আমাদের প্রভু যীশুকে কি আমি দেখি নি?
১ করি ৯:২                 পৌলের প্রেরিত-পদ প্রমাণিত কারণ করিন্থীয়রা প্রভুর লোক হয়েছে
১ করি ১৫:৯                প্রেরিতদের মধ্যে আমি (পৌল) সবচেয়ে নীচু
২ করি ১:১                 আমি পৌল ঈশ্বরের ইচ্ছায় খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত হয়েছি।
২ করি ১২:১২              অনেক ধৈর্যের সঙ্গে তোমাদের মধ্যে নানা রকম মহৎ ও আশ্চর্য কাজ করে আমি নিজেকে প্রেরিত বলে প্রমাণ করেছি
গালা ১:১                   আমি পৌল খ্রীষ্টের একজন প্রেরিত।
গালা ১:১৭                 যিরূশালেমে যারা আমার (পৌলের) আগে প্রেরিত ছিলেন
ইফিষীয় ১:১                আমি পৌল ঈশ্বরের ইচ্ছায় খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত
কলসীয় ১:১                আমি পৌল ঈশ্বরের ইচ্ছায় খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত হয়েছি
১ থিষ ২:৬                 প্রেরিত হিসাবে আমাদের অধিকার …খাটাতে পারতাম, কিন্তু নরম ব্যবহার করেছিলাম
১ তীম ১:১                 ঈশ্বরের ও যীশুর আদেশে আমি পৌল যীশু খ্রীষ্টের একজন প্রেরিত হয়েছি
১ তীম ২:৭                ঈশ্বর আমাকে প্রচারক, প্রেরিত ও সত্যের শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করেছেন
২ তীম ১:১                ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমি পৌল খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত হয়েছি
২ তীম ১:১১               আমাকে প্রচারক, প্রেরিত ও শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে
তীত ১:১                  আমি পৌল যীশু খ্রীষ্টের একজন প্রেরিত হয়েছি
এমন লোক যাদের নির্দিষ্টভাবে ‘প্রেরিত বলা হয় যদিও তারা ১২ শিষ্যদের মধ্যে ছিলেন না:
ইব্রীয় ৩:১                 যীশু, ঈশ্বরের সেই পাঠানো লোক (‘প্রেরিত’)
প্রেরিত ১:২৬               মত্তথিয় সেই এগারোজন প্রেরিতদের সঙ্গে যোগ দিলেন
প্রেরিত ১৪:৪,১৪           ইকনিয়: কেউ কেউ প্রেরিতদের পক্ষে গেল… পৌল ও বার্ণবা
রোমীয় ১৬:৭              আন্দ্রনিক ও যূনিয় …প্রেরিতদের মধ্যে তারা খুব সম্মানিত
২ করি ৮:২৩              অন্য ভাইদের সম্বন্ধে …মণ্ডলীগুলো তাঁদের পাঠাচ্ছে (‘তারা মণ্ডলীগুলোর প্রেরিত’)
গালা ১:১৯                প্রভুর ভাই যাকোব ছাড়া অন্য কোন প্রেরিতের সঙ্গে আমার দেখা হয় নি
ফিলিপীয় ২:২৫            ইপাফ্রদীত … তোমাদের কাছে পাঠানো (‘তোমাদের প্রেরিত’)
ভ্রান্ত প্রেরিত যারা তাদের অধিকার দাবী করে:
২ করি ১১:৫, ১২:১১       আমার মনে হয় না যে, আমি …ঐ সব ‘বিশেষ’ প্রেরিতদের চেয়ে পিছনের পড়ে আছি
২ করি ১১:১৩             এই রকম লোক তো ভ্রান্ত প্রেরিত ও ঠগ কর্মচারী…নিজেদের বদলে ফেলে
প্রকাশিত ২:২              ইফিষ মণ্ডলী: যারা প্রেরিত না হয়েও নিজেদের প্রেরিত বলে দাবি করে…তারা মিথ্যাবাদী

  • এখানে কিছু লোক নিজেদের ‘প্রেরিত’ বলে দাবি করতে পারে, তার মানে যে, ‘প্রেরিত’ টাইটেল শুধুমাত্র ১২জন শিষ্য এবং পৌল সম্বন্ধে ব্যবহৃত না বরং তাদের ছাড়া অন্য সুসমাচার কর্মীদের সম্বন্ধেও ব্যবহৃত হত।
  • ১২ শিষ্য এবং পৌল ছাড়াও কিছু লোকদের প্রেরিত বলা হত ও তাদের প্রেরিতের অধিকার মানা হত যেমন প্রভুর ভাই যাকোব যিরূশালেমে এবং যিহূদিয়ার বাইরে বার্ণবা, আন্দ্রীক, যূনিয়, ইত্যাদি।
  • তা ছাড়া, ‘প্রেরিত’ শব্দের অর্থ ছিল ‘পাঠানো লোক’, তাই যখন ফিলিপীয় ইপাফ্রদীতকে পাঠায়, তখন তাকে ‘ফিলিপীয় মণ্ডলীর প্রেরিত’ বলা হয়।
  • যীশু পুরাতন নিয়মের কিছু নেতাদেরও ‘প্রেরিত’ বলেন, যাদেরকে ইস্রায়েল অগ্রাহ্য করেছিল। যীশু প্রত্যক্ষভাবে নিজেকে ‘প্রেরিত’ বলেন, পিতা থেকে পাঠানো একজন। যীশু অনেক বার ১২ শিষ্যদের ‘প্রেরিত’ বলেন, যীশু দ্বারা পাঠানো লোক হিসাবে।

যোহন ১৩:১৬             যাকে পাঠানো হয় সে তাঁর চেয়ে বড় নয় যিনি তাকে পাঠিয়েছেন (প্রভুর ভোজে কথা)

  • যীশু এখানে ‘পাঠানো লোক’, ‘সংবাদদাতা’, ‘প্রেরিত’ শব্দ ও সাধারণভাবে ব্যবহার করেন।
  • কিন্তু নতুন নিয়মের মণ্ডলীতে ‘প্রেরিত’ বা ‘প্রেরিতের আহবান’ এমন কিছু যা শুধুমাত্র বিশেষ লোকদের সম্বন্ধে ব্যবহৃত না যারা শুরু থেকে ছিলেন বরং আরো সাধারণভাবেও ব্যবহৃত:

১ করি ১২:২৮            ঈশ্বর মণ্ডলীতে প্রথমতঃ প্রেরিত, দ্বিতীয়তঃ নবী …নিযুক্ত করেছেন।
১ করি ১২:২৯            সকলেই কি প্রেরিত? সকলেই কি নবী? সকলেই কে শিক্ষক?
ইফিষীয় ৪:১১            ঈশ্বর কিছু লোককে প্রেরিত, নবী, … হিসাবে নিযুক্ত করেছেন… যেন সব লোকেরা প্রস্তুত

  • এই পদ থেকে বুঝা যায় যে ‘প্রেরিত’ ভূমিকা শুধুমাত্র প্রথম প্রজন্ম মণ্ডলীর জন্য ছিল না, বরং যুগের পর যুগ যে কোনো মণ্ডলীতে এই ভূমিকাগুলির প্রয়োজন আছে। ঈশ্বর বিভিন্ন লোকদের এই ধরণের আহবান দিতে থাকবেন এবং তাদের এই ভূমিকায় ব্যবহার করতে থাকবেন যুগের পর যুগ যেন মণ্ডলী বৃদ্ধি পায়।
  • অবশ্যই ১২ শিষ্যদের চোখের সাক্ষী হিসাবে সব সময় একটি বিশেষ সম্মান ও ভার ছিল ও থাকবে। এই কারণে তো নতুন নিয়মের সুসমাচারগুলি ও চিঠিগুলি লেখা ও সংগ্রহ হয়েছিল যেন চোখের সাক্ষীদের সাক্ষ্য হারিয়ে না যায়:

ইফিষীয় ২:২০          তোমরাও তার রাজ্যের ও পরিবারের লোক হয়েছে। প্রেরিত আর নবীরা হলেন ভিত্তি
ইফিষীয় ৩:৫           সেই গুপ্ত উদ্দেশ্য এখন …তাঁর পবিত্র প্রেরিত ও নবীদের কাছে প্রকাশিত হয়েছে
২ পিতর ৩:২          নবীদের কথা এবং তোমাদের প্রেরিতদের মধ্য দিয়ে যে আদেশ দিয়ে গেলেন তা মনে রাখ
যিহূদা ১৭             যে সব কথা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিতেরা আগে বলেছিলেন তা তোমরা মনে করে দেখ

প্রাচীন                     G4245                                    ‘presbuteros’                 ৬৭ বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: প্রাচীন, বয়স্ক, বয়স বেশী, বুড়ো-বুড়ি, বড়

একজনের বয়স বেশী, তা বুঝানো:
লূক ১৫:২৫            হারানো পুত্রের বড় ভাই
প্রেরিত ২:১৭           নবী যোয়েল থেকে উদ্ধৃতি: বুড়ো লোকেরা স্বপ্ন দেখবে
যিহূদীদের পূর্বপুরুষকে বুঝানো হয়:
মথি ১৫:২, মার্ক ৭:৩, ৭:৫, ইব্রীয় ১১:২     পুরানো দিনের ধর্ম-শিক্ষকদের নিয়মগুলি, পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যগুলি
যিহূদী নেতাদের বুঝানো হয়:
মথি ১৬:২১, ২১:২৩, ২৬:৩, ২৬:৪৭, ২৬:৫৭, ২৭:১, ২৭:৩, ২৭:১২, ২৭:২০, ২৮:১২। মার্ক ৮:৩১, ১১:২৭, ১৪:৪৩, ১৪:৪৩, ১৪:৫৩, ১৫:১। লূক ৭:৩, ৯:২২, ২০:১, ২২:৫২। যোহন ৮:৯। প্রেরিত ৪:৫, ৪:৮, ৪:২৩, ৬:১২, ২৩:১৪, ২৪:১, ২৫:১৫।

  • যিহূদীদের প্রাচীনরা, যারা যীশুর বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, যীশুর গ্রেফতার, মামলা ও মৃত্যুদন্ডে তাদের হাত আছে। পরে তারা প্রেরিতদের, স্তিফানের, মণ্ডলীর ও পৌলের অত্যাচার চালান।

মণ্ডলী নেতাদের বুঝানো হয়:
প্রেরিত ১১:৩০          আন্তিয়খিয়া মণ্ডলীর প্রাচীনরা বার্ণবা ও পৌলকে পাঠান
প্রেরিত ১৪:২৩          পৌল ও বার্ণবা গালাতীয় মণ্ডলীতে প্রাচীন নিযুক্ত করেন
প্রেরিত ১৫:২, ১৫:৪, ১৫:৬, ১৫:২২, ১৫:২৩, ১৬:৪, ২১:১৮ যিরূশালেম মণ্ডলীতে প্রেরিত ও প্রাচীনরা আছে
প্রেরিত ২০:১৭          পৌল ইফিষ মণ্ডলীর প্রাচীনদের মিলিত হতে আসতে বলেন
তীত ১:৫               পৌল তীতকে ক্রীট মণ্ডলীতে প্রাচীনদের নিযুক্ত করতে বলেন
২ যোহন ১:১, ৩ যোহন ১:১ যোহন নিজের পরিচয় দেন ‘প্রাচীন’ হিসাবে
১ পিতর ৫:১           পিতর নিজের পরিচয় দেন প্রাচীন ও সাক্ষী হিসাবে
প্রকাশিত ৪:৪, ৪:১০, ৫:৫-১৪, ৭:১১, ৭:১৩, ১১:১৬, ১৪:৩, ১৯:৪
                       ২৪ জন প্রাচীন সিংহাসনের সামনে মেষ-শিশুকে আরাধনা করেন
মণ্ডলীর নেতৃত্ব হিসাবে প্রাচীনদের বিষয়ে নির্দেশনা:
১ তীম ৫:১            প্রাচীনকে দোষ দেখাতে গিয়ে…বাবার মত মনে করে তাঁদের সংশোধন কোরো
১ তীম ৫:২            বয়স্কা স্ত্রীলোকদের মায়ের মত মনে করে সংশোধন কোরো
১ তীম ৫:১৭           যারা ভালভাবে মণ্ডলীর পরিচালনা করেন, তাঁদের পাওনা দ্বিগুণ হওয়া উচিত
১ তীম ৫:১৯           দুই বা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য ছাড়া প্রাচীনের বিরুদ্ধে দোষের কথা কান দিয়ো না
যাকোব ৫:১৪          অসুস্থ হলে প্রাচীনদের ডেকে তেল দিয়ে তার জন্য প্রার্থনা
১ পিতর ৫:১           মেষের দলের রাখাল হও… দেখাশোনা করতে হবে বলে তা নয়… নিজের ইচ্ছাতেই তা কর
১ পিতর ৫:৫           যুবকেরা তোমরা প্রাচীনদের অধীনে থাক

  • যিরূশালেমে যিহূদীদের প্রাচীনরা ছিল ফরীশী, সদ্দূকী, ধর্ম-শিক্ষক ও হেরোদিয়দের পাশাপাশি একটি নির্দিষ্ট দল যারা অন্যদের মত যীশুর বিরুদ্ধে দাঁড়ায়: যীশুর গ্রেফতার, মামলা ও মৃত্যুদন্ডে তাদের হাত আছে। পরে তারা প্রেরিতদের ও মণ্ডলীর বিরুদ্ধে কাজ করে।
  • মণ্ডলীর প্রাচীনরা আন্তিয়খিয়া মণ্ডলীকে পরিচালনা করে, তারা প্রেরিতদের পাশাপাশি যিরূশালেম মণ্ডলীতে নেতৃত্ব দেয় এবং নতুন স্থাপিত মণ্ডলীতে প্রাচীনদের নিযুক্ত করা হয়।
  • মণ্ডলীর প্রাচীনদের নেতা হিসাবে সম্মান দেখানো হয়, কিন্তু তাদেরও দায়বদ্ধতায় আনা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আপীল করা যায় যদি তাদের বিরুদ্ধে দু্ই বা তিনজন সাক্ষী দাঁড়ায়।
  • একজন প্রাচীন হতে গেলে চরিত্রের বিষয়ে অনেক শর্ত আছে, যেমন তীত ১:৫-৯ পদে বর্ণনা করা হয়।
  • মনে হচ্ছে যে ‘প্রাচীন’ ও ‘অধ্যক্ষ’ মোটামুটি একই ভূমিকার জন্য দুইটি শব্দ। যেমন প্রেরিত ২০:১৭ পদে পৌল ইফিষ মণ্ডলীর প্রাচীনদের কাছে কথা বলেন কিন্তু তার বক্তৃতায় তিনি তাদেরকে ‘অধ্যক্ষ’ হিসাবে চ্যালেঞ্জ করেন, যেন তারা মেষের দলকে ভালভাবে দেখাশুনা করেন ও ভ্রান্ত শিক্ষকদের প্রতিরোধ করেন (প্রেরিত ২০:২৮-৩১)।
  • আর একটি উদাহরণ হল তীত ১:৫-৯ যেখানে পৌল নতুন স্থাপিত মণ্ডলীতে প্রাচীনদের নিযুক্ত করার জন্য দিক-নির্দেশনা ও চরিত্রের ক্ষেত্রে শর্তগুলি দেন। তালিকার মাঝখানে পৌল একটি কারণ দেখান: ‘কারণ দায়িত্ব ভার পাওয়া লোক হিসাবে অধ্যক্ষকে এমন হতে হয়…’ (তীত ১:৭)। তা দেখে মনে হচ্ছে যে ‘প্রাচীন’ ও ‘অধ্যক্ষ’ মোটামুটি একই ভূমিকা বুঝায়। কিন্তু: তালিকা যেহেতু কিছু বিষয় পুনরুক্তি করে বলে কেউ কেউ মনে করেন যে দুইটি তালিকা আছে, একটি প্রাচীনের জন্য, একটি অধ্যক্ষের জন্য।
  • ইফিষীয় ৪:১১ পদে মণ্ডলীতে ৫টি ভূমিকা বা ‘মণ্ডলীর পাঁচ মুখী পরিচর্যা’ উল্লিখিত যা দ্বারা বিশ্বাসীরা তাদের কাজের জন্য প্রস্তুত হয়, কিন্তু তাতে ‘প্রাচীন’ বা ‘অধ্যক্ষ’ নেই। হতে পারে প্রাচীন বা অধ্যক্ষ মণ্ডলীর স্থানীয় নেতৃত্ব বুঝায় যাতে দক্ষতা বা তালন্তের চেয়ে চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার পাশাপাশি সে ৫টি ভূমিকাও চলবে।

 

তীত ১:৫-৯             প্রাচীন বা অধ্যক্ষ হওয়ার জন্য চারিত্রিক শর্তগুলি
‘ক্রীট দ্বীপে যে কাজ এখনও অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়ে গেছে তা ঠিক করবার জন্যই আমি তোমাকে ক্রীট দ্বীপে রেখে এসেছি। আমি তোমাকে যে আদেশ দিয়েছিলাম সেই অনুসারে প্রত্যেক শহরের মণ্ডলীতে প্রধান নেতাদের কাজে বহাল কোরো। ৬ মণ্ডলীর প্রধান নেতাকে এমন হতে হবে যেন কেউ তাঁকে দোষ দিতে না পারে। তাঁর মাত্র একজনই স্ত্রী থাকবে। তাঁর ছেলেমেয়েরা যেন খ্রীষ্টে বিশ্বাসী হয়, যেন তারা নিজেদের খুশীমত না চলে এবং অবাধ্য না হয়। ৭ ঈশ্বরের কাছ থেকে দায়িত্বভার পাওয়া লোক হিসাবে সেই পরিচালককে এমন হতে হবে যাতে কেউ তাঁর নিন্দা করতে না পারে। তিনি যেন একগুঁয়ে, রাগী, মাতাল বা বদ্‌মেজাজী না হন। অন্যায় লাভের দিকে যেন তাঁর ঝোঁক না থাকে; ৮ তার বদলে অতিথি সেবা ও দয়ার কাজ করতে তিনি যেন ভালবাসেন। তাঁর ভাল বিচারবুদ্ধি থাকবে, তিনি সৎ ও ঈশ্বরের বাধ্য হবেন এবং নিজেকে দমনে রাখবেন। ৯ ঈশ্বরের বিশ্বাসযোগ্য বাক্য, যা আমি শিক্ষা দিয়েছি, তাঁকে তা শক্ত করে ধরে রাখতে হবে, যেন সত্য শিক্ষার বিষয় তিনি প্রচার করতে পারেন এবং যারা বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাদের ভুল দেখিয়ে দিতে পারেন।’

  • নতুন স্থাপিত মণ্ডলীতে প্রাচীনদের নিযুক্ত করা পৌলের দৃষ্টিতে হল ‘অসম্পূর্ণ কাজ পূর্ণ করা’!
  • এইটা একজন প্রেরিত বা অগ্রগামী লোকের দৃষ্টি যার বিশ্বাস আছে যে মণ্ডলীগুলি টিকবে এবং নিজেকে চালাতে জানবে। তবুও পৌল নতুন স্থাপিত মণ্ডলীদের চলে যাওয়ার পরেও সেবা-যত্ন নেন: তিনি চিঠি লিখেন, লোকদের পাঠান, প্রার্থনা করেন ও আবার বেড়াতে যান নিশ্চিত করার জন্য যে তারা ভালভাবে বেড়ে উঠবে।
  • কে প্রাচীনদের নিযুক্ত করবে? মনে হচ্ছে এখানে পৌলের সহ-প্রেরিত তীত প্রাচীনদের নিযুক্ত করেন। হতে পারে তীত লোকদের এই প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করতে দিতেন, তাদের প্রস্তাব, সুপারিশ মতামত বিবেচনা করে। প্রেরিতের অধিকার এবং সাথে লোকদের থেকে প্রস্তাব।
  • মণ্ডলীর নেতৃত্ব ঠিক করলে প্রধানভাবে পরিবার, শ্রেণী, জাতি, ব্যাকগ্রাউন্ড বা দক্ষতা ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না বরং চরিত্র দেখে লোকদের নিযুক্ত করা হয়। আহবান ভিত্তিক নিয়োগ করা হয়? তার কোনো উল্লেখ নেই। আহবানকে প্রেরিত ভূমিকার ক্ষেত্রে আরো ভার দেওয়া হয়। প্রাচীন বা অধ্যক্ষদের ক্ষেত্রে যে কোনো একজন যার চরিত্র ভাল ও অন্যদের চোখে সুনাম আছে সে নেতৃত্বে আসতে পারে।
  • চরিত্র অনুসারে নিয়োগ করার অর্থ এই, আস্তে আস্তে এমনি এমনি পরিষ্কার হয়ে উঠবে কাকে নেতা হিসাবে নিযুক্ত করা উচিত: এমন ব্যক্তি যিনি বিশ্বাসযোগ্য, যিনি আদর্শ, যিনি এক পরিমাণে ইতিমধ্যে সেবা করেছেন, উদ্যোগ বা দায়িত্ব নিয়েছেন ও নিজেকে তার ব্যবহার দ্বারা অন্যদের চোখে ভাল হিসাবে প্রমাণ করেছেন। রিচার্ড ওয়াডেল ‘নিযুক্ত করা (ordain) মানে শুধুমাত্র এই: যা ইতিমধ্যে হচ্ছে তা সবার সামনে অনুমোদিত করা (confirm)।’
  • ‘প্রত্যেক শহরে’ লোকদের নিজের মধ্য থেকে প্রাচীন বা অধ্যক্ষ নিযুক্ত করা। কেন্দ্রিক নেতৃত্ব নয় বরং স্থানীয় নেতৃত্ব যারা সাধারণ সদস্যদের কাছে তাদের ব্যবহারের জন্য দায়বদ্ধ। তা কি নতুন নিয়মের সব মণ্ডলীর নেতৃত্বের জন্য প্রযোজ্য? মনে হচ্ছে হ্যাঁ, অবশ্যই স্থানীয় মণ্ডলীর ক্ষেত্রে।
  • এখানে আগের নেতা (পৌল) তার পরিবর্তে নতুন নেতা ঠিক করেন (তীত), যিনি স্থানীয় প্রাচীনদের ঠিক করবেন। এইটা কি প্রেরিতদের অধিকার অভগ্নভাবে নেতার থেকে নেতাকে দান (যেমন ক্যাথলিক মণ্ডলীতে প্রেরৈতিক অধিকার বুঝে)? কিন্তু পৌল তীতের হাতে নামের তালিকা রেখে চলে যান না, বরং চরিত্রের শর্তের তালিকা। তাই বুঝা যায় তিনি শুধুমাত্র এই সময়ের নিয়োগ নিয়ে কথা বলেন না, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কিভাবে নেতৃত্ব ঠিক করবে, তার দিক-নির্দেশনাও দেন।
  • ‘তাঁর মাত্র একজনই স্ত্রী থাকবে। তাঁর ছেলেমেয়েরা যেন খ্রীষ্টে বিশ্বাসী হয়, যেন তারা নিজেদের খুশীমত না
    চলে এবং অবাধ্য না হয়’। আদর্শ লোক, বহুবিবাহ চলবে না, নিজের পরিবারে তার নেতৃত্ব ইতিমধ্যে প্রমাণিত, নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত না, স্বেচ্ছাচারী নয়।
  • যদি মনে করা হয় যে এখানে দুইটি তালিকা দেওয়া আছে তবে দেখা যায় যে একজন ‘প্রাচীনের’ জন্য ৫টি শর্তাবলী দেওয়া আছে, কিন্তু একজন ‘অধ্যক্ষের’ জন্য ১৪টি শর্তাবলী দেওয়া আছে। এভাবে ব্যাখ্যা করা যায় যে একজন নেতার যত বেশি দায়িত্ব থাকে তার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের শর্ত তত বেশি। যেহেতু তার প্রভাব বেশি, তার দায়বদ্ধতাও বেশি। তা দেখায় নেতৃত্ব সম্বন্ধীয় আমাদের সাধারণ চিন্তাগুলি সম্পূর্ণ ভুল, আমরা মনে করি: ‘নেতা হলে যা চাই তাই করা যায়’।
  • অধ্যক্ষকে এখানে ‘দায়িত্বভার পাওয়া লোক’ বা ‘ঈশ্বরের দেখাশুনাকরী’, বলা হয় যা আদি ১:২৮ পদের সাথে মিলে, যেখানে মানুষের কাজের বা উদ্দেশ্যের প্রথম বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
  • ‘তিনি যেন একগুঁয়ে, রাগী, মাতাল বা বদ্‌মেজাজী না হন’। যীশুর কথায় নেতৃত্বের সংজ্ঞা হল এমন লোক যিনি সেবা করেন এবং নিজের চেয়ে অন্যদের গুরুত্ব দেন (মথি ২০:২৬, মার্ক ১০:৪৩, লূক ২২:২৬)।
  • যিনি ‘রাগী, বদ্‌মেজাজী’ তার ভাল বিচার বুদ্ধি নেই, তিনি কথা শুনে না, সহজে গরম হয়ে যায়, লোকদের আঘাত করে (কথা, ব্যবহার বা হাত দ্বারা), পরে হয়তো আবার খারাপ লাগে। লোকেরা তাকে ভয় পায়, স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে না। স্ত্রীকে যিনি মারে তিনি অধ্যক্ষ হতে পারবেন না, সংস্কৃতি যাই বলুক না কেন।
  • ‘যার স্বনিয়ন্ত্রণ আছে’, যিনি আইন-শৃংখল না হলে অধ্যক্ষের আদর্শ হওয়া বা শিক্ষা দেওয়া অধিকার নেই, কারণ নিজে পালন না করলে তিনি কোনো মানদন্ড রক্ষা করতে পারবে না।
  • ‘মাতাল, নেশা-আশক্ত না হন’ যার ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ কোনো অভ্যাস না থাকে, কারণ আশক্ত হলে মানে এতে প্রাধান্য দেওয়া, এর ব্যবস্থা নিশ্চিত করায় ব্যস্ত থাকা, ভুল বিষয়ের উপর নির্ভর করা, শক্তি পাওয়া, টাকার ভুল খরচ করা। নিজেকে পরীক্ষা করার প্রশ্ন: আমি টাকা-পয়সা কোথায় খরচ করি? বিরক্ত পেয়ে বা হতাশায় পড়লে কি করি?
  • বাকী শর্তগুলির ক্ষেত্রে ১ তীম ৩:১-৭ দেখুন।
  • ‘ঈশ্বরের বিশ্বাসযোগ্য বাক্য…শক্ত করে ধরে রাখতে হবে, যেন সত্য শিক্ষার বিষয় তিনি প্রচার করতে পারেন’। তালিকায় অধিকাংশ শর্তাবলী ছিল চরিত্রের বিষয়, শুধুমাত্র এখানে কিছুটা দক্ষতার বিষয়ও আসে: বাক্য ধরে রাখা, সঠিক শিক্ষা বুঝা ও দেওয়া, ব্যাখ্যা করা, পার্থক্য বুঝা, ভালভাবে বুঝিয়ে একমত করানো (convince), বিরুদ্ধীয় লোকদের ভুল দেখানোর ক্ষমতা থাকা। কিন্তু তারপরেও: শিক্ষা দেওয়ার অধিকার আসে যখন শিক্ষার সাথে আমার আচার-ব্যবহার মিলে। যা প্রয়োজন হল সত্যে সমর্পিত থাকা, ইচ্ছুক হৃদয় ও মন, সাহস, ধৈর্য, যদিও হয়তো আমি শিক্ষিত নই।

 

১ তীমথিয় ৫:১৭-২২          প্রাচীনদের সম্মান দেখানো বা সংশোধন করা
‘মণ্ডলীর যে সব প্রধান নেতারা ভালভাবে মণ্ডলীর পরিচালনা করেন, বিশেষ করে যাঁরা ঈশ্বরের বাক্য প্রচার ও শিক্ষা দান করবার জন্য পরিশ্রম করেন, তাঁদের পাওনা দ্বিগুণ হওয়া উচিত। ১৮ পবিত্র শাস্ত্রে আছে, “শস্য মাড়াই করবার সময়ে বলদের মুখে জাল্‌তি বেঁধো না।” আরও লেখা আছে, “যে কাজ করে সে বেতন পাবার যোগ্য।” ১৯ দুই বা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য ছাড়া মণ্ডলীর কোন প্রধান নেতার বিরুদ্ধে কোন দোষের কথায় কান দিয়ো না। ২০ যে সব প্রধান নেতারা পাপ করতেই থাকেন মণ্ডলীর সমস্ত লোকদের সামনে তাঁদের দোষ দেখিয়ে দিয়ো যাতে অন্যান্য নেতারাও ভয় পান। ২১ ঈশ্বর ও খ্রীষ্ট যীশু এবং বাছাই করা স্বর্গদূতদের সামনে আমি তোমাকে এই আদেশ দিচ্ছি-কারও পক্ষ না নিয়ে এই সব কোরো এবং একচোখা হয়ে কোন কাজ কোরো না। ২২ তাড়াতাড়ি করে কারও উপর হাত রেখে কাউকে কোন পদে নিযুক্ত কোরো না। অন্যেরা যখন পাপ করে তখন তাদের সংগে যোগ দিয়ো না। নিজেকে খাঁটি রেখো।’

  • প্রাচীনরা মণ্ডলীর জন্য পরিশ্রম করে ও মণ্ডলীর মঙ্গল খোঁজে, তাই তারা তাদের পাওনা দ্বিগুণ পাক। তাদের পাওনা মানে কি? টাকা-পয়সা? হতে পারে না। ইংরেজি অনুবাদ “তারা দ্বিগুণ সম্মান পাওয়ার যোগ্য”।
  • নীতিটি হল যে তাদের পরিশ্রম, প্রচেষ্টা, সময় দান ও নিজেকে দান মূল্যবান ও তাই সম্মানের যোগ্য।
  • মণ্ডলীর নেতারা যদি ভাল করে তারা অবশ্যই (দ্বিগুণ) সম্মান পাওয়ার যোগ্য কিন্তু তারা দায়বদ্ধতার উর্ধে নয়: যদি তারা পাপ করে অথবা সমস্যায় পড়ে, তবে একটি ন্যায্য প্রক্রিয়া দরকার।
  • নেতা সম্বন্ধে খারাপ কিছু শুনলে আমরা তা সাথে সাথে বিশ্বাস করি। এই বিষয়ে এখানে সাবধানবাণী দেওয়া হয়েছে: আমরা যেন পরস্পর সম্বন্ধে ভাল কিছু বিশ্বাস করতে ইচ্ছুক এবং লাফিয়ে খারাপ খবর গ্রহণ না করি। কিন্তু যদি সত্যি সমস্যা চলছে তবে তা লুকানো যাবে না, চেপে রাখা ঠিক না। সত্য কি, তা তদন্ত করে খুঁজে বের করতে হবে ও পাপ থাকলে তা আলোতে আনতে হবে।
  • কে বিষয়টি তুলবে? সাক্ষীরা? আঘাত-গ্রস্ত লোকেরা? অন্যান্য প্রাচীনরা? পালক?
  • কার কাছে বিষয়টি তুলতে হবে? অন্যান্য প্রাচীনদের কাছে? পালকের কাছে?
  • প্রক্রিয়া কি? > দু্ই তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য মিল না থাকলে প্রমাণিত মনে করা যাবে না। যদি মিল থাকে তবে ব্যক্তিগতভাবে প্রাচীনকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে। যদি সংশোধন না হয়, তবে সবার সামনে দোষ দেখিয়ে দিতে হবে। প্রক্রিয়া হল যেমন মথি ১৮:১৫-২০ এবং তীত ৩:১০ পদেও উল্লিখিত।
  • ‘যে সব প্রধান নেতারা পাপ করতেই থাকেন’ একবার ভুল বা পাপ করলে সাথে সাথে নেতৃত্ব বা মণ্ডলী থেকে বাদ দেওয়া ঠিক নয়। উদ্দেশ্য হল যেন প্রাচীন ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু যদি তারা পাপ করতেই থাকে, সংশোধন যদি মেনে না নেন তবে এই প্রক্রিয়া অনুসারে আগাতে হবে।
  • তা না হলে (ভয়ের কারণে, বা মণ্ডলীর সুনাম রক্ষা করার জন্য) তবে সে পাপ, সে আঘাত ঘটতে থাকবে, এলোমেলো বাড়বে, লোকেরা ভুল বুঝবে ও প্রলোভনে পড়বে, সঠিক শিক্ষার প্রতিরোধ হবে ও ভুল জিনিসকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
  • ‘কারও পক্ষ না নিয়ে’ মণ্ডলীতে ন্যায্য প্রক্রিয়া থাকতে হবে, কোন প্রদানকে, উচুঁ পদের লোককে, শক্তিশালীকে, প্রভাবশালীকে, আত্মীয়কে প্রাধান্য দেওয়া চলবে না। কারও পক্ষ নেওয়া চলবে না কারণ দুই পাশে অন্যায় থাকতে পারে, প্রাচীনের পাশে এবং দোষারোপকারীর পাশে।
  • ‘তাড়াতাড়ি করে কারও উপর হাত রেখে কাউকে কোন পদে নিযুক্ত কোরো না’। যেহেতু প্রাচীনের প্রভাব ও এক পরিমানে ক্ষমতা থাকবে (ভাল করার জন্য বা খারাপ করার জন্য), তার চরিত্রকে সাবধাণভাবে মূল্যায়ন করা দরকার। আস্তে আস্তে বুঝা যায় লোকদের মনোভাব আসলে কি, সময় প্রকাশিত করবে একজন আসলে কেমন, উভয় ভাল দিকে এবং খারাপ দিকে। যদি ভাল করছেন কিন্তু কোন সম্মান না পান, নিরুৎসাহিত হবেন না, সঠিক সময়ে বিষয়টি প্রমাণিত হবে। যদি খারাপ করছেন সাবধাণবাণী: মনে করবেন না যে চিরকাল পর্যন্ত সবাইকে ভুলাতে পারবেন!
  • ‘অন্যেরা যখন পাপ করে তখন তাদের সংগে যোগ দিয়ো না। নিজেকে খাঁটি রেখো।’ মণ্ডলীতে যদি আমার এক পরিমান পর্যন্ত নেতৃত্ব আছে একটি ভুল ব্যবহারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বা এমন কি বুঝতে, সমস্যা আসলে কোথায়, খুব কঠোর কাজ। একটি ভাল প্রতিষ্ঠানে (যেমন মণ্ডলী) একটি ভুল আচরণের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো অনেক কষ্টের বিষয় কারণ অনেকবার আমার দোষ ধরা হবে যে আমি বিদ্রোহ বা অসম্মান করছি এবং যে জিনিস রক্ষা করতে চেষ্টা করছি, তা আসলে ধ্বংস করি। উদাহরণ: মার্টিন লুথার। মাঝের মধ্যে আমরা অতি বাধ্য।

অধ্যক্ষ, দেখাশুনাকারী, পরিচালক                 G1985                        ‘episkopos’                       ৭বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: অধ্যক্ষ, দেখাশুনাকরাী, পরিচালক, মণ্ডলীতে একজন
অফিসার

প্রেরিত ২০:২৮        ইফিষ মণ্ডলীর প্রাচীনদের কাছে: দেখাশুনাকারী বা পরিচালক হিসাবে মেষ দলকে রক্ষা কর
ফিলিপীয় ১:১         পৌল মণ্ডলীর নেতৃত্বকে বলেন ‘পরিচালক ও পরিচারক’
১ তীম ৩:১-৭         নেতৃত্ব নিযুক্ত: একজন দেখাশুনাকারী বা অধ্যক্ষের কেমন হওয়া দরকার
তীত ১:৫-৯           নেতৃত্ব নিযুক্ত: একজন প্রাচীন বা অধ্যক্ষের কেমন হওয়া দরকার
১ পিতর ২:২৫        যীশু সে রাখাল যিনি তোমাদের অন্তরের দেখাশুনা করেন

  • পুরো নতুন নিয়মে এই শব্দ মাত্র ৫ বার ব্যবহৃত! দুইবার শব্দটি আসে মণ্ডলীর নেতৃত্ব বুঝানোর জন্য (ইফিষ ও ফিলিপী) এবং দুইবার যখন মণ্ডলীর নেতৃত্বের চরিত্রের বিষয় শর্তগুলি দেওয়া হয় (১ তীম ৩তীত ১)।
  • তা দেখলে প্রশ্ন উঠে: মণ্ডলীর নেতৃত্বের ক্ষেত্রে ‘অধ্যক্ষ’ কত প্রচলিত ছিল?
  • ‘অধ্যক্ষ/পরিচালক’ এবং ‘পরিচারক’ বা ‘ডীকন’ একসাথে মাত্র ২ বার উল্লিখিত (ফিলিপীয় ১:১, ১ তীম ৩)।
  • তাই চিন্তা করা যায় যে ‘অধ্যক্ষ’ হল ‘প্রাচীন’কে বুঝানোর আর একটি শব্দ মাত্র। যেমন প্রেরিত ২০:১৭ পদে পৌল ইফিষ মণ্ডলীর প্রাচীনদের কাছে কথা বলে তাদের ‘অধ্যক্ষ’ বা ‘দেখাশুনাকারী’ হিসাবে মেষ দলকে ভাল যত্ন নিতে ও ভ্রান্ত শিক্ষক প্রতিরোধ করতে আদেশ দেন (প্রেরিত ২০:২৮-৩১)।
  • আর একটি উদাহরণ হল তীত ১:৫-৯ যেখানে পৌল নতুন স্থাপিত মণ্ডলীতে প্রাচীনদের নিযুক্ত করার বিষয়ে মাঝখানে বলেন ‘ঈশ্বরের কাছ থেকে দায়িত্বভার পাওয়া লোক হিসাবে সেই পরিচালককে এমন হতে হবে’ (তীত ১:৭)। আবারও হতে পারে যে ‘প্রাচীন’ ও ‘অধ্যক্ষ’ বা ‘দায়িত্বভার পাওয়া লোক’ একই লোককে বুঝায়। কিন্তু তালিকার একটি শর্ত পুনরুক্তি হওয়ার কারণে কেউ কেউ বলে যে ‘প্রাচীন’ এবং ‘অধ্যক্ষের’ জন্য আলাদা তালিকা দেওয়া হয়েছে।
  • ১ পিতর ২:২৫ পদে যীশুকে বর্ণনা করা হয় ‘অধ্যক্ষ’ ও ‘রাখাল’ হিসাবে যিনি বিশ্বাসীদের অন্তরের দেখাশুনা করেন। যীশু হলেন রাখাল (পালক) ও দেখাশুনাকারীর (অধ্যক্ষ) সর্বোচ্চ আদর্শ। যীশুর আদর্শ থেকে মণ্ডলীর নেতাদের ব্যবহারের জন্য নীতি নেওয়া যায়। কিন্তু এইটা থেকে অতি কঠোর কাঠামো বা অতি নির্দিষ্ট ভূমিকা টানা যায় না। যীশুকে একইভাবে প্রধান নবী, প্রচারক, প্রেরিত বা সর্বোচ্চ শিক্ষকও বলা যায়।
  • ইফিষীয় ৪:১১ পদে মণ্ডলীতে সে ৫টি ভূমিকা দেখানো হয়, যদিও ‘প্রাচীন’ ও ‘অধ্যক্ষ’ তালিকায় নেই। হতে পারে ‘প্রাচীন’ বা ‘অধ্যক্ষ’ হলেন মণ্ডলীর স্থানীয় নেতৃত্ব যাদের জন্য দক্ষতা নয় বরং চরিত্র ও মনোভাব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

তীত ১:৫-৯          একজন প্রাচীন বা অধ্যক্ষের কেমন হওয়া দরকার  প্রাচীনদের ক্ষেত্রে আলোচনা দেখুন।

১ তীমথিয় ৩:১-৭   একজন অধ্যক্ষের কেমন হওয়া দরকার
‘এই কথা বিশ্বাসযোগ্য যে, যদি কেউ মণ্ডলীর পরিচালক হতে চায় তবে সে একটা ভাল কাজ করবার ইচ্ছাই করে। ২ পরিচালককে সেইজন্য এমন হতে হবে যেন কেউ তাঁকে দোষ দিতে না পারে। তাঁর মাত্র একজন স্ত্রী থাকবে। তিনি নিজেকে দমনে রাখবেন এবং তাঁর ভাল বিচারবুদ্ধি থাকবে। তিনি ভদ্র হবেন ও অতিথি সেবা করতে ভালবাসবেন। অন্যদের শিক্ষাদান করবার ক্ষমতা তাঁর থাকবে। ৩ তিনি যেন মাতাল ও বদ্‌মেজাজী না হন, বরং তাঁর স্বভাব যেন নম্র হয় এবং তিনি যেন ঝগড়াটে বা টাকার লোভী না হন। ৪ তিনি যেন উপযুক্তভাবে তাঁর নিজের বাড়ীর সব কিছু পরিচালনা করেন এবং তাঁর ছেলেমেয়েরা যেন বাধ্য ও ভদ্র হয়। ৫ যিনি তাঁর নিজের বাড়ীর ব্যাপার পরিচালনা করতে জানেন না তিনি কি করে ঈশ্বরের মণ্ডলীর দেখাশোনা করবেন? ৬ মণ্ডলীর পরিচালক যেন নতুন বিশ্বাসী না হন, কারণ নতুন বিশ্বাসী হলে তিনি হয়তো অহংকারে ফুলে উঠবেন এবং শয়তানকে দেওয়া শাস্তির যোগ্য হবেন। ৭ বাইরের লোকদের কাছে তাঁর সুনাম থাকা দরকার, যেন তিনি দুর্নামের ভাগী না হন এবং শয়তানের ফাঁদে না পড়েন।’

  • ‘পরিচালক হতে চায়’ … এমন লোক যিনি স্বচলিত, আগ্রহী, আকাঙ্খী। এই আকাঙ্খা খারাপ না, কিন্তু অন্যদের অনুমোদন ও নিয়োগ দরকার। আগ্রহ ও প্রচেষ্টা ভাল বিষয়, নিজেকে নিযুক্ত করা ভাল বিষয় নয়।
  • ‘যেন কেউ তাঁকে দোষ দিতে না পারে’ … এমন একজন যিনি সত্যিকারের আদর্শ হন, যিনি মনে প্রাণে ঈশ্বরের অন্বেষণ করেন, যার কথা, চিন্তা, মনোভাব ও আচরণ-ব্যবহার সব মিলে।
  • ‘তাঁর মাত্র একজন স্ত্রী থাকবে’ … এর অর্থ এই নয় যে অবিবাহিত লোক অধ্যক্ষ হতে পারে না (না হলে যীশু বা পৌলকেও বাদ দিতে হয়)। এর অর্থ এই নয় যে একজন বিপত্নীক বা একজন মহিলা অধ্যক্ষ হতে পারে না, বরং কথাটি বহুবিবাহের বিরুদ্ধীয়: বহুবিবাহ মণ্ডলীতে করা যাবে না। যদি একজন বিশ্বাসী হওয়ার আগে বহুবিবাহে আছেন, তবে স্ত্রীদের ত্যাগ করা ঠিক না, কিন্তু এই ধরণের লোক আদর্শ নয় এবং ফলে অধ্যক্ষ হতে পারেন না।
  • ‘অতিথি সেবা করতে ভালবাসবেন’ … এমন একজন, যিনি মানুষকে ভালবাসে, যিনি লোকদেরকে ও সম্পর্কের উপরে গুরুত্ব দেন, যিনি খোলা বা বড় মনের, নতুন লোকদের প্রতি আগ্রহী ও নতুন চিন্তা বা প্রচেষ্টায় খোলা। এমন একজন যিনি স্বাগতম জানাতে জানে, যিনি লোকদের প্রয়োজন মেটান ও নতুন প্রচেষ্টা মুক্ত করেন। অবশ্যই অতিথিপরায়ন হওয়াকে মানুষ ভুলভাবে ব্যবহার করতে পারে, তাই কিছু সীমানা প্রয়োজন (২ যোহন)
  • ‘অন্যদের শিক্ষাদান করবার ক্ষমতা তাঁর থাকবে’ যদিও চরিত্র, মনোভাব ও ব্যবহার আরো গুরুত্বপূর্ণ, শিক্ষার ক্ষেত্রে দক্ষতা থাকা আবশ্যক।
  • ‘তিনি ভদ্র হবেন…তিনি যেন মাতাল ও বদ্‌মেজাজী না হন, বরং তাঁর স্বভাব যেন নম্র হয়’ … ভদ্র, নম্র, শান্ত, কথা শুনতে আগ্রহী, বুঝতে পারেন, স্বনিয়ন্ত্রিত, ভয়ংকর নয় বরং মিশুক, যার কাছে সহজেই আসা যায়। এমন একজন যিনি অন্যদের আঘাত করেন না বরং যিনি অন্যদের জন্য একটি ইতিবাচক, নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেন।
  • ‘তিনি যেন ঝগড়াটে বা টাকার লোভী না হন’ … নেতা লোভী হলে তিনি তার পদ, প্রভাব বা ক্ষমতা ভুলভাবে ব্যবহার করবে। লোভ ঈশ্বরের প্রতি বাধ্য থাকা ও ঈশ্বর ও তার লোকদের প্রাধান্য দেওয়া সরিয়ে আস্তে আস্তে তার সততা নষ্ট করবে। নেতাদের জন্য বড় প্রলোভনগুলি যুগে যুগে একই: ধন, যৌনতা ও ক্ষমতা। কিভাবে নিজের জীবনে লোভকে প্রতিরোধ করব? কৃতজ্ঞতা, সন্তুষ্টি ও বিশ্বস্ততা দ্বারা। নিজেকে পরীক্ষা করে দেখুন: আমি কি বিষয়ে প্রাধান্য দিচ্ছি?
  • ‘তিনি যেন উপযুক্তভাবে তাঁর নিজের বাড়ীর সব কিছু পরিচালনা করেন এবং তাঁর ছেলেমেয়েরা যেন বাধ্য ও ভদ্র হয়। ৫ যিনি তাঁর নিজের বাড়ীর ব্যাপার পরিচালনা করতে জানেন না তিনি কি করে ঈশ্বরের মণ্ডলীর দেখাশোনা করবেন?  … অধ্যক্ষের হতে হয় একটি আদর্শ। তার পরিবার যদি সুখী পরিবার হয়, যেখানে শৃঙ্খলা এবং স্বাধীনতা উভয় থাকে, যেখানে নিজেকে প্রকাশ করা ও সম্মান দেখানো উভয় থাকে, তবে পরিবারটি একটি শক্তিশালী সাক্ষ্য। এই উদ্দেশ্য ‘জোর দিয়ে’ বা দমন দিয়ে পূর্ণ করা যায় না। স্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণ করা বা ছেলে-মেয়েদের দমন করা চলবে না। বাবা-মা হিসাবে আমরা একটি প্রাপ্ত বয়সের সন্তানের সিদ্ধান্তের জন্য দায়ী নয়, একটি সন্তানের স্বাধীন ইচ্ছা আছে। নেতৃত্বে যারা আছেন, তাদের বিবাহ, পরিবার ও ছেলে-মেয়েদের জন্য প্রার্থনা করুন। শয়তান জানে যে পাপের ফাঁদে ফেলতে পারলে তাদেরকে পরিচর্যা থেকে বঞ্চিত করতে পারে।
  • ‘বাইরের লোকদের কাছে তাঁর সুনাম থাকা দরকার, যেন তিনি দুর্নামের ভাগী না হন’… এমন লোক যাকে অন্যরা ভাল মনে করে, উভয় মণ্ডলীর লোকদের চোখে এবং বাইরের লোকদের চোখে। এমন একজন যার আদর্শ জীবন, যার প্রজ্ঞা প্রমাণিত, যিনি প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন।
  • ‘মণ্ডলীর পরিচালক যেন নতুন বিশ্বাসী না হন’ … পৌল যথেষ্ট তাড়াতাড়ি মণ্ডলীগুলি স্থাপন করতেন ও প্রাচীনদের নিযুক্ত করতেন (প্রেরিত ১৩-১৪)। তারপরেও কথাটি দেওয়া আছে। মণ্ডলী ভবিষ্যতে কিভাবে প্রাচীন নিযুক্ত করবে, তা পৌল বুঝান। তা অতিরিক্ত পালন করলে বয়স ও অভিজ্ঞতা চরিত্র ও পরিপক্ষতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। চমৎকার যুবকদের নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত করার ভয় আছে। কিন্তু সাবধান না থাকলে আমি হয়তো ভাল লোককে অতি তাড়াতাড়ি নেতৃত্ব এনে, না চেয়ে তাকে এমন পরিস্থিতিতে রাখব যেখানে তার ব্যর্থ হওয়ায় সম্ভাবনা বেশি। এবং ব্যর্থ হলে অনেকে আঘাত-প্রাপ্ত হবে।
  • একজন নতুন বিশ্বাসীর আনন্দ, আগ্রহ, সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষমতা ও অবিশ্বাসীদের সাথে বন্ধুত্ব থাকার কারণে তিনি খুব কার্যকারী হতে পারেন। কিন্তু অধ্যক্ষের দায়িত্ব তা থেকে বেশ ভিন্ন।

দাস, সেবাকারী,পরিচারক, ডিকন G1249 ‘diakonos’ ৩০ বার
দাস, শ্রমিক, সেবাকারী G1401 ‘doulos’ ১২৫ বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: দাস, সেবাকারী, সাহায্যকারী, ব্যবহারিক কাজে ব্যস্ত,
ডিকন, পরিচর্যাকারী, পরিচারক
ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: দাস, সেবাকারী, শ্রমিক, বন্ধক শ্রমিক, অধীনে থাকা লোক

আসল দাস বুঝায় (দাসত্ব নতুন নিয়মের সময়ে প্রচলিত ছিল):
মথি ২২:১৩            বিবাহ ভোজে নিমন্ত্রণের দৃষ্টান্ত: রাজা ও তার দাসরা
যোহন ২:৫             কান্নায় বিবাহ > দাসরা জালাগুলি ভরায়
মথি ৮:৯, ১৩:২৭-২৮, ১৮:২৩, ১৮:২৬-২৮, ১৮:৩২, ২১:৩৪-৩৬, ২২:৩-৪, ২২:৬, ২২:৮, ২২:১০, ২৬:৫১। মার্ক ১২:২, ১২:৪, ১৪:৪৭। লূক ৭:২-৩, ৭:৮, ৭:১০, ১৪:১৭, ১৪:২১-২৩, ১৫:২২, ১৭:৭, ১৭:৯-১০, ১৯:১৩, ১৯:১৫, ১৯:১৭, ১৯:২২, ২০:১০-১১। যোহন ৪:৫১, ১৮:১০, ১৮:১৮, ১৮:২৬। প্রেরিত ১৬:১৭। ১ করি ৭:২১-২৩, ১২:১৩। গালা ৩:২৮, ৪:১। ইফিষীয় ৬:৫-৮। কলসীয় ৩:১১, ৩:২২, ৪:১। ১ তীমথিয় ৬:১। তীত ২:৯। ফিলীমন ১৬। প্রকাশিত ৬:১৫, ১৩:১৬, ১৯:১৮।
‘দাস’ শব্দ রূপকভাবে ব্যবহৃত:
গালা ২:১৭             খ্রীষ্ট পাপের সেবা করেন? / খ্রীষ্ট কি পাপের দাস?
যোহন ৮:৩৪-৩৫।       রোমীয় ৬:১৬-১৭, ৬:২০। ১ করি ৭:২২-২৩। গালা ৪:৭। ফিলি ২:৭। ২ পিতর ২:১৯।
যীশু নেতৃত্বের নতুন সংজ্ঞা দেন: নেতৃত্ব মানে সেবক হওয়া:
মথি ২০:২৬, ২৩:১, মার্ক ৯:৩৫, ১০:৪৩ যীশু: যে বড় হতে চায় সবার সেবাকারী হোক
যোহন ১২:২৬          যীশু: যিনি আমার সেবা করতে চায় তিনি আমার পথে চলুক, যেখানে আছি সেখানে থাকবে
রোমীয় ১৩:৪           সরকার মঙ্গলের জন্যই ঈশ্বরের সেবাকারী
রোমীয় ১৫:৮           যীশু সুন্নত-প্রাপ্তদের (যিহূদীদের) সেবাকারী হয়েছিলেন
মথি ১০:২৪-২৫, ২০:২৭, ২৪:৪৫-৫০, ২৫:১৪-৩০। মার্ক ১০:৪৪, ১৩:৩৪। লূক ১২:৩৭-৪৭। যোহন ১৩:১৬, ১৫:১৫, ১৫:২০
এমন লোকদের বুঝায়, যাদের মণ্ডলীতে একটি ভূমিকা বা এক ধরণের নেতৃত্ব ছিল ‘diakonos’:
রোমীয় ১৬:১           ফৈবী কিংক্রিয়া মণ্ডলীর পরিচারিকা
১ করি ৩:৫            পৌলআপল্লো সেবাকারী মাত্র যাদের মধ্য দিয়ে তোমরা বিশ্বাসের পথে এসেছ
২ করি ৩:৬            একটা নতুন ব্যবস্থার সেবাকারী হওয়ার জন্য ঈশ্বর আমাদের যোগ্য করে তুলেছেন
২ করি ৬:৪, ১১:১৫    ঈশ্বরের সেবাকারী বলে আমরা নিজেদের প্রমাণ করি
২ করি ১১:২৩         তারা কি খ্রীষ্টের সেবাকারী? আমি আরও বেশী করে তা-ই
ইফিষীয় ৩:৭           পৌল সুখবরের দাস
কলসীয় ১:৭            ইপাফ্রা প্রিয় সহদাস (ও মণ্ডলীর স্থাপনকারী)
কলসীয় ১:২৩, ২৫      আমি পৌল এই সুখবরের প্রচারক / দাস হয়েছি
ইফি ৬:২১, কল ৪:৭    তুখিক বিশ্বস্ত সেবাকারী (diakonos) ও প্রভুর কাজে আমাদের সহদাস (sundo)
১ থিষ ৩:২             তীমথিয় সুখবর জানানোর ঈশ্বরের দাস (diakonos) ও সহকর্মী (synergos)
এমন লোকদের বুঝায়, যাদের মণ্ডলীতে একটি ভূমিকা বা এক ধরণের নেতৃত্ব ছিল ‘doulos’:
রোমীয় ১:১, ২ করি ৪:৫, গালা ১:১০, ফিলি ১:১, তীত ১:১   পৌল নিজেকে দাস (doulos) বলেন
কলসীয় ৪:১২           পৌল ইপাফ্রাকে দাস (doulos) বলেন
২ তীম ২:১৪            পৌল তীমথিয়কে অথবা সাধারণভাবে একজন নেতাকে (doulos) বলেন
যাকোব ১:১             যাকোব নিজেকে দাস (doulos) বলেন
২ পিতর ১:১            পিতর নিজেকে দাস (doulos) বলেন
যিহূদা ১                যিহূদা নিজেকে দাস (doulos) বলেন
প্রকাশিত ১০:৭, ১১:১৮  ঈশ্বরের নবীদের দাস (doulos) বলা হয়
সাধারণভাবে মণ্ডলীর নেত্বত্বকে বুঝায় – ‘diakonos’:
ফিলি ১:১               ফিলিপী মণ্ডলীর নেতৃত্বকে বলা হয় পরিচালক ও পরিচারক (diakonos)
১ তীম ৩:৮-১৩         পরিচালক (diakonos) হওয়ার জন্য চরিত্রের ক্ষেত্রে দাবী বা শর্তগুলি
সাধারণভাবে ঈশ্বরের দাস হওয়ার বিষয় বুঝায় – ‘doulos’:
লূক ২:২৯, প্রেরিত ২:১৮, ৪:২৯, ১ পিতর ২:১৬, প্রকাশিত ১:১, ২:২০, ৭:৩, ১৫:৩, ১৯:২,৫, ২২:৩, ২২:৬

  • উভয় শব্দ বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত: আসল দাস, সেবাকারী বা শ্রমিকদের জন্য, বিবাহ অনুষ্ঠানে সেবক, ঈশ্বরের লোক, যীশুর অনুসরণকারীরা, মণ্ডলীর কর্মীরা, সরকারি অফিসার, এমন কি ভ্রান্ত প্রেরিতদের জন্যও।
  • ‘Diakonos’ শব্দ দিয়ে নির্দিষ্টভাবে যীশু, পৌল, আপল্লো, ইপাফ্রা, তুখিক ও তীমথিয়কে বুঝানো হয় কিন্তু তা ছাড়া মণ্ডলীতে পরিচারক বা ডিকনদেরও।
  • ‘Doulos’ শব্দ দিয়ে নির্দিষ্টভাবে পৌল, ইপাফ্রা, তীমথিয়, যাকোব, পিতর ও যিহূদাকে বুঝানো হয়, কিন্তু সাধারণভাবে বিশ্বাসীরাও নিজেকে এইভাবে বর্ণনা করতেন (উভয় পুরাতন ও নতুন নিয়মে)।
  • তাই এই তালিকাগুলি (কাকে এভাবে বলা হয়?) সুনির্দিষ্ট বা এই লোকদের মধ্যে সীমিত রাখা কোন বিষয় নয়। তাই এইটা বলা ঠিক হবে না যে, পিতর ছিলেন ‘ঈশ্বরের দাস’ কিন্তু যোহন ‘ঈশ্বরের দাস’ নন। তালিকাগুলো একে অন্যকে বাদ দেওয়ার মত নয়। তাই এইটাও বলা ঠিক হবে না যে, পিতর ছিলেন ‘doulos’ কিন্তু ‘diakonos’ তিনি ছিলেন না। এই দুটি শব্দ সমান্তরালভাবে ব্যবহৃত এবং একটি শব্দটি অন্য শব্দটিও বুঝায়।
  • উভয় শব্দ এমন একজন বর্ণনা করেন যিনি দাসের কাজ করেন, সেবা করেন, সাহায্য করেন, পরিচর্যা করেন (এইটা সব একই বিষয়)। আজকে ‘পরিচর্যা’ অনেক বিশেষ ও উচুঁ শব্দ মনে করা হয়, কিন্তু আসলে এর সরল অর্থ হল ‘সেবা’।
  • যদিও প্রেরিত ৬:১-৭ পদে ‘diakonos’ শব্দ আসে না, যে ৭জন যারা এই ভূমিকায় নিযুক্ত করা হয় (স্তিফান, ফিলিপ, প্রখর, নীকানর, তীমোন, পার্মিনা ও নিকলায়) ছিলেন সেবাকারী ও অনুচ্ছেদটি দেখায় তাদের কিভাবে মণ্ডলীর পরিচালক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়।
  • কিন্তু একই শব্দগুলিও ব্যবহৃত যখন একজন কাঠামো বা নিযুক্ত করার প্রক্রিয়া ছাড়া একটি মণ্ডলীতে বা দলে সেবা করে। উদাহরণ: পৌল ২য় প্রচার যাত্রার সময়ে তীমথিয়কে ‘diakonos’ এবং ‘doulos’ বলেন যদিও সে মাত্র যুবক হিসাবে দলে যোগ দিলেন। উদাহরণ: ঠিক তেমনি পৌল ইপাফ্রাকে দুই শব্দ দিয়ে বর্ণনা করেন যদিও তিনি মণ্ডলীর স্থাপনকারী, শিক্ষক ও তাদের জন্য বিনতীকারীও ছিলেন।
  • ‘Diakonos’ শব্দ ও ব্যবহৃত এমন লোকদের জন্য যাদের স্থানীয় মণ্ডলীতে একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা ছিল, যেমন কিংত্রিয়া মণ্ডলীর পরিচারিকা ফৈবী (রোমীয় ১৬:১), ফিলিপীয় চিঠিতে উল্লিখিত পরিচালক ও পরিচারক (ফিলিপীয় ১:১) এবং সাধারণভাবে ১ তীমথিয় ৩:৮-১৩ পদে:

 

১ তীমথিয় ৩:৮-১৩           মণ্ডলীতে ‘diakonos’ / পরিচারক / ডিকন হওয়ার জন্য শর্তগুলি
‘তেমনি করে পরিচারকেরাও যেন সম্মান পাবার যোগ্য এবং এক কথার লোক হন। তাঁরা যেন মাতাল না হন, আর অন্যায় লাভের দিকে যেন তাঁদের ঝোঁক না থাকে। ৯ তাঁরা যেন পরিষ্কার বিবেকে খ্রীষ্টীয় ধর্ম-বিশ্বাসের গুপ্ত সত্য ধরে রাখেন। ১০ তাঁদের আগে যাচাই করে দেখতে হবে, তারপর যদি তাঁরা নির্দোষ বলে প্রমাণিত হন তবে পরিচারক হতে পারবেন। ১১ ঠিক সেইভাবে তাঁদের স্ত্রীরাও যেন সম্মানের যোগ্য হন। তাঁরা যেন অন্যের দুর্নাম করে না বেড়ান এবং নিজেদের দমনে রাখেন। সব বিষয়ে যেন তাঁদের বিশ্বাস করা যায়। ১২ পরিচারকেরও মাত্র একজন স্ত্রী থাকবে। তিনি যেন ভাল ভাবে তাঁর ছেলেমেয়েদের ও সংসার পরিচালনা করেন। ১৩ যে পরিচারক ভাল ভাবে কাজ করেন তিনি সম্মান লাভ করেন এবং খ্রীষ্ট যীশুর উপর বিশ্বাসের দরুন তাঁর অন্তর সাহসে পূর্ণ হয়।’

  • তারা যেন সমর্পিত, সম্মান পাওয়ার যোগ্য ও মনোযোগী লোক হয়, যেন কথার ক্ষেত্রে সাবধান হয়, সৎ জ্ঞানের লোক হয়।
  • তাদের এমন লোক হতে হয় যারা স্বেচ্ছায় কাজ করেছে এবং ‘পদ ছাড়া’ দায়িত্ব পালন করেছে, এমন লোক যারা ইতিমধ্যে সেবা কাজে নিজেকে প্রমাণিত করেছে।
  • পরিচারক বা ডিকন হিসাবে তাদের কাজ হল সেবা করা ও বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা। আমরা হয়তো এই ধরণের কাজ নীচু চোখে দেখি, কিন্তু প্রেরিত ৬ অধ্যায় এর জন্য যথেষ্ট উচুঁ মানদন্ড রাখে।
  • ১১ পদে অনুবাদ করা হয়েছে ‘তাঁদের স্ত্রীরা যেন সম্মানের যোগ্য হয়’ । এই পদের অনুবাদ ও এভাবে করা সম্ভব: মহিলা-পরিচালকরা যেন সম্মানের যোগ্য হন’। যে তা মাত্র পুরুষদের বিষয় নয় রোমীয় ১৬:১ পদে বুঝা যায়, যেখানে একটি মণ্ডলীর পরিচারিকা উল্লিখিত, ফৈবী। পৌল তাকে প্রশংসা করেন এবং ফৈবী হলেন তার রোমীয় চিঠির বাহক। দ্বিতীয় অনুবাদ যদি আমরা নেই তাহলে ১১-১৩ পদ হল বিশেষভাবে মহিলা-পরিচালকদের সম্বন্ধে কথা।
  • পরিচারক বা ডিকনদের বিষয়ে ক্যাথলিক নিয়ম হল যে তারা শিক্ষক হিসাবে মণ্ডলীর মধ্যে কাজ করতে পারে, কিন্তু বাইরের প্রচার বা পরিবারদের কাছে বেড়াতে যাওয়া হল পুরোহিতের কাজ।
  • পরিচারক বা ডিকন আসলে কিভাবে নিযুক্ত করা হত? তাদের কি অভিষিক্ত করা হত? তারা কি পূর্ণ সময়ের কর্মী ছিল বা পেশা কাজের পাশাপাশি মণ্ডলীর দায়িত্ব পালন করত? তারা কি কাজের জন্য টাকা পেত?
  • পৌল নিজেক এবং তীমথিয়কে ‘diakonos’ বলেন, যদিও তীমথিয়ের সে সময়ে বেশি বয়স নেই।
  • ‘তাঁর মাত্র একজন স্ত্রী থাকবে’ … এর অর্থ এই নয় যে অবিবাহিত লোক পরিচারক হতে পারে না (পৌল এবং হতে পারে তীমথিয় দুইজন অবিবাহিত)। এর অর্থ এই নয় যে একজন বিপত্নীক বা একজন মহিলা পরিচারক হতে পারে না (ফৈবী পরিচারিকা ছিলেন), বরং কথাটি বহুবিবাহের বিরুদ্ধীয়: বহুবিবাহ মণ্ডলীতে করা যাবে না। যদি একজন বিশ্বাসী হওয়ার আগে বহুবিবাহে আছেন, তবে স্ত্রীদের ত্যাগ করা ঠিক না, কিন্তু এই ধরণের লোক আদর্শ নয় এবং ফলে পরিচারক বা পরিচারিকা হতে পারি না।

 

প্রেরিত ৬:১-৬             বিধবাদের সেবা করার জন্য পরিচারক / ডিকনদের নিযোক্ত
‘সেই সময়ে শিষ্যদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছিল। তখন শিষ্যদের মধ্যে যে যিহূদীরা গ্রীক ভাষায় কথা বলত তারা ইব্রীয় ভাষায় কথা বলা যিহূদীদের এই বলে দোষ দিতে লাগল যে, রোজই খাবার দেবার সময়ে তাদের বিধবা স্ত্রীলোকেরা কিছুই পায় না। ২ এতে সেই বারোজন প্রেরিত্‌ সব শিষ্যদের এক জায়গায় ডেকে বললেন, “ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করা ছেড়ে খাবার দেওয়ার ব্যাপারে ব্যস্ত থাকা আমাদের পক্ষে ঠিক নয়। ৩ ভাইয়েরা, তোমাদের মধ্য থেকে এমন সাতজন লোককে তোমরা বেছে নাও যাঁদের সবাই সম্মান করে এবং যাঁরা পবিত্র আত্মায় ও জ্ঞানে পূর্ণ। আমরা তাঁদের উপরেই এই সেবা-কাজের ভার দিয়ে নিজেরা প্রার্থনা ও ঈশ্বরের বাক্য প্রচারে মন দেব।” ৫ দলের সকলেরই এই কথা ভাল লাগল। বিশ্বাসে ও পবিত্র আত্মায় পূর্ণ স্তিফানকে তারা বেছে নিল। এছাড়া তারা ফিলিপ, প্রখর, নীকানর, তীমোন, পার্মিনা ও আন্তিয়খিয়া শহরের নিকলায়কেও বেছে নিল। এই নিকলায় অযিহূদী হয়েও যিহূদী ধর্ম পালন করতেন। ৬ পরে তারা এই লোকদের প্রেরিত্‌দের কাছে নিয়ে গেল। তখন প্রেরিতেরা প্রার্থনা করলেন এবং কাজে নিযুক্ত করবার জন্য তাঁদের উপর হাত রাখলেন।’

  • এখানে একটি নির্দিষ্ট নিযুক্ত করার প্রক্রিয়া উল্লেখ করা আছে: পরিচালক বা ডিকনদের বিশ্বাসীদের বা স্থানীয় মণ্ডলীর মধ্য থেকে নিযুক্ত করা হয়, এমন লোক যাদের সুনাম আছে, যাদের বিশ্বস্ত মনে করা হয়, যারা পরিচিত ও ইতিমধ্যে প্রমাণিত। কে নিযুক্ত করে? মণ্ডলীর লোকেরা। প্রেরিতেরা নিযুক্ত করে না, তারা নিযুক্ত লোকদের জন্য প্রার্থনা করে, তাদের উপরে হাত রাখে ও এই নতুন লোকদের নেতৃত্বে অনুমোদিত করে।
  • কি ধরণের লোককে নিযুক্ত করব? পদে: ‘যাঁদের সবাই সম্মান করে এবং যাঁরা পবিত্র আত্মায় ও জ্ঞানে পূর্ণ’। বিধবাদের সেবা করার জন্য ভালই লোক লাগে ও গুরুত্বের সঙ্গে উচুঁ মানের লোককে নেওয়া হয়!
  • বিধবাদের দৈনিক খাবার দেওয়া হবে নতুন নিয়মে আর বেশি উল্লেখ নেই (১ তীমথিয় ৫)। সব মণ্ডলীতে এইভাবে খাবারের বিতরন করা হত? শুধুমাত্র বিধবাদের দেওয়া হত, বা অন্য অভাবীদেরও? যিরূশালেমে বিধবা বেশি ছিল? রোমীয়দের সাথে যুদ্ধ হওয়ার কারণ? বুড়ো-বুড়িরা কি পবিত্র স্থানে আসে মারা যাওয়ার জন্য? কেউ কেউ বলে যে যিহূদীদের একটি বিশ্বাস ছিল যে যিরূশালমে মারা গেলে পরের জীবনের জন্য সুবিধা আছে।
  • এই ৭জন পরিচারকরা বিধবাদেরও সেবা কাজ করবে, আর অনেক কিছু করে: ফিলিপ ও স্তিফান গুরুত্বপূর্ণ প্রচারক হয়ে যান।

 

শিক্ষক                   G1320                     ‘didaskolos’                    ৫৮ বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: শিক্ষক, দিক-নির্দেশনাদাতা, ডাক্তার, মাষ্টার

যেখানে শব্দটি যিহূদী শিক্ষকদের বুঝায়:
লূক ২:৪৬                  বারো বছরের যীশু মন্দিরে শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন
লূক ৩:১২                  কর আদায়কারীরা যোহন বাপ্তিস্মদাতাকে শিক্ষক বলে তার কাছে আসে
যোহন ৩:১০                যীশু নীকদীমকে শিক্ষক বলেন এবং শিক্ষক হিসাবে তাকে চ্যালেঞ্জ দেন
যেখানে যীশুকে এই টাইটেলে ডাকা হয়:

  • ২৩টি পদে যীশুকে ‘শিক্ষক’ বলে ডাকা হত। কে কে তাকে ‘শিক্ষক’ বলেন? এখানে তালিকা দেওয়া আছে:

মথি ৮:১৯                  একজন ধর্ম-শিক্ষক যিনি যীশুর অনুসরণকারী হতে চান
মথি ১৯:১৬, মার্ক ১০:১৭,২০, লূক ১৮:১৮   একজন ধনী যুবক
মার্ক ৪:৩৮, ৯:৩৮, ১০:৩৫, ১৩:১, লূক ২১;৭, যোহন ১:৩৮   বারো শিষ্যরা
মার্ক ৫:৩৫, লূক ৮:৪৯       যায়ীর দ্বারা পাঠানো লোকেরা
মার্ক ৯:১৭, লূক ৯:৩৮       মন্দ আত্মা পাওয়া ছেলের বাবা
মথি ২২:৩৬, মার্ক ১২:৩২    একজন ধর্ম-শিক্ষক… প্রধান আজ্ঞা কোনটা?
লূক ১০:২৫                 একজন ধর্ম-শিক্ষক…কিভাবে অনন্ত জীবন পাব?
লূক ১২:১৩                 যে লোক উত্তরাধিকার ভাগ করায় যীশুর সাহায্য চায়
লূক ২০:৩৯                 একজন ধর্ম-শিক্ষক…সদ্দুকীদের উত্তর দেওয়ার পরে
যোহন ৩:২                  ফরীশী নীকদীম
যোহন ১১:২৮               মার্থা যখন মরিয়মের সাথে কথা বলেন
যোহন ২০:১৬               মরিয়ম যখন যীশুক পুনরুত্থিত হিসাবে দেখেন
যেখানে যীশুকে এই টাইটেল দিয়ে ডাকা হয় ঠাট্টা দেওয়ার জন্য বা প্রতারণা করার জন্য। কে তা করে?
মথি ৯:১১                  ফরীশীরা শিষ্যদের কাছে প্রশ্ন করেন: তোমাদের শিক্ষক কেন খারাপ লোকদের সঙ্গে খান?
মথি ১২:৩৮                ধর্ম-শিক্ষকরা ও ফরীশীরা যীশুকে ‘শিক্ষক’ বলেন
মথি ১৭:২৪                মন্দিরের কর আদায়কারীরা পিতরকে জিজ্ঞাসা করে: তোমার শিক্ষক কি কর দেন না?
মথি ২২:১৬, মার্ক ১২:১৪, লূক ২০:২১    ফরীশীরা ও হেরোদীয়রা যীশুকে ভুলানোর জন্য
মথি ২২:২৪, মার্ক ১২:১৯, লূক ২০:২৮    ফরীশীরা ও হেরোদীয়রা
লূক ৭:৪০                 ফরীশী শিমোন যার বাসায় যীশু খান
লূক ১১:৪৫                যীশু ফরীশীদের ধমক দেওয়ার সময়ে একজন ধর্ম-শিক্ষক
লূক ১৯:৩৯                একজন ফরীশী যিনি যিরূশালেমে ঢোকার সময়ে লোকদের থামাতে চান
যোহন ৮:৪                 ব্যভিচারীনী স্ত্রীর দোষারোপকারীরা

যীশু নিজেকে ‘শিক্ষক’ বলেন:
মথি ১০:২৪-২৫, লূক ৬:৪০  শিষ্য বা ছাত্র শিক্ষকের চেয়ে বড় নয়, কিন্তু তার মত হয়ে উঠবে
মথি ২৬:১৮, মার্ক ১৪:১৪, লূক ২১:১১ যখন যীশু শিষ্যদের গাধা আনতে পাঠান
যোহন ১৩:১৩-১৪            তোমরা আমাকে শিক্ষক বলে ডাক…তা ঠিকই বল কারণ আমি তা-ই
যীশু শিক্ষা দেন, তার উল্লেখ:
মথি ১১:১। মার্ক ৪:১, ৬:২, ৬:৩৪, ৮:৩১। লূক ১১:১। যোহন ৭:৩৫, ৯:৩৪। প্রেরিত ১:১।
পবিত্র আত্মা শিক্ষা দেন, তার উল্লেখ:
লূক ১২:১২। যোহন ১৪:২৬। ইব্রীয় ৮:১১। ১ যোহন ২:২৭।
প্রকৃতি শিক্ষা দেন, তার উল্লেখ:
রোমীয় ১:২০, ১ করি ১১:১৪।
মণ্ডলীতে ভূমিকা হিসাবে শিক্ষা দানের উল্লেখ:
প্রেরিত ৪:১৮, ৫:২৮, ৫:৪২   বারোজন শিষ্য বা প্রেরিত শিক্ষা দেন
প্রেরিত ১৬:২১, ১ করি ৪:১৭, ১৪:১৯ পৌল শিক্ষা দেন
১ করি ১২:২৮-২৯           ঈশ্বর মণ্ডলীতে প্রথমতঃ প্রেরিত, দ্বিতীয়তঃ নবী, তৃতীয়তঃ শিক্ষক…নিযুক্ত করেছেন
ইফিষীয় ৪:১১               ঈশ্বর কিছু লোকদের প্রেরিত, নবী, প্রচারক, পালক, শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করেছেন
১ তীম ৩:২                 অধ্যক্ষ হিসাবে শিক্ষা দানের ক্ষমতা থাকা দরকার
২ তীম ২:২৪                ঈশ্বরের একজন দাস হিসাবে (doulos) যেন অন্যদের শিক্ষা দানের ক্ষমতা থাকে
২ তীম ৪:৩                 লোকেরা নিজেদের ইচ্ছা পূর্ণ করার জন্য তারা খুশী করার মত শিক্ষক যোগাড় করবে                     

যাকোব ৩:১                 তোমাদের মত সকলেই শিক্ষক হতে চেয়ো না কারণ আরও কঠিনভাবে বিচার করা হবে
১ তীম ১:৩, ২:১২, ৬:৩, তীত ১:১১     ভ্রান্ত শিক্ষদের শিক্ষা দানের প্রতিরোধ করা আবশ্যক
মণ্ডলীতে ভূমিকা বা নেতৃত্ব হিসাবে শিক্ষা দানের উল্লেখ বা ব্যক্তিকে ‘শিক্ষক’ বলা হয়:
প্রেরিত ১৩:১                আন্তিয়খিয়ার মণ্ডলীতে শিক্ষক: বার্ণবা, নীগের, শিমোন, লুকিয়, মনহেম এবং শৌল
রোমীয় ২:২০                রোম মণ্ডলীতে যিহূদী বিশ্বাসীদের কাছে ধমক: তোমরা শিক্ষক… অন্যদের শিক্ষা দিলে নিজেকেও শিক্ষা দাও না কেন?
১ তীম ২:৭, ২ তীম ১:১১    পৌল নিজেকে একজন প্রচারক, প্রেরিত ও শিক্ষক বলেন
১ তীম ৪:১১, ৬:২           পৌল তীমথিয়কে শিক্ষা দেওয়ার আদেশ দেন
তীত ২:১, ২:১৫             পৌল তীতকে শিক্ষা দেওয়ার আদেশ দেন
তীত ২:৪                   পৌল নির্দেশনা দেন যেন বৃদ্ধারা / বয়স্ক স্ত্রীলোকেরা যুবতীদের শিক্ষা দেন
ইব্রীয় ৫:১২                 পৌল রোম মণ্ডলীতে যিহূদী বিশ্বাসীদের কাছে ধমক: এত দিনে হয়ে ওঠা উচিত ছিল
যাকোব ৩:১                 কারণ আমরা শিক্ষক বলে কঠিনভাবে বিচার করা হবে (যাকোব নিজেকে শিক্ষক বলেন)
সবার কাছে শিক্ষা দেওয়ার আদেশ / না চাইলেও ব্যবহার দিয়ে শিক্ষা দান:
মথি ৫:১৯                   যে কেউ আইনগুলো অমান্য করে ও তা অমান্য করতে শিক্ষা দেয় > রাজ্যে ছোট বলা হবে। যে আইনগুলো পালন করে ও তা পালন করতে শিক্ষা দেয় > রাজ্যে বড় বলা হবে
মথি ২৮:১৯                 তোমরা গিয়ে সমস্ত জাতির লোকদের আমার শিষ্য কর।… আমি তোমাদের যে সব আদেশ দিয়েছি তা পালন করতে তাদের শিক্ষা দাও
২ তীম ২:২                 আমার মুখে যে সব শিক্ষার কথা তুমি শুনেছ সেই শিক্ষা ধরে রাখবার জন্য তুমি তা এমন সব বিশ্বস্ত লোকদের দাও যাদের অন্যদের শিক্ষা দেবার যোগ্যতা আছে।

  • নতুন নিয়মে যিহূদী শিক্ষক, যোহন বাপ্তিস্মদাতা, যীশু এবং পবিত্র আত্মাকে ‘শিক্ষক’ বলা হয়। মণ্ডলীর স্থাপন থেকে ১২ শিষ্য বা প্রেরিত, পৌল, আন্তিয়খিয়া মণ্ডলীতে কিছু নেতাদের ও প্রভুর ভাই যাকোবকে শিক্ষক বলা হয়। তা ছাড়া আরো অনেকে আছে যাদের শিক্ষা দানকে বর্ণনা করা হয়েছে, যেমন প্রিষ্কিল্লা ও আকিলা, যারা আপল্লোকে শিক্ষা দেন (প্রেরিত ১৮:২৬)।
  • তীমথিয় ও তীতকে পৌল শিক্ষা দান, সংশোধন করা ও উৎসাহ দানের আদেশ দেন।
  • ঈশ্বর মণ্ডলীকে ‘শিক্ষক’ দেবেন বা ‘শিক্ষকদের’ নিযুক্ত করবেন যেন তারা বিশ্বাসীদের পরিচর্যার জন্য প্রস্তুত করতে পারে। শিক্ষক হতে আগ্রহী হওয়া ভাল কিন্তু যাকোব স্মরণ করিয়ে দেন যে আরও কঠিন বিচার বা দায়বদ্ধতা আছে।
  • যেমন আমরা ‘প্রচারক’, ‘নবী’ ও (হতে পারে) ‘প্রেরিত’এর ক্ষেত্রে দেখলাম, ‘শিক্ষক’ হওয়া বা ‘শিক্ষা দান’ হল এমন কিছু যা একভাবে বা অন্যভাবে প্রত্যেক বিশ্বাসীর দায়িত্ব। কিন্তু কিছু লোকদের ক্ষেত্রে শিক্ষা দেওয়ার দান আরো পরিষ্কার ও কার্যকারী হবে।
  • মথি ২৮:২০ পদে সে আদেশ ‘আমি তোমাদের যে সব আদেশ দিয়েছি তা পালন করতে তাদের শিক্ষা দাও’ পরিষ্কারভাবে দেখায় যে শিক্ষা দান হল প্রত্যেকটি বিশ্বাসীর দায়িত্ব। যীশু যত কিছু শিখিয়েছেন ও আদেশ দিয়েছেন (এর মধ্যে শিক্ষা দানের আদেশও পড়ে) সব কিছু নতুন বিশ্বাসীদের শেখানো প্রয়োজন। তাই তাদেরও শিক্ষক বানানো দরকার।
  • এইজন্য অবাক লাগার কিছু না যে পৌল রোমীয় চিঠিতে ও ইব্রীয় লেখক ইব্রীয় চিঠিতে সব বিশ্বাসীদের শিক্ষক হিসাবে কথা বলেন ও তাদের শিক্ষা দানের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ করেন। তা ছাড়া: সমস্ত বিশ্বস্ত লোকদের অবশ্যই শিক্ষক বানানো দরকার (২ তীম ২:২)।
  • যেমন মণ্ডলীতে সমস্ত ভূমিকা বা নেতৃত্বের ক্ষেত্রে (এবং সাধারণ বিশ্বাসী হিসাবেও তাই প্রযোজ্য): সঠিক শিক্ষা দেওয়া ও শিক্ষার আদর্শ হওয়া প্রয়োজন। ঈশ্বর সমস্ত শিক্ষকদের এই ক্ষেত্রে দায়বদ্ধ রাখবেন (যাকোব ৩:১, ১ তীম ১:৩, ২:১২, ৬:৩, তীত ১:১১)।

সহকর্মী                      G4904                   ‘sunergos’                 ১৩ বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: সহকর্মী, সহ-কর্মচারী, কাজের সঙ্গী, সাহায্যকারী

রোমীয় ১৬:৩        প্রিষ্কিল্লাআকিলাকে আমার শুভেচ্ছা জানায়ো, তারা আমার সঙ্গে পরিশ্রম করেছেন
রোমীয় ১৬:৯        উর্বন, আমার সঙ্গে খ্রীষ্টের জন্য কাজ করেন
রোমীয় ১৬:২১      তীমথিয় আমার সঙ্গে কাজ করেন
১ করি ৩:৬-৯       আমি (পৌল) বীজ লাগিয়েছিলাম, আপল্লো জল দিয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বরই তা বাড়িয়ে তুলিছিলেন… আমরা কিছুই নই, কিন্তু তিনিই সব… দুইজনই ঈশ্বরের সঙ্গে কাজ করছি
২ করি ১:২৪        তোমরা যেন আনন্দ পাও সেইজন্যই তোমাদের সঙ্গে কাজ করছি
ফিলিপীয় ২:২৫      ইপাফ্রদীত তোমাদের কাছে পাঠানো…আমরা একসঙ্গে কাজ করি ও খ্রীষ্টের জন্য যুদ্ধ করি
ফিলিপীয় ৪:২-৩     আমার আসল সহকর্মী তোমাকে অনুরোধ করছি… স্ত্রীলোকদের (উবদিয়া, সুন্তখী) সাহায্য কর…তারা আমার সঙ্গে এবং ক্লীমেন্তঅন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে কষ্ট স্বীকার করেছিলেন
কলসীয় ৪:১১        আরিষ্টার্খ, মার্ক, যীশূ-যুষ্ট…যিহূদীদের মধ্যে কেবল এই তিনজন আমার সঙ্গে কাজ করেন
১ থিষ ৩:২          আমরা তীমথিয়কে পাঠিয়েছিলাম, সুখবর জানাবার কাজে ঈশ্বরের সহকর্মী
ফিলীমন ১           পৌল আমাদের প্রিয় ভাই ও সহকর্মী ফিলীমনের কাছে
ফিলীমন ২৪         ইপাফ্রা, মার্ক, আরিষ্টার্খ, দীমা, লূক…আমার এই সহকর্মীরাও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন
৩ যোহন ৮          এই রকম লোক সাহায্য করা উচিত, যেন আমরাও সত্যের জন্য তাদের কাজের সংগী হই

  • পৌল নতুন নিয়মের অনেক লোকদের ও বন্ধুদের ‘সহকর্মী’ বলেন এবং যোহনও তা করেন। কাদের ‘সহকর্মী’ বলা হয়? স্থানীয় মণ্ডলীতে বিশ্বাসীরা (যেমন উর্বান, উবদিয়া, সুন্তখী, ক্লীমেন্ত, ফিলীমন), একজন শিক্ষিকাকে (প্রিষ্কিল্লা), মণ্ডলীর প্রতিনিধিদের (ইপাফ্রদীত), মণ্ডলীর নেতাদের (যেমন আকিলা), এবং বহুদিনের সহকর্মী বা সহপ্রেরিদের (যেমন তীমথিয়, আরিষ্টার্খ, মার্ক, যীশু-যুষ্ট, দীমা, লূক, আপল্লো), ইত্যাদি
  • ২ করিন্থীয় চিঠিতে পৌল নিজেকে ও তীমথিয়কে ‘করিন্থীয় বিশ্বাসীদের সহকর্মী’ বলেন।
  • যোহন গাইয় নামে একজনকে এবং অপ্রত্যক্ষভাবে সমস্ত বিশ্বাসীদের সত্যের সহকর্মী বলেন।
  • আবারও পরিষ্কার দেখা যায় যে ‘সহকর্মী’ কোন অতি নির্দিষ্ট, সীমিত, কাঠামো-ভিত্তিক, নিয়মমাফিক কোনো টাইটেল নয়। পৌলের চোখে যে কোনো একজন যিনি সুখবরের জন্য কাজ করেন হল তার সহকর্মী, কোন ভূমিকা বা চেহারায় হোক না কেন।

প্রচারক                        G2783                       ‘kerux’                      ৩বার

ষ্ট্রংগ্স অনুসারে শব্দের অনুবাদ, বর্ণনা বা সংজ্ঞা: ঘোষক, প্রকারক, অগ্রদূত

১ তীম ২:৭, ২ তীম ১:১১ ঈশ্বর আমাকে প্রচারক (kerux), প্রেরিত ও শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করেছেন
২ পিতর ২:৫             নোহ ঈশ্বরভক্তি সম্বন্ধে প্রচার করতেন

  • ‘kerux’ হল সত্যের প্রচারক বা ঘোষকের জন্য আর একটি শব্দ। আবারও তা কোন নির্দিষ্ট মণ্ডলীর ভূমিকা বা পদ বুঝায় না।

ঈশ্বর বিভিন্ন দান দেন

ইফিষীয় ৪:১১-১২      ‘তিনিই কিছু লোককে প্রেরিত্‌, কিছু লোককে নবী, কিছু লোককে সুখবর প্রচারক এবং কিছু লোককে পালকশিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করেছেন। ১২ তিনি এঁদের নিযুক্ত করেছেন যেন ঈশ্বরের সব লোকেরা তাঁরই সেবা করবার জন্য প্রস্তুত হয় এবং এইভাবে খ্রীষ্টের দেহ গড়ে ওঠে।’
১ করি ১২:২৮-২৯     ‘ঈশ্বর মণ্ডলীতে প্রথমতঃ প্রেরিত্‌, দ্বিতীয়তঃ নবী, তৃতীয়তঃ শিক্ষক নিযুক্ত করেছেন। তারপর এই সব লোকদের নিযুক্ত করেছেন-যারা আশ্চর্য কাজ করবার ক্ষমতা পেয়েছে, যারা রোগ ভাল করবার ক্ষমতা পেয়েছে, যারা সাহায্য করবার ক্ষমতা পেয়েছে, যারা পরিচালনা করবার ক্ষমতা পেয়েছে, আর যারা বিভিন্ন ভাষা বলবার ক্ষমতা পেয়েছে। সকলেই কি প্রেরিত্‌? ২৯ সকলেই কি নবী? সকলেই কি শিক্ষক? সকলেরই কি আশ্চর্য কাজ করবার ক্ষমতা আছে?’
১ করি ১২:৮-১০        কাউকে কাউকে সেই পবিত্র আত্মার মধ্য দিয়ে জ্ঞানের কথা বা বুদ্ধির কথা বলতে দেওয়া হয়। ৯ অন্য কাউকে কাউকে সেই একই আত্মার দ্বারা বিশ্বাস বা রোগ ভাল করবার ক্ষমতা বা আশ্চর্য কাজ করবার ক্ষমতা বা নবী হিসাবে ঈশ্বরের বাক্য বলবার ক্ষমতা বা ভাল ও মন্দ আত্মাদের চিনে নেবার ক্ষমতা দেওয়া হয়। আবার অন্য কাউকে কাউকে বিভিন্ন ভাষায় কথা বলবার ক্ষমতা বা বিভিন্ন ভাষার মানে বুঝিয়ে দেবার ক্ষমতা দেওয়া হয়।’

  • ঈশ্বর তাঁর পবিত্র আত্মা দ্বারা যে কোন দান বা তালন্ত যে কোন বিশ্বাসীকে দিতে পারেন (১ করিন্থীয় ১২:৬)।
  • অধিকাংশ দান হল এমন বিষয় যা সব বিশ্বাসীদের করার আদেশ দেওয়া আছে, যেমন: সুখবর প্রচার করা, শিক্ষা দেওয়া, পরিচালনা করা, সাহায্য করা, সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করা বা আশ্চর্য কাজ করা, অন্য ভাষায় কথা বলা, প্রজ্ঞা বা জ্ঞানের কথা বলা, বুদ্ধির কথা বলা, বিশ্বাস করা, এবং ভাল বা মন্দ চিনে নেওয়া ক্ষমতা
  • কিছু বিশ্বাসীরা বিশেষভাবে একটি দুটি দানে বেশী আগ্রহী ও কার্যকারী হবে এবং এইভাবে মণ্ডলীতে অন্যদের সেবা করবে। তা নিজেকে প্রকাশিত করবে এবং তা নিয়ে ১ করি ১২:২৯ পদে কথা আছে ‘সকলেই কি প্রেরিত?’ নতুন নিয়মে তাদের পরিচয় অনেকবার এভাবে দেওয়া আছে, যেমন ‘প্রচারক ফিলিপ’ বা ‘নবী আগাব’
  • তিনটি তালিকা এক নয়, প্রত্যেকটিতে একই নম্বর দানও উল্লেখ নয়, একই সিরিয়াল অনুসারেও দেওয়া নয়। তাই আমরা বুঝতে পারি যে প্রত্যেকটি তালিকা হল ‘কয়েকটি উদাহরণ দেখানো’ কিন্তু একটা তালিকাও দাবী করে না যে ‘তার বাইরে’ আর কিছু নেই, দাবী করে না যে তালিকাগুলি হল সমগ্র বা সম্পূর্ণ। তালিকাগুলি চাইলে আরো লম্বা করা যেত।
  • এই দানের ফলে মণ্ডলীতে বিভিন্ন ভূমিকা বা পরিচর্যার ধরণ তৈরি হয়। তা কোন নির্বাচন বা ভোট দিয়ে নিযুক্ত বা নেতা দিয়ে অভিষিক্ত বা অনুমোদিত বা ‘পদ’ জাতীয় কিছু নয়। ঈশ্বর দান দিচ্ছেন, সাধারণ লোকদের ব্যবহার করছেন, ইচ্ছুক মন ও সেবার মনোভাব অনুসারে তা কার্যকারী হয়। দানগুলি এমন নয় যে ‘বিশেষ পরিচর্যা’, ‘অল্প মনোনীতরা শুধু পারবে’ বা ‘পদ থাকলে কাজ’ বা ‘টাইটেল না থাকলে করা যাবে না’ বরং দানগুলি হল ব্যবহারিক ও প্রয়োজনীয় সেবা যা মোটামুটি প্রত্যেক মণ্ডলীতে থাকলে ভাল।
  • একজনের হয়তো কয়েকটা দান আছে ও সাথে কয়েকটা ভূমিকায় কাজ করেন। তাতেও বুঝা যায় যে এখানে ‘অনুমোদিত বিশেষ পরিচর্যা’র চেয়ে ব্যবহারিক প্রয়োজনীয় সেবা বুঝানো হয়। উদাহরণ: লাজুক তীমথিয়কে প্রচারক বলা হয় (২ তীম ৪:৫), দাস (২ তীম ২:২৪), পরিচারক / ডিকন (১ থিষ ৩:২), শিক্ষক (১ তীম ৪:১১) এবং সহকর্মী (রোমীয় ১৬:২১)।
  • অবশ্যই বারোজন শিষ্য বা প্রেরিতদের শুরু থেকে চোখের সাক্ষী হিসাবে একটি বিশেষ অধিকার ছিল, কিন্তু দান, তালন্ত, ভূমিকা ও কার্যকারীতা তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
  • এমন কি সে ভূমিকা বা ‘টাইটেল’ যাকে আমরা বেশি অধিকার-প্রাপ্ত মনে করি, যেমন ‘প্রেরিত’, সেগুলি বারোদের মধ্যে বা বিশেষ লোকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। উদাহরণ: বেশ কিছুজনকে প্রেরিত বলা হয়, একটি মহিলা প্রেরিত ও আছে (রোমীয় ১৬:৩) এবং কম বেশি প্রত্যেক মণ্ডলীতে প্রেরিত থাকা ভাল (ইফি ৪:১১)।
  • আবারও যা আমরা মনে করি প্রত্যেক মণ্ডলীতে অবশ্যই থাকবে (যেমন পালক), তার প্রায় উল্লেখ নেই! উদাহরণ: নতুন নিয়মে শুধুমাত্র তিনজনকে ‘প্রচারক’ বলা হয় এবং এমন কেউ নয় যাকে ‘পালক’ বলা হয়। তাতে বুঝা যায় যে এই ভূমিকাগুলি কঠোর কাঠামোর বা বিশেষ নিযুক্ত করার পদ্ধতির কিছু ছিল না।
  • এই ভূমিকা ‘পাওয়ার’ কোন নির্দিষ্ট পথ বা পদ্ধতির কোনো বর্ণনাই নেই। প্রেরিতরা নতুন স্থাপিত মণ্ডলীতে প্রাচীনদের নিযুক্ত করে। প্রেরিত ৬ অধ্যায় সে সেবাকারীদের এমনভাবে নিযুক্ত করা হয় যার মধ্যে সব বিশ্বাসীদের হাত ছিল।

সারাংশ

  • এই অধ্যয়নে আমরা নতুন নিয়মের নেতৃত্ব ও তার কাঠামো আবিষ্কার করতে চেষ্টা করলাম। আমরা মোটামুটি যত ‘বর্ণনা’ বা ‘শব্দ’ আছে, সব দেখলাম। পরিষ্কার হয়েছে যে নেতৃত্ব দরকার, ভালই নেতৃত্ব দরকার। আরো পরিষ্কার হয়েছে যে চরিত্র দানের চেয়ে আবশ্যক, যে ঈশ্বর প্রয়োজনীয় দান যোগান দেবেন, যে সমস্ত বিশ্বাসীদের দান আছে ও অন্যদের সেবা করার দায়িত্ব আছে।
  • আরো পরিষ্কার হয়েছে যে যদি আমরা কাঠামো, বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব, নিযুক্ত হওয়ার পদ্ধতি, অধিকারের প্রয়োগ, নেতার অধিকার ঠিক কি, পদের ক্ষেত্রে কি থাকা উচিত, ক্ষমতা কোথায়… তবে আমরা আশ্চর্য হই, এমন কি হতভম্ব হই, যে এই বিষয়ে তেমন কিছু নেই! তথ্য বা নির্দেশনা নেই বললে চলবে। formal positions, roles, hierarchy, appointment pathways and institutionalized leadership খুঁজলে কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। তা যদি হয়: কি করে সম্ভব যে আমরা এত কঠোর কাঠামো তৈরি করেছি বা নিয়মের উপর এত জোর দিতে থাকি?