ধর্ম ০৭ – নতুন নিয়মের নেতৃত্ব – একজন ব্যক্তি নিয়ে অধ্যয়ন: যোহন মার্ক
নতুন নিয়মে যোহন মার্কের জীবন সম্বন্ধীয় যতগুলো পদ আছে, সবগুলো এখানে সময় অনুসারে দেওয়া হল:
সুসমাচারগুলি ২৬-৩০ খ্রীঃ যোহন মার্ক ১২ শিষ্যদের মধ্যে একজন নন মার্কের বয়স: আনুমানিক ১৫-১৬ বছর
- মার্কের নাম ১২ শিষ্যদের নামের তালিকায় আসে না, তিনি ১২ শিষ্যদের মধ্যে একজন নন।
- যীশুর পরিচর্য্যার চোখের সাক্ষী যদি তিনি না হন, তবে কিভাবে তিনি একটি সুসমাচারের লেখক? ভাল প্রশ্ন।
- আসলে আমরা জানি যে ১২জন শিষ্যদের পাশাপাশি যীশুর আর অনেক জন অনুসরণকারী ছিল, একবার ৭০ জন উল্লিখিত (লূক ১০:১), একবার ১২০ জন উল্লিখিত (প্রেরিত ১:১৫)। কিন্তু তারপরেও প্রশ্নটা থেকে থাকে।
- (মার্কের বয়স নিয়ে পরে কথা হবে, মার্ক ১৪:৫১ পদের ব্যাখ্যায়)।
প্রেরিত ১২:১২ ৪৪ খ্রীঃ মার্কের বাড়ীতে মণ্ডলী একত্রিত হয় মার্কের বয়স: ৩০ বছর
- চারিদিকে গল্প: যীশু ক্রুশে মারা গেছেন, পুনরুত্থিত হয়েছেন, প্রথম মণ্ডলী স্থাপন হয়েছে ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যিহূদী নেতৃত্ব আবারও মণ্ডলীকে অত্যাচার করতে শুরু করে, তারা যাকোবকে মেরে ফেলে ও পিতরকে গ্রেফতার করে। মাঝরাতে একজন স্বর্গদূত পিতরকে আশ্চর্য ভাবে মুক্ত করেন: মুক্ত হওয়ার সাথে সাথে তিনি কোথায় যান?
‘এই কথা বুঝতে পেরে তিনি যোহনের মা মরিয়মের বাড়ীতে গেলেন। এই যোহনকে মার্ক বলেও ডাকা হত। সেই বাড়ীতে অনেকে একসঙ্গে মিলিত হয়ে প্রার্থনা করছিল।’
- যোহন মার্কের মা মরিয়ম হল বিশ্বাসী ও অতিথিপরায়ণ মহিলা: তিনি মণ্ডলীকে তার বাড়ীতে একত্রিত হতে দেন। হতে পারে তার মণ্ডলীতে এক ধরণের নেতৃত্বও ছিল। তিনি সাহসী ও সমর্পিত: অত্যাচারের সময়ে বিশ্বাসীদের নিজের বাড়ীতে একত্রিত হতে দেওয়া হল সাহসের কাজ!
- মার্কের পুরা নাম হল ‘যোহন মার্ক’। লূক তা উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। ছেলের নাম দিয়ে লূক মা মরিয়মের পরিচয় দেন।
- তাই যোহন মার্কের মা একজন ধার্মিক, সাহসী ও সমর্পিত মহিলা। তার বাড়ীতে মণ্ডলী একত্রিত হয়। তার বাড়ীতে মণ্ডলীর নেতারা দেখা করে। যোহন মার্ক তাই শুরু থেকে বিশ্বাসীদের উপলব্ধি করতে পারেন এবং হতে পারে সব প্রেরিতদের ব্যক্তিগতভাবে জানেন।
প্রেরিত ১২:২৫ ৪৭-৪৮ খ্রীঃ বার্ণবা ও পৌল মার্ক আন্তিয়খিয়ায় নিয়ে যান মার্কের বয়স: ৩৩-৩৪ বছর
- চারিদিকে গল্প: মণ্ডলী বিভিন্ন এলাকায় ছড়ি পড়ছে, সিরিয়ার আন্তিয়খিয়ায় মণ্ডলীর একটি নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠে। বার্ণবা ও পৌল সেখানে শিক্ষা দান করেন। একটি দুর্ভিক্ষের কারণে অভাবে পড়া যিরুশালেম মণ্ডলীর জন্য আন্তিয়খিয়া মণ্ডলী বার্ণবা ও পৌলের হাত দিয়ে একটি দান পাঠায় ।
‘বার্ণবা ও শৌলের কাজ শেষ হওয়াতে তাঁরা যোহনকে সংগে নিয়ে যিরূশালেমে ফিরে গেলেন। এই যোহনকে মার্ক নামেও ডাকা হত।’
- মার্ক এমনভাবে বেড়ে উঠলেন যে বার্ণবা ও পৌল মার্ককে নিয়োগ করেন এবং তাকে আরো শিষ্যত্ব, প্রশিক্ষণ ও কর্মী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে নিয়ে যান।
- কলসীয় ৪:১০ পদ বলে যে মার্ক হল বার্ণবার আত্মীয় (কেরী: ‘বার্ণবার কুটুম্ব’)। পৌলের পরে বার্ণবা নিজের জন্য নতুন শিষ্য পছন্দ করেছেন।
প্রেরিত ১৩:৫ ৪৭-৪৮ খ্রীঃ মার্ক প্রথম প্রচার যাত্রার দলের একজন মার্কের বয়স: ৩৩-৩৪ বছর
- চারিদিকে গল্প: আন্তিয়খিয়া মণ্ডলী পবিত্র আত্মার পরিচালনায় পরজাতীয়দের কাছে তাদের প্রথম বহিঃপ্রচার দল পাঠায়: বার্ণবা ও পৌল। ‘তখন সাহায্যকারী হিসাবে যোহন তাঁদের সংগে ছিলেন।’
- বার্ণবা ও পৌল প্রথম প্রচার যাত্রায় যোহন মার্ককেও নিয়ে যায়, সাহায্যকারী হিসাবে এবং হতে পারে তাকে আরো শিষ্যত্ব ও সুযোগ দেওয়ার জন্য।
প্রেরিত ১৩:১৩ ৪৭-৪৮ খ্রীঃ মার্ক দলকে ছেড়ে চলে যান মার্কের বয়স: ৩৩-৩৪ বছর
‘এর পরে পৌল ও তাঁর সংগীরা পাফো ছেড়ে জাহাজে করে পাম্ফুলিয়া প্রদেশের পর্গা শহরে গেলেন। যোহন তখন তাঁদের ছেড়ে যিরূশালেমে ফিরে গেলেন।’
- সরাসরি উল্লেখ নেই যে আসলে কোন কারণে যোহন মার্ক দল ছেড়ে চলে যান।
- একটি সম্ভাব্য কারণ: এই পদের আগে সব সময় বলা ছিল ‘বার্ণবা ও পৌল’, প্রেরিত ১৩:১৩ থেকে লেখা আছে ‘পৌল ও বার্ণবা’ বা ‘পৌল ও তার সঙ্গীরা’। সম্ভাবনা বেশি যে এই সময় বার্ণবা দলের নেতৃত্ব তার শিষ্য পৌলের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন।
- আবারও বোধ হচ্ছে যে যোহন মার্ক তাতে খুশি না। তিনি ‘তখন’ই দলকে ছেড়ে চলে যান। তিনি আন্তিয়খিয়ায় ফিরেন না (যেখান থেকে তাদের পাঠানো হয়েছিল) বরং তিনি যিরূশালেমে যান, যাতে চিন্তা করা যায় যে তিনি পরিচর্যা ছেড়ে নিজের শহরে ফিরে গেলেন।
প্রেরিত ১৫:৩৭-৪০ ৫০ খ্রীঃ মার্কর কারণে ঝগড়া ও বিভেদ মার্কের বয়স: ৩৬ বছর
- চারিদিকে গল্প: যিরূশালেমে প্রেরিতদের সভা সফল হয়েছে এবং একটি বড় সমস্যা ভালভাবে সমাধান হয়েছে। পৌল বার্ণবার কাছে প্রস্তাব রাখেন প্রথম প্রচার যাত্রায় স্থাপিত মণ্ডলীদের কাছে বেড়াতে যাওয়া।
‘তখন বার্ণবা যোহনকে সংগে নিতে চাইলেন। এই যোহনকে মার্ক বলেও ডাকা হত। পৌল কিন্তু তাঁকে সংগে নেওয়া ভাল মনে করলেন না, কারণ মার্ক পাম্ফুলিয়াতে তাঁদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের সংগে আর কাজ করেন নি। তখন পৌল ও বার্ণবার মধ্যে এমন মতের অমিল হল যে, তাঁরা একে অন্যের কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেলেন। বার্ণবা মার্ককে নিয়ে জাহাজে করে সাইপ্রাস দ্বীপে গেলেন, আর পৌল সীলকে বেছে নিলেন। তখন আন্তিয়খিয়ার ভাইয়েরা পৌল ও সীলকে প্রভুর দয়ার হাতে তুলে দিলে পর তাঁরা রওনা হলেন।’
- উৎসাহদাতা ও শিষ্যত্বদানকারী হিসাবে বার্ণবা যোহন মার্ককে দ্বিতীয় প্রচার যাত্রায় নিয়ে যেতে চান। এই আশায় যে নতুন সুযোগ ও আরো শিষ্যত্ব পেয়ে তিনি আগের চেয়ে অনেক ভাল করবেন।
- পৌল তাকে নিয়ে যেতে চান না কারণ যোহন মার্ক ‘তাদের সঙ্গে আর কাজ করেন নি’ ও তাই ইতিমধ্যে প্রমাণ করেছেন যে তার উপরে নির্ভর করা যায় না।
- পৌল ও বার্ণবার মধ্যে এই বিষয়ে এমন ঝগড়া ও মতের অমিল হল যে তাদের দল বিভক্ত হয়ে যায়!
- আপনার কেমন লাগত যদি আপনি দুইজন ভাল ও প্রমাণিত নেতাদের বিভেদের কারণ হয়ে যান? মার্কের অবশ্যই খারাপ লেগেছিল এবং এটা তার জন্য লজ্জার বিষয়।
- বার্ণবা কিন্তু তাকে ছেড়ে দেন না বরং তাকে আরো শিষ্যত্ব ও পরিচর্যায় সুযোগ দিতে থাকেন।
- যোহন মার্কের বিষয়ে পৌল কি ঠিক ছিলেন না বার্ণবা? আসলে, পরবর্তী গল্পে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়।

কলসীয় ৪:১০ ৬২ খ্রীঃ পৌল মার্কের সুপারিশ দেন মার্কের বয়স: ৪৮ বছর
- চারিদিকে গল্প: যিরূশালেমে প্রেরিতদের সভা এবং পৌল ও বার্ণবার ঝগড়ার পরে ১২ বছর পার হয়েছে। পৌল এই সময়ে বিভিন্ন প্রচার যাত্রায় গিয়েছেন ও বেশ কয়েকবার জেলেও খেটেছেন। যখন তিনি কলসীয় মণ্ডলীকে একটি চিঠি লিখেন, তিনি মার্কের বিষয়ে সুপারিশ দেন:
“আমার সংগে বন্দী ভাই আরিষ্টার্খ আর বার্ণবার আত্মীয় মার্কও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। মার্কের বিষয় তোমরা তো আগেই আদেশ পেয়েছ যে, তিনি যদি তোমাদের কাছে আসেন তবে তাঁকে আদরের সংগে গ্রহণ কোরো।”
- এখানে আমরা যোহন মার্কের খবর আবার পাই, তিনি কলসীয়দের চিনেন, তিনি নিজেই প্রচার যাত্রায় আছেন ও পৌল তার সুপারিশ দিচ্ছেন।
- বার্ণবার শিষ্যত্ব ও সুযোগ দেওয়া সফল হয়েছে: পৌল মার্ককে এখন একজন মূল্যবান কর্মী হিসাবে দেখেন।
ফিলীমন ২৪ ৬২ খ্রীঃ পৌল মার্ককে ‘সহকর্মী’ বলেন মার্কের বয়স: ৪৮ বছর
- চারিদিকে গল্প: কলসীয় চিঠির সাথে পৌল ফিলীমন চিঠিও লেখেন।
‘এছাড়া মার্ক, আরিষ্টার্খ, দীমা ও লূক-আমার এই সহকর্মীরাও তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।’
- পৌল এখানে যোহন মার্কের পরিচয় দেন তার রোম শহরে পরিচর্যায় সহকর্মী হিসাবে।
২ তীমথিয় ৪:১১ ৬৪-৬৫ খ্রীঃ পৌল মার্কের কাজ খুব দরকারি বলেন মার্কের বয়স: ৫০-৫১ বছর
- চারিদিকে গল্প: তার মৃত্যুর আগে পৌলের শেষ চিঠিতে তিনি তীমথিয়কে অনুরোধ করেন মার্ককে নিয়ে আসতে:
‘কেবল লূক আমার কাছে আছেন। তুমি মার্ককে সংগে করে নিয়ে এস, কারণ আমার কাজে তাঁকে খুব দরকার।’
- পৌল যোহন মার্কের সেবা, পরিচর্যা ও উপস্থিতি খুব দরকারি হিসাবে স্বীকার করে অনুরোধ করছেন যেন তিনি তার কাছে আসেন।
১ পিতর ৫:১৩ ৬৫ খ্রীঃ পিতর যোহন মার্ককে ‘তার সন্তান’ বলেন মার্কের বয়স: ৫১ বছর
- চারিদিকে গল্প: এই সময় পৌল ও পিতর উভয়ই রোম শহরে আছেন। রোমকে রূপকভাবে ‘বাবিল’ও বলা হত।
‘ঈশ্বর তোমাদের সংগে যাদের বেছে নিয়েছেন বাবিলের সে মণ্ডলীর লোকেরা তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে, আর আমার সন্তান মার্কও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।’
- পিতর মার্ককে এখানে ‘তার সন্তান’ বলে, যাতে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, ভালভাবে চেনা-জানা, অনেক বছর ধরে সহভাগিতা ও একসাথে কাজ করা, অনুমোদন ও পরস্পরের প্রতিনিধিত্ব প্রকাশ পায়।
মার্ক ১৪:৫১ ২৯-৩০ খ্রীঃ একজন উলঙ্গ যুবক পালিয়ে যান মার্কের বয়স: ১৫-১৬ বছর (আনুমানিক)
- চারিদিকে গল্প: যীশু এইমাত্র গেৎশিমানীতে তাঁর প্রার্থনা শেষ করেছেন, যিহূদা তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং শিষ্যরা ভয়ে পালিয় গিয়েছেন। তখনই এই ঘটনা ঘটে:
‘একজন যুবক কেবল একটা চাদর পরে যীশুর পিছনে পিছনে যাচ্ছিল। ৫২ লোকেরা যখন তাকে ধরল তখন সে চাদরখানা ছেড়ে দিয়ে উলংগ অবস্থায় পালিয়ে গেল।’
- কে এই ঘটনাটি সম্বন্ধে জানবেন? কে এই ঘটনা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন যে তার উল্লেখ করেন?
- উত্তর হল: যোহন মার্ক নিজেই। তিনিই সে যুবক যিনি সে রাতে চাদর ছেড়ে পালিয়েছেন।
- কেন মার্ক এই ব্যক্তিগত লজ্জার গল্প তার সুসমাচারে উল্লেখ করেন?
- হয়তো তিনি তার শ্রোতাদের দেখাতে চান যে হ্যাঁ, তিনিও ভিত ছিলেন, তিনিও আর জানতেন না কি করতে, তিনিও ভয়ে পালিয়েছেন। তিনি এই লজ্জার ও ব্যর্থতার গল্প বলেন কারণ তার শ্রোতারাও ভিত ও অত্যাচারের সম্মুখীন হচ্ছে।
- কিন্তু হয়তো তিনি গল্পটিকেও উল্লেখ করেন শ্রোতাদের জানানোর জন্য যে তিনিও যীশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের একজন চাক্ষুষ সাক্ষী।
- যদিও তিনি সে সময় যুবক মাত্র ছিলেন, তিনিও একজন অনুসরণকারী ছিলেন যিনি যীশুর কথার ও কাজের সাক্ষী। তাতে তিনি সুসমাচার লেখক হিসাবে তার অধিকারও প্রকাশ করেন।
মার্ক সুসমাচার ৬৫-৬৭ খ্রীঃ মার্ক রোম থেকে রোম লিখেন মার্কের বয়স: ৫১-৫৩ বছর
- চারিদিকে গল্প: সম্রাট নীরো খ্রিষ্টানদের অত্যাচার শুরু করেছেন। সে সময় পৌল, পিতর সহ আরো অনেক বিশ্বাসীরা ইতিমধ্যে শহীদ মৃত্যুবরণ করেছেন।
- মার্ক, যিনি পৌলের সহকর্মী ও পিতরের ‘সন্তান’, সহকর্মী ও অনুবাদক তার সুসমাচার লিখেন। মার্কের সুসমাচারকে আসলে পিতরের সুসমাচারও বলা যায়, মণ্ডলীর আদি পিতারা ইরেনেয়াস (Irenaeus, লীয়ন শহরের অধ্যক্ষ, মৃত্যু ২০২ খ্রিঃ) এবং মণ্ডলীর ইতিহাসবিদ ইউসেবিয়াস (Eusebius, মৃত্যু ৩৩৯ খ্রিঃ) যেমন বলেন।
- যোহন মার্ক তার সুসমাচার রোমীয় মণ্ডলীকে উৎসাহ ও স্থিরতা দান করার জন্য লিখেন যারা এই সময় সম্রাট নীরোর হিংস্র অত্যাচারের সম্মুখীন।
- কিন্তু তিনি তার সুসমাচার ও লিখেন কারণ যীশুর চোখের সাক্ষীদের (যেমন পিতরকে) মেরে ফেলা হচ্ছে, যেন তাদের কথা ও সাক্ষ্য হারিয়ে না যায়।
মণ্ডলীর ইতিহাস থেকে যোহন মার্ক সম্বন্ধে কিছু গল্প
- মিসরীয় কপ্টিক মণ্ডলীর লেখা অনুসারে মার্ক জন্ম নিলেন রোম রাজ্যের পেন্টাপলি এলাকার কূরীনি শহরে, আজকের যুগে তা লিবিয়া দেশে পড়ে।
- তারা বলে যে মার্ক রোমের পরে মিসরের আলেক্সান্দিয়া শহরে পরিচর্যা করেন। শহরের দেবতা পূজারী তার উপর খেপে যায় কারণ তার কারণে অনেক লোক শহরের দেব-দেবতার পূজা থেকে মন ফিরায়।
- তারা তাকে ৬৮ খ্রিঃ গ্রেফতার করে, তার গলায় ফাঁসি দিয়ে তাকে শহরের রাস্তায় টেনে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলে।
- ইটালীর ভেনিস্ শহর দাবী করে যে তাদের অধীনে যোহন মার্কের হাড় আছে। তার উদ্দেশ্যে একটি বড় গির্জা তৈরি হয়েছিল: সাধু মার্কের রাজপ্রাসাদ (St. Mark’s Basilica, Venice)।
যোহন মার্কের জীবন থেকে প্রয়োগ
- নেতারাও ভুল করে। ব্যর্থতা আমাদের নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত করবে, তা নয়। ব্যর্থতা থেকে উঠে আসা সম্ভব।
- বার্ণবার মত সে উৎসাহ ও সুযোগ দানকারী মানুষ কত গুরুত্বপূর্ণ! তারা এমন লোক যারা অন্যদের নিয়ে আশা করেন, অন্যদের যত্ন নেন, অন্যদের জীবনে বিনিয়োগ করেন, যারা দ্বিতীয় সুযোগ দেন।
- কিন্তু একইভাবে এটাও গুরুত্বপূর্ণ: যখন ভুল করি, যেন আমি নতুন সুযোগ নেই, যেন লজ্জা এড়িয়ে না যাই, বরং লজ্জা মাথা পেতে নেই, নম্র হয়ে ব্যর্থতা স্বীকার করে যেন উদ্ধারের প্রক্রিয়ায় পা দেই, যেন ধৈর্যশীল ও বিশ্বস্ত হতে শিখি। যেন আমি নিজেকে আস্তে আস্তে প্রমাণ করতে ও নির্ভরযোগ্যতা অর্জন করতে রাজি হই।
- নিজেকে নিয়ে সহজেই আশা ছেড়ে দেবেন না! অন্যদের উপরে সহজেই আশা ছেড়ে দেবেন না!
- অনুগ্রহ দান করুন! অনুগ্রহ গ্রহণ করুন!
- আমরা বলি: একবার সুনাম নষ্ট হলে তা আর ফিরিয়ে আনা যায় না, আর আশা নেই, আর কিছু করার নেই, পরিবর্তিত হওয়ার আর সুযোগ নেই। কিন্তু ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা আমাদের জন্য আছে যে তিনি যেকোনো একজন ইচ্ছুক ব্যক্তিকে যে কোনো ব্যর্থতা থেকে উদ্ধার করতে পারেন। তিনি আমাদের সম্পূর্ণ উদ্ধার করতে ও নতুন করে তুলতে পারেন যদি আমরা সে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে রাজি থাকি।
- চিন্তা করুন: আপনি কি ধরণের পরিস্থিতিতে বা সমস্যার মধ্যে আছেন যেখানে ঈশ্বর আপনাকে বিশ্বস্ত ও ধৈর্যশীল হতে উৎসাহ দেন? ঈশ্বর কিভাবে অন্যদের আশা বা সাহস দেওয়া জন্য আপনার জীবনের একটি লজ্জাকর বা ব্যর্থতার গল্প ব্যবহার করেছেন?
- মার্ক ব্যর্থতার পরে অনেক ভাল কাজ করেছেন। ২০০০ বছর পরে তার সুসমাচার এখনও পড়া হয় ও অনেক মানুষ তা থেকে সান্ত্বনা ও উৎসাহ পায়। মার্ক তা অবশ্যই চিন্তা করেন নি। … আমরা জানি না, চিন্তাও করতে পারি না যদি আমরা বিশ্বস্ত হই, তাহলে ঈশ্বর আমাদের দ্বারা কত কি যে করতে পারেন!