অর্থনীতি ১৪ – জামিন না হওয়া

হিতোপদেশ ৬: ১-৫             বন্ধুর জন্য জামিন না হওয়া

‘ছেলে আমার, তুমি যদি কারও জামিন হয়ে থাক, অন্যের জামিন হবার জন্য হাতে হাত রেখে থাক, ২ যা বলেছ যদি তার ফাঁদে পড়ে থাক, যদি তোমার মুখের কথায় বাঁধা পড়ে থাক, ৩ তবে ছেলে আমার, তুমি যখন অন্যের হাতে ধরা পড়ে গেছ, তখন নিজেকে ছাড়িয়ে নেবার জন্য এই সব কাজ কর- তার কাছে গিয়ে নিজেকে নীচু কর, তাকে সাধাসাধি কর, ৪ তোমার চোখকে ঘুমাতে দিয়ো না, চোখের পাতাকে বন্ধ হতে দিয়ো না। ৫ শিকারীর হাত থেকে হরিণের মত করে, পাখী শিকারীর হাত থেকে পাখীর মত করে তুমি নিজেকে ছাড়িয়ে নাও।’

হিতোপদেশ ১১:১৫              বিদেশীদের জন্য জামিন না হওয়া

‘যে অপরের জামিন হয়, সে নিশ্চয় ক্লেশ পায়; কিন্তু যে জামিনের কর্ম ঘৃণা করে, সে নিরাপদ।’

হিতোপদেশ ১৭:১৮              প্রতিবেশীর জন্য জামিন না হওয়া

‘হীনবুদ্ধি হস্তে হস্ত তালি দেয়, প্রতিবাসীর কাছে জামিন হয়।’

হিতোপদেশ ২২:২৬-২৭          কেন নিজেকে আঘাত করবেন?

‘যাহারা হস্তে তালি দেয় ও ঋণের জামিন হয়, তাহাদের মধ্যে তুমি একজন হইও না। ২৭ যদি তোমার পরিশোধের সঙ্গতি না থাকে, তবে গায়ের নিচে হইতে তোমার শয্যা নীত হইবে কেন?’

  • কারও জন্য জামিন হবেন না, এমনকি বন্ধু বা প্রতিবেশীর জন্যও নয়; অজানা কোন ব্যক্তি বা বিদেশীর জন্য একেবারেই না।
  • শক্তিশালী আবেগপ্রবণ ভাষা: ‘যা বলেছ যদি তার ফাঁদে পড়ে থাক, যদি তোমার মুখের কথায় বাঁধা পড়ে থাক,…নিজেকে নীচু কর, তাকে সাধাসাধি কর, তোমার চোখকে ঘুমাতে দিয়ো না, চোখের পাতাকে বন্ধ হতে দিয়ো না। শিকারীর হাত থেকে হরিণের মত করে, পাখী শিকারীর হাত থেকে পাখীর মত করে তুমি নিজেকে ছাড়িয়ে নাও।’
  • নিজের কথায় ধরা পড়া। কথার গুরুত্ব: কথা একবার বলা হয়ে গেলে এর মানে একরকম একটা চুক্তির মত, আমি কথার কাছে দায়বদ্ধ। তবুও কথা বা শপথ ফিরিয়ে নেওয়ার পথ আছে (লেবীয় ২৭)
  • কেন আমাকে বের হতেই হবে? ‘অন্যের হাতে ধরা পড়ে গেছ’ আমি আমার উপর অন্যকে ক্ষমতা দিলাম।
  • জামিন হও‌য়া হলো তৃতীয় ব্যক্তির বিষয়, দাতা ও ঋণীর সম্পর্কের মাঝে ঢুকে পড়া। ঈশ্বর এটা চান না বরং তিনি চান সরাসরি ঋণ দেওয়া-নেওয়া, সরাসরি দায়বদ্ধতা, সরাসরি ফেরত দেওয়া বা মুক্ত হওয়া, তৃতীয় ব্যক্তির মাধ্যমে নয়।
  • একবার সই দিলে, ক্ষমতা ছেড়ে দিলাম। এখন থেকে আমি মাত্র আশা করতে পারি, অনুরোধ করতে পারি যে সে বিশ্বস্ত হয়, কিন্তু আমি আইন অনুসারে দায়বদ্ধ।
EBS-DOM-ECO-14.01

কেন জামিন হওয়া ভাল না?

  • কারণ দায়বদ্ধতা উল্টে যায়। যে লোক টাকা নষ্ট করে, তার উপর কোন চাপ আসবে না এবং যে লোক খারাপ কিছু করে নি, তার ক্ষতি হয়।
  • ঈশ্বর স্থাপন করেছেন যে আচরণের বাস্তব ফল আছে, যে কারণ থেকে ফলাফল আসে।
  • যদিও খারাপ আচরণের খারাপ ফল পাওয়া ভাল লাগে না, তার মধ্যে একটি শেখার সুযোগ, একটি ঠিক হওয়ার জন্য চাপ থাকে। জামিন হওয়া মানে ঈশ্বরের ‘কারণ > ফলাফল’ উল্টিয়ে দেওয়া: নির্দোষীর শাস্তি হয়, যে দায়ী সে মুক্ত (ছবি দেখুন)।
  • ঈশ্বর তা একেবারে চান না ও বিপজ্জনক বলেন।

 

কোন ব্যতিক্রম বা বিশেষ অবস্থা নেই?

  • কারও জন্য জামিন হবেন না, এমনকি বন্ধু বা প্রতিবেশীর জন্যও নয়; অজানা কোন ব্যক্তি বা বিদেশীর জন্য একেবারেই না।
  • শক্তিশালী আবেগপ্রবণ ভাষা: ‘যা বলেছ যদি তার ফাঁদে পড়ে থাক, যদি তোমার মুখের কথায় বাঁধা পড়ে থাক, …নিজেকে নীচু কর, তাকে সাধাসাধি কর, তোমার চোখকে ঘুমাতে দিয়ো না, চোখের পাতাকে বন্ধ হতে দিয়ো না। শিকারীর হাত থেকে হরিণের মত করে, পাখী শিকারীর হাত থেকে পাখীর মত করে তুমি নিজেকে ছাড়িয়ে নাও।’
  • নিজের কথায় ধরা পড়া। কথার গুরুত্ব: কথা একবার বলা হয়ে গেলে এর মানে একরকম একটা চুক্তির মত, আমি কথার কাছে দায়বদ্ধ। তবুও কথা বা শপথ ফিরিয়ে নেওয়ার পথ আছে (লেবীয় ২৭)
  • কেন আমাকে বের হতেই হবে? ‘অন্যের হাতে ধরা পড়ে গেছ’ আমি আমার উপর অন্যকে ক্ষমতা দিলাম।
  • জামিন হও‌য়া হলো তৃতীয় ব্যক্তির বিষয়, দাতা ও ঋণীর সম্পর্কের মাঝে ঢুকে পড়া। ঈশ্বর এটা চান না বরং তিনি চান সরাসরি ঋণ দেওয়া-নেওয়া, সরাসরি দায়বদ্ধতা, সরাসরি ফেরত দেওয়া বা মুক্ত হওয়া, তৃতীয় ব্যক্তির মাধ্যমে নয়।
  • একবার সই দিলে, ক্ষমতা ছেড়ে দিলাম। এখন থেকে আমি মাত্র আশা করতে পারি, অনুরোধ করতে পারি যে সে বিশ্বস্ত হয়, কিন্তু আমি আইন অনুসারে দায়বদ্ধ।
  • কেন জামিন হওয়া ভাল না? কারণ দায়বদ্ধতা উল্টে যায়। যে লোক টাকা নষ্ট করে, তার উপর কোন চাপ আসবে না এবং যে লোক খারাপ কিছু করে নি, তার ক্ষতি হয়। ঈশ্বর স্থাপন করেছেন যে আচরণের বাস্তব ফল আছে, যে কারণ থেকে ফলাফল আসে। যদিও খারাপ আচরণের খারাপ ফল পাওয়া ভাল লাগে না, তার মধ্যে একটি শেখার সুযোগ, একটি ঠিক হওয়ার জন্য চাপ থাকে। জামিন হওয়া মানে ঈশ্বরের ‘কারণ > ফলাফল’ উল্টিয়ে দেওয়া: নির্দোষীর শাস্তি হয়, যে দায়ী সে মুক্ত (ছবি দেখুন)। ঈশ্বর তা একেবারে চান না ও বিপজ্জনক বলেন।
  • যার উপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আপনার ক্ষমতা নেই, তার জন্য নিজেকে দায়ী করবেন না। যার উপর আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে শুধুমাত্র তার জন্য আপনার দায়ী থাকা উচিত। নিজের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অন্য একজনকে দিবেন না। কারণ একবার জামিন হও‍য়ার পর, সেই লোকের উপর আপনার কোন ক্ষমতাই নেই, শুধু তাকে অনুরোধ করতে পারেন। ক্ষমতা, নিয়ন্ত্রণ, দায়বদ্ধতা, আত্ম-নিয়ন্ত্রণ হারাবেন না। যার ফলে আপনার পরিবারের দায়িত্ব পূর্ণ করতে আপনার ক্ষমতা হারাবেন।
  • আপনার প্রথম দায়িত্ব্ হলো আপনার স্ত্রী/স্বামী, ছেলেমেয়ে ও পিতামাতা। এর চেয়ে অন্য বন্ধু বা প্রতিবেশীর জন্য আপনি কম দায়ী। বন্ধুর জন্য পরিবার ত্যাগ করবেন না।
  • সংস্কৃতিগত বাধ্যবাধকতা: বাংলাদেশে বলা হয় “দিতেই হয়” “আমি না বলতে পারি না”, কোরিয়ার উদাহরণ: নিজের পরিবারের পতন পর্যন্ত বন্ধুর ঋণের জন্য পাশে দাঁড়ায়।
  • বাংলা প্রবাদ: “যদি ‘না’ বলি আমি একবার খারাপ, যদি ‘হ্যাঁ’ বলি আমি সাতবার খারাপ হই” প্রভাবিত হওয়ার মাধ্যমে দিয়ে দেওয়া আপনাকে পরবর্তীতে নেতিবাচক আবেগ থেকে রক্ষা করবে না। এরজন্য এক্ষুনি না বলা ভাল।
  • এই পদগুলো ‘না’ বলতে সাহায্য করে। আমি আইন থেকে উদ্ধৃতি দিতে পারি: “এটা নিষেধ করা হয়, তাই আমি আপনার জন্য এটা করতে পারি না।” এটা অতি দয়ালু লোকদের সাহায্য করে যারা বন্ধুদের না বলতে অক্ষম।
  • টাকার ক্ষেত্রে আবেগ-সম্পর্কীয় প্রভাবিতকরণ সীমিত রাখুন…. আমি যদি হ্যাঁ বা না বলতে স্বাধীনতা অনুভব না করি, আমার মনে হয় না বলা উচিত।
  • গেইল আরউইন (Gayle Erwin): “আমি মনে করি ভালবাসাপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে আমি আমার স্বাধীনতা হারি‌য়েছি, তাই সিদ্ধান্ত দিতে পারব না।”
  • যত্নহীন, দায়িত্বহীন ও প্রভাবিতকরা লোকদের হাত থেকে ঈশ্বর বিশ্বস্ত, ভাল ধনাধ্যক্ষ, অতি দয়ালু, নির্দোষ, বড় মনের বা ‘কখনও না বলতে পারে না’ এমন লোকদের সুরক্ষা দেন।
  • একজন জামিন হওয়ার লোকের নির্ভরতা, বিশ্বাস বা সরলতার অপব‍্যবহার করবেন না! আবেগীয়ভাবে প্রভাবিত করবেন না! ঋণ বিশ্বস্তভাবে পরিশোধ করুন!
  • সুপারিশের, ‘খালি চেকে সই’, সহজেই নিশ্চয়তা বা প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে সতর্ক হোন।
  • মানুষকে প্রতারিত করা বা মানুষকে ভুল ব্যবহার করা ঈশ্বর ঘৃণা করেন।
  • এই পদগুলো কি আইন বা উপদেশ? প্রকৃতপক্ষে: মোশির আইন-কানুনে এই বিষয় উল্লেখ নেই কিন্তু ঈশ্বর হিতোপদেশে খুবই গুরুত্বের সাথে এই আদেশ দেন। হতে পারে সে সময়ও তা বড় সমস্যার ছিল।
  • কেউ কেউ বলে: জামিন হওয়া আইন-কানুনে উল্লেখ নেই, তাই তা নিষিদ্ধ নয়, তা পাপও নয়।
  • তা মনে করলেও সাবধান: হিতোপদেশে জামিনের অনেক শক্তিশালী সাবধানবাণী দেওয়া আছে। তাই জামিনের উপর ভিত্তি করে এরকম একটা পদ্ধতি, সমিতি বা সংস্থা গঠণ করবেন না! জামিন হওয়ার জন্য কোন আদেশ দিবেন না, তা দাবী করবেন না, তা সাধারণ নি‍য়ম হতে দিবেন না।
  • যদি জামিন হওয়া পাপ না হয় (যদি!) হয়তো একটি চরম ক্ষেত্রে বিবেচনার মাধ্যমে জামিন হতে পারেন। কিন্তু অবশ্যই সেই জামিনের পরিমাণ টাকা পাশে রাখুন এবং স্পর্শ করবেন না যেন সমস্যা হলে এই বাকী টাকা থেকে খরচ সামলাতে পারেন। যদি আপনার এইভাবে টাকা পাশে রাখার ক্ষমতা নেই, তবে জামিন হবেন না!

হিতোপদেশ ২০:১৬                জামিনদারকে কষ্ট দেওয়ার আদেশ

‘যে লোক বিদেশীর জন্য জামিন হয়, তার পোশাক নিয়ে যাও … তাকেই জামানতের জিনিষ হিসাবে রেখো।’

  • তাদের কঠিন সময় দেওয়ার স্বপক্ষে শক্তিশালী সক্রিয় আদেশ! তাদের জামিন হওয়ার ঝামেলা বুঝতে দিতে হয়, যেন তারা সচেতন হয় যে ধরা পড়েছে, যাতে তারা আর এই কাজ না করে।
  • বর্তমানে হয়তো আপনি তাদের অল্প পরিমাণে কষ্ট দিলেন, কিন্তু ভবিষ্যতের তারা আরও বড় ঝামেলা থেকে মুক্ত হলো।
  • পদগুলিতে আমাদের সাধারণ “দয়ামায়া” ভাবের বিপরীত দেখানো হয়েছে। দয়ামায়া থেকে নয় বরং নীতিমালা থেকে আচরণ হওয়া দরকার। আমার “দয়ামায়ার” কারণে লোকদের উপর যে প্রভাব পড়ে, তার জন্য আমি দায়ী। এছাড়া আমি যাদের জন্য দায়ী, যেন তাদের ক্ষতি না হয়।

খ্রিষ্টান কমিটিতে জামিনের দাবি?

  • আমি মনে করিনা এটা বাইবেলীয়। আমরা কোন বাইবেল পড়ছি??
  • কমিটির কারণে লোকদের ঋণ থেকে ঋণে পড়া ও আয়ের চেয়ে বেশি খরচ করা সহজ হয়।
  • ঋণ নেও‌য়ার ক্ষমতার চেয়ে সঞ্চয় করার উৎসাহের দিকে মনোযোগ দেওয়া দরকার।
  • যদি একজনের ঋণ কমিটির জন্য বড় ধরণের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে একজন ব্যক্তির জন্য এটা আরও বড় ধরণের ঝুঁকি > তাই জামিন না হওয়াই ভাল!