অর্থনীতি ১৩ – সঞ্চয়

আইনে সঞ্চয়ের ভিত্তি

আদি ১:২৮, ২:১৫      ‘তোমরা … পৃথিবীকে নিজেদের শাসনের অধীনে আন।’

  • ঈশ্বর এই পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা ও মালিক। তিনি মানুষকে তাঁর অধীনে পৃথিবীর দেখাশুনাকারী, ধনাধ্যক্ষ ও উন্নয়নকারী হিসেবে স্থাপন করেছেন।
  • এই বস্তুজগত ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন বলে এই বস্তুজগত ও এর মধ্যে যা কিছু আছে তা ভাল। সম্পদ ভাল।
  • ঈশ্বর চান পৃথিবীর দেখাশুনা, সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বৃদ্ধি হোক।
  • ঈশ্বর চান যেন আমাদের মালিকানা বা কর্তৃত্ত্ব থাকে।

আদি ৮:২২               ‘যতদিন এই পৃথিবী থাকবে ততদিন নিয়ম মত… ঠাণ্ডা, গরম, শীতকাল, গরমকাল, দিন, রাত হতেই থাকবে’

  • ঈশ্বর সময়ের ধারণা স্থাপন করেন।
  • নিয়মিত দিন (সকাল এবং সন্ধ্যা), মাস (চাঁদ), বছর (ঋতু) এগুলো সময়, পরিবর্তন, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ধারণা স্থাপন করে এবং পরিকল্পনার প্রয়োজন দেখায়।
  • ভিন্ন ভিন্ন ঋতু আছে বলে তা পরিকল্পনা করা, সঠিক সময়ে বীজ বপন করা, অন্য সময়ের জন্য খাবার মজুত করার জন্য দাবী করে।

দ্বিতীয় বিবরণ ৫:১৯     ‘চুরি কর না!’

  • ব্যক্তিগত সম্পত্তির সুরক্ষা থাকার ফলে সঞ্চয় করা সম্ভব। যদি ব্যাপকভাবে চুরি হয় তাহলে সঞ্চয় করা মানে লোকসান বা বোকামীর কাজ।
  • চুরি নিষেধ করার মধ্যে দিয়ে ঈশ্বর মালিকানা নিশ্চিত করেন।
বাইবেলীয় উদাহরণ : সঞ্চয় স্বাভাবিক এবং ভাল

আদি ২৬:১৪           ইসহাকের অনেক পশুপাল ও দাস দাসী ছিল।
আদি ৪১:৩৬          যোষেফ আসন্ন দূর্ভিক্ষ মোকাবেলা করার জন্য মিসরে শস্য মজুত করেছিলেন।
যাত্রা ১৬:৫             ৬ষ্ঠ দিনে মান্না মজুত করা যেত > বিশ্রামদিনের জন্য দ্বিগুণ সংগ্রহ করার জন্য।
লেবীয় ২৫:২২         ৭ম বছরে ৬ষ্ঠ বছরের মজুত থেকে খাওয়া এবং ৮ম বছরে তা থেকে বীজ বোনা।
লেবীয় ২৬:১০,দ্বি বি ২৮:৫      বাধ্যতা > আশীর্বাদ = পুরাতন মজুত বের করে নতুন মজুদের জায়গা তৈরি করা।
দ্বি বি ২৮:৫            বাধ্যতা > তোমার ঝুড়ি ও পাত্র আশীর্বাদ পাবে।
গীত ১৪৪:১৩        গোলাঘর পূর্ণতা ও ভেড়াপালের বৃদ্ধির আশীর্বাদ।
দ্বি: বি: ২৮:১৭        অবাধ্যতা > তোমার ঝুড়ি ও পাত্রের উপর অভিশাপ।
১ বংশা ২৯:১৬       মন্দির নির্মাণের জন্য দায়ূদ বিভিন্ন জিনিষ মজুত করেন।
২ বংশা ৩১:১০       মানুষেরা মন্দিরে উৎসর্গ নিয়ে আসে > যেমন যথেষ্ট হয় তেমনি বাড়তিও হয়।
১ রাজা ৯:১৯, ২ বংশা ৮:৪, ৮:৬   শলোমন ভান্ডার শহর নির্মাণ করেন (নিশ্চিতভাবে বলা যায় না কিসের ভান্ডার)।
১ রাজা ১০:১০       শিবা রাণী শলোমনকে অনেক মশলা মজুত হিসেবে দেয়।
২ বংশা ১১:১১       রহবিয়াম শহরের রক্ষার ব্যবস্থা মজবুত করেন ও খাবার, তেল, আংগুর রস মজুত করেন।
২ বংশা ১৬:৪         সিরিয়ার রাজা বিনহদদ নপ্তালির ভান্ডার শহরগুলি লুট করেছিলেন।
২ বংশা ১৭:১২       যিহুদার রাজা যিহোশাফট দূর্গ ও ভান্ডার-শহর তৈরী করেছিলেন।

সঞ্চয় সম্বন্ধীয় নীতিমালা

হিতো ৬:৮ (৬-১১)         শ্রম দেওয়া > সঠিক সময়ে আয়ের অবশিষ্ট থেকে সঞ্চয় কর

‘তবুও সে গরমকালে তার খাবার জমা করে রাখে আর ফসল কাটবার সময় খাবার যোগাড় করে।’

  • ঈশ্বর ভবিষ্যতের মূল্য ও সুবিধার জন্য বর্তমান আরাম বা অভিলাষ বাদ দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন।
  • বর্তমানের দরকারের চেয়ে ভবিষ্যৎ বিষয়ের জন্য চিন্তা ও কাজ করা, উদ্যোগী ও স্ব-দায়িত্বশীল হওয়া।

হিতো ২৪:২৭              আয় নিশ্চিত করা প্রশান্তির জীবনে প্রবেশ করার আগে

“তোমার ক্ষেত-খামার প্রস্তুত করে তুমি বাইরের কাজ শেষ কর, তার পরে তোমার ঘর বাঁধ।”

  • উৎপাদন করা ও আয় নিশ্চিত করাকে প্রথম প্রাধান্য দিতে হবে, তারপর প্রশান্তি বা বিলাসিতার চিন্তা করা যায়।
  • বিপরীত উদাহরণ: এষৌ (আদি ২৫:৩২) যিনি বর্তমানের একবেলা খাবারের জন্য তার মূল্যবান উত্তরাধিকার বিক্রি করে দেয়।

হিতো ২১:২০             স্ব-নিয়ন্ত্রণ > অবিরত সঞ্চ‍য় করা

‘বুদ্ধিমানের ঘরে মূল্যবান ধন ও সুগন্ধি তেল জমা থাকে, কিন্তু তা যদি বিবেচনাহীন লোকের ঘরে থাকে তবে সে সবই শেষ করে ফেলে।’

  • স্ব-নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ জীবন-যাপন (যুক্তিসঙ্গত খরচ) ধনী হওয়ার দিকে নিশ্চিতভাবে পরিচালনা দেয়।

হিতোপদেশ               দ্রুত ধনী হওয়ার পরিকল্পনা

হিতো ২৮:২০            বিশ্বস্ত লোক অনেক আশীর্বাদ পায়, কিন্তু যে ধনী হবার জন্য আকুল হয় সে শাস্তি পাবেই পাবে।
হিতো ২০:২১            বাবার সম্পত্তির অধিকার যদি তাড়াতাড়ি পাওয়া যায় তবে শেষে তাতে আশীর্বাদ পাওয়া যাবে না
হিতো ২৮:২২            যে লোক লোভী সে ধনী হবার জন্য ব্যস্ত হয়, কিন্তু সে জানে না অভাব তার জন্য অপেক্ষা করে আছে।
হিতো ২৮:১৯            যে লোক নিজের জমিতে পরিশ্রম করে তার প্রচুর খাবার থাকে, কিন্তু যে অসারতার পিছনে দৌড়ায় তার খুব অভাব হয়।
হিতো ২১:৫             পরিশ্রমীর পরিকল্পনার ফলে নিশ্চয়ই প্রচুর ধনলাভ হয়, কিন্তু যে লোক পরিকল্পনা না করে তাড়াহুড়া করে কাজ করতে যায় তার নিশ্চয়ই অভাব হয়।

  • দ্রুত ধনী হওয়া পদ্ধতির প্রলোভন সবসময় এড়িয়ে চলুন কারণ সেগুলোতে ঈশ্বরের আশীর্বাদ থাকে না। কারণ অনেকবার তা হল অন্যা‍য় পথে লাভ, লোভ করতে প্ররোচনা দেয়, স্বাভাবিক ও বিশ্বস্ত শ্রমকে তুচ্ছ করে।
  • মনে মনে বড় বড় অবাস্তব স্বপ্ন দেখা, কিন্তু আসল শ্রম, অধ্যবসায় বা বিশ্বস্তভাবে কাজ করাকে অস্বীকার করা।
  • সতর্কবাণী: পিরামিড প্রকল্প (pyramid schemes) যেমন: ‘ডেসটিনি’ (destiny)।
  • সঞ্চ‍য় বনাম উদারতা? সঞ্চয়ের দিকে দৃষ্টি রেখে কৃপণ হওয়া, আশীর্বাদের ন‍‍‍য়।

১ করি ১৬:২               এমনকি দান করার ক্ষেত্রেও ধীরে ধীরে সঞ্চয় করার জন্য নির্দেশনা

পৌল: ‘সপ্তাহের প্রথম দিনে তোমরা প্রত্যেকে আপনাদের নিকটে কিছু কিছু রাখিয়া আপন আপন সঙ্গতি অনুসারে অর্থ সঞ্চয় কর; যেন আমি যখন আসিব, তখনই চাঁদা না হয়।’

হিতো ২৭:২৩-২৭         শ্রম > সঞ্চয় > সতর্কভাবে পুনঃবিনিয়োগ

‘তোমার ছাগল-ভেড়ার পালের অবস্থা তুমি ভাল করে জেনে রেখো … মনোযোগ দিয়ো… ভেড়ার বাচ্চারা তোমার কাপড় যোগাবে, আর ছাগল দেবে নতুন জমির দাম।’

  • শ্রম > ভাল হিসাব > লাভ গ্রহণ (কাপড়) কিন্তু পুনঃবিনিয়োগও দরকার (জমি কেনা)।

২ করি ১২:১৪              ছেলেমেয়েদের জন্য বাবা-মাদের সঞ্চয় করা

পৌল: ‘আমি তোমাদের বোঝা হব না…কারণ আমি তোমাদের কোন কিছু পেতে চাই না…ছেলেমেয়েরা যে তাদের বাপ-মায়ের জন্য টাকা-পয়সা জমাবে তা নয় বরং ছেলেমেয়েদের জন্য টাকা-পয়সা জমানো বাপ- মায়েরই উচিত।’

  • বহু প্রজন্মের পরিবার ভিত্তিক: ধীরগতিতে সম্পদ বৃদ্ধির ধারণা।
  • পরবর্তী প্রজন্মকে শুধু ধন দেওয়া নয় বরং চরিত্র, স্ব-নিয়ন্ত্রণ, ধন ব্যবস্থাপনা করার দক্ষতা এইসব ক্ষেত্রে শিষ্যত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
  • উদ্দেশ্য: ভাল উত্তরাধিকার হস্তান্তর করা। ছেলের চাকরী হওয়া মাত্র ‘অবসরে যাওয়া’ উচিত নয়।
  • বরং: যতক্ষণ সম্ভব কাজ করা যায়, কাজ করতে থাকা।

হিতো ১৩:২২                ধার্মিকেরা তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য উত্তরাধিকার রেখে যাবে

‘ভাল লোক তার নাতিপুতিদের জন্য অধিকার রেখে যায়, কিন্তু পাপীর ধন ঈশ্বরভক্তদের জন্যই জমা করা হয়।’

  • আবারও : বহু প্রজন্ম মিলে পারিবারিক সম্পদ গড়ে তোলা।
  • কেন সন্তানদের জন্য নয় কিন্তু নাতিপুতিদের জন্য? সন্তানের স্কুলের খরচ চালানোর কারণে বাবা বেশী সঞ্চয় নাও করতে পারেন। ফলে ছেলে একটা ব্যবসা শুরু করতে চাইলে তাকে মুনাফাছাড়া ঋণ দিতে সক্ষম হবেন না।
  • কিন্তু দাদা বা ঠাকুরদাদার ক্ষেত্রে, যার সন্তান বড় হওয়ার পরে বেশ কিছু বছরে কম খরচ করতে হল, তিনি তার নাতিকে মুনাফাছাড়া ঋণ বা উত্তরাধিকার অগ্রিম দিতে সক্ষম হন।
  • ল্যান্ডা: বড় ধরণের দারিদ্রতা থেকে বের হয়ে আসতে বাইবেলীয় নীতি পালনকারী দুইটা প্রজন্ম দরকার।

উপদেশক ১১:২,৬            বহুমূখী সম্পদ, উদ্ভাবনী হওয়া, ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় কর

‘তোমার ধন নানাভাবে খাটাও, কারণ পৃথিবীতে কি বিপদ আসবে তা তো তুমি জান না। ….তোমার বীজ সকালে বোনো, বিকালেও তোমার হাতকে সেই কাজ করতে দিয়ো, কারণ কোন্‌ সময়ের কাজ সফল হবে নাকি দু’টাই সমানভাবে ভাল হবে, তা তো তুমি জান না।’

  • শ্রম, দক্ষতার ব্যবহার, উদ্ভাবন, ঝুঁকি নেওয়া ইত্যাদির গুরুত্ব দেওয়া ও সমর্থন দেওয়া।
  • এখানে সঞ্চয়ের পরে টাকা বিনিয়োগের প্রশ্ন ওঠে। নানাভাবে বিনিয়োগ করা কারণ কোনটা সফলভাবে তা জানা যায় না।
  • সচেতনতা, চিন্তাশীলতা, পরিকল্পনাপূর্ণ, ভবিষ্যৎ নিয়ে সজাগ থাকা, জানা যে সর্বদা ঝুঁকি আছে.. কিন্তু পঙ্গুত্ব নয় ‘কিছুই করার নাই’ অথবা অদৃষ্টবাদ নয় ‘যা হবে হোক’।
  • কোন মিথ্যা নিরাপত্তা নয়, অতিরিক্ত উদ্বিগ্নতা নয়, ব্যর্থতা‍য় নিজেকে দোষারোপ নয়।
  • সাত বা আট ভাবে ভাগ করার নির্দেশনা বুঝায় যে রীতিমত সঞ্চয় করলে অনেক জমানো যায়।
  • অতিরিক্ত বিশেষায়িত করা নয়।

লূক ১৪:২৮-৩০                  খরচ চিন্তা করা ও প্রাধান্য মূল্যায়ন করা

আপনাদের মধ্যে যদি কেউ একটা উঁচু ঘর তৈরী করতে চায় তবে সে আগে বসে খরচের হিসাব করে। সে দেখতে চায়, ওটা শেষ করবার জন্য তার যথেষ্ট টাকা আছে কি না। ২৯ তা না হলে সে ভিত্তি গাঁথবার পরে যদি সেই উঁচু ঘরটা শেষ করতে না পারে, তবে যারা সেটা দেখবে তারা সবাই তাকে ঠাট্টা করবে। ৩০ তারা বলবে, ‘লোকটা গাঁথতে আরম্ভ করেছিল কিন্তু শেষ করতে পারল না।’

  • পরিকল্পনা প্রয়োজন, বাস্তবসম্মত মূল্যায়ন, মূল্য হিসাব করা, সঞ্চয় বনাম খরচ চিন্তা করতে হয়।
সঞ্চয়ের সীমানা

হিতো ২৮:৮                       অন্যায়ভাবে লাভ

‘যে কোন রকম সুদ নিয়ে যে লোক তার ধন বাড়ায়, সে তা এমন একজনের জন্য জমায় যে গরীবদের প্রতি দয়ালু।’

  • লোভ, দূর্বলদের অপব্যবহার, অন্যায়ভাবে লাভ আশীর্বাদেরও নয় আবার স্থায়ীও নয়।

মথি ৬:১৯-২১, লূক ১২:২১     সম্পদেরও উপরে ঈশ্বরকে মূল্য দেওয়া

যীশু: ‘এই পৃথিবীতে তোমরা নিজেদের জন্য ধন-সম্পদ জমা কোরো না। এখানে মরচে ধরে ও পোকায় নষ্ট করে এবং চোর সিঁদ কেটে চুরি করে। ২০ কিন্তু স্বর্গে মরচেও ধরে না, পোকায় নষ্টও করে না এবং চোর সিঁদ কেটে চুরিও করে না। তাই স্বর্গে নিজেদের জন্য ধন জমা কর, ২১ কারণ তোমার ধন যেখানে থাকবে তোমার মনও সেখানে থাকবে।’

  • ঈশ্বর ও তাঁর রাজ্যের চেয়েও সম্পদের মিথ্যা প্রাধ‍ান্য দেওয়ার সতর্কতা
  • ফরীশীদের সংকীর্ণ আইনভিত্তিক চিন্তা যে ‘ধনী = ধার্মিক’, এই চিন্তা যীশু ভেঙ্গে দেন।
  • ধনই আসল মূল্যবোধ নয়, স্থায়ী নয়, ধনই সবকিছুর ভিত্তি নয়।
  • যীশু তাদের ধারণা বৃদ্ধি করেন: ধন হল ভাল থাকার একটি ছোট অংশ মাত্র।
  • ধন যেখানে হৃদয় সেখানে >দশমাংশ, দান, ধনের সঠিক ব্যবহার আমাদের সঠিক মনোভাব রাখতে সাহায্য করে।

দ্বিতীয় বিবরণ ৫:২১              লোভের বা স্বার্থপরতার বিষয়ে সাবধানতা

‘অন্যের স্ত্রীর উপর লোভ কোরো না। অন্যের ঘর-দুয়ার, জমা-জমি, দাস-দাসী, গরু-গাধা কিম্বা আর কিছুর উপর লোভ কোরো না।’

  • লোভ, নিষ্ক্রিয়ভাবে অন্যদের জিনিসের প্রতি ঈর্ষা করার প্রতি সতর্কতা।

লূক ১২:১৬-২১                    অত্য‍াধিক বিশ্বাস , মিথ্যা নিরাপত্তা, সঞ্চয়ের অহংকার

‘এর পরে যীশু লোকদের শিক্ষা দেবার জন্য এই উদাহরণ দিলেন: ‘কোন একজন ধনী লোকের জমিতে অনেক ফসল হয়েছিল। ১৭ এইজন্য সে মনে মনে বলতে লাগল, ‘এত ফসল রাখবার জায়গা তো আমার নেই; আমি এখন কি করি? ১৮ আচ্ছা, আমি একটা কাজ করব। আমার গোলাঘরগুলো ভেংগে ফেলে বড় বড় গোলাঘর তৈরী করব এবং আমার সমস্ত ফসল ও ধন সেখানে রাখব। ১৯ পরে আমি নিজেকে বলব, অনেক বছরের জন্য অনেক ভাল ভাল জিনিস জমা করা আছে। আরাম কর, খাওয়া-দাওয়া কর, আমোদ-আহ্‌লাদে দিন কাটাও।’ ২০ ঈশ্বর কিন্তু তাকে বললেন, ‘ওহে বোকা, আজ রাতেই তোমাকে মরতে হবে। তাহলে যে সব জিনিস তুমি জমা করেছ সেগুলো কে ভোগ করবে?’ ২১ শেষে যীশু বললেন, ‘যে লোক নিজের জন্য ধন-সম্পত্তি জমা করে অথচ ঈশ্বরের চোখে ধনী নয়, তার অবস্থা ঐ রকমই হয়।’

  • ভুল উপসংহার: মিথ্যা নিরাপত্তা, কারও উপর নির্ভরতা না রাখা, কাজ থামানো, স্বার্থপরতার ব্যবহার মাত্র।

১ তীমথিয় ৬:১৭           যারা এই জগতে ধনী তাদের এই নির্দেশ দাও যেন তারা অহংকার না করে ও অস্থায়ী ধনের উপর নির্ভর না করে ঈশ্বরের উপর নির্ভর করে। তিনিই ভোগের জন্য সব জিনিস খোলা হাতে আমাদের দান করেন।

হিতো ১৮:১১               ধনীদের ধনই তাদের দেয়াল-ঘেরা শহর; তাদের ধনকেই তারা মনে করে রক্ষাকারী দেয়াল।
হিতো ১১:২৮               যে তার ধনের উপর নির্ভর করে তার পতন হবে, কিন্তু ঈশ্বরভক্ত লোক সবুজ পাতার মত সতেজ থাকবে।

  • অহংকার, ধনে মিথ্যা পরিচয় অথবা মিথ্যা নিরাপত্তা, ‘ঈশ্বরকে দরকার নেই’ এমন মনে করার ক্ষেত্রে সাবধান।
  • সম্পদের ইতিবাচক দৃষ্টি: ঈশ্বর প্রদত্ত সম্পদ উপভোগের জন্য দেন, কিন্তু এছাড়াও উন্নয়ন করা, উপযুক্তভাবে ব্যবহার ও শেয়ার করার জন্যও দেন।

২ করিন্থীয় ৯:৮              ঈশ্বর প্রচুর পরিমাণে যোগান দেন > ভাল কাজ করার ক্ষমতা

‘তোমাদের সব রকম ভাবে দয়া করবার ক্ষমতা ঈশ্বরের আছে, যাতে তোমাদের যা কিছু দরকার তার সবই সব সময় তোমাদের থাকে; আর তার ফলে যেন তোমরা সব রকম ভাল কাজের জন্য খোলা হাতে দান করতে পার।’

১ তীমথিয় ৬:১৮-১৯        ধনীরা ভাল কাজ করুক

‘ধনীদের নির্দেশ দাও যেন তারা অন্যের উপকার করে, সৎ কাজে ব্যস্ত থাকে, খোলা হাতে দান করে এবং তাদের ধন-সম্পত্তির ভাগ অন্যদেরও দেয়। ১৯ এতে তারা নিজেদের জন্য এমন ধন জমা করবে যা ভবিষ্যতে তাদের পক্ষে একটা শক্ত ভিত্তির মত হবে, যেন সত্যিকারের যে জীবন তা তারা শক্ত করে ধরে রাখতে পারে।’

  • সঞ্চয় বা সম্পদ ভাল, শেয়ার বা সহভাগিতা করার ক্ষমতা দেয়, তা ভাল করার জন্য, সঠিক কাজে ব্যবহার করার জন্য রাখা হয়েছে।
  • ভবিষ্যতের জন্য ভিত্তি > মানে অর্থনৈতিক আয় এবং উপভোগই আসল লক্ষ্য নয়।

হিতো ১১:২৬               ‘প্রভাবিতকরণ সঞ্চয়’ > মজুদের নিষেধাজ্ঞা

‘যে লোক শস্য আটক করে রাখে লোকে তাকে অভিশাপ দেয়, কিন্তু যে তা বিক্রি করে সে আশীর্বাদের পাত্র হয়।’

  • অতিরিক্ত লাভ করার জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত নিষিদ্ধ