অর্থনীতি ১২ – ক্ষতিপূরণ
- ক্ষমা সম্বন্ধীয় প্রচার প্রায়ই শোনা যায় কিন্তু ক্ষতিপূরণ সম্বন্ধে প্রচার নেই বললেই চলে। কেন?
- আমরা ঠিকই বলছি যে ক্ষমা করতে হয় যদি কেউ আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় করে (যেমন ধার নেওয়া টাকা ফেরত না দেওয়া, বা চুরি)।
- কিন্তু আমাদের আরো বলা উচিত যে অন্যায়কারীর দায়িত্ব আছে যতদূর সম্ভব ক্ষতিপূরণ দিতে।
- কিন্তু বাইবেলে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে প্রায় ২ অধ্যায় ধরে লেখা আছে! হয়তো আমাদের এখানে কিছু শেখার আছে।
- বাইবেলে ক্ষতিপূরণ সম্বন্ধীয় আইনে একটি কৃষিভিত্তিক সমাজের নানা উদাহরণ দেওয়া আছে। এইগুলি পড়লে ঈশ্বরের নীতিমালা খুঁজে বের করা যায়:
জিনিস বা পশুর জন্য ক্ষতিপূরণ
যাত্রা ২৩:৪-৫ অন্যদের (এমন কি শত্রুদের) সম্পত্তি রক্ষা করার আদেশ
‘তোমার শত্রুর কোন গরু বা গাধাকে যদি অন্য কোথাও চলে যেতে দেখ তবে সেটা অবশ্যই তার কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ৫ তোমাকে ঘৃণা করে এমন কোন লোকের গাধাকে যদি বোঝার ভারে পড়ে যেতে দেখ তবে সেই লোককে সেই অবস্থায় রেখে চলে যেয়ো না। তুমি অবশ্যই তাকে তা তুলতে সাহায্য করবে।’

- ঈশ্বর আমাদের নিজেদের সম্পত্তি, প্রতিবেশীদের সম্পত্তি, এমন কি শত্রুদের সম্পত্তিও রক্ষা করার আদেশ দেন।
- ঈশ্বর মানুষের মালিকানা সুরক্ষিত রাখেন (চুরি করো না!)। তাই সম্পত্তি মূল্যবান। যা মূল্যবান, তা রক্ষা করো; নিজের, অন্য একজনের, সরকারের বা যে কোনো পাবলিক সম্পত্তিও (রাস্তা-ঘাট, ট্রেন, বাস, দালান, ইত্যাদি)।
- কি উচু মাণদন্ড! আমরা চুরিকেও বেশি বড় বিষয় মনে করি না, হারানো বা রাস্তা পড়ে গেছে জিনিস পেলে আমরা মনে করি তা নেওয়ার অধিকার আমাদের অবশ্যই আছে, এমন কি ঝড়ে আম পড়লে, প্রতিবেশীরা আমাদের চোখের সামনেও সেইগুলি তুলে নেবার অধিকার আছে বলে মনে করে। আর একজনের সম্পত্তির জন্য কষ্ট করব, তা দূরের কথা! ঈশ্বর আমাদের ভিন্ন একটি মনোভাব শেখাতে চান।
- পশু (বিশেষভাবে কাজের পশু) মূল্যবান এবং সঠিক ব্যবহার পাওয়ার যোগ্য।
যাত্রা ২২:১,৩-৪ চুরি হলে ৪ বা ৫ গুণের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ
‘যদি কোন লোক কোন গরু বা ভেড়া চুরি করে এনে মেরে ফেলে কিম্বা বিক্রি করে দেয়, তবে তাকে একটা গরুর বদলে পাঁচটা গরু এবং একটা ভেড়ার বদলে চারটা ভেড়া ফিরিয়ে দিতে হবে। … ৩ চোরকে চুরি করা জিনিষের জন্য অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, কিন্তু যদি তার কিছু না থাকে তবে তাকেই বিক্রি করে সেই টাকা আদায় করে নিতে হবে। ৪ চুরি করা গরু, গাধা বা ভেড়া যদি চোরের কাছে জ্যান্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তবে চোরকে সেগুলো একটার বদলে দু’টা করে ফিরিয়ে দিতে হবে।’
- ঈশ্বর নিশ্চিত করেন যে চুরি ঝুঁকিপূর্ণ: ৪ বা ৫ গুণ লোকসান হয়। তা দ্বারা ঈশ্বর চুরিকে নিরুৎসাহিত করেন।
- যদি মাত্র ২ গুণের ক্ষতিপূরণ দাবী করা হত, তবে অর্ধেক সময় চুরি করে ধরা খেলেও চোরের কিছু লাভ থাকত। কিন্তু ৪ বা ৫ গুণের ক্ষতিপূরণ থাকলে লোকসানের সম্ভাবনা বেশী থাকে।
২ শমূয়েল ১২:৫-৬ ভাববাদী নাথন রাজা দায়ূদের দোষ ধরেন
‘যে লোকটি এই কাজ করেছেন তাকে মেরে ফেলাই উচিত। ৬ সে একটুও দয়া না করে এই কাজ করেছে বলে তাকে ঐ ভোড়ার বাচ্চাটার চারগুণ দাম দিতে হবে।’
- এই পদে বুঝা যায় যে, রাজা দায়ূদ আইন-কানুন ভালভাবে জানতেন। তিনি সঠিকভাবে বলেন যে, ভেড়ার ক্ষেত্রে ৪ গুণের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। যেমন দ্বিতীয় বিবরণ ১৭:১৮-১৯ বলে, রাজা আইন-কানুন অধ্যয়ন করেন।
- কিন্তু রাজা দায়ূদ অতিরিক্তও বলেন: চুরির জন্য মৃত্যুর শাস্তি নেই। হয়তো তিনি গরীব লোকের ভেড়া তার আয়ের একমাত্র পথ চিন্তা করে তা বলেন।
লূক ১৯:৭-৮ সক্কেয় ক্ষতিপূরণ দেন ও দানশীল হন
‘প্রভু, আমি আমার ধন-সম্পত্তির অর্ধেক গরীবদের দিয়ে দিচ্ছি এবং যদি কাউকে ঠকিয়ে থাকি তবে তার চারগুণ ফিরিয়ে দিচ্ছি।’
- সক্কেয় আইন জানে। যখন সে যীশুর নিঃশর্ত ভালবাসা উপলব্দি করে সাড়া দেয়, তখন সে আইন অনুসারে ক্ষতিপূরণ দেয় এবং গরীবদের প্রতি দানশীল হয়।
যাত্রা ২২:৫ পশু প্রতিবেশীর ঘাস খেলে > ক্ষতিপূরণ
‘যদি কেউ তার গরু-ভেড়া কোন মাঠে বা আংগুর ক্ষেতে চরাতে গিয়ে ছেড়ে দেয় আর সেগুলো অন্য কোন লোকের ক্ষেতে ঢুকে ফসল খেয়ে ফেলে, তবে তার নিজের শস্য ক্ষেতের বা আংগুর ক্ষেতের সবচেয়ে ভাল ফসল দিয়ে তার ক্ষতিপূরণ করতে হবে।’
- না চেয়েও যদি আমার পশু প্রতিবেশীর ঘাস খায় তাহলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
- এটা দূর্ঘটনা হতে পারে, অবহেলা হতে পারে, ইচ্ছাকৃতও হতে পারে। সবচেয়ে ভাল ফসল থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হলে পশুর মালিক যাতে পরবর্তীতে ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে মনোযোগ ও গুরুত্ব দেবে।
- ঈশ্বর আইনটি দ্বারা নিশ্চিত করেন যে অবহেলা বা ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিবেশীকে ঠকানো যাবে না। এইভাবে তাকে বিরক্তও করা যাবে না।
যাত্রা ২২:৬ আগুন লাগলে > ক্ষতিপূরণ
‘যদি কোন জায়গা থেকে আগুন কাঁটাঝোপে গিয়ে লাগে এবং পরে ছড়িয়ে গিয়ে গাদা করে রাখা কিম্বা মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা শস্য কিম্বা গোটা ক্ষেতখানা পুড়িয়ে ফেলে, তবে আগুনটা যে জ্বালিয়েছিল তাকেই তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
- এটা একটা দূর্ঘটনা হতে পারে, অবহেলাও হতে পারে।
- যেহেতু প্রতিবেশীর ক্ষতি হয়েছে আমার কারণে, দূর্ঘটনা হলেও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ।
- একটু যত্ন নিলে যদি একটি দূর্ঘটনা প্রতিরোধ করা যেত, তবে তা আমার দোষ হিসাবে দাঁড়ায় এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।
যাত্রা ২১:৩৩-৩৪ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ তৈরী করলে > ক্ষতিপূরণ
‘যদি কোন জমির মালিক তার জমির কোন গর্তের মুখ খুলে রাখে কিম্বা কোন গর্ত খুঁড়ে ঠিক মত তার মুখ ঢাকা দিয়ে না রাখে আর সেই গর্তে যদি কোন গরু বা গাধা পড়ে যায়, ৩৪ তবে তাকেই তার ক্ষতিপুরণ দিতে হবে। সেই গরু বা গাধার মালিককে সেই ক্ষতিপুরণ দিতে হবে; তবে মরা গরু বা গাধাটা তার হয়ে যাবে।’
- ঈশ্বর আমাকে দায়বদ্ধ রাখেন যেন দূর্ঘটনা প্রতিরোধ করি, যেন এমন পরিস্থিতি তৈরী না করি যাতে আর একজনের সম্পত্তির ক্ষতি হয়। অন্যদের সম্পত্তির রক্ষা করা হল আমার দায়িত্ব।
- এখানে ক্ষতিপূরণ মানে গরুর বদলে গরু দিতে হবে, যেন প্রতিবেশীর অবস্থা আবার আগের মত হয়।
- মৃত পশু আমার হবে, কারণ এটা শাস্তির বিষয় নয় (যেহেতু দূর্ঘটনা) বরং ক্ষতিপূরণের বিষয়।
- আধুনিক যুগে আমরা অন্যদের (যেমন একটি কোম্পানীকে) আদালতে অভিযুক্ত করি (sue others), যেখানে ক্ষতিপুরণের পরিমাণ ‘গরুর বদলে গরু’ নয় বরং এমন পরিমাণে যাতে কোম্পানির ক্ষতি হয়।
যাত্রা ২১:৩৫-৩৬ গুঁতিয়ে মেরে ফেলা
‘কোন লোকের গরু যদি অন্য কোন লোকের গরুকে গুঁতিয়ে মেরে ফেলে, তবে জ্যান্ত গরুটাকে বিক্রি করে তার টাকা ও মরা গরুটা তারা দু’জনে সমান ভাগে ভাগ করে নেবে। ৩৬ কিন্তু যদি আগে থেকে জানা থাকে যে, গরুটা গুঁতায় কিন্তু তার মালিক তাকে আট্কে না রেখে থাকে তবে সেই মালিককে গরুর বদলে গরু দিতে হবে এবং মরা গরুটা তার হয়ে যাবে।’
- যদি পশুদের মধ্যে তা হয় (মানে মানুষের ইচ্ছা ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে) তবে যে লোকসান হয়েছে তা দুইজন মালিকের মধ্যে ভাগ করা হয়।
- যদি একটি গরু আগেও গুঁতাতো তবে তা অবহেলার বিষয় হিসাবে দাঁড়ায়: তাকে বেঁধে রাখা উচিত ছিল। সেক্ষেত্রে মালিকের ক্ষতিপূরণ করতে হবে, কিন্তু ‘শাস্তি’ নেই, সে মৃত পশু নিতে পারবে।
যাত্রা ২২:৭-৮ গচ্ছিতগ্রহীতা থেকে চুরি হলে
‘যদি কেউ কারও কাছে টাকা-পয়সা বা জিনিসপত্র রাখতে দেয় আর তার ঘর থেকে তা চুরি হয়ে যায়, তবে চোর ধরা পড়লে চোর তার দ্বিগুণ ফিরিয়ে দেবে। ৮ কিন্তু যদি চোর ধরা না পড়ে তবে ঘরের কর্তা নিজেই সেই সব নিয়েছে কিনা তা স্থির করবার জন্য তাকে ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হতে হবে।’
- অন্য একজনের জন্য কিছু জিনিস-পত্র গচ্ছিত রাখা হল একটি সেবার কাজ। সেবার কাজের জন্য মানুষ যেন শাস্তি না পায়।
- কিন্তু নিশ্চিত হতে হবে, যে গচ্ছিতগ্রহীতা এবং চোর হাত মিলিয়ে তা করেছেন কিনা। ঐযুগে পুরোহিতের কাছে গিয়ে গুলিবাট দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হত যে, তা খারাপ উদ্দেশ্যে হয়েছে কিনা।
- এই আইন দিয়ে ঈশ্বর নিশ্চিত করতে চান যেন অন্যদের সম্পত্তি নিয়ে উল্টাপাল্টা করা না হয়, একজনের বিশ্বাসকে যেন ভুল ব্যবহার করা না হয়।
- কিন্তু ঈশ্বর আবারও নিশ্চিত করতে চান যেন গচ্ছিতগ্রহীতা (প্রতিবেশীকে সেবা করছে) সুরক্ষা পায়। তা না হলে আর একজনের জন্য কিছু গচ্ছিত রাখা অনেক ঝুঁকির বিষয় হিসাবে দাঁড়ায় এবং একটি চুরি ঘটলে গচ্ছিতগ্রহীতার দ্বিগুণ ক্ষতি হয়: তার কাছ থেকে চুরিও হল এবং অন্য একজনকে ক্ষতিপূরণও দিতে হল।
- একজন মালিক চোরের সাথে হাত মিলিয়ে একজন নির্দোষ গচ্ছিতগ্রহীতাকে দোষী বানাবে, ঈশ্বর তার প্রতিরোধ করেন।
যাত্রা ২২:১০-১৩ গচ্ছিত করা জিনিস-পত্র হারালে বা ধ্বংস হলে
‘যদি কেউ তার গাধা, গরু, ভেড়া কিম্বা অন্য কোন পশু কারও কাছে রাখতে দেয় আর তা মরে যায় বা আঘাত পায় কিম্বা কেড়ে নেওয়া হয় অথচ কেউ এই সব হতে দেখে নি, ১১ তবে সেই লোকই যে সেটা করে নি তা সদাপ্রভুর সামনে শপথ করে তাকে ব্যাপারটার মীমাংসা করতে হবে। সেই পশুর মালিককে তখন তা মেনে নিতে হবে এবং কোন ক্ষতিপূরণ সে দাবি করতে পারবে না। ১২ কিন্তু সেই লোকের কাছ থেকে যদি সেটা চুরি হয়ে যায় তবে তাকে ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে। ১৩ যদি কোন হিংস্র জন্তু সেই পশুটাকে ছিঁড়ে ফেলে তবে তা প্রমাণ করবার জন্য তাকে পড়ে থাকা অংশগুলো নিয়ে এসে দেখাতে হবে। এই অবস্থায় তাকে আর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না।’
- আগের মত: গচ্ছিতগ্রহীতাকে রক্ষা করা হয়, কিন্তু তার কাছ থেকে দাবীও করা হয় যে, তিনি যা নিজের সম্পত্তির জন্য করেন, তা অন্যের সম্পত্তির জন্যও করেন। গচ্ছিতগ্রহীতা হিসাবে অন্য একজনের সম্পত্তি নিয়ে অবহেলা করা চলবে না। অবহেলা করা হলে গচ্ছিতগ্রহীতাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
- ঈশ্বর ভয় এবং প্রতিজ্ঞা রক্ষা ছাড়া আইনটি কার্যকারী হয় না।

যাত্রা ২২:৯ দখল করা পশু > দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ
‘অন্যের দখলে আছে এমন কোন গরু বা গাধা বা ভেড়া বা পরনের কাপড় কিম্বা অন্য যে কোন হারানো জিনিস দেখে যদি কেউ বলে সেটা তার, তবে তা মীমাংসার জন্য দুই পক্ষকেই ঈশ্বরের কাছে গিয়ে উপস্থিত হতে হবে। ঈশ্বর যাকে দোষী বলে স্থির করবেন সে অন্যজনকে তার দ্বিগুণ ফিরিয়ে দেবে।’
- ঈশ্বর প্রতিরোধ করেন যেন একজন আর একজনের সম্পত্তি নিজের হিসাবে দাবী না করে। ঈশ্বর প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার ভুল ব্যবহার বা ঠকানোর মনোভাব নিরুৎসাহিত করার জন্য দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দাবী করেন, যদিও পরিকল্পিত চুরির চেয়ে কম (চার বা পাঁচ গুণ)।
- আবারও গুলিবাট দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হত যে, কে ঠিক বলে এবং কে ভুল বলে।
যাত্রা ২২:১৪ ধার নেওয়া পশু আঘাতপ্রাপ্ত হলে
‘কারও কাছ থেকে চেয়ে আনা কোন পশু যদি মালিকের অনুপস্থিতিতে আহত হয় বা মরে যায় তবে যে তা চেয়ে এনেছে তাকে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কিন্তু মালিকের সামনেই যদি তা হয় তবে তাকে কোন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। কিন্তু পশুটা যদি টাকা দিয়ে ভাড়া করে আনা হয়ে থেকে তবে সেই টাকাই তার ক্ষতিপূরণ হবে।’
- ঈশ্বর দাবী করেন যে একটি পশু ধার নেয় সে মালিকের কাছে দায়বদ্ধ যেন তা রক্ষা পায় এবং সু-অবস্থায় মালিকের হাতে ফিরে আসে।
- আঘাতের সময় মালিক উপস্থিত থাকলে – যখন সে দেখেছে কিন্তু বিপদ মনে করে নি বা কোনো প্রতিরোধ করে নি – তবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া দরকার নেই। মালিক না থাকলে পশুর নিরাপত্তা হল ধার গ্রহণকারীর দায়িত্ব। তাই আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
- একটি পশুকে ধার দেওয়া বা ধার নেওয়া যায়। পশু মূল্যবান, তার শ্রমও মূল্যবান, তার পিছনে খরচও আছে, তাই মূল্য নেওয়া উপযুক্ত। কিন্তু চুক্তিতে মূল্য নিলে যদি পশুর ক্ষতি হয়, তবে শুধুমাত্র চুক্তির মূল্য দিতে হবে, যেহেতু মালিক তার মূল্য নিয়ে ঝুঁকি গ্রহণ করে।
- একই নিয়ম কি জমির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? যন্ত্র ধার নেওয়ার ক্ষেত্রে? টাকা ধার নেওয়ার ক্ষেত্রে?
লেবীয় ২৪:১৮, ২১ আর একজনের পশুকে মারলে
‘যদি কেউ অন্যের পশু মেরে ফেলে তবে তাকে একটা প্রাণের বদলে আর একটা প্রাণ দিয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। … ২১ পশু মেরে ফেললে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, কিন্তু মানুষ মেরে ফেললে মরতে হবে।’
- আর একজনের পশু মেরে ফেললে তার পরিবর্তে পশু দিতে হবে। চুরির মত চার বা পাঁচগুণ দিতে হবে না, ২০%-ও যোগ দেওয়া হয় না। কেন? কিভাবে এই কেস চুরি থেকে ভিন্ন?
- কারণ হয়তো মৃত পশু রেখে চলে গেছে (মেরে ফেলেছে, কিন্তু নিয়ে নেয় নি)। কারণ হয়তো তা অনিচ্ছাকৃতভাবে হয় নি। কারণ হয়তো নিজের মনে করে তা ভুলভাবে জবাই করা হয়েছে। বা পশু হতে নিজেকে রক্ষা করতে তা মেরে ফেলা হয়েছে? > হতেও পারে এই ক্ষেত্রে নিয়ম ভিন্ন।
গণনা ৫:৭-৮ একজনের বিরুদ্ধে অন্যায় করলে
‘সে যে পাপ করেছে তা তাকে স্বীকার করতে হবে। সে যার উপর অন্যায় করেছে তাকে তার অন্যায়ের পুরো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যে জিনিস সম্বন্ধে সে অন্যায় করেছে সেই জিনিসের দামের সংগে আরও পাঁচ ভাগের এক ভাগ দাম যোগ করে তাকে দিতে হবে। ৮ ক্ষতিপূরণ নেবার জন্য যদি সেই লোকের কোন নিকট আত্মীয় না থাকে তবে তা সদাপ্রভুর পাওনা হবে। সেই ক্ষতিপূরণ এবং তার পাপ ঢাকা দেবার ভেড়াটা পুরোহিতকে দিতে হবে।’
- ঠিক আগের মত। যোগ দেওয়া হয়েছে যে, ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব বাতিল হয় না যদি মালিক মারাও যায়। ক্ষতিপূরণ দেওয়া আবশ্যক: মালিকের কাছে দিতে না পারলে তবে তার নিকট আত্মীয়কে দিতে হবে। কেউ পাওয়া না গেলে তবে পুরোহিতকে দিতে হবে। পুরোহিত এখানে প্রতিনিধি হিসাবে দাঁড়ান, নিশ্চিত করার জন্য যে, লোকদের সঠিক পথে এগিয়ে যাবার সুযোগ আছে। আধুনিক উদাহরণ: ‘চেতনার টাকা’ (conscience money)
লেবীয় ৫:১৫-১৬ পবিত্র জিনিসের ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃতভাবে পাপ করায় উৎসর্গ
‘মনে অন্যায়ের ইচ্ছা না রেখে যদি কেউ সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রাখা জিনিসের ব্যাপারে তাঁর আদেশ অমান্য করে, তবে তার অন্যায়ের জরিমানা হিসাবে সদাপ্রভুর কাছে তাকে একটা খুঁতহীন পুরুষ ভেড়া আনতে হবে। এটা একটা দোষ-উৎসর্গ। তা ছাড়া ধর্মীয় শেখেল অনুসারে যতটা রূপা তুমি ভেড়াটার দাম ঠিক করে দেবে সেই পরিমাণ রূপা তাকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে হবে। ১৬ সেই পবিত্র জিনিসের ব্যাপারে সে অন্যায় করেছে বলে তাকে এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এছাড়া ভেড়াটার দামের সংগে আরও পাঁচ ভাগের এক ভাগ দাম তাকে পুরোহিতের হাতে দিতে হবে। পুরোহিত সেই ভেড়াটা নিয়ে দোষ-উৎসর্গ হিসাবে তা উৎসর্গ করে তার অন্যায় ঢাকা দেবার ব্যবস্থা করবে আর তাতে তাকে ক্ষমা করা হবে।’
লেবীয় ৫:১৭-১৯ না জেনে পাপ করায় উৎসর্গ
‘যদি কেউ না জেনে সদাপ্রভুর নিষেধ করা কোন কিছু করে অন্যায় করে ফেলে তবে সে দোষী হবে এবং সেইজন্য তাকে দায়ী হতে হবে। ১৮ তখন সে তার দোষ-উৎসর্গের জন্য তোমার ঠিক করে দেওয়া মূল্যের একটা খুঁতহীন ভেড়া এনে পুরোহিতের হাতে দেবে। সে না জেনে যে অন্যায় করেছে তার জন্য পুরোহিত তার অন্যায় ঢাকা দেবার ব্যবস্থা করবে; তাতে তাকে ক্ষমা করা হবে। ১৯ এটা একটা দোষ-উৎসর্গ, কারণ সে সদাপ্রভুর কাছে দোষী।’
- এই দু’টি উদাহরণের পার্থক্য কি ৫:১৫-১৬ ও ৫:১৭-১৯? পবিত্র জিনিসের ক্ষেত্রে ২০% যোগ দিয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং না জেনে পাপের ক্ষেত্রে শুধু ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কেন?
- হয়তো পবিত্র জিনিসের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ২০% টাকা অবহেলার শাস্তি হিসাবে দাঁড়ায় কিন্তু না জেনে পাপ করলে তা কোনো খারাপ ইচ্ছা থেকে হয় নি বলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যথেষ্ট। কিন্তু যে কোনোভাবে নিজের আচরণের ফলাফল বহন করতে হবে।
লেবীয় ৬:১-৭ অন্যায় করা, ঠকানো বা প্রতারণা করায় উৎসর্গ
‘এর পর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “কারও কাছ থেকে জমা রাখা বা জামিন রাখা বা জুলুম করে নেওয়া কোন জিনিষ নিয়ে ছলনা করা, তাকে ঠকানো, কিম্বা কারও হারানো জিনিস পেয়েও মিথ্যা কথা বলা বা মিথ্যা শপথ করা- এই রকম কোন পাপ করে যদি কেউ সদাপ্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে দোষী হয়, তবে সে যা চুরি করেছে বা ঠকিয়ে নিয়েছে বা তার কাছে যা জমা রাখা হয়েছে কিম্বা হারানো জিনিস যা সে পেয়েছে বা যে জিনিসের বিষয়ে সে মিথ্যা শপথ করেছে তা তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। তাকে পুরোপুরি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং তার সংগে সেই জিনিসের দামের পাঁচ ভাগের এক ভাগ দামও বেশী দিতে হবে। দোষ-উৎসর্গের দিনে সে জিনিসের মালিককে তা দেবে। ৬ অন্যায়ের জরিমানা হিসাবে সে তোমার ঠিক করে দেওয়া মূল্যের একটা খুঁতহীন পুরুষ ভেড়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে দোষ-উৎসর্গের জন্য পুরোহিতের কাছে নিয়ে আসবে। ৭ পুরোহিত তা দিয়ে সদাপ্রভুর সামনে তার পাপ ঢাকা দেবার ব্যবস্থা করবে। এই সব পাপের যেটা করেই সে দোষী হোক না কেন, তাকে ক্ষমা করা হবে।’
- ইচ্ছাকৃতভাবে যদি ঠকানো হয়, অন্যায় লাভ করা হয় বা চুরি করা হয় তবে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি শাস্তি হিসাবে ২০% বেশী দিতে হবে। কেন বেশী দিতে হবে? কারণ হয়তো যার কাছ থেকে চুরি করা হয়েছে, তার যে ভোগান্তি বা সময় নষ্ট হয়েছে, তার জন্য।
ফিলীমন ১৮-১৯ পৌল ক্ষতিপূরণ করার প্রতিজ্ঞা দেন
‘যদি সে তোমার কোন ক্ষতি করে থাকে বা তোমার কাছে কোন বিষয়ে ঋণী থাকে তবে তা আমার ঋণ বলেই ধোরো। আমি পৌল নিজের হাতেই লিখছি যে, আমি সেই ঋণ শোধ করে দেব।’
- পৌল তার দীর্ঘদিনের বন্ধু ফিলীমনের অধিকার রক্ষা করেন: মনিব হিসাবে দাসের উপর তার অধিকার এবং ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার।
বাইবেলের একটি শব্দ নিয়ে অধ্যয়ন: ‘ক্ষতিপূরণ’ (Restitution) H7999 (ইব্রীয়তে ‘shalam’), ১০৭ পদে ১১৬ বার ব্যবহৃত হয়েছে।
শব্দের অনুবাদ: ক্ষতিপূরণ দেওয়া, আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, ফেরত দেওয়া, আবার দেওয়া, পূর্ণ করা, শেষ করা, শান্তি স্থাপন করা, শান্তিতে বাস করা, মেনে নেওয়া, চুক্তি স্থাপন করা, পুরস্কার দেওয়া, পরিশোধ করা, প্রতিশোধ নেওয়া, শাস্তি দেওয়া, ফলাফল ভোগ, মানত পূর্ণ করা।
সারাংশ
- এই আইনগুলি খুব বাস্তব ও ব্যবহারিক, এমন ঘটনা সম্বন্ধীয় যা দৈনন্দিন জীবনে প্রতিদিন দেখা যায়। এই ধরণের বিষয়েও ঈশ্বর ন্যায্যতা দাবী করেন, যেন মানুষ শান্তিতে ও সুসম্পর্কে বসবাস করতে পারে।
- অবশ্যই অর্থনৈতিক বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ!
- আইনগুলিতে বিস্তারিত ও স্পষ্টভাবে সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা করা আছে। কেন? কারণ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা প্রয়োজন, ভিন্ন পরিস্থিতি বা উদ্দেশ্যও বিবেচনা করা আবশ্যক।
- আইনগুলি দুই দিকে ন্যায্যতা রক্ষা করে। যে কোনো ঘটনায় দুই দিকে পাপ থাকতে পারে।
মানুষকে আঘাত করায় ক্ষতিপূরণ
যাত্রা ২১:১৮-১৯ মানুষ মানুষকে আঘাত করলে > ক্ষতিপূরণ
‘দু’জন লোক ঝগড়া করতে গিয়ে যদি একজন অন্যজনকে এমনভাবে পাথর বা ঘুষি মারে, যার ফলে সে মারা না গেলেও বিছানায় পড়ে থাকে আর শেষ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাইরে গিয়ে তাকে লাঠিতে ভর করে চলাফেরা করতে হয়, তবে সেই আঘাতকারীকে মৃত্যুর শাস্তি দেওয়া চলবে না; কিন্তু যাকে আঘাত করা হয়েছে তার সময় নষ্ট হওয়ার দরুন আঘাতকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলবার ব্যবস্থা করতে হবে।’
- এখানে বর্ণনা করা হয়: হঠাৎ মাথা গরম হয়ে দুইজনের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি। কিন্তু আগে থেকে পরিকল্পনা ছিল না যে তা হবে। একজন মারা গেলে তা ‘দূর্ঘটনার মৃত্যু’ বলা যাবে না, ফলে মৃত্যুর শাস্তি দেওয়া হবে। একজন আঘাতপ্রাপ্ত হলে তবে অন্যজন তার সুস্থ হওয়ার খরচ এবং বাদ যাওয়া শ্রমের মূল্য বহন করবে। কি হত যদি লোকটি বাকি জীবনের জন্য পঙ্গু হত?
- এই আইন সমতা নিয়ে আসতে চায়: একজন আঘাতে ভুগছে, অন্যজনের অর্থনৈতিক লোকসান হয়।
- মানুষের উদ্দেশ্য কি ছিল তা বিবেচনা করা দরকার। ক্ষতি কতদূর হল, তা বিবেচনা করা দরকার।
যাত্রা ২১:২০-২১ দাসের মৃত্যু বা আঘাত হলে ক্ষতিপূরণ
‘যদি কেউ তার দাস বা দাসীকে লাঠি দিয়ে মারে আর তার ফলে সে মারা যায় তবে আঘাতকারীকে শাস্তি দিতে হবে। ২১ কিন্তু যদি সে তার পরে দু-এক দিন বেঁচে থাকে তবে আঘাতকারীকে শাস্তি দেওয়া চলবে না, কারণ সে তার নিজেরই সম্পত্তি।’
- দাস আঘাত পেয়ে যদি সাথে সাথে মারা যায় তবে আঘাতকারীকে শাস্তি দিতে হবে, কারণ সবার জীবন মূল্যবান। হতে পারে শাস্তি এখানে মৃত্যুর শাস্তি বুঝায়।
- অথবা তা অন্য একটি শাস্তি বুঝালে তবে আইন দ্বারা ঈশ্বর নিশ্চিত করতে চান যে দাসের ক্ষেত্রেও মানুষ সাবধান থাকে।
যাত্রা ২১:২৬-২৭ দাসকে আঘাত করলে মুক্তি দিতে হবে
‘যদি কেউ তার দাস বা দাসীর কোন চোখে আঘাত করলে তা নষ্ট হয়ে যায় তবে তার বদলে তাকে এমনিই চলে যেতে দিতে হবে। ২৭ যদি সে আঘাত করে তার দাঁত ফেলে দেয় তবে তার বদলেও তাকে এমনি চলে যেতে দিতে হবে।’
- দাস কিছুদিন বাঁচার পরে যদি মারা যায় > মালিককে মৃত্যুর শাস্তি দেওয়া হবে না, কিন্তু দাসকে মুক্ত করতে হবে।
- মালিক যদি দাসকে আঘাত করে স্থায়ী শারীরিক ক্ষতি করে, তবে দাসকে মুক্তি দিতে হবে।
- সাধারণ ব্যক্তিকে আঘাত করলে তবে ‘দাঁতের বদলে দাঁত’, দাসের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়, কিন্তু মালিক তার দাস হারাবে।
- মালিক যদি দাসকে আঘাত করে অস্থায়ী শারীরিক ক্ষতি করে, তবে কোনো শাস্তি নেই (সম্ভবত)।
- মিলিয়ে বুঝা যায় যে দাসদেরও অধিকার আছে, কিন্তু তাদের অধিকার মুক্ত মানুষদের চেয়ে ‘এক স্তর কম’।
যাত্রা ২১:২২-২৫ অনিচ্ছাকৃতভাবে গর্ভপাত ঘটালে > ক্ষতিপূরণ
‘মারামারি করতে গিয়ে যদি কেউ কোন গর্ভবতী স্ত্রীলোককে এমনভাবে আঘাত করে যাতে তার গর্ভ নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু আর কোন ক্ষতি না হয়, তবে সেই স্ত্রীলোকটির স্বামীর দাবি এবং বিচারকেরা যা ঠিক করে দেবে সেই অনুসারেই আঘাতকারীকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ২৩ কিন্তু যদি এছাড়া অন্য কোন ক্ষতি হয় তবে এইভাবে তাকে শাস্তি দিতে হবে, যেমন প্রাণের বদলে প্রাণ, ২৪ চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত, হাতের বদলে হাত, পায়ের বদলে পা; ২৫ পোড়ানোর বদলে পোড়ানো, ঘায়ের বদলে ঘা এবং কালশিরার বদলে কালশিরা।’
- পরিস্কার না যে গর্ভবতী মহিলা এখানে ঝগড়ায় অংশ গ্রহণ করে নি বা না চেয়ে ‘পথে পড়েছে’। যে কোনোভাবে হোক পেটে বাচ্চা নষ্ট হওয়ার জন্য জরিমানা দিতে হবে। মহিলার কোনো ক্ষতি হলে তবে ‘চোখের বদলে চোখ’।
মহিলার জীবন মূল্যবান, পেটে বাচ্চার জীবন মূল্যবান (যদিও মৃত্যুর শাস্তি প্রযোজ্য নয়), দুর্বলদের সুরক্ষা প্রয়োজন।
যাত্রা ২১:২৮-৩২ পশু মানুষকে আঘাত করলে > ক্ষতিপূরণ
‘যদি কোন গরু গুঁতিয়ে কোন পুরষ বা স্ত্রীলোককে মেরে ফেলে তবে পাথর ছুঁড়ে সেই গরুটাকে অবশ্যই মেরে ফেলতে হবে। সেই গরুর মাংস কেউ খাবে না এবং গরুর মালিক কোন শাস্তি পাবে না। ২৯ তবে গরুটার যদি গুঁতানোর অভ্যাস থাকে আর তার মালিককে সাবধান করে দেবার পরেও সে তাকে আট্কে না রাখে আর সেই গরুটা কোন পুরুষ বা স্ত্রীলোককে মেরে ফেলে, তবে পাথর ছুঁড়ে সেই গরুটাকে মেরে ফেলতে হবে এবং তার মালিককেও মেরে ফেলতে হবে। ৩০ কিন্তু যদি মালিকের কাছ থেকে কোন ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয় তবে সেই ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে মালিক তার নিজের জীবন রক্ষা করতে পারবে। ৩১ সেই গরুটা যদি কোন ছেলে বা মেয়েকে গুঁতিয়ে মেরে ফেলে তবে তার বেলায়ও একই নিয়ম খাটবে। ৩২ কোন গরু যদি কোন দাস বা দাসীকে গুঁতিয়ে মেরে ফেলে তবে তার মনিবকে সেই গরুর মালিক তিনশো ষাট গ্রাম রূপা দেবে, আর সেই গরুটাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে হবে।’

- পশু যদি প্রথম বার এভাবে আঘাত করে, তবে মালিককে শাস্তি দেওয়া হবে না।
- পশু যদি আগেও তা করত, তবে তা অবহেলার কারণে মৃত্যু, যাতে মৃত্যুর শাস্তি থাকে।
- পশুকে মেরে ফেলতে হয় যেন আরও দূর্ঘটনা না হয়। পশু এমনি জবাই করা হবে না, তার মাংস খাওয়াও যাবে না, বরং মানুষের মত পাথর দিয়ে মেরে ফেলতে হবে। পশু খুনী হিসাবে দাঁড়ায়, তাই এ সব করা দরকার। মাংস খাওয়া যাবে না কারণ এই ঘটনায় কোনো ‘সুবিধা’, ‘আরাম’, ‘অভিলাস’ বা ‘ভোজ’ না থাকুক।
- পশুকে ‘মৃত্যুর শাস্তি’ দিতে হবে তা ঈশ্বর একইভাবে দাবী করেন পশু যৌন ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে। তা অবশ্যই পশুর দোষ নয়, কিন্তু একবার প্রকাশিত হলে এই ধরণের পশুর উপস্থিতি আর চলবে না।
- পুরুষকে, মহিলাকে, ছেলেকে বা মেয়েকে গুঁটিয়ে মেরে ফেলা একই।
- যদি মৃত ব্যক্তির আত্মীয় চায় যে পশুর মালিককে মেরে ফেলার চেয়ে সে জরিমানা দিতে পারে, তবে তা অনুমদিত। দাসদের ক্ষেত্রে জরিমানা থাকবে।
- ৩৬০ গ্রাম রূপা হল ‘৩০ শেকেল’। লেবীয় ২৭:৪ পদে এই পরিমাণ একটি স্ত্রীলোকের বিষয়ে মানত করার ক্ষেত্রে দাবী করা হয়। লেবীয় ২৭ অধ্যায়ে দাসদের ক্ষেত্রে উল্লেখ নেই।